অভিবাসী-প্রবাসীর দুঃখ, প্রবাসীর ক্ষোভ by নাইর ইকবাল
মালয়েশিয়ায় রাস্তা দিয়ে চলতে-ফিরতে কিছুক্ষণ পর পর বাংলায় বলা দু-একটি শব্দ আপনার কানে আসবে। ঘাড় ঘুরিয়ে কোনো এক স্বদেশিকে দেখে আপনার মন খুশিতে ভরে উঠবে। আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে গেলেই কিন্তু হোঁচট খেতে হবে। হোঁচট খাওয়ার কারণ, সেই বাংলাদেশি ভাই আপনার সঙ্গে তেমন একটা আগ্রহ নিয়ে কথা বলবেন না।
মালয়েশিয়া-প্রবাসী বাংলাদেশিদের এমন আচরণ কিন্তু বাধ্য হয়েই করা। দিনের পর দিন ধাক্কা খেতে খেতেই তাঁরা এমন আচরণে নিজেদের অভ্যস্ত করে নিয়েছেন।
কুয়ালালামপুরের মাসজিদ জামেক নামের একটি এলাকায় আমি ছিলাম। সেখানে প্রতিদিনই কমপক্ষে ছয়-সাতজন বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে দেখা হতো। দৃষ্টি বিনিময় হলে কেমন যেন সন্দেহের চোখে তাঁরা তাকাতেন। বাংলাদেশি কি না জিজ্ঞেস করলে খুব নিচু স্বরে তাঁদের উত্তর আসত, ‘হ্যাঁ’। এর বেশি কিছু নয়। তাঁরা কথা বাড়াতে চাইতেন না। মাসজিদ জামেক এলাকাটি সাধারণত আমাদের ঢাকার নিউমার্কেট-এলিফ্যান্ট রোডের মতো বাজার এলাকা। সেখানে হকাররা প্রচুর জিনিসের পসরা নিয়ে বসেন আমাদের গাউছিয়া কিংবা চাঁদনী চকের মতো। রাত আটটা বাজলেই হকাররা তাঁদের দোকানগুলো বন্ধ করে দিতেন। তখন সুনসান এলাকায় সবুজ ইউনিফর্ম পরা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ত। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চেহারা দেখেই খুব আপন মনে হতো। কারণ তাঁরা সবাই বাংলাদেশি।
মালয়েশিয়াতে মোটামুটি ভালো আছেন, সেলসম্যানের কাজ করেন একটি চীনা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে, এমন একজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলার সময় ব্যাপারটি তুললাম। তিনি হেসে বললেন, ‘ভাই, এখন তো আমাকে ভালো দেখছেন, সাত বছর আগে মালয়েশিয়াতে এসে কী যে কষ্ট করেছি, খেয়ে, না খেয়ে থেকেছি, এখানে অনেক বাংলাদেশি দোকান আছে, সেই মালিকেরা ভারতীয়দের চাকরি দেন, পাকিস্তানিদের দেন, নিজ দেশের ভাইদের দেন না। আমিও পাইনি। এখানে একটু ভালো পোশাক-আশাক পরা বাংলাদেশের মানুষকে আসলে ঠিক বিশ্বাস করতে চান না এখানে কর্মরত শ্রমিকেরা। কাউকে ভালো থাকতে দেখলেই তাঁদের মনের ভেতরকার ক্ষোভ উগলে ওঠে। সে কারণেই আপনার মনে হয়েছে, তারা আপনাকে এড়িয়ে গেল।’ কথাগুলো বলার সময় তাঁর ভেতরের ক্ষোভেরও কিছুটা দেখা আমি পেলাম।
তখন মনে হলো কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের এলসিসিটি টার্মিনালে একটি দৃশ্যের কথা। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে নেমেই দেখলাম অনেক বাংলাদেশি কর্মী। কাজের খোঁজে কিংবা চাকরি নিয়ে তাঁরা এসেছেন মালয়েশিয়াতে। দেখলাম, ভ্রমণ ভিসা ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা মানুষের লাইন আর শ্রমিকদের লাইন আলাদা। ইমিগ্রেশন কর্মীরা ভ্রমণ ভিসার লাইনের মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন বিনয়ের সঙ্গে, ‘স্যার’, ‘ম্যাডাম’ করে, আর শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন, ঈষৎ রাগত স্বরে, যেন তাঁরা এই দেশে এসে কোনো অপরাধ করে ফেলেছেন। আমার পাসপোর্ট পরীক্ষা করে ইমিগ্রেশন কর্মীটি আমাকে বললেন, ‘স্যার, ওয়েলকাম টু মালয়েশিয়া।’ মুখে তাঁর আকণ্ঠবিস্তৃত হাসি। উপভোগ করতে পারলাম না। হঠাৎ চোখ পড়ল, অসহায়ভাবে উৎকণ্ঠা নিয়ে আমার দিকে তাকানো এক বাংলাদেশি ভাইয়ের দিকে, তাঁর চোখ দুটি যেন বলছে, ‘খুব বেড়াতে এসেছেন না, বেড়ান, আমি এখানে পরিশ্রম করব, দেশে বিদেশি মুদ্রা পাঠাব, আর আপনারা সেই ডলার খরচ করে বেড়িয়ে যাবেন। আমাদের দিকে ফিরেও তাকাবেন না! আমাদের সুবিধা-অসুবিধা, আরাম-আয়েশের দিকেও আপনাদের কোনো দৃষ্টি নেই।’ তাঁর সেই দৃষ্টির দিকে তাকাতে পারিনি বেশিক্ষণ। চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিলাম।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বেশির ভাগই ‘অবৈধ’ অভিবাসী। ভিসা অচিরেই হয়ে যাবে, এই আশায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। দেখা হওয়ার পর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সবচেয়ে বড় কারণও এটি। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অনেকেই এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন। সঠিক উত্তর আমি দিতে পারিনি। কেবল মালয়েশিয়াতেই নয়, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এমন লাখ লাখ বাংলাদেশি অবৈধভাবে থেকেও কিন্তু ঠিকই এ দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছেন। প্রতি মাসে পাঠাচ্ছেন হাজার হাজার কোটি টাকা, সেই টাকা দিয়ে মুদ্রাস্ফীতি ডাবল ডিজিটের কাছাকাছি থাকার পরও দেশের মানুষ খেয়ে-পরে বেঁচে আছেন। তাঁদের জন্য আমাদের কি কিছুই করণীয় নেই?
মালয়েশিয়াতেই প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজের উঁচুতলার কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলার ‘সৌভাগ্য’ হয়েছিল। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সন্তান, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন, কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য করে বেশ ভালোভাবেই দিন গুজরান করছেন। বাংলাদেশকে কেন আমরা এখনো ‘মালয়েশিয়া’ কিংবা ‘সিঙ্গাপুর’ বানাতে পারলাম না, এ নিয়ে তাঁদের চিন্তার অন্ত নেই। প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রসঙ্গ তুলতেই তাঁদের মধ্যে কেমন যেন নিস্পৃহ ভাব লক্ষ করলাম। যত দূর জানি, তাঁরা কেউই দেশে টাকা পাঠান না! অবশ্যব্যতিক্রমও যে নেই, তা নয়।
এবার, ঢাকা বিমানবন্দরের একটি দুঃখজনক অভিজ্ঞতা জানাতে চাই। কুয়ালালামপুরে বিমানবন্দরেই ঝিনাইদহের একজন প্রবাসীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। তিনি চার বছর পর দেশে ফিরছেন। চোখে-মুখে খুশির আভা! সঙ্গে নিচ্ছেন একটি ৩৬ ইঞ্চি এলসিডি টেলিভিশন। ঢাকা বিমানবন্দরে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর মালপত্র পরীক্ষা করার স্ক্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। হঠাৎ, ঝিনাইদহের সেই ভাইয়ের এলসিডি টেলিভিশন দেখে কর্তব্যরত একজন ‘সম্মানিত’ বিসিএস ক্যাডারের কাস্টমস কর্মকর্তা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বললেন, ‘সত্যিই কিনেছিস, নাকি কোম্পানির মাল!’ ইঙ্গিতটি খুবই অর্থবহ। অর্থাৎ তিনি জানতে চাচ্ছেন, তিনি এটি সত্যিই নিজের টাকা দিয়ে কিনেছেন, নাকি যে কোম্পানিতে কাজ করেন, সেখান থেকে চুরি করেছেন! ঝিনাইদহের সেই ভাই এই অপমান হজম করেছেন কি করেননি, সঙ্গে সঙ্গেই এক আনসার সদস্য এসে জিজ্ঞেস করল, ‘মানিব্যাগে কত আছে।’ উত্তর, ‘২৫০ রিংগিট।’ সেই আনসার সভ্য ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁর থেকে ১০০ রিংগিট। সবই দেখলাম, অবাক হলাম। মনটা দ্রোহে ভরে উঠল। প্রতিবাদ করতে পারিনি। কারণ, ওই যে আমরা সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণী! পলায়নপর আমাদের মানসিকতা!
নাইর ইকবাল: সাংবাদিক।
nayirdhaka@gmail.com
কুয়ালালামপুরের মাসজিদ জামেক নামের একটি এলাকায় আমি ছিলাম। সেখানে প্রতিদিনই কমপক্ষে ছয়-সাতজন বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে দেখা হতো। দৃষ্টি বিনিময় হলে কেমন যেন সন্দেহের চোখে তাঁরা তাকাতেন। বাংলাদেশি কি না জিজ্ঞেস করলে খুব নিচু স্বরে তাঁদের উত্তর আসত, ‘হ্যাঁ’। এর বেশি কিছু নয়। তাঁরা কথা বাড়াতে চাইতেন না। মাসজিদ জামেক এলাকাটি সাধারণত আমাদের ঢাকার নিউমার্কেট-এলিফ্যান্ট রোডের মতো বাজার এলাকা। সেখানে হকাররা প্রচুর জিনিসের পসরা নিয়ে বসেন আমাদের গাউছিয়া কিংবা চাঁদনী চকের মতো। রাত আটটা বাজলেই হকাররা তাঁদের দোকানগুলো বন্ধ করে দিতেন। তখন সুনসান এলাকায় সবুজ ইউনিফর্ম পরা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ত। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চেহারা দেখেই খুব আপন মনে হতো। কারণ তাঁরা সবাই বাংলাদেশি।
মালয়েশিয়াতে মোটামুটি ভালো আছেন, সেলসম্যানের কাজ করেন একটি চীনা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে, এমন একজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলার সময় ব্যাপারটি তুললাম। তিনি হেসে বললেন, ‘ভাই, এখন তো আমাকে ভালো দেখছেন, সাত বছর আগে মালয়েশিয়াতে এসে কী যে কষ্ট করেছি, খেয়ে, না খেয়ে থেকেছি, এখানে অনেক বাংলাদেশি দোকান আছে, সেই মালিকেরা ভারতীয়দের চাকরি দেন, পাকিস্তানিদের দেন, নিজ দেশের ভাইদের দেন না। আমিও পাইনি। এখানে একটু ভালো পোশাক-আশাক পরা বাংলাদেশের মানুষকে আসলে ঠিক বিশ্বাস করতে চান না এখানে কর্মরত শ্রমিকেরা। কাউকে ভালো থাকতে দেখলেই তাঁদের মনের ভেতরকার ক্ষোভ উগলে ওঠে। সে কারণেই আপনার মনে হয়েছে, তারা আপনাকে এড়িয়ে গেল।’ কথাগুলো বলার সময় তাঁর ভেতরের ক্ষোভেরও কিছুটা দেখা আমি পেলাম।
তখন মনে হলো কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের এলসিসিটি টার্মিনালে একটি দৃশ্যের কথা। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে নেমেই দেখলাম অনেক বাংলাদেশি কর্মী। কাজের খোঁজে কিংবা চাকরি নিয়ে তাঁরা এসেছেন মালয়েশিয়াতে। দেখলাম, ভ্রমণ ভিসা ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা মানুষের লাইন আর শ্রমিকদের লাইন আলাদা। ইমিগ্রেশন কর্মীরা ভ্রমণ ভিসার লাইনের মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন বিনয়ের সঙ্গে, ‘স্যার’, ‘ম্যাডাম’ করে, আর শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন, ঈষৎ রাগত স্বরে, যেন তাঁরা এই দেশে এসে কোনো অপরাধ করে ফেলেছেন। আমার পাসপোর্ট পরীক্ষা করে ইমিগ্রেশন কর্মীটি আমাকে বললেন, ‘স্যার, ওয়েলকাম টু মালয়েশিয়া।’ মুখে তাঁর আকণ্ঠবিস্তৃত হাসি। উপভোগ করতে পারলাম না। হঠাৎ চোখ পড়ল, অসহায়ভাবে উৎকণ্ঠা নিয়ে আমার দিকে তাকানো এক বাংলাদেশি ভাইয়ের দিকে, তাঁর চোখ দুটি যেন বলছে, ‘খুব বেড়াতে এসেছেন না, বেড়ান, আমি এখানে পরিশ্রম করব, দেশে বিদেশি মুদ্রা পাঠাব, আর আপনারা সেই ডলার খরচ করে বেড়িয়ে যাবেন। আমাদের দিকে ফিরেও তাকাবেন না! আমাদের সুবিধা-অসুবিধা, আরাম-আয়েশের দিকেও আপনাদের কোনো দৃষ্টি নেই।’ তাঁর সেই দৃষ্টির দিকে তাকাতে পারিনি বেশিক্ষণ। চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিলাম।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বেশির ভাগই ‘অবৈধ’ অভিবাসী। ভিসা অচিরেই হয়ে যাবে, এই আশায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। দেখা হওয়ার পর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সবচেয়ে বড় কারণও এটি। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অনেকেই এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন। সঠিক উত্তর আমি দিতে পারিনি। কেবল মালয়েশিয়াতেই নয়, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এমন লাখ লাখ বাংলাদেশি অবৈধভাবে থেকেও কিন্তু ঠিকই এ দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছেন। প্রতি মাসে পাঠাচ্ছেন হাজার হাজার কোটি টাকা, সেই টাকা দিয়ে মুদ্রাস্ফীতি ডাবল ডিজিটের কাছাকাছি থাকার পরও দেশের মানুষ খেয়ে-পরে বেঁচে আছেন। তাঁদের জন্য আমাদের কি কিছুই করণীয় নেই?
মালয়েশিয়াতেই প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজের উঁচুতলার কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলার ‘সৌভাগ্য’ হয়েছিল। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সন্তান, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন, কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য করে বেশ ভালোভাবেই দিন গুজরান করছেন। বাংলাদেশকে কেন আমরা এখনো ‘মালয়েশিয়া’ কিংবা ‘সিঙ্গাপুর’ বানাতে পারলাম না, এ নিয়ে তাঁদের চিন্তার অন্ত নেই। প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রসঙ্গ তুলতেই তাঁদের মধ্যে কেমন যেন নিস্পৃহ ভাব লক্ষ করলাম। যত দূর জানি, তাঁরা কেউই দেশে টাকা পাঠান না! অবশ্যব্যতিক্রমও যে নেই, তা নয়।
এবার, ঢাকা বিমানবন্দরের একটি দুঃখজনক অভিজ্ঞতা জানাতে চাই। কুয়ালালামপুরে বিমানবন্দরেই ঝিনাইদহের একজন প্রবাসীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। তিনি চার বছর পর দেশে ফিরছেন। চোখে-মুখে খুশির আভা! সঙ্গে নিচ্ছেন একটি ৩৬ ইঞ্চি এলসিডি টেলিভিশন। ঢাকা বিমানবন্দরে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর মালপত্র পরীক্ষা করার স্ক্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। হঠাৎ, ঝিনাইদহের সেই ভাইয়ের এলসিডি টেলিভিশন দেখে কর্তব্যরত একজন ‘সম্মানিত’ বিসিএস ক্যাডারের কাস্টমস কর্মকর্তা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বললেন, ‘সত্যিই কিনেছিস, নাকি কোম্পানির মাল!’ ইঙ্গিতটি খুবই অর্থবহ। অর্থাৎ তিনি জানতে চাচ্ছেন, তিনি এটি সত্যিই নিজের টাকা দিয়ে কিনেছেন, নাকি যে কোম্পানিতে কাজ করেন, সেখান থেকে চুরি করেছেন! ঝিনাইদহের সেই ভাই এই অপমান হজম করেছেন কি করেননি, সঙ্গে সঙ্গেই এক আনসার সদস্য এসে জিজ্ঞেস করল, ‘মানিব্যাগে কত আছে।’ উত্তর, ‘২৫০ রিংগিট।’ সেই আনসার সভ্য ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁর থেকে ১০০ রিংগিট। সবই দেখলাম, অবাক হলাম। মনটা দ্রোহে ভরে উঠল। প্রতিবাদ করতে পারিনি। কারণ, ওই যে আমরা সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণী! পলায়নপর আমাদের মানসিকতা!
নাইর ইকবাল: সাংবাদিক।
nayirdhaka@gmail.com
No comments