কমিশনের প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিন-নির্বাচন কমিশন নিয়োগ-প্রক্রিয়া
সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি ৫১ দফা সংশোধনী প্রস্তাব সুপারিশ করেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন যেসব প্রস্তাব ওই কমিটির কাছে পেশ করেছিল, সেগুলোর একটিও তারা আমলে নেয়নি। খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ-প্রক্রিয়াকে কমিশন সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বিষয়ে বিশেষ কমিটির কাছে কমিশন যে প্রস্তাব করেছিল, তাতে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের পরামর্শ ছিল: প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক, অন্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন বিচারক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগের জন্য কিছু ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করে একটি তালিকা তৈরি করবে। সরকারি ও বিরোধী দলের সমন্বয়ে গঠিত সংসদীয় কার্য উপদেষ্টা কমিটি সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রতিটি পদের জন্য তিনটি করে নাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সেই তালিকার মধ্য থেকে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুজন কমিশনার নিয়োগ করবেন।
নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব যুক্তিসংগত। বিশেষ কমিটির উচিত ছিল প্রস্তাবটি বিবেচনায় নেওয়া। বিশেষ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ-প্রক্রিয়া রদবদল করতে সংবিধান সংশোধনীর প্রয়োজন নেই, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইন পরিবর্তন করেই তা করা যাবে। কিন্তু আমরা জানি না, যথাযোগ্য, নিরপেক্ষ ও সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করা হবে কি না। তা ছাড়া সংবিধানে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা সংযোজন করা যাবে না, তাও তো নয়। বরং সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন এবং যেহেতু তা খুব সহজে ও খুব ঘন ঘন পরিবর্তন করা যায় না, তাই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবিধানে নির্দেশনা থাকলে বিষয়টি অধিকতর স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে।
গণতন্ত্রকে সচল রাখা, অধিকতর কার্যকর ও ফলপ্রসূ করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশনের শক্তিমত্তা, স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতার জন্য এর নিয়োগ-প্রক্রিয়ার গুরুত্ব সর্বাধিক। নির্বাচন কমিশনকে সকল পক্ষের কাছে, বিশেষত বিরোধী দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে—এটাও মনে রাখা দরকার। তাই বিশেষ কমিটি নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়নি। এই হতাশাব্যঞ্জক বিষয়টি মনে রেখেও আমরা বলি, এখানেই প্রক্রিয়াটি শেষ হয়ে যায়নি। বিশেষ কমিটির সুপারিশ বিল আকারে সংসদে উপস্থাপিত হওয়ার আগে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে যাবে। সেখানে অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবগুলো আমলে নেওয়া উচিত।
নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব যুক্তিসংগত। বিশেষ কমিটির উচিত ছিল প্রস্তাবটি বিবেচনায় নেওয়া। বিশেষ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ-প্রক্রিয়া রদবদল করতে সংবিধান সংশোধনীর প্রয়োজন নেই, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইন পরিবর্তন করেই তা করা যাবে। কিন্তু আমরা জানি না, যথাযোগ্য, নিরপেক্ষ ও সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করা হবে কি না। তা ছাড়া সংবিধানে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা সংযোজন করা যাবে না, তাও তো নয়। বরং সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন এবং যেহেতু তা খুব সহজে ও খুব ঘন ঘন পরিবর্তন করা যায় না, তাই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবিধানে নির্দেশনা থাকলে বিষয়টি অধিকতর স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে।
গণতন্ত্রকে সচল রাখা, অধিকতর কার্যকর ও ফলপ্রসূ করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশনের শক্তিমত্তা, স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতার জন্য এর নিয়োগ-প্রক্রিয়ার গুরুত্ব সর্বাধিক। নির্বাচন কমিশনকে সকল পক্ষের কাছে, বিশেষত বিরোধী দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে—এটাও মনে রাখা দরকার। তাই বিশেষ কমিটি নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়নি। এই হতাশাব্যঞ্জক বিষয়টি মনে রেখেও আমরা বলি, এখানেই প্রক্রিয়াটি শেষ হয়ে যায়নি। বিশেষ কমিটির সুপারিশ বিল আকারে সংসদে উপস্থাপিত হওয়ার আগে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে যাবে। সেখানে অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবগুলো আমলে নেওয়া উচিত।
No comments