ঢাকায় ভূমিকম্প-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে
রাজধানীতে গতকাল ৪.৬ মাত্রার অর্থাৎ মৃদু ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। তাতেও মানুষ খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। কারণ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলটি ছিল খুবই কাছে এবং কম্পনও ছিল শক্তিশালী। অনেকে দৌড়ে ভবন থেকে নেমে গেছেন। হয়তো হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকে আহতও হয়ে থাকবেন।
কিন্তু এভাবে সত্যিকারের ভূমিকম্প পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে কি? এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তুতিই বা কতটুকু?
আসলে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের না আছে সচেতনতা, না আছে প্রস্তুতি। বাড়িঘর তৈরিতে কোনো নিয়মনীতি মানা হয় না। উদ্ধারকারী যন্ত্রপাতি নেই বললেই চলে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা নগরের অধিকাংশ স্থানে এমন সব গলি-ঘুপচিতে বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে, যেখানে যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধারকারী দল পৌঁছতেই পারবে না। রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে কেউ রাজি নন। বাড়ি তৈরির আগে মাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ভিত তৈরি করা কিংবা বাড়িগুলোকে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী করে গড়ে তোলার ওপর কেউই নজর দেন না। ডোবানালা ভরাট করে কোনো রকমে একটি ঘর তুলতে পারলেই হলো। যাঁরা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে যান, তাঁরাও কেউ দেখেন না যে ভবনটি ভূমিকম্প-প্রতিরোধী কি না; এই মর্মে সার্টিফিকেট আছে কি না। যাঁদের এসব অনিয়ম ঠেকানোর কথা ছিল, তাঁরা উৎকোচের কাছে বিক্রি হয়ে যান। ফলে এক ধরনের নৈরাজ্যের মধ্যেই বেড়ে চলেছে ঢাকা মহানগরী। তাই এখানে ভূমিকম্পের প্রয়োজন হয় না, এমনিতেই অনেক ভবন দেবে যায়, হেলে পড়ে কিংবা ধসে পড়ে। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ীতে পর পর দুটি বহুতল ভবন ধসে কিংবা সাভারের স্পেকট্রাম ভবন ধসে পড়ার দুঃসহ স্মৃতি নিশ্চয়ই আমরা ভুলে যাইনি। একেকটি ভবনে উদ্ধারকাজ চালাতে এক মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকায় ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হলে ৭০ হাজার ভবন ধসে পড়বে। এই গতিতে উদ্ধারকাজ চললে ৭০ হাজার মাস বা প্রায় ছয় হাজার বছর লেগে যাবে। আহত লোকজন না খেয়ে এবং চিকিৎসা ও পানির অভাবেই মারা যাবে। এই ঢাকাকে তখন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
সব ক্ষেত্রেই আমাদের রয়েছে এক অসীম উদাসীনতা। তা না হলে স্বাধীনতার চার দশক পরও আমাদের অবস্থা এতটা নাজুক থাকবে কেন? ২০০৮ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছিল। চীন মাত্র সাত দিনে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা সম্পন্ন করেছিল। আমাদের বর্তমান সামর্থ্য অনুযায়ী একই কাজ করতে কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে। কিন্তু কেন? আমাদের আর্থিক সামর্থ্য কম- সেটা স্বীকার করি। কিন্তু অতীতে বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী, এমপি কিংবা তাঁদের সন্তানরা যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেন, তার ১ শতাংশ অর্থও কি আমরা এ খাতে ব্যয় করতে পারতাম না? আসলে আর্থিক অনটনের চেয়েও বড় হচ্ছে সদিচ্ছার অভাব। আর দুর্যোগের পর উদ্ধারকাজ যতটা জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি নিয়মনীতি মেনে স্থাপনা তৈরি করা এবং নিয়মনীতি মানা। সেটি না করে ব্যক্তিবিশেষ যেমন অপরাধ করছে, তেমনি ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যথার্থ বাস্তবায়ন না করে কিংবা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও জঘন্য অপরাধ করছেন। উভয় ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি ভবনে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যা দেখে ভাড়াটেরা নিশ্চিত হয়ে ভাড়া নিতে পারেন। নির্মাণকাজের মান নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। সে বিষয়েও তদারকি জোরদার করতে হবে। আমরা আশা করি, ধ্বংসযজ্ঞে পৌঁছানোর আগেই রাষ্ট্রীয়ভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসলে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের না আছে সচেতনতা, না আছে প্রস্তুতি। বাড়িঘর তৈরিতে কোনো নিয়মনীতি মানা হয় না। উদ্ধারকারী যন্ত্রপাতি নেই বললেই চলে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা নগরের অধিকাংশ স্থানে এমন সব গলি-ঘুপচিতে বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে, যেখানে যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধারকারী দল পৌঁছতেই পারবে না। রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে কেউ রাজি নন। বাড়ি তৈরির আগে মাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ভিত তৈরি করা কিংবা বাড়িগুলোকে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী করে গড়ে তোলার ওপর কেউই নজর দেন না। ডোবানালা ভরাট করে কোনো রকমে একটি ঘর তুলতে পারলেই হলো। যাঁরা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে যান, তাঁরাও কেউ দেখেন না যে ভবনটি ভূমিকম্প-প্রতিরোধী কি না; এই মর্মে সার্টিফিকেট আছে কি না। যাঁদের এসব অনিয়ম ঠেকানোর কথা ছিল, তাঁরা উৎকোচের কাছে বিক্রি হয়ে যান। ফলে এক ধরনের নৈরাজ্যের মধ্যেই বেড়ে চলেছে ঢাকা মহানগরী। তাই এখানে ভূমিকম্পের প্রয়োজন হয় না, এমনিতেই অনেক ভবন দেবে যায়, হেলে পড়ে কিংবা ধসে পড়ে। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ীতে পর পর দুটি বহুতল ভবন ধসে কিংবা সাভারের স্পেকট্রাম ভবন ধসে পড়ার দুঃসহ স্মৃতি নিশ্চয়ই আমরা ভুলে যাইনি। একেকটি ভবনে উদ্ধারকাজ চালাতে এক মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকায় ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হলে ৭০ হাজার ভবন ধসে পড়বে। এই গতিতে উদ্ধারকাজ চললে ৭০ হাজার মাস বা প্রায় ছয় হাজার বছর লেগে যাবে। আহত লোকজন না খেয়ে এবং চিকিৎসা ও পানির অভাবেই মারা যাবে। এই ঢাকাকে তখন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
সব ক্ষেত্রেই আমাদের রয়েছে এক অসীম উদাসীনতা। তা না হলে স্বাধীনতার চার দশক পরও আমাদের অবস্থা এতটা নাজুক থাকবে কেন? ২০০৮ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছিল। চীন মাত্র সাত দিনে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা সম্পন্ন করেছিল। আমাদের বর্তমান সামর্থ্য অনুযায়ী একই কাজ করতে কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে। কিন্তু কেন? আমাদের আর্থিক সামর্থ্য কম- সেটা স্বীকার করি। কিন্তু অতীতে বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী, এমপি কিংবা তাঁদের সন্তানরা যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেন, তার ১ শতাংশ অর্থও কি আমরা এ খাতে ব্যয় করতে পারতাম না? আসলে আর্থিক অনটনের চেয়েও বড় হচ্ছে সদিচ্ছার অভাব। আর দুর্যোগের পর উদ্ধারকাজ যতটা জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি নিয়মনীতি মেনে স্থাপনা তৈরি করা এবং নিয়মনীতি মানা। সেটি না করে ব্যক্তিবিশেষ যেমন অপরাধ করছে, তেমনি ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যথার্থ বাস্তবায়ন না করে কিংবা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও জঘন্য অপরাধ করছেন। উভয় ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি ভবনে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যা দেখে ভাড়াটেরা নিশ্চিত হয়ে ভাড়া নিতে পারেন। নির্মাণকাজের মান নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। সে বিষয়েও তদারকি জোরদার করতে হবে। আমরা আশা করি, ধ্বংসযজ্ঞে পৌঁছানোর আগেই রাষ্ট্রীয়ভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments