প্রযুক্তি জগতের পথপ্রদর্শক by একরামুল হক শামীম
মানুষটি পৃথিবীর আলো দেখবেন কি-না এই নিয়েই সন্দেহ ছিল। কারণ তার আসল মা ছিলেন একটি কলেজের অবিবাহিত তরুণী গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী। যে মানুষটি এক সময় পৃথিবী বদলে দেবে তার পক্ষেই সিদ্ধান্ত গেল মায়ের। অবিবাহিত মা সিদ্ধান্ত নিলেন জন্মের পর তার সন্তানটিকে দত্তক দিয়ে দেবেন। খুব করেই চেয়েছিলেন এমন একটি পরিবারে তিনি দত্তক দিতে, যে পরিবারের দত্তক বাবা-মায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকে। সেই অনুযায়ী একটি
পরিবার খুঁজে পাওয়া গেল। কিন্তু তারা আগ্রহী কন্যাশিশু দত্তক নিতে। পরবর্তী ছেলেটি যখন জন্মগ্রহণ করে একটি পরিবার রাজি হলো তাকে দত্তক নিতে। কিন্তু জানা গেল, দত্তক মা বিশ্ববিদ্যালয় আর দত্তক বাবা স্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেনি। নবজাতকের মা দত্তক দিতে রাজি হলেন এই শর্তে যে, ছেলেটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট করতে হবে। কিন্তু সেই ছেলেটি পরে গ্র্যাজুয়েট হতে পারেনি। তাতে কী? তিনি তার প্রতিভা আর পরিশ্রমের যুগল সম্মিলনে মাতিয়েছেন সারাবিশ্ব। ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মানুষটির নাম স্টিভ জবস। অনেকেই তাকে চিনে থাকি অ্যাপলের স্টিভ জবস নামে।
কোটি কোটি তরুণের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রে থাকা স্টিভ জবস চলে গেলেন। ৫ অক্টোবর ৫৬ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আলতোয় মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। এর আগে অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত আগস্টে অসুস্থতাজনিত কারণেই নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের সিইও পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। যদিও তিনি পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন। স্টিভ জবসের মৃত্যু প্রযুক্তির জগতে বড় শূন্যতা তৈরি করেছে। অ্যাপল তাদের ওয়েবসাইটে স্টিভ জবসকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছে এভাবে_ স্টিভ জবস [১৯৫৫-২০১১], অ্যাপল হারিয়েছে তার পথপ্রদর্শক ও সৃষ্টিশীল প্রতিভাকে আর পৃথিবী হারিয়েছে একজন অসাধারণ মানুষকে।
স্টিভ জবস আমৃত্য সংগ্রাম করে গেছেন। গ্র্যাজুয়েট হওয়ার ইচ্ছায় ভর্তি হয়েছিলেন রিড কলেজে। কিন্তু ছয় মাসের মাথাতেই রিড কলেজের আনুষ্ঠানিক পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তখন শিখেছিলেন ক্যালিগ্রাফি। তা কাজে লেগেছিল দশ বছর পর ম্যাকিনটোস কম্পিউটারের ফন্ট ডিজাইন করতে গিয়ে। রিড কলেজ ছেড়ে দেওয়ার পর স্টিভ জবস কষ্টকর সময় পার করেছিলেন। হলে তার কোনো রুম ছিল না। ঘুমাতেন বন্ধুদের রুমের ফ্লোরে। ব্যবহৃত কোকের বোতল ফেরত দিয়ে যা টাকা পেতেন তা দিয়ে খাবার কিনতেন। মাইলের পর মাইল পেরিয়ে একটি মন্দিরে যেতেন ভালো খাবার খাওয়ার জন্য। এই সংগ্রামময় সময় পার করার জন্যই স্টিভ জবস পরবর্তী জীবনে নানা সংকটময় সময় সহজেই পার করতে পেরেছিলেন। ১৯৭৬ সালে স্টিভ জবস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অ্যাপল। ১৯৮৫ সালে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি চাকরিচ্যুত হন। তারপর গড়ে তোলেন নেক্সটার, পিক্সারের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৬ সালে স্টিভ জবস পুনরায় ফিরে আসেন অ্যাপলে। অ্যাপল হয়ে ওঠে বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি পণ্যের কোম্পানিগুলোর একটি।
২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তৃতায় তিনি মৃত্যু নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন। স্টিভ জবসের বয়স যখন ১৭, তখন তিনি একটি উদ্ধৃতি পড়েছিলেন। উদ্ধৃতি এমন_ তুমি যদি প্রতিটি দিন এটি ভেবে পার করো যে আজই তোমার জীবনের শেষ দিন, তাহলে তুমি নিশ্চিতভাবে সঠিক হবে। সারা জীবন এই দর্শন মেনে চলেছিলেন স্টিভ জবস। প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করতেন_ আজ যদি আমার জীবনের শেষ দিন হয় তাহলে আমি যা যা করতে যাচ্ছি তাই কি করতাম, নাকি অন্য কিছু করতাম? প্রশ্নের উত্তর না হলে কাজে আসত পরিবর্তন। স্টিভ জবস সেই বক্তৃতায় বলেছিলেন_ 'কেউই মরতে চায় না, এমনকি যে মানুষটি স্বর্গে যেতে চায় সেও তাড়াতাড়ি মরে যেতে চায় না। কিন্তু এত কিছুর পরও মৃত্যু আমাদের গন্তব্য। কেউই কখনও এ থেকে উদ্ধার পায়নি। মৃত্যুই সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।' ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর নিজের বলা 'গন্তব্যের' দিকে চলে গেছেন স্টিভ জবস। মৃত্যুর পরও নিশ্চিতভাবে তিনি থাকবেন মানুষের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রে। প্রযুক্তি জগতের এই পথপ্রদর্শকের
প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
কোটি কোটি তরুণের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রে থাকা স্টিভ জবস চলে গেলেন। ৫ অক্টোবর ৫৬ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আলতোয় মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। এর আগে অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত আগস্টে অসুস্থতাজনিত কারণেই নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের সিইও পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। যদিও তিনি পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন। স্টিভ জবসের মৃত্যু প্রযুক্তির জগতে বড় শূন্যতা তৈরি করেছে। অ্যাপল তাদের ওয়েবসাইটে স্টিভ জবসকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছে এভাবে_ স্টিভ জবস [১৯৫৫-২০১১], অ্যাপল হারিয়েছে তার পথপ্রদর্শক ও সৃষ্টিশীল প্রতিভাকে আর পৃথিবী হারিয়েছে একজন অসাধারণ মানুষকে।
স্টিভ জবস আমৃত্য সংগ্রাম করে গেছেন। গ্র্যাজুয়েট হওয়ার ইচ্ছায় ভর্তি হয়েছিলেন রিড কলেজে। কিন্তু ছয় মাসের মাথাতেই রিড কলেজের আনুষ্ঠানিক পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তখন শিখেছিলেন ক্যালিগ্রাফি। তা কাজে লেগেছিল দশ বছর পর ম্যাকিনটোস কম্পিউটারের ফন্ট ডিজাইন করতে গিয়ে। রিড কলেজ ছেড়ে দেওয়ার পর স্টিভ জবস কষ্টকর সময় পার করেছিলেন। হলে তার কোনো রুম ছিল না। ঘুমাতেন বন্ধুদের রুমের ফ্লোরে। ব্যবহৃত কোকের বোতল ফেরত দিয়ে যা টাকা পেতেন তা দিয়ে খাবার কিনতেন। মাইলের পর মাইল পেরিয়ে একটি মন্দিরে যেতেন ভালো খাবার খাওয়ার জন্য। এই সংগ্রামময় সময় পার করার জন্যই স্টিভ জবস পরবর্তী জীবনে নানা সংকটময় সময় সহজেই পার করতে পেরেছিলেন। ১৯৭৬ সালে স্টিভ জবস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অ্যাপল। ১৯৮৫ সালে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি চাকরিচ্যুত হন। তারপর গড়ে তোলেন নেক্সটার, পিক্সারের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৬ সালে স্টিভ জবস পুনরায় ফিরে আসেন অ্যাপলে। অ্যাপল হয়ে ওঠে বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি পণ্যের কোম্পানিগুলোর একটি।
২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তৃতায় তিনি মৃত্যু নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন। স্টিভ জবসের বয়স যখন ১৭, তখন তিনি একটি উদ্ধৃতি পড়েছিলেন। উদ্ধৃতি এমন_ তুমি যদি প্রতিটি দিন এটি ভেবে পার করো যে আজই তোমার জীবনের শেষ দিন, তাহলে তুমি নিশ্চিতভাবে সঠিক হবে। সারা জীবন এই দর্শন মেনে চলেছিলেন স্টিভ জবস। প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করতেন_ আজ যদি আমার জীবনের শেষ দিন হয় তাহলে আমি যা যা করতে যাচ্ছি তাই কি করতাম, নাকি অন্য কিছু করতাম? প্রশ্নের উত্তর না হলে কাজে আসত পরিবর্তন। স্টিভ জবস সেই বক্তৃতায় বলেছিলেন_ 'কেউই মরতে চায় না, এমনকি যে মানুষটি স্বর্গে যেতে চায় সেও তাড়াতাড়ি মরে যেতে চায় না। কিন্তু এত কিছুর পরও মৃত্যু আমাদের গন্তব্য। কেউই কখনও এ থেকে উদ্ধার পায়নি। মৃত্যুই সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।' ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর নিজের বলা 'গন্তব্যের' দিকে চলে গেছেন স্টিভ জবস। মৃত্যুর পরও নিশ্চিতভাবে তিনি থাকবেন মানুষের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রে। প্রযুক্তি জগতের এই পথপ্রদর্শকের
প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
No comments