পবিত্র কোরআনের আলো-যারা সন্তান হত্যা করে এবং হালালকে হারাম করে, তারা নিজেদের ক্ষতি করে
১৩৮. ওয়া ক্বা-লূ হা-যিহি আনআ'-মুন ওয়া হারছুন হিজরুল্ লা-ইয়াত্বআ'মুহা ইল্লা মান্ নাশা-উ বিযা'মিহিম ওয়া আনআ'-মুন হুর্রিমাত্ যুহূরুহা ওয়া আনআ'-মুল্ লা-ইয়ায্কুরূনাছ্মাল্লা-হি আ'লাইহাফ্তিরা-আন আ'লাইহি; ছাইয়াজযীহিম বিমা কা-নূ ইয়াফ্তারূন। ১৩৯. ওয়া ক্বা-লূ মা ফী বুত্বূনি হা-যিহিল আনআ'-মি খা-লিসাতুন লিযুকূরিনা ওয়া মুহার্রামুন আ'লা আযওয়া-জিনা; ওয়া ইয়্যাঁকুম্ মাইতাতান ফাহুম ফীহি শুরাকা-উ; ছাইয়াজ্যীহিম ওয়াস্ফাহুম;
ইন্নাহূ হাকীমুন আ'লীম। ১৪০. ক্বাদ খাছিরাল্লাযীনা ক্বাতালূ আওলা-দাহুম ছাফাহাম্ বিগাইরি ই'লমিন ওয়া হার্রামূ মা রাযাক্বাহুমুল্লা-হুফ্তিরা-আন আ'লাল্লাহি; ক্বাদ দ্বাল্লূ ওয়া মা কা-নূ মুহ্তাদীন।
[সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ১৩৮-১৪০]
অনুবাদ
১৩৮. তারা বলে, এসব গবাদি পশু এবং এসব খাদ্যশস্য নিষিদ্ধ, আমরা যাকে চাইব, সে ছাড়া অন্য কেউ তা খেতে পারবে না। এসব তারা মনগড়া ধারণা থেকে বলে। আবার কিছু গবাদি পশু আছে, যেগুলোর পিঠে চড়া বা বোঝা ওঠানো তারা হারাম মনে করে; আবার কিছু গবাদি পশু (জবাই করার সময় তারা) আল্লাহর নাম স্মরণ করা নিষিদ্ধ মনে করে। আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করার উদ্দেশ্যেই তারা এসব অপচেষ্টা করে। অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তাদের এসব মিথ্যাচারের প্রতিফল প্রদান করবেন।
১৩৯. তারা বলে এসব গবাদি পশুর পেটে যা কিছু আছে, তা শুধু আমাদের পুরুষদের জন্যই হালাল এবং স্ত্রীদের জন্য হারাম। তবে যদি এ পশুর পেটে মরা কিছু থাকে তাহলে তাতে নারী-পুরুষ উভয়েই সমান অংশীদার। আল্লাহ তায়ালা অচিরেই তাদের এ ধরনের উদ্ভট কথার প্রতিফল প্রদান করবেন। নিশ্চয়ই তিনি প্রজ্ঞাময় ও সর্বজ্ঞ।
১৪০. এরা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের দলে, যারা নিজেদের সন্তানদের অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতাবশত হত্যা করছে, যারা আল্লাহর দান করা থেকে নিজেদের জন্য হারাম করছে এবং আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে মিথ্যা কথা রচনা করছে এরা বিপথগামী; এরা কখনো সৎপথের অনুসারী ছিল না।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুশরিক কুরাইশদের কিছু কুসংস্কার, অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতার আলোচনা করা হয়েছে এবং এভাবে তারা যে তাদের বিপথগামিতার পথ আরো প্রশস্ত করেছে, তা-ই বর্ণনা করা হয়েছে। তারা বাহীরা, স্বায়েবা, হামী, ওয়াসীলা প্রভৃতি ধরনের গৃহপালিত পশুর ওপর আরোহণ করা, সেগুলোর দুধ দোহন করা এবং সেগুলো জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করা নিষিদ্ধ মনে করত। ১৩৮ নম্বর আয়াতে তাদের পশু ও খাদ্যসংক্রান্ত কুসংস্কারগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। ১৩৯ নম্বর আয়াতে জবাই করা পশুর পেটে থাকা বাচ্চা সম্পর্কে যে কতকগুলো কুসংস্কার প্রচলিত ছিল, সেগুলো বিস্তারিত বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী-পুরুষদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী কতকগুলো কুসংস্কারের কথা বলা হয়েছে। কুসংস্কারগুলোর মাধ্যমে নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করার একটা প্রবণতা ছিল। ইসলাম নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করার মানসিকতা স্বীকার করে না_এটাও এই আয়াতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। অবশেষে ১৪০ নম্বর আয়াতে কন্যাসন্তান হত্যাকারী, আল্লাহর দান করা হালাল খাদ্যগুলো হারাম বলে বর্জন করার নানা কুসংস্কার প্রবর্তনকারী এবং আল্লাহর ওপর নানা মিথ্যাচার প্রচারকারীদের তিরস্কার করা হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এসব কাজের মাধ্যমে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি সাধন করছে। উল্লেখ করা প্রয়োজন, জাহেলিয়াত যুগের আরবে কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই এদের জীবন্ত কবর দেওয়ার মতো অমানবিক কুপ্রথা প্রচলিত ছিল। সবাই যে তা করত এমন নয়। তবে কেউ কেউ তা করত এবং সামাজিকভাবে তা সমালোচিত বা নিন্দনীয় ছিল না। এই কুপ্রথাকেই এখানে তিরস্কার করা হয়েছে। এই আয়াতটিতে কন্যাসন্তান হত্যার কুপ্রথা, হালাল খাদ্যকে হারাম করার নানা রকম কুসংস্কার এবং আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপের মূর্খতা_এই তিনটি বিষয়কে একত্রে উল্লেখ করে মুশরিকদের তিরস্কার করা হয়েছে এবং জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি সাধন করছে এবং ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ১৩৮-১৪০]
অনুবাদ
১৩৮. তারা বলে, এসব গবাদি পশু এবং এসব খাদ্যশস্য নিষিদ্ধ, আমরা যাকে চাইব, সে ছাড়া অন্য কেউ তা খেতে পারবে না। এসব তারা মনগড়া ধারণা থেকে বলে। আবার কিছু গবাদি পশু আছে, যেগুলোর পিঠে চড়া বা বোঝা ওঠানো তারা হারাম মনে করে; আবার কিছু গবাদি পশু (জবাই করার সময় তারা) আল্লাহর নাম স্মরণ করা নিষিদ্ধ মনে করে। আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করার উদ্দেশ্যেই তারা এসব অপচেষ্টা করে। অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তাদের এসব মিথ্যাচারের প্রতিফল প্রদান করবেন।
১৩৯. তারা বলে এসব গবাদি পশুর পেটে যা কিছু আছে, তা শুধু আমাদের পুরুষদের জন্যই হালাল এবং স্ত্রীদের জন্য হারাম। তবে যদি এ পশুর পেটে মরা কিছু থাকে তাহলে তাতে নারী-পুরুষ উভয়েই সমান অংশীদার। আল্লাহ তায়ালা অচিরেই তাদের এ ধরনের উদ্ভট কথার প্রতিফল প্রদান করবেন। নিশ্চয়ই তিনি প্রজ্ঞাময় ও সর্বজ্ঞ।
১৪০. এরা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের দলে, যারা নিজেদের সন্তানদের অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতাবশত হত্যা করছে, যারা আল্লাহর দান করা থেকে নিজেদের জন্য হারাম করছে এবং আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে মিথ্যা কথা রচনা করছে এরা বিপথগামী; এরা কখনো সৎপথের অনুসারী ছিল না।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুশরিক কুরাইশদের কিছু কুসংস্কার, অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতার আলোচনা করা হয়েছে এবং এভাবে তারা যে তাদের বিপথগামিতার পথ আরো প্রশস্ত করেছে, তা-ই বর্ণনা করা হয়েছে। তারা বাহীরা, স্বায়েবা, হামী, ওয়াসীলা প্রভৃতি ধরনের গৃহপালিত পশুর ওপর আরোহণ করা, সেগুলোর দুধ দোহন করা এবং সেগুলো জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করা নিষিদ্ধ মনে করত। ১৩৮ নম্বর আয়াতে তাদের পশু ও খাদ্যসংক্রান্ত কুসংস্কারগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। ১৩৯ নম্বর আয়াতে জবাই করা পশুর পেটে থাকা বাচ্চা সম্পর্কে যে কতকগুলো কুসংস্কার প্রচলিত ছিল, সেগুলো বিস্তারিত বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী-পুরুষদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী কতকগুলো কুসংস্কারের কথা বলা হয়েছে। কুসংস্কারগুলোর মাধ্যমে নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করার একটা প্রবণতা ছিল। ইসলাম নারীদের হেয় প্রতিপন্ন করার মানসিকতা স্বীকার করে না_এটাও এই আয়াতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। অবশেষে ১৪০ নম্বর আয়াতে কন্যাসন্তান হত্যাকারী, আল্লাহর দান করা হালাল খাদ্যগুলো হারাম বলে বর্জন করার নানা কুসংস্কার প্রবর্তনকারী এবং আল্লাহর ওপর নানা মিথ্যাচার প্রচারকারীদের তিরস্কার করা হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এসব কাজের মাধ্যমে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি সাধন করছে। উল্লেখ করা প্রয়োজন, জাহেলিয়াত যুগের আরবে কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই এদের জীবন্ত কবর দেওয়ার মতো অমানবিক কুপ্রথা প্রচলিত ছিল। সবাই যে তা করত এমন নয়। তবে কেউ কেউ তা করত এবং সামাজিকভাবে তা সমালোচিত বা নিন্দনীয় ছিল না। এই কুপ্রথাকেই এখানে তিরস্কার করা হয়েছে। এই আয়াতটিতে কন্যাসন্তান হত্যার কুপ্রথা, হালাল খাদ্যকে হারাম করার নানা রকম কুসংস্কার এবং আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপের মূর্খতা_এই তিনটি বিষয়কে একত্রে উল্লেখ করে মুশরিকদের তিরস্কার করা হয়েছে এবং জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি সাধন করছে এবং ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments