শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের খিস্তি-খেউড়
বচনে জুড়ি নেই ক্ষমতাসীন সরকারের কর্তাব্যক্তিদের। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত সবাই এ বিষয়ে যেন সিদ্ধহস্ত। বিশেষ করে বিরোধী দলের প্রতি আক্রমণাত্মক বক্তব্যে তাদের তুলনা হয় না। পাশাপাশি তারা গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর প্রতিও বিষোদগার করেন।
তাদের বক্তব্য বেশিরভাগ সময় রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভেদ করে অশ্লীলতার পর্যায়ে চলে যায়। নতুন নতুন শব্দ চয়নের মাধ্যমে ছন্দ মিলিয়ে তারা বিরোধী দলকে আক্রমণ করেন। সরকারের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও সমান তালে বিরোধী দলকে ঘায়েল করে এসব অশালীন বক্তব্য দেন। এমন বক্তব্যের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন। তার বহুল আলোচিত বক্তব্য—‘একটির বদলে দশটি লাশ ফেলা হবে।’ এছাড়া ১০ টাকা কেজি চাল ও ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার বহুল আলোচিত বক্তব্যটি শেখ হাসিনাই দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে দেয়া এসব বক্তব্যের আংশিক পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো—
গত ৩০ নভেম্বর সংসদের একাদশতম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিভক্তিকরণে বিরোধিতাকারী বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বলেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে ঢাকা সিটিকে দু’ভাগ করা হয়েছে। দু’ভাগ নয়, আমাদের ঠাকা থাকলে ঢাকা চার ভাগ করতাম। একই দিনে তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই ছেলেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বলেন, আমার সন্তানরা লেখাপড়া শিখে মানুষ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে টাকা নিয়ে উনার (বেগম জিয়ার) ছেলেদের একজন ‘মানি লন্ডারিংয়ে’ মাস্টার্স করেছে, আরেকজন ‘ড্রাগে’ করেছে ডিগ্রি পাস।
গত ৩০ নভেম্বর সংসদের একাদশতম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিভক্তিকরণে বিরোধিতাকারী বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বলেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে ঢাকা সিটিকে দু’ভাগ করা হয়েছে। দু’ভাগ নয়, আমাদের ঠাকা থাকলে ঢাকা চার ভাগ করতাম। একই দিনে তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই ছেলেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বলেন, আমার সন্তানরা লেখাপড়া শিখে মানুষ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে টাকা নিয়ে উনার (বেগম জিয়ার) ছেলেদের একজন ‘মানি লন্ডারিংয়ে’ মাস্টার্স করেছে, আরেকজন ‘ড্রাগে’ করেছে ডিগ্রি পাস।
ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সম্পর্কে ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে ২০১০ সালে ১৬ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণ আমাদের যে হারে ভোট দিয়েছে তাতে ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তি করতেই পারি। নির্বাচন এলেই মহলবিশেষের ভারতবিরোধী ক্যাম্পেইন চলে। এটা তাদের স্বভাবজাত হয়ে গেছে, চাইলেও আর বদলানো যাবে না।
জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার পক্ষে যুক্তি দিয়ে ২০১০ এর ১৯ ফেব্রুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, অতীত থেকে যারা শিক্ষা নেয়নি, তাদের শেখানোর প্রয়োজন রয়েছে। তাদের শিক্ষা দিতেই জিয়ার নাম বদল হয়েছে। তারা একবারও ভাবেনি, নাম বদলের খেলা ভালো হবে না। ভাবেনি তাদেরও খারাপ দিন আসতে পারে। আমরা দু’-একটা নাম পরিবর্তন করাতেই এত জ্বালা। তাদের করা আড়াইশ’ প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হলে কেমন লাগবে? ২০১০ সালের বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিথ্যা বলা বিএনপির অভ্যাস।
বিএনপি-জামায়াত জোটের কমিশন খাওয়ার কারণে দেশে নতুন কোনো বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপিত হয়নি অভিযোগ করে ২৩ মে ২০১০ এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কমিশন খাওয়ার কোনো নিয়ত নেই। আগে কমিশন খাইওনি, আগামীতেও খাব না। আমাদের কমিশন খাওয়ার প্রয়োজনও নেই। ৩০ আগস্ট ২০১০ তারিখে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ওরা জালিয়াত, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। দেশের মানুষের সুখ-শান্তি তাদের ভালো লাগে না।
২০১০ সালে ছাত্রলীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের গ্রুপ শক্তিশালী করতে গিয়ে ছাত্রলীগে যারা ছাত্রদল ও শিবির কর্মীদের ঢুকিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা অপরাধ করবে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকারের দুই বছর চলে যাচ্ছে, এখন থেকে ভাটার টান লাগবে। সরকারকে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হবে। মানুষ সরকারের কাজের মূল্যায়ন করবে। জানতে চাইবে কোন মন্ত্রণালয় ভালো করেছে, কোন মন্ত্রণালয় খারাপ করেছে।
এ বছরের ৯ জানুয়ারি শেখ হাসিনা রংপুরে গিয়ে বলেন, রংপুরের বউ হিসেবেও তো একটা দায়িত্ব আছে। তাই আপনাদের উন্নয়নের সব দায়িত্ব আমি নিয়ে নিচ্ছি। ৩ ফেব্রুয়ারি বলেন, ১০ টাকা কেজি চালের কথা এবার নয়, ’৯৬ সালে বলেছিলাম। ১ মে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাকে এক পাল্লায় মাপবেন না। ১৩ অক্টোবর শেখ হাসিনা বলেন, মহাজোট সরকারের উন্নয়ন দেখে খালেদা জিয়া পাগল হয়ে গেছেন। ২৫ আগস্ট বলেন, দেশে জিনিসপত্রের দাম এখনও কম। ২৭ নভেম্বর বলেন, খালেদা জিয়া ঘোমটা খুলে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০ এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রীদের দুর্নীতি নিয়ে আজ কথা উঠেছে। এমপি-মন্ত্রীদের মনে রাখতে হবে, নিজেদের দিন বদল করতে আপনাদের পাঠানো হয়নি, ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য বদলানোই হচ্ছে আপনাদের কাজ। ওই বছরের ডিসেম্বরে ওবায়দুল কাদের বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের দিয়ে ‘দিন বদল’ সম্ভব নয় মন্তব্য করে বলেন, অফিসে অফিসে প্রসাধনীর মতো কম্পিউটার সাজিয়ে রাখলেই দিন বদল হয় না। যারা দিন বদলের কথা বলে মুখে ফেনা তুলছেন তাদের মন-মানসিকতাই এখনও বদলায়নি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়া সরকারের প্রশাসনিক কাজ এনালগ পদ্ধতিতে চলছে।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর কাদের নিজের দায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বলেন, ঢেউ না থাকলে নদী কিসের? ঢেউয়ের মধ্যে সাঁতার কাটাই চ্যালেঞ্জ। আর কোনো চ্যালেঞ্জই অনতিক্রমযোগ্য নয়। এরপর অন্য এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পথ অনেক, পেট্রল কম। গত ২৭ নভেম্বর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে এমন পাতলা ঈমানের লোক নেই যে বিএনপি ডাকলেই সাড়া দেবে।
৩০ নভেম্বর ২০১০ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বর্তমান রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিরোধী দলে থাকতে আমরাও কোনো খুঁত বের করেই বলেছি, সংসদে যাব না। এর আগে এক অনুষ্ঠানে সুরঞ্জিত সেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে তাচ্ছিল্য করে বলেন, সে (ব্যারিস্টার মওদুদ) একজন সফল জোকার। তার মতো বহুরূপী আমি আর দেখিনি। অপর এক অনুষ্ঠানে সুরঞ্জিত সেন বলেন, বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না। রেলের সমস্যা সমাধান বিষয়ে নতুন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত : কোন অন্ধকারে কালো বেড়ালটি কীভাবে লুকিয়ে রয়েছে তা খুঁজে দেখতে চাই।
২০১০ সালের আগস্টে এক অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, দিনের আলোতেই ভারতের সঙ্গে ঋণ সহায়তা চুক্তি হয়েছে। এ নিয়ে কোনো লুকোচুরি হয়নি। সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে এ চুক্তির বিষয় প্রকাশিত হয়েছে। তাই অযথা এ নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে লাভ হবে না। আর কেউ ফুঁ দিলে সরকার উড়ে যাবে না বা পতন হবে না।
৭ মে ২০১০ এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, এরশাদ জিয়ার হত্যাকারী। বেগম খালেদা জিয়া তার কাছ থেকে বাড়ি এবং ছেলেদের ভরণ-পোষণের টাকা নিয়ে আঁতাত কাকে বলে তার প্রমাণ দিয়েছেন।
সরকারের বিরুদ্ধে লন্ডনভিত্তিক ম্যাগাজিনে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর গত ১৩ আগস্ট মতিয়া চৌধুরী বলেন, সাপ্তাহিক ইকনোমিস্ট জঙ্গিবাদের টাকায় রিপোর্ট করছে। গত ১৩ মে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই ধর্মীয় শিক্ষাকে শিক্ষানীতিতে বাধ্যতামূলক করেছে। ঈমান-আমান ঠিক রেখে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। ২ জুলাই তিনি বলেন, চোরাচালান রোধে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ানো হয়েছে।
২০১০ সালের ২১ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘যুদ্ধপরাধের সহযোগী’ আখ্যায়িত করে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের জেনারেল জানজুয়ার সঙ্গে বেগম জিয়া সেনাক্যাম্পে থেকে মুক্তিযোদ্ধা হত্যার পরিকল্পনায় ছিলেন। সেই অপরাধে তার বিচার হবে। রাজাকারের নেত্রী বেগম জিয়াকে রুখতে হবে।
সরকারের সমালোচনা করে সংবাদ পরিবেশনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ২৫ মে ২০১০ এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, নেতাদের চাঁদাবাজি হেডলাইন না করে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির বিষয়কে হেডলাইন করুন।
৮ জানুয়ারি ২০১০ সংবাদ ব্রিফিংয়ে সংসদ অধিবেশনকে ‘সার্কাস’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিরোধী দল সংসদের সব কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে এবং বেতন-ভাতাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। তারা কেবল আসছে না সেই সম্মেলনে (সংসদ অধিবেশনে) যেখানে শুধু ‘সার্কাস’ হয়।
বিরোধী দলের ‘দেশ বিক্রি’র অভিযোগ খণ্ডন করে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে আশরাফ বলেন, এটা বেগম জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত জোটের একটি মেনিয়া, নিরাময়ের অযোগ্য ‘ক্রনিক ডিজিজ’। দেশ কি ছেলের হাতের মোয়া নাকি শাড়ি-গয়না যে ইচ্ছে করলেই তা বিক্রি করা যায়। তারা কথায় কথায় আমাদের বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির ধোয়া তোলেন। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিসর্জন এবং নতজানুতার ভাঙা রেকর্ড বাজান। পার্বত্য শান্তি চুক্তির সময় তিনি বলেছিলেন, ফেনী পর্যন্ত নাকি ভারত নিয়ে যাবে। সেই ফেনী থেকে তিনি বর্তমানের কোন দেশের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
২৭ মে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, এমন কোনো ইসলামবিরোধী কাজ নেই যা বেগম জিয়া করেন না। তিনি এক ওয়াক্ত নামাজও পড়েন না। অথচ নিজামী-আমিনীরা তাকে ইসলামের পক্ষের নেত্রী দাবি করেন। তিনি দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধর্মপ্রাণ মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, শেখ হাসিনা ইসলামের নিয়মনীতি মেনে চলেন। যত ব্যস্তই থাকুন, প্রতিদিন নামাজ আদায় ও নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করেন।
৫ অক্টোবর ২০১০ এক অনুষ্ঠানে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ বাকশালের চিন্তা-চেতনা ও দর্শনকে আমরা এখনও ধারণ করে। সব দলকে সঙ্গে নিয়ে একটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে বাকশালের চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করতে চাই।
গত ২৬ অক্টোবর হানিফ বলেন, জামায়াত-শিবির কর্মী যাদের বয়স ৪০ বছরের কম তারা রাজাকার-আলবদর ছিল না, তারা যুদ্ধাপরাধও করেনি। ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি বলেন, পিকেটারের বুকে পুলিশের বুটের ছবিতে সরকারের অর্জন ম্লান হবে না।
২০১০ সালের ৭ মে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ছাত্রলীগের নামে যা ঘটছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এদের কর্মকাণ্ডে মাথা হেঁট হয়ে যায়। জয়কালী মন্দিরে চুরি প্রসঙ্গে গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে মন্দিরে চুরি হয়েছে।
২৯ মে ২০১০ এক অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘পাকিস্তানের চর’ মুক্তিযোদ্ধা বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার এ বক্তব্যকে যদি কেউ খণ্ডন করতে চান, মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেন তবে প্রকাশ্যে আমার সঙ্গে টকশো, আলোচনা বা বিতর্কে আসতে পারেন।
বিরোধী দলের আহূত হরতালের প্রেক্ষাপটে ৩০ নভেম্বর ২০১০ বিরোধী দলের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে হরতাল প্রত্যাহার করে নিন। নইলে ১ টাকার বিনিময়ে গুলশানের ৩৩ শতাংশ বাড়িটিও খালেদা জিয়াকে ছাড়তে হবে। সেখানে ছিন্নমূলদের বসবাসের ব্যবস্থা করা হবে।
গত ২৫ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গি-চাঁদাবাজ-টেন্ডারবাজরা গর্তে ঢুকলেও বের করে আনা হবে। এজন্য আমি জীবনবাজি রেখে হলেও দায়িত্ব পালন করব। ২০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমই বেড়েছে। দাম বৃদ্ধি দেশের মানুষ সাদরেই গ্রহণ করছে। ৬ অক্টোবর তিনি বলেন, ১০ বছরের মধ্যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা এখন সবচেয়ে ভালো ।
ট্রানজিট ফি সম্পর্কে ১২ অক্টোবর ২০১১ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের লোকজন অভিজ্ঞ না হওয়া পর্যন্ত ভারত থেকে ফি নেয়া হবে না। এ বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে ধসের জন্য মাথা ঘামানোর কোনো কারণ নেই। কারণ, কতগুলো লোক যদি অর্থনীতিতে অবদান না রেখে লাভবান হতে চায়, তাদের কষ্টে আমার হৃদয় কাঁদে না।
মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, এই সফরে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি হতে যাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশ অনেক লাভবান হবে। তবে ভারত এই চুক্তির সুফল বেশি পাবে।
গত ১৭ নভেম্বর সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শওকত মোমেন শাহজাহান মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে উদ্দেশ করে বলেন, কাদের সিদ্দিকী একজন যুদ্ধাপরাধী। তার বিচার হওয়া উচিত।
অশিক্ষিতদের ড্রাইভিং লাইন্সেস দেয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ড্রাইভারও ফাইভ পাস।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মুজিবর রহমান ফকির গত ১০ মে এক অনুষ্ঠানে বলেন, কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার পদে আমরা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং সমমনাদেরই নিয়োগ দেব। বিএনপি বা অন্য মতের কাউকে নিয়োগ দিলে ওই প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়া হবে। গত ৪ মে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান বিচার ব্যবস্থা স্বর্ণযুগে প্রবেশ করেছে।
No comments