বিজয়া দশমী মিলনের মঙ্গলদিন by রণজিৎ বিশ্বাস
বি শ্বাসনির্ভর ও পরিচয়নির্ভর কিছু কিছু অনুষ্ঠান আমাদের ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের ধূলিতলে তৃণমূলে ও আকাশতলে আর অনুষ্ঠান নেই, আর শুধু উপাসনার ছাঁচে গণ্ডিতে বাঁধা পড়ে নেই। এগুলো এখন উৎসবে পরিণত। যেমন ঈদুল ফিতর যেমন বিজয় দশমী। এমন আরও দিন আছে আমাদের সবার নিবিড় বন্ধনের বিশাল বাড়িতে। প্রবারণা পূর্ণিমা যেমন, যিশুর জন্মদিন যেমন। এই সেদিনও আমরা বুঝতে যা পারিনি, এখন আমাদের তা বুঝতে হবে
এবং না বুঝলে চলবে না। চলবে না, কারণ আমরা অক্টোপাসের মতো পিছু সাঁতার দিতে চাই না, ভূতের মতো পিছু হাঁটতে চাই না। আমরা চাই সবাই মিলে এগিয়ে যেতে, সবার মিলিত হস্তে দেশের কাজ উঠিয়ে নিতে এবং সবার মিলনে-সম্মিলনে প্রগতির সরণিতে কদম ফেলতে। এই শপথটি করার জন্য ও সংকটে সমস্যায় হৃদিবন্দি পুরনো অঙ্গীকারটি নবায়নের জন্য একটি উপযুক্ত ক্ষণ হতে পারে বিজয়া দশমী।
বিজয়া দশমীর দিন মিলনের, এই দিন ক্ষমা ও ঔদার্যের, শত্রুমিত্র ও আত্মপর বিস্মরণের, এই দিন বক্ষের স্মরলিপি বক্ষে শোনার এবং বন্ধনডোরে বাহুতে বাহু বাঁধার। এমন বোধ যদি উপাসনার বোধ কাটা ও বিশ্বাসের বর্ডার বাউন্ডারি ছড়িয়ে যাওয়া স্বপ্ন ও লক্ষ্যের সঙ্গে আমরা জুড়ে নিতে না পারি, আমরা অনেক কিছুই করতে পারব, এগিয়ে যাওয়া ছাড়া।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কোনটি করব। প্রতিবেশীর মাঝে নির্ভরশীল বান্ধব খুঁজব, না অন্যের জন্য অভিগম্যতাহীন একটি 'ইনস্যুলার' প্রাণী হয়ে থাকব। নিজের আনন্দকে শতগুণ বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য এবং রোদনবেদনকে শত ভগ্নাংশে কমিয়ে নেওয়ার জন্য আনন্দ ও বেদনা উভয়ের ভাগ সবাইকে দেব, না নিজের খোপেখোলসে নিজেকে রেখে আপনার মনে আপনি মরে যাব ও মরে পড়ে থাকব। বিবেচনা আমাদের, নির্বাচন আমাদের।
রণজিৎ বিশ্বাস :কথাসাহিত্যিক
No comments