প্রাথমিকে আরো পাঁচ হাজার প্রধান শিক্ষক by অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
শিক্ষক সংকট মেটাতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন নেওয়া হয়েছে। আগামী চার মাসের মধ্যে ১০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হবে। এর মধ্যে নতুন করে পাঁচ হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শিগগিরই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।এ ছাড়া বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (সরকারি মাসিক অনুদানভুক্ত) পাঁচ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এই নিয়োগ পরীক্ষা ডিসেম্বরে হতে পারে।
সব মিলিয়ে আগামী বছরের প্রথম তিন-চার মাসের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ২০ হাজার নতুন শিক্ষক পাচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (সংস্থাপন) মো. ফসিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, নতুন শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে। তবে কত মাস সময় লাগতে পারে, সেটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিন হাজার প্রধান শিক্ষক ও ছয় হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ খালি আছে। এসব শূন্যপদে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে আরো দুই হাজার প্রধান শিক্ষক ও ছয় হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হবে। অন্যদিকে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে।
সূত্রটি জানায়, অবসর, চাকরি ছেড়ে দেওয়া, মৃত্যুবরণ করাসহ নানা কারণে প্রতিনিয়তই শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। সম্ভাব্য শূন্যপদ বিবেচনা করে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০১০-১১ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে ৩৭ হাজার ৬৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৮ লাখ ৮৫ হাজার। মোট শিক্ষকের সংখ্যা দুই লাখ ১৩ হাজার। এর মধ্যে ৫৮ জন নারী।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, 'আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলি। পর্যাপ্ত শিক্ষক ছাড়া আমরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারব না।'
সচিব বলেন, 'বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিজি প্রেসকে প্রশ্ন ছাপিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে এ পরীক্ষাটি নেওয়া যাবে।'
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছেন এক হাজার ৮৫২ জন প্রধান শিক্ষক। বাকি ৫৭ হাজার ৭০৩ জন সহকারী শিক্ষক। এর পরও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার জন্য শিক্ষক সংকট একটি বড় সমস্যা হয়ে আছে।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পশ্চিম ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ ভট্টাচার্য বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গড়ে চারজন করে শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে কেউ প্রশিক্ষণ, অসুস্থ কিংবা মাতৃত্বকালীন ছুটির কারণে অনুপস্থিত থাকলে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে অবস্থার উন্নতি হবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব বি এম আসাদ উল্লাহ বলেন, প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের। শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। তবে বাস্তবতায় দেখা গেছে, নিয়োগপ্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় এর মধ্যে নতুন অনেক শূন্যপদের সৃষ্টি হয়। এ কারণে শিক্ষক সংকট থেকেই যায়।
রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় : বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার তারিখ ছিল গত ৮ এপ্রিল। কিন্তু আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর পরীক্ষাটি স্থগিত করে। সম্প্রতি আদালত রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে। কিন্তু অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আসায় গত বছরের শুরুর দিকে শিক্ষক নিয়োগে নতুন নীতিমালা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সিরাজগঞ্জের কাজীপাড়ার বায়ড়াবাড়ি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন পরীক্ষা বাতিল চেয়ে আদালতে ওই রিট আবেদনটি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (সংস্থাপন) মো. ফসিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আদালত রিট আবেদনটি খারিজ করার পর আমরা পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।' ইতিমধ্যে পরীক্ষার জন্য 'ওএমআর' ফরম তৈরি হয়েছে। বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষাটি নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রায় ২০ হাজার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় ৪০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম বন্ধের পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য জারি করা নতুন নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে সাত সদস্যের নিয়োগ কমিটি করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (সংস্থাপন) মো. ফসিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, নতুন শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে। তবে কত মাস সময় লাগতে পারে, সেটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিন হাজার প্রধান শিক্ষক ও ছয় হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ খালি আছে। এসব শূন্যপদে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে আরো দুই হাজার প্রধান শিক্ষক ও ছয় হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হবে। অন্যদিকে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে।
সূত্রটি জানায়, অবসর, চাকরি ছেড়ে দেওয়া, মৃত্যুবরণ করাসহ নানা কারণে প্রতিনিয়তই শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। সম্ভাব্য শূন্যপদ বিবেচনা করে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০১০-১১ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে ৩৭ হাজার ৬৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৮ লাখ ৮৫ হাজার। মোট শিক্ষকের সংখ্যা দুই লাখ ১৩ হাজার। এর মধ্যে ৫৮ জন নারী।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, 'আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলি। পর্যাপ্ত শিক্ষক ছাড়া আমরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারব না।'
সচিব বলেন, 'বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিজি প্রেসকে প্রশ্ন ছাপিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে এ পরীক্ষাটি নেওয়া যাবে।'
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছেন এক হাজার ৮৫২ জন প্রধান শিক্ষক। বাকি ৫৭ হাজার ৭০৩ জন সহকারী শিক্ষক। এর পরও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার জন্য শিক্ষক সংকট একটি বড় সমস্যা হয়ে আছে।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পশ্চিম ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ ভট্টাচার্য বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গড়ে চারজন করে শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে কেউ প্রশিক্ষণ, অসুস্থ কিংবা মাতৃত্বকালীন ছুটির কারণে অনুপস্থিত থাকলে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে অবস্থার উন্নতি হবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব বি এম আসাদ উল্লাহ বলেন, প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের। শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। তবে বাস্তবতায় দেখা গেছে, নিয়োগপ্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় এর মধ্যে নতুন অনেক শূন্যপদের সৃষ্টি হয়। এ কারণে শিক্ষক সংকট থেকেই যায়।
রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় : বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার তারিখ ছিল গত ৮ এপ্রিল। কিন্তু আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর পরীক্ষাটি স্থগিত করে। সম্প্রতি আদালত রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে। কিন্তু অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আসায় গত বছরের শুরুর দিকে শিক্ষক নিয়োগে নতুন নীতিমালা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সিরাজগঞ্জের কাজীপাড়ার বায়ড়াবাড়ি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন পরীক্ষা বাতিল চেয়ে আদালতে ওই রিট আবেদনটি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (সংস্থাপন) মো. ফসিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আদালত রিট আবেদনটি খারিজ করার পর আমরা পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।' ইতিমধ্যে পরীক্ষার জন্য 'ওএমআর' ফরম তৈরি হয়েছে। বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষাটি নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রায় ২০ হাজার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় ৪০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম বন্ধের পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য জারি করা নতুন নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে সাত সদস্যের নিয়োগ কমিটি করা হয়।
No comments