হিগুয়াইন, মেসি আর নেইমারের দিন
ফুটবলপাগল দুটো দেশের প্রতীক এখন তাঁরা। আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি আর ব্রাজিলের নেইমার। পরশু নিজ নিজ দেশের হয়ে ঝলসে উঠেছেন এই দুই জাদুকর। তাতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে চিলিকে। আর প্রীতি ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে ব্রাজিলের জয় ১-০ ব্যবধানে।বার্সেলোনার মেসিকে কেন আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে খুঁজে পাওয়া যায় না_এটি এখন গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এটি যেন আলবিসেলেস্তেদের চিরন্তন আক্ষেপ না হয়, সে পথে একটু একটু করে ঠিকই এগোচ্ছেন মেসি।
কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর নতুন করে পথচলা শুরু হয়েছে আর্জেন্টিনার। আর নতুন কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা নতুন অধিনায়ক করেছেন মেসিকে। কলকাতা ও ঢাকায় দুটো প্রীতি ম্যাচ খেললেও পরশুই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে দলনায়ক হিসেবে অভিষেক হলো তাঁর। না, সেখানে নিজের সেরা ম্যাচ খেলেননি মেসি। তবে আকাশি-সাদা জার্সি গায়ে সেরায় ফেরার কক্ষপথে যে আছেন, সেটি বুঝিয়েছেন স্পষ্ট করে এক গোল করে, আরেক গোল করিয়ে।
রিভারপ্লেটের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার সেরা খেলোয়াড় অবশ্য মেসি নন, গনজালো হিগুয়াইন। হ্যাটট্রিক করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা। অষ্টম মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ডিফেন্সচেরা পাস থেকে উঁচু করে বল জালে জড়িয়ে দেন হিগুয়াইন। এরপর মেসি ৬৩তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে করেন ১৮তম গোল। হিগুয়াইনের দারুণ পাসটিকে আরো দারুণভাবে গোলে পরিণত করেন তিনি। ম্যাচের তখন আধা ঘণ্টাও পেরোয়নি। ৫১তম মিনিটে ডি মারিয়ার ক্রসকে টার্নে শট নিয়ে ম্যাচের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করেন হিগুয়াইন। পরের অপেক্ষাটা তাঁর হ্যাটট্রিকের। ৬৩তম মিনিটে মেসির পাস থেকে গোল করে সেই আনন্দে ভাসেন এই ফরোয়ার্ড। মাঝে ৬০তম মিনিটে মারিতাস ফার্নান্দেজের লক্ষ্যভেদে সান্ত্বনাসূচক গোল পায় চিলি।
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের এমন দুরন্ত শুরুতে স্বভাবতই স্বস্তির বাতাস বইছে আর্জেন্টাইন ক্যাম্পে। এরই প্রতিধ্বনি হিগুয়াইনের কণ্ঠে, 'জয় দিয়ে বাছাই পর্ব শুরু করাটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ঠিক তাই করেছি। যেভাবে ম্যাচটি খেলেছি, তাতে আমরা সবাই সন্তুষ্ট। এখন এই ধারা ধরে রাখতে হবে।'
এই 'ধারা ধরে রাখা' নিয়েই ঘোরতর সমস্যায় ব্রাজিল। মানো মেনেজেসের অধীনে এক ম্যাচ তারা ছন্দ-সৌন্দর্যে আলোকিত করে তো পরের ম্যাচেই নিষ্প্রভ। তখন জার্সি দেখে চিনতে হয় তাদের। কিছু দিন আগে সুপার ক্লাসিকোর দ্বিতীয় পর্বে আর্জেন্টিনাকে কী দুরন্ত খেলেই না হারাল! অথচ পরশু কোস্টারিকাকে হারাতে কালঘাম ছুটে গেছে সেলেসাওদের। ভাগ্যিস, নেইমার ছিলেন! নইলে জয় নিয়ে আর ফেরা হতো না মেনেজেসের দলকে।
এই প্রীতি ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়তে পারত ব্রাজিল। দ্বিতীয় মিনিটে কোস্টারিকার হেইনের মোরার ক্রস খুঁজে পেয়েছিল উইনস্টন পার্কসকে। কিন্তু সুবিধাজনক জায়গায় থেকেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফলপ্রসূ কিছু হয়নি। মিনিট খানেক পর নেইমারের থ্রু ফ্রেদকে একেবারে গোলমুখের সামনে একা করে দেয়। কিন্তু তাঁর শট চলে যায় বার উঁচিয়ে। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ব্রাজিলের কাছেই ছিল। কিন্তু আক্রমণে ধার ছিল না। কেবল কিছু দৃষ্টিনন্দন ওয়ান-টু আর রোনালদিনহো-নেইমারের পায়ের কারুকাজ, ব্যস এইটুকুনই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও প্রথম সুযোগ পেয়েছিল কোস্টারিকা। কিন্তু ব্রায়ান ওভিয়েদোর শট জলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৫৫ মিনিটে ক্যানারিনহোর হয়ে পোস্টে প্রথম শট নেন রোনালদিনহো। দুর্বল সেই প্রচেষ্টা থেকে কী আর গোল হয়! ম্যাচ ঘড়ির কাঁটা ঘণ্টা ছোঁয়ার সময় অবশ্য ঠিকই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বদলি হিসেবে নামা দানি আলভেজের ক্রসকে গোলে রূপান্তর করতে ভুল হয়নি নেইমারের। ১৪তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটি তাঁর অষ্টম গোল।
গোলের পর আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে ব্রাজিল। তাদের খেলায় ফেরে ছন্দের দোলা। ৭২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার খুব কাছাকাছি যায় তারা। প্রথমে রোনালদিনহোর ক্রস থেকে ফ্রেদের হেড গোললাইন থেকে ফেরান কোস্টারিকার গোলরক্ষক নাভাস। পরপরই নেইমারের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া বুলেট শট প্রতিহত হয় পোস্টে। এরপর ৮৪তম মিনিটে কোস্টারিকার মোরা লাল কার্ড দেখলে ১০ জন নিয়ে শেষ করতে হয় স্বাগতিকদের। বিবর্ণ পারফরম্যান্সের ম্যাচ থেকে কেবল জয়ের সান্ত্বনা নিয়েই মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
স্বাগিতক হওয়ায় বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব খেলতে হচ্ছে না ব্রাজিলকে। অন্যদের কিন্তু ঠিকই নামতে হচ্ছে এই অগি্নপরীক্ষায়। তাতে প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার মতো সফল উরুগুয়ে, পেরু এবং ইকুয়েডর। উরুগুয়ে বলিভিয়াকে হারিয়েছে ৪-২ গোলে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮৫০ মিটার উঁচু কিটোয় ইকুয়েডর ২-০ গোলে হারিয়েছে ভেনিজুয়েলাকে। আরেক ম্যাচে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে পেরুর ফুটবল-বিপ্লব। মাসকয়েক আগে কোপা আমেরিকায় তৃতীয় হয়ে তারা চমকে দিয়েছিল সবাইকে। পরশু প্যারাগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে চমক দিল আরেকবার। বুন্দেসলিগায় হামবুর্গে খেলা ফরোয়ার্ড পাওলো গুয়েরেরো ৪৬ ও ৭২তম মিনিটে করেন গোল দুটি। ওয়েবসাইট
রিভারপ্লেটের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার সেরা খেলোয়াড় অবশ্য মেসি নন, গনজালো হিগুয়াইন। হ্যাটট্রিক করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা। অষ্টম মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ডিফেন্সচেরা পাস থেকে উঁচু করে বল জালে জড়িয়ে দেন হিগুয়াইন। এরপর মেসি ৬৩তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে করেন ১৮তম গোল। হিগুয়াইনের দারুণ পাসটিকে আরো দারুণভাবে গোলে পরিণত করেন তিনি। ম্যাচের তখন আধা ঘণ্টাও পেরোয়নি। ৫১তম মিনিটে ডি মারিয়ার ক্রসকে টার্নে শট নিয়ে ম্যাচের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করেন হিগুয়াইন। পরের অপেক্ষাটা তাঁর হ্যাটট্রিকের। ৬৩তম মিনিটে মেসির পাস থেকে গোল করে সেই আনন্দে ভাসেন এই ফরোয়ার্ড। মাঝে ৬০তম মিনিটে মারিতাস ফার্নান্দেজের লক্ষ্যভেদে সান্ত্বনাসূচক গোল পায় চিলি।
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের এমন দুরন্ত শুরুতে স্বভাবতই স্বস্তির বাতাস বইছে আর্জেন্টাইন ক্যাম্পে। এরই প্রতিধ্বনি হিগুয়াইনের কণ্ঠে, 'জয় দিয়ে বাছাই পর্ব শুরু করাটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ঠিক তাই করেছি। যেভাবে ম্যাচটি খেলেছি, তাতে আমরা সবাই সন্তুষ্ট। এখন এই ধারা ধরে রাখতে হবে।'
এই 'ধারা ধরে রাখা' নিয়েই ঘোরতর সমস্যায় ব্রাজিল। মানো মেনেজেসের অধীনে এক ম্যাচ তারা ছন্দ-সৌন্দর্যে আলোকিত করে তো পরের ম্যাচেই নিষ্প্রভ। তখন জার্সি দেখে চিনতে হয় তাদের। কিছু দিন আগে সুপার ক্লাসিকোর দ্বিতীয় পর্বে আর্জেন্টিনাকে কী দুরন্ত খেলেই না হারাল! অথচ পরশু কোস্টারিকাকে হারাতে কালঘাম ছুটে গেছে সেলেসাওদের। ভাগ্যিস, নেইমার ছিলেন! নইলে জয় নিয়ে আর ফেরা হতো না মেনেজেসের দলকে।
এই প্রীতি ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়তে পারত ব্রাজিল। দ্বিতীয় মিনিটে কোস্টারিকার হেইনের মোরার ক্রস খুঁজে পেয়েছিল উইনস্টন পার্কসকে। কিন্তু সুবিধাজনক জায়গায় থেকেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফলপ্রসূ কিছু হয়নি। মিনিট খানেক পর নেইমারের থ্রু ফ্রেদকে একেবারে গোলমুখের সামনে একা করে দেয়। কিন্তু তাঁর শট চলে যায় বার উঁচিয়ে। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ব্রাজিলের কাছেই ছিল। কিন্তু আক্রমণে ধার ছিল না। কেবল কিছু দৃষ্টিনন্দন ওয়ান-টু আর রোনালদিনহো-নেইমারের পায়ের কারুকাজ, ব্যস এইটুকুনই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও প্রথম সুযোগ পেয়েছিল কোস্টারিকা। কিন্তু ব্রায়ান ওভিয়েদোর শট জলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৫৫ মিনিটে ক্যানারিনহোর হয়ে পোস্টে প্রথম শট নেন রোনালদিনহো। দুর্বল সেই প্রচেষ্টা থেকে কী আর গোল হয়! ম্যাচ ঘড়ির কাঁটা ঘণ্টা ছোঁয়ার সময় অবশ্য ঠিকই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বদলি হিসেবে নামা দানি আলভেজের ক্রসকে গোলে রূপান্তর করতে ভুল হয়নি নেইমারের। ১৪তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটি তাঁর অষ্টম গোল।
গোলের পর আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে ব্রাজিল। তাদের খেলায় ফেরে ছন্দের দোলা। ৭২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার খুব কাছাকাছি যায় তারা। প্রথমে রোনালদিনহোর ক্রস থেকে ফ্রেদের হেড গোললাইন থেকে ফেরান কোস্টারিকার গোলরক্ষক নাভাস। পরপরই নেইমারের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া বুলেট শট প্রতিহত হয় পোস্টে। এরপর ৮৪তম মিনিটে কোস্টারিকার মোরা লাল কার্ড দেখলে ১০ জন নিয়ে শেষ করতে হয় স্বাগতিকদের। বিবর্ণ পারফরম্যান্সের ম্যাচ থেকে কেবল জয়ের সান্ত্বনা নিয়েই মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
স্বাগিতক হওয়ায় বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব খেলতে হচ্ছে না ব্রাজিলকে। অন্যদের কিন্তু ঠিকই নামতে হচ্ছে এই অগি্নপরীক্ষায়। তাতে প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার মতো সফল উরুগুয়ে, পেরু এবং ইকুয়েডর। উরুগুয়ে বলিভিয়াকে হারিয়েছে ৪-২ গোলে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮৫০ মিটার উঁচু কিটোয় ইকুয়েডর ২-০ গোলে হারিয়েছে ভেনিজুয়েলাকে। আরেক ম্যাচে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে পেরুর ফুটবল-বিপ্লব। মাসকয়েক আগে কোপা আমেরিকায় তৃতীয় হয়ে তারা চমকে দিয়েছিল সবাইকে। পরশু প্যারাগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে চমক দিল আরেকবার। বুন্দেসলিগায় হামবুর্গে খেলা ফরোয়ার্ড পাওলো গুয়েরেরো ৪৬ ও ৭২তম মিনিটে করেন গোল দুটি। ওয়েবসাইট
No comments