স্বল্পোন্নত দেশের দুরবস্থার দায় দাতা সংস্থার: মুহিত
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) নিজেদের অবস্থা থেকে বেরুনোর জন্য ১০ বছর মেয়াদি তিনটি কার্যসূচি নিলেও এতে তেমন কোনো লাভ হয়নি।
কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে কর্মসূচিই হাতে নেওয়া হোক, সে অনুযায়ী কাজ হয় না। এ জন্য এলডিসিগুলো নিজেরা কিছুটা দায়ী। তবে বেশি দায়ী উন্নয়ন সহযোগী বা দাতা সংস্থাগুলো। এলডিসিগুলোকে দারিদ্র্য অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দাতারা যে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, তারা আর পরে তা রক্ষা করে না।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এরই মধ্যে আবার বিশ্বমন্দা ও জলবায়ু পরিবর্তন গত দুই বছরে সব শেষ করে দিয়ে গেছে। ২০১১ সালে তুরস্কে যে চতুর্থ এলডিসি সম্মেলন বসবে, সেখানে এলডিসির সমস্যা ও সংকটগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হবে। বলা হবে, বর্তমান পদ্ধতিতে এলডিসিগুলোর দারিদ্র্য দূর হবে না। বরং বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থাই সাজাতে হবে নতুনভাবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্থার (এসকাপ) নির্বাহী সচিব নোয়েলিন হেইজারের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
১৯৮১ সাল থেকে শুরু হয়ে প্রতি ১০ বছর পর পর এলডিসির সম্মেলন হচ্ছে। সর্বশেষ ২০০১ সালের মে মাসে ব্রাসেলসের পর ২০১১ সালে তুরস্কে হবে চতুর্থ এলডিসি সম্মেলন। ওই সম্মেলনকে সামনে রেখেই ১৫টি সদস্য দেশ নিয়ে গতকাল থেকে তিন দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক এক আঞ্চলিক সম্মেলন বসেছে ঢাকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, শুরুর দিকে এলডিসিভুক্ত দেশ ছিল ২৯টি, আর বর্তমানে ৫১টি। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি দেশ অবশ্য এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া কোনো অগ্রগতি নেই। বেশির ভাগেরই অবস্থা শোচনীয়।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, নরওয়ে, সুইডেনসহ কয়েকটি দেশ প্রতিশ্রুত জাতীয় আয়ের দশমিক ২০ শতাংশের চেয়ে বেশি সাহায্য দিলেও অন্যদের কেউই ন্যূনতম প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, অনেক এলডিসির বাজার ছোট। এগুলোর বাজার প্রবেশাধিকার দরকার। সেই সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, কিছু দেশ সম্পর্কে বরং বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। মালদ্বীপ, পাপুয়া নিউগিনিতে চাষযোগ্য জমি নেই। অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত দিক থেকে এসব দেশ করুণ পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। এগুলোতে বিনিয়োগ করেও কোনো লাভ হবে না। এদের নিয়ে চিন্তা করতে হবে নতুন করে।
খাদ্যনিরাপত্তা, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা—তিনটি বিষয়ে সাফল্য এলডিসি থেকে বেরোনোর অন্যতম উপায় বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এলডিসিভুক্ত অন্য অনেক দেশের তুলনায় এ তিন বিষয়ে বাংলাদেশ ভালো করলেও দেশটি সাহায্য কম পায়।
২০২১ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, মোট দেশজ উত্পাদনের প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার আট শতাংশে উন্নীত হলেই তা সম্ভব। অর্থাত্ যে করেই হোক জিডিপির হারের সাতের বাধা পেরোতে হবে। এমনকি বর্তমান গতিতে চললেও ২০২১ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে ক্ষমতা ও বাজেটের বিকেন্দ্রীকরণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে সবকিছু ধরে না রাখার পক্ষে আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কেন সব বিবেচনা করবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো কিছু বিষয় স্থানীয় সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। রাষ্ট্রনীতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে ভাববে কেন্দ্রীয় সরকার।
এলডিসির ব্রাসেলস কর্মসূচির ব্যর্থতা কী—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বড় ব্যর্থতা উন্নত দেশগুলো তাদের জাতীয় আয়ের দশমিক ২০ শতাংশ সাহায্য এলডিসিগুলোকে দেয়নি, এলডিসিগুলোও তা আদায় করতে পারেনি।
এসকাপের সঙ্গে যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সরকার। এতে ১৫টি দেশের মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী পর্যায়ের ৭০ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেন। দেশগুলো হচ্ছে—নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, কম্বোডিয়া, কিরিবাতি, থাইল্যান্ড, হাইতি, বেনিন, লাউ পিডিআর, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, তুভালু, ভানুয়াতু এবং ইয়েমেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর সম্মেলনে গতকাল দুপুরে একটি প্লিনারি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এমডিজি) অর্জনের অগ্রগতি এবং এগুলোতে ১০ বছরে ব্রাসেলস কর্মসূচির বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে এ অধিবেশনে আলোচনা হয়েছে। এতে সঞ্চালক ছিলেন এসকাপ নির্বাহী সচিব নোয়েলিন হেইজার।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় দুটি কারিগরি অধিবেশন। দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ এবং ২০১৫ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার বিষয়ে এতে আলোচনা হয়েছে। এর একটিতে সঞ্চালক ছিলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অন্যটিতে এসকাপের সামষ্টিক নীতি ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক নগেশ কুমার।
সম্মেলন আগামীকাল শেষ হবে।
কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে কর্মসূচিই হাতে নেওয়া হোক, সে অনুযায়ী কাজ হয় না। এ জন্য এলডিসিগুলো নিজেরা কিছুটা দায়ী। তবে বেশি দায়ী উন্নয়ন সহযোগী বা দাতা সংস্থাগুলো। এলডিসিগুলোকে দারিদ্র্য অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দাতারা যে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, তারা আর পরে তা রক্ষা করে না।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এরই মধ্যে আবার বিশ্বমন্দা ও জলবায়ু পরিবর্তন গত দুই বছরে সব শেষ করে দিয়ে গেছে। ২০১১ সালে তুরস্কে যে চতুর্থ এলডিসি সম্মেলন বসবে, সেখানে এলডিসির সমস্যা ও সংকটগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হবে। বলা হবে, বর্তমান পদ্ধতিতে এলডিসিগুলোর দারিদ্র্য দূর হবে না। বরং বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থাই সাজাতে হবে নতুনভাবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্থার (এসকাপ) নির্বাহী সচিব নোয়েলিন হেইজারের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
১৯৮১ সাল থেকে শুরু হয়ে প্রতি ১০ বছর পর পর এলডিসির সম্মেলন হচ্ছে। সর্বশেষ ২০০১ সালের মে মাসে ব্রাসেলসের পর ২০১১ সালে তুরস্কে হবে চতুর্থ এলডিসি সম্মেলন। ওই সম্মেলনকে সামনে রেখেই ১৫টি সদস্য দেশ নিয়ে গতকাল থেকে তিন দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক এক আঞ্চলিক সম্মেলন বসেছে ঢাকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, শুরুর দিকে এলডিসিভুক্ত দেশ ছিল ২৯টি, আর বর্তমানে ৫১টি। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি দেশ অবশ্য এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া কোনো অগ্রগতি নেই। বেশির ভাগেরই অবস্থা শোচনীয়।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, নরওয়ে, সুইডেনসহ কয়েকটি দেশ প্রতিশ্রুত জাতীয় আয়ের দশমিক ২০ শতাংশের চেয়ে বেশি সাহায্য দিলেও অন্যদের কেউই ন্যূনতম প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, অনেক এলডিসির বাজার ছোট। এগুলোর বাজার প্রবেশাধিকার দরকার। সেই সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, কিছু দেশ সম্পর্কে বরং বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। মালদ্বীপ, পাপুয়া নিউগিনিতে চাষযোগ্য জমি নেই। অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত দিক থেকে এসব দেশ করুণ পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। এগুলোতে বিনিয়োগ করেও কোনো লাভ হবে না। এদের নিয়ে চিন্তা করতে হবে নতুন করে।
খাদ্যনিরাপত্তা, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা—তিনটি বিষয়ে সাফল্য এলডিসি থেকে বেরোনোর অন্যতম উপায় বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এলডিসিভুক্ত অন্য অনেক দেশের তুলনায় এ তিন বিষয়ে বাংলাদেশ ভালো করলেও দেশটি সাহায্য কম পায়।
২০২১ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, মোট দেশজ উত্পাদনের প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার আট শতাংশে উন্নীত হলেই তা সম্ভব। অর্থাত্ যে করেই হোক জিডিপির হারের সাতের বাধা পেরোতে হবে। এমনকি বর্তমান গতিতে চললেও ২০২১ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে ক্ষমতা ও বাজেটের বিকেন্দ্রীকরণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে সবকিছু ধরে না রাখার পক্ষে আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কেন সব বিবেচনা করবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো কিছু বিষয় স্থানীয় সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। রাষ্ট্রনীতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে ভাববে কেন্দ্রীয় সরকার।
এলডিসির ব্রাসেলস কর্মসূচির ব্যর্থতা কী—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বড় ব্যর্থতা উন্নত দেশগুলো তাদের জাতীয় আয়ের দশমিক ২০ শতাংশ সাহায্য এলডিসিগুলোকে দেয়নি, এলডিসিগুলোও তা আদায় করতে পারেনি।
এসকাপের সঙ্গে যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সরকার। এতে ১৫টি দেশের মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী পর্যায়ের ৭০ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেন। দেশগুলো হচ্ছে—নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, কম্বোডিয়া, কিরিবাতি, থাইল্যান্ড, হাইতি, বেনিন, লাউ পিডিআর, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, তুভালু, ভানুয়াতু এবং ইয়েমেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর সম্মেলনে গতকাল দুপুরে একটি প্লিনারি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এমডিজি) অর্জনের অগ্রগতি এবং এগুলোতে ১০ বছরে ব্রাসেলস কর্মসূচির বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে এ অধিবেশনে আলোচনা হয়েছে। এতে সঞ্চালক ছিলেন এসকাপ নির্বাহী সচিব নোয়েলিন হেইজার।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় দুটি কারিগরি অধিবেশন। দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ এবং ২০১৫ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার বিষয়ে এতে আলোচনা হয়েছে। এর একটিতে সঞ্চালক ছিলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অন্যটিতে এসকাপের সামষ্টিক নীতি ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক নগেশ কুমার।
সম্মেলন আগামীকাল শেষ হবে।
No comments