বৃষ্টিভেজা নামাজগুলো by রোকন রাইয়ান
অফিসে
থাকলে জুমা পড়ি বাফুফে মাঠে। কংক্রিটের মতিঝিল। উঁচু উঁচু দালান। মাঝখানে
একপুচ্ছ সবুজ মাঠ। সেটি ঢেকে আছে নানারকম গাছে। এক শুক্রবার রুকু সেজদায়
মশলার ঘ্রাণ পেলাম। নামাজ শেষে দেখি পাশের গাছটি তেজপাতার। বৃষ্টিতে ভিজে
মৌ মৌ ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে। সেই নামাজের অনুভূতি ছিল সত্যিই ‘শিহরিত’।
আজকের জুমার দিনটা সকাল থেকেই ভেজা। বৃষ্টি হচ্ছে তো ছাড়ছে। ছাড়ছে তো ধরছে। অফিসে এলাম টুপ টুপ বৃষ্টি মাথায়। ১ টায় যখন বেরুচ্ছি তখনও হালকা বৃষ্টি। কোনোমতে দৌড়ে মাঠে পৌঁছলাম। স্যাঁতস্যাঁতে ঘাস। একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে গেলাম। খুতবা শুরুর আগে ইমাম ঘোষণা দিলেন বাইরে বৃষ্টি- সবাইকে চেষ্টা করি ভেতরে জায়গা দেয়ার।
বাফুফের সামনের মসজিদটা ছোট। আবার এক তলা। মুসল্লি আসার আগেই মসজিদ ভরে যায় এই হাল। তাই ইমাম সাহেব ঘোষণা করলেও অবস্থা তথৈবচ। তবে খুতবা শেষ হলে বৃষ্টির ছিটে কমলো। আধোভেজা চটে দাঁড়াতে শুরু করলেন মুসল্লিরা। অনেকেই বগলে রাখা জায়নামাজ ফেলতে লাগলেন কাদাযুক্ত রাস্তায়।
সপ্তাহের বাকি দিনে যারা নামাজের ধারে কাছেও যান না তাদেরও টার্গেট থাকে জুমা যেন মিস না হয়। অনন্য ফজিলতের নামাজ বলে কথা। যাকে বলা হয়েছে গরিবের ঈদ। যে কারণে শহরের মসজিদগুলোতে দেখা মেলে অনন্য চিত্র। মসজিদ উপচে পড়ে মুসল্লিতে। রাস্তায় ছড়িয়ে যায় কাতারে কাতার।
বছর দুয়েক আগের কথা। তখন মদিনাবাগ মসজিদে জুমা পড়তাম। অফিস থাকায় একটু দেরিতেই আসতাম আমরা। তাই গাড়ি ফেল করা মানুষের মতো রাস্তাই ছিল আমাদের ভরসা। সেবার বৃষ্টির মৌসুমেও প্রচণ্ড গরম ছিল। জুমার দিন রোদ ছিল আকাশে। তবে একখণ্ড কালো মেঘ ঘুরছিল মাথার উপর।
খুতবা শুরু হলে রাস্তায় অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে গেলাম। তখনও কালো একখণ্ড মেঘ ছাড়া বাকি সব পরিস্কার। তবে ইমাম সাহেব রুকুতে যেতেই শুরু হলো বৃষ্টি। কিন্তু সামান্য বৃষ্টির জন্য তো মহান হুকুম নামাজ ছাড়া যায় না। সবাই ধুম বৃষ্টিতেই নামাজ সারলেন। কাপড় চোপড় তো ভিজলই সাথে মোবাইল মানিব্যাগও ভিজে একাকার।
তবে আশপাশে তাকিয়ে দেখি কারো মুখে বিরক্তির ছাপ নেই। যেন অসীম তৃপ্তি দিয়েছে বৃষ্টিভেজা এ নামাজ। পরোক্ষ পূন্যের পাশাপাশি যেন বাহ্যিক বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে শরীর। তখনকার অনুভূতিটা কেমন ছিল? বলার ভাষা নেই। শিহরিত’র চেয়েও আসলে বেশি কিছু।
ছোটবেলায় একবার ঈদের নামাজ ভেসে যেতে দেখেছি বৃষ্টিতে। নানা মাওলানা মুসলেম উদ্দিন ঈদের নামাজ পড়াতেন। তার হাত ধরে আমিও গেলাম মাঠে। সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ছিল। তবে ততটা গায়ে মাখার মতো ছিল না বলে মানুষ জন আসতে শুরু করেছে মাঠে।
বিপত্তি বাঁধলো নামাজ শুরুর আগে। তুমুল বৃষ্টি বলতে হয় এমন ফোটা শুরু হলো। আমরা কোনোমতে মিম্বারের চাদোয়ার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। দুয়েকজন পাশ থেকে ছাতা ধরেছেন। সেই বৃষ্টি টানা আধঘণ্টর মতো চললো। মাঠ ভিজে একাকার। আটকে গেছে পানিও। নামাজ পড়ার উপক্রম নেই। যে কয়জন মুসল্লি ছিলেন সবাই পাশের মসজিদে চলে গেলেন। নানার হাত ধরে আমিও গেলাম।
নামাজ শেষ হলো। কিন্তু আমার মনে হলো ঈদের আমেজ যেন আগেই শেষ হয়েছে। ঈদের নামাজও আজ পড়া হয়নি। পড়েছি জোহর নামাজ।
কাঠফাটা গরমে যখন হাহুতাশ করে মানুষ। কণ্ঠ শুকিয়ে কাঠ হয়। তখন বৃষ্টির অপেক্ষায় চাতক পাখি হই আমরা। আল্লাহ তায়ালা রহমতের বারি ঢেলে দেন। বৃষ্টি তার অপার সৌন্দর্যের লীলা দেখায়। আমরা তৃষিত হৃদয় সজীব করি। এই বৃষ্টি নামাজেও আনে তৃপ্তি। তাই কবি আহ্বান করেন- আজ বৃষ্টির জায়নামাজে/ আয় না মুমিন আয় নামাজে।
আজকের জুমার দিনটা সকাল থেকেই ভেজা। বৃষ্টি হচ্ছে তো ছাড়ছে। ছাড়ছে তো ধরছে। অফিসে এলাম টুপ টুপ বৃষ্টি মাথায়। ১ টায় যখন বেরুচ্ছি তখনও হালকা বৃষ্টি। কোনোমতে দৌড়ে মাঠে পৌঁছলাম। স্যাঁতস্যাঁতে ঘাস। একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে গেলাম। খুতবা শুরুর আগে ইমাম ঘোষণা দিলেন বাইরে বৃষ্টি- সবাইকে চেষ্টা করি ভেতরে জায়গা দেয়ার।
বাফুফের সামনের মসজিদটা ছোট। আবার এক তলা। মুসল্লি আসার আগেই মসজিদ ভরে যায় এই হাল। তাই ইমাম সাহেব ঘোষণা করলেও অবস্থা তথৈবচ। তবে খুতবা শেষ হলে বৃষ্টির ছিটে কমলো। আধোভেজা চটে দাঁড়াতে শুরু করলেন মুসল্লিরা। অনেকেই বগলে রাখা জায়নামাজ ফেলতে লাগলেন কাদাযুক্ত রাস্তায়।
সপ্তাহের বাকি দিনে যারা নামাজের ধারে কাছেও যান না তাদেরও টার্গেট থাকে জুমা যেন মিস না হয়। অনন্য ফজিলতের নামাজ বলে কথা। যাকে বলা হয়েছে গরিবের ঈদ। যে কারণে শহরের মসজিদগুলোতে দেখা মেলে অনন্য চিত্র। মসজিদ উপচে পড়ে মুসল্লিতে। রাস্তায় ছড়িয়ে যায় কাতারে কাতার।
বছর দুয়েক আগের কথা। তখন মদিনাবাগ মসজিদে জুমা পড়তাম। অফিস থাকায় একটু দেরিতেই আসতাম আমরা। তাই গাড়ি ফেল করা মানুষের মতো রাস্তাই ছিল আমাদের ভরসা। সেবার বৃষ্টির মৌসুমেও প্রচণ্ড গরম ছিল। জুমার দিন রোদ ছিল আকাশে। তবে একখণ্ড কালো মেঘ ঘুরছিল মাথার উপর।
খুতবা শুরু হলে রাস্তায় অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে গেলাম। তখনও কালো একখণ্ড মেঘ ছাড়া বাকি সব পরিস্কার। তবে ইমাম সাহেব রুকুতে যেতেই শুরু হলো বৃষ্টি। কিন্তু সামান্য বৃষ্টির জন্য তো মহান হুকুম নামাজ ছাড়া যায় না। সবাই ধুম বৃষ্টিতেই নামাজ সারলেন। কাপড় চোপড় তো ভিজলই সাথে মোবাইল মানিব্যাগও ভিজে একাকার।
তবে আশপাশে তাকিয়ে দেখি কারো মুখে বিরক্তির ছাপ নেই। যেন অসীম তৃপ্তি দিয়েছে বৃষ্টিভেজা এ নামাজ। পরোক্ষ পূন্যের পাশাপাশি যেন বাহ্যিক বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে শরীর। তখনকার অনুভূতিটা কেমন ছিল? বলার ভাষা নেই। শিহরিত’র চেয়েও আসলে বেশি কিছু।
ছোটবেলায় একবার ঈদের নামাজ ভেসে যেতে দেখেছি বৃষ্টিতে। নানা মাওলানা মুসলেম উদ্দিন ঈদের নামাজ পড়াতেন। তার হাত ধরে আমিও গেলাম মাঠে। সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ছিল। তবে ততটা গায়ে মাখার মতো ছিল না বলে মানুষ জন আসতে শুরু করেছে মাঠে।
বিপত্তি বাঁধলো নামাজ শুরুর আগে। তুমুল বৃষ্টি বলতে হয় এমন ফোটা শুরু হলো। আমরা কোনোমতে মিম্বারের চাদোয়ার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। দুয়েকজন পাশ থেকে ছাতা ধরেছেন। সেই বৃষ্টি টানা আধঘণ্টর মতো চললো। মাঠ ভিজে একাকার। আটকে গেছে পানিও। নামাজ পড়ার উপক্রম নেই। যে কয়জন মুসল্লি ছিলেন সবাই পাশের মসজিদে চলে গেলেন। নানার হাত ধরে আমিও গেলাম।
নামাজ শেষ হলো। কিন্তু আমার মনে হলো ঈদের আমেজ যেন আগেই শেষ হয়েছে। ঈদের নামাজও আজ পড়া হয়নি। পড়েছি জোহর নামাজ।
কাঠফাটা গরমে যখন হাহুতাশ করে মানুষ। কণ্ঠ শুকিয়ে কাঠ হয়। তখন বৃষ্টির অপেক্ষায় চাতক পাখি হই আমরা। আল্লাহ তায়ালা রহমতের বারি ঢেলে দেন। বৃষ্টি তার অপার সৌন্দর্যের লীলা দেখায়। আমরা তৃষিত হৃদয় সজীব করি। এই বৃষ্টি নামাজেও আনে তৃপ্তি। তাই কবি আহ্বান করেন- আজ বৃষ্টির জায়নামাজে/ আয় না মুমিন আয় নামাজে।
No comments