রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও ১০ বছর জেল খেটে নিঃস্ব আজমত আলী by বিশ্বজিৎ দেব
আজমত আলী |
রাষ্ট্রপতির
ক্ষমা পাওয়ার পরেও কারাগারের অন্ধকার ঘরে ১০ বছর বেশি থাকতে হয়েছে
জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার তারাকান্দির পাখিমারা গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী
আজমত আলী মাস্টারকে। আর এই ১০ বছরে জেল থেকে মুক্তি পেতে জমি-জমা সব বিক্রি
করে আজ তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। মুক্তি মিললেও অর্থকষ্টে,
অনাহারে-অর্ধাহারে এখন দিন কাটছে তার।
আজমত আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ১৯৮৭ সালের ১ এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল নিহত হন। এ ঘটনায় আমাকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় ১৯৮৯ সনের ৮ মার্চ আমাকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন জামালপুর জেলা জজ আদালত। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা এবং হাইকোর্টে আপিল করি। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করেন। ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পাই। অপর দিকে হাইকোর্টে আপিল করা মামলায় ২০০৫ সালের ২ মার্চ হওয়া রায়ে খালাস পাই।
তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আমাকে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে নিম্ন আদালতে উপস্থিত করে। পরে ২০১০ সালের ১১ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায়ে হাইকোর্টের রায় (খালাস) ও আদেশ রদ করে নিম্ন আদালতের যাবজ্জীবন আদেশ বহাল রাখে।
আজমত আলী জানান, ওই লিভ টু আপিলের বিষয়ে কোনও খোঁজ রাখেননি। ফলে উচ্চ আদালতকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টিও জানানো হয়নি। অন্য কেউ এ বিষয়টি উল্লেখও করেনি। পরে আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার বিষয়ে আইনি সহায়তার জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যালএইড শাখায় আবেদন করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২৭ জুন আপিল বিভাগ রিভিউ নিষ্পত্তি করে রায় দেন। পরে ১৬ জুলাই আপিল বিভাগের নির্দেশে জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান আজমত আলী।
আজমত আলী আরও জানান, যেদিন তাকে প্রথম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় সেদিনই তার বাবা ইজ্জত উল্লা সরদার হার্টফেল করে মারা যান। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ১৪ বছর হলেও সব মিলিয়ে আজমত আলীকে ১৭ বছর জেল খাটতে হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও কারাদণ্ড ভোগ করতে হয় ৯ বছর ৮ মাস ১৭ দিন। এরআগে, তিনি জেল খাটেন ৭ বছর ৫ মাস ১৩ দিন। এই মামলা চালাতে গিয়ে তার আনুমানিক ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এসব কারণে তার সংসার আজ বেহাল অবস্থায় রয়েছে, অর্থকষ্টে ও অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তার।
আজমত আলীর স্ত্রী জবেদা বেগম (৬০) বলেন, আমার স্বামী জেলে থাকার সময় আমার ভাই এবং বাবার বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা অনেক সহযোগিতা করেছেন। তা না হলে আমার টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে পড়তো। বাবার বাড়ির এবং প্রতিবেশীদের কাছে আমি অনেক ঋণী।
এখনের আজমত আলী এবং তার স্ত্রী জবেদা বেগম বলেন, বেঁচে থাকার জন্য আমরা সরকারের কাছে সাহায্যের আকুতি জানাচ্ছি।
আজমত আলীর প্রতিবেশী আব্দুর সামাদ (৫৫) ও এ কে এম ফজলুল হক (৫০) জানান, আজমত আলীর অবর্তমানে তার মেয়েদেরকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তাদের সংসারটাকে দেখে-শুনে রেখেছি। আজমত আলীর তিন মেয়ে এবং এক ছেলে।
আজমত আলীর আইনজীবী জয়ন্ত কুমার জানান, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও তাকে আটকে রাখাটা ঠিক হয়নি। তবে উচ্চ আদালত না জেনে আদেশ দেওয়ার কারণেই জটিলতার সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি জানানো হলে আদালত তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।
আজমত আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ১৯৮৭ সালের ১ এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল নিহত হন। এ ঘটনায় আমাকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় ১৯৮৯ সনের ৮ মার্চ আমাকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন জামালপুর জেলা জজ আদালত। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা এবং হাইকোর্টে আপিল করি। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করেন। ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পাই। অপর দিকে হাইকোর্টে আপিল করা মামলায় ২০০৫ সালের ২ মার্চ হওয়া রায়ে খালাস পাই।
তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আমাকে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে নিম্ন আদালতে উপস্থিত করে। পরে ২০১০ সালের ১১ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায়ে হাইকোর্টের রায় (খালাস) ও আদেশ রদ করে নিম্ন আদালতের যাবজ্জীবন আদেশ বহাল রাখে।
আজমত আলী জানান, ওই লিভ টু আপিলের বিষয়ে কোনও খোঁজ রাখেননি। ফলে উচ্চ আদালতকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টিও জানানো হয়নি। অন্য কেউ এ বিষয়টি উল্লেখও করেনি। পরে আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার বিষয়ে আইনি সহায়তার জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যালএইড শাখায় আবেদন করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২৭ জুন আপিল বিভাগ রিভিউ নিষ্পত্তি করে রায় দেন। পরে ১৬ জুলাই আপিল বিভাগের নির্দেশে জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান আজমত আলী।
আজমত আলী আরও জানান, যেদিন তাকে প্রথম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় সেদিনই তার বাবা ইজ্জত উল্লা সরদার হার্টফেল করে মারা যান। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ১৪ বছর হলেও সব মিলিয়ে আজমত আলীকে ১৭ বছর জেল খাটতে হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও কারাদণ্ড ভোগ করতে হয় ৯ বছর ৮ মাস ১৭ দিন। এরআগে, তিনি জেল খাটেন ৭ বছর ৫ মাস ১৩ দিন। এই মামলা চালাতে গিয়ে তার আনুমানিক ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এসব কারণে তার সংসার আজ বেহাল অবস্থায় রয়েছে, অর্থকষ্টে ও অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তার।
আজমত আলীর স্ত্রী জবেদা বেগম (৬০) বলেন, আমার স্বামী জেলে থাকার সময় আমার ভাই এবং বাবার বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা অনেক সহযোগিতা করেছেন। তা না হলে আমার টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে পড়তো। বাবার বাড়ির এবং প্রতিবেশীদের কাছে আমি অনেক ঋণী।
এখনের আজমত আলী এবং তার স্ত্রী জবেদা বেগম বলেন, বেঁচে থাকার জন্য আমরা সরকারের কাছে সাহায্যের আকুতি জানাচ্ছি।
আজমত আলীর প্রতিবেশী আব্দুর সামাদ (৫৫) ও এ কে এম ফজলুল হক (৫০) জানান, আজমত আলীর অবর্তমানে তার মেয়েদেরকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তাদের সংসারটাকে দেখে-শুনে রেখেছি। আজমত আলীর তিন মেয়ে এবং এক ছেলে।
আজমত আলীর আইনজীবী জয়ন্ত কুমার জানান, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও তাকে আটকে রাখাটা ঠিক হয়নি। তবে উচ্চ আদালত না জেনে আদেশ দেওয়ার কারণেই জটিলতার সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি জানানো হলে আদালত তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।
No comments