তবুও ইয়াবার ছড়াছড়ি by শুভ্র দেব
কৌশল
পাল্টে ফের সক্রিয় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সর্বত্রই
হাত বাড়ালে পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যেই
দেদারসে বেচা-কেনা হচ্ছে ইয়াবা। অথচ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকডোল পিটিয়ে
আত্মসমর্পণ করেছিলেন ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী। এছাড়া গত বছরের মে মাস থেকে
মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে ৩৭৬ দিনে সারা দেশে আইন শৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ৩৭৮ মাদক ব্যবসায়ী। দেশের
সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ানো হয়েছে বাড়তি নজরদারি। এতকিছুর পরও আসছে ইয়াবা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ার পর গাঁ ঢাকা দিয়েছিলেন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।
অভিযান কিছুটা শিথিল হওয়ার পর তারা আবার জনসন্মুখে এসে ব্যবসায় মনোযোগ দেয়। সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা শীর্ষ ব্যবসায়ীদের তালিকা, ইয়াবার রুট ও বিভিন্ন ঘাঁটি শনাক্ত করে। এদের মধ্য ১০২ জন ব্যবসায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। জনমনে স্বস্তি সঞ্চার হয়েছিল হয়তো ইয়াবার ছড়াছড়ি এবার বন্ধ হবে। কিন্ত তা হয়নি। বরং নানা কৌশল অবলম্বন করে, সড়কপথ, রেলপথ, জলপথ, আকাশপথে আসছে বড় বড় ইয়াবার চালান। মাছের গাড়ি, সবজির গাড়ি, কুরিয়ার সার্ভিসে ইয়াবা পাচারের পাশাপাশি পেট ভাড়ায়ও পাচার করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকেই ইয়াবার চালান দেশে ঢুকে। মিয়ানমারের সীমান্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে টার্গেট করে গড়ে উঠেছে অনেক ইয়াবার কারখানা। এসব কারখানায় প্রতিদিন লাখ লাখ পিস ইয়াবা তৈরি হয়। রোহিঙ্গাদের বাহক হিসাবে ব্যবহার করে এসব ইয়াবা আসে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের হাতে। তারা এসব ইয়াবা ছড়িয়ে দেয় সারাদেশের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। গোয়েন্দাসূত্র বলছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে ইয়াবার চালান দেশে ঢুকতে সহযোগিতা করছেন। এছাড়া রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ইয়াবা ব্যবসার বড় একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বেশিরভাগ সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু করার থাকে না। আর অন্যদিকে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তারা জামিনে মুক্তি নিয়ে ফের একই ব্যবসায় জড়াচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড ও ডিএনসি ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৮৮ টি মামলা করেছে। এসব মামলায় ২ লাখ ১ হাজার ২৮১ মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এর মধ্যে রয়েছে ৬ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ৮৫৪ টি ইয়াবা ট্যাবলেট। ৫৩৩ কেজি হেরোইন। ৭ হাজার ৪২৪ কেজি গাঁজা। ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৭ বোতল ফেন্সিডিল। ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৮১ বোতল বিদেশী মদ। ১ লাখ ২৩ হাজার বোতল বিয়ার ও ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৫৯ টি ইনজেকটিং ড্র্যাগ।
এদিকে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফয়সল হাসান খান মানবজমিনকে বলেন, সরকারের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পর থেকে আমরা নাফ নদীতে মাছ ধরা নৌকা ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। সীমান্তে আমাদের নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যক্তি রাতের আধারে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে রুট পরিবর্তন করে ইয়াবার চালান নিয়ে আসছে। তিনি বলেন, আমরা সবসময় সতর্ক আছি। তবুও বিশাল সীমান্তবর্তী এলাকা থাকার কারণে তারা আমাদের চোখ ফাঁকি দিচ্ছে। বন্দুকযুদ্ধে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হচ্ছে এমন প্রসঙ্গে বিজিবির এই অধিনায়ক বলেন, বন্দুক যুদ্ধে যারা মারা যাচ্ছেন এরা অনেকেই ছোট ব্যবসায়ী। মূল হোতারা সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে আছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ইয়াবা পাচারের মূল হোতারা টেকনাফে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা নিজেরাই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে এখনও সীমান্ত দিয়ে টেকনাফে ইয়াবার বড় বড় চালান ঢুকছে। তিনি বলেন, ইয়াবার চালান আসা কমেনি। কারণ ইয়াবার চাহিদা আগের মতই রয়ে গেছে। কিন্তু কেউ কেউ মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আসা ৬০/৭০ ভাগ কমে গেছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার এটা মিথ্যা বলছেন।
বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই নতুন নতুন রুট তৈরি করছে। একই রুটে তারা বেশি দিন ইয়াবা পাচার করে না। মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনার আগেই তারা রুট ম্যাপ করে নেয়। যে সকল স্পটে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থাকে সে পথ তারা এড়িয়ে চলে। তারা ঘাপটি ধরে বসে থাকে। নিরাপদ সময় হিসাবে তারা গভীর রাতকে বেচে নেয়। স্থল ও জল উভয় রুটে ইয়াবা ঢুকে। তাই এসব হোতাদের ধরার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছে বিজিবি। ইতিমধ্যে অনেক ছোটখাটো ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আবার অনেককে আটক করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
মাদক ব্যবসায়ীরা বলছেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি চললেও ইয়াবার চাহিদা মোটেও কমেনি। চাহিদা আছে বলেই যোগান হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খিলগাঁও এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ী বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মাদক স্পটগুলোতে অভিযান চালায়। তাই অনেকটা নিরাপদে থেকে ব্যবসা চালাতে হচ্ছে। অপরিচিত কোন ক্রেতাকে ইয়াবা দেয়া হচ্ছে না। কারণ অনেক সময় পুলিশের সদস্যরা ফাঁদ পেতে আটক করার চেষ্টা করে। তবে ব্যবসা বন্ধ নেই। সব স্পটেই কম বেশি বিক্রি চলছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ার পর গাঁ ঢাকা দিয়েছিলেন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।
অভিযান কিছুটা শিথিল হওয়ার পর তারা আবার জনসন্মুখে এসে ব্যবসায় মনোযোগ দেয়। সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা শীর্ষ ব্যবসায়ীদের তালিকা, ইয়াবার রুট ও বিভিন্ন ঘাঁটি শনাক্ত করে। এদের মধ্য ১০২ জন ব্যবসায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। জনমনে স্বস্তি সঞ্চার হয়েছিল হয়তো ইয়াবার ছড়াছড়ি এবার বন্ধ হবে। কিন্ত তা হয়নি। বরং নানা কৌশল অবলম্বন করে, সড়কপথ, রেলপথ, জলপথ, আকাশপথে আসছে বড় বড় ইয়াবার চালান। মাছের গাড়ি, সবজির গাড়ি, কুরিয়ার সার্ভিসে ইয়াবা পাচারের পাশাপাশি পেট ভাড়ায়ও পাচার করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকেই ইয়াবার চালান দেশে ঢুকে। মিয়ানমারের সীমান্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে টার্গেট করে গড়ে উঠেছে অনেক ইয়াবার কারখানা। এসব কারখানায় প্রতিদিন লাখ লাখ পিস ইয়াবা তৈরি হয়। রোহিঙ্গাদের বাহক হিসাবে ব্যবহার করে এসব ইয়াবা আসে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের হাতে। তারা এসব ইয়াবা ছড়িয়ে দেয় সারাদেশের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। গোয়েন্দাসূত্র বলছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে ইয়াবার চালান দেশে ঢুকতে সহযোগিতা করছেন। এছাড়া রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ইয়াবা ব্যবসার বড় একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বেশিরভাগ সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু করার থাকে না। আর অন্যদিকে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তারা জামিনে মুক্তি নিয়ে ফের একই ব্যবসায় জড়াচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড ও ডিএনসি ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৮৮ টি মামলা করেছে। এসব মামলায় ২ লাখ ১ হাজার ২৮১ মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এর মধ্যে রয়েছে ৬ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ৮৫৪ টি ইয়াবা ট্যাবলেট। ৫৩৩ কেজি হেরোইন। ৭ হাজার ৪২৪ কেজি গাঁজা। ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৭ বোতল ফেন্সিডিল। ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৮১ বোতল বিদেশী মদ। ১ লাখ ২৩ হাজার বোতল বিয়ার ও ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৫৯ টি ইনজেকটিং ড্র্যাগ।
এদিকে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফয়সল হাসান খান মানবজমিনকে বলেন, সরকারের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পর থেকে আমরা নাফ নদীতে মাছ ধরা নৌকা ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। সীমান্তে আমাদের নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যক্তি রাতের আধারে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে রুট পরিবর্তন করে ইয়াবার চালান নিয়ে আসছে। তিনি বলেন, আমরা সবসময় সতর্ক আছি। তবুও বিশাল সীমান্তবর্তী এলাকা থাকার কারণে তারা আমাদের চোখ ফাঁকি দিচ্ছে। বন্দুকযুদ্ধে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হচ্ছে এমন প্রসঙ্গে বিজিবির এই অধিনায়ক বলেন, বন্দুক যুদ্ধে যারা মারা যাচ্ছেন এরা অনেকেই ছোট ব্যবসায়ী। মূল হোতারা সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে আছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ইয়াবা পাচারের মূল হোতারা টেকনাফে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা নিজেরাই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে এখনও সীমান্ত দিয়ে টেকনাফে ইয়াবার বড় বড় চালান ঢুকছে। তিনি বলেন, ইয়াবার চালান আসা কমেনি। কারণ ইয়াবার চাহিদা আগের মতই রয়ে গেছে। কিন্তু কেউ কেউ মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আসা ৬০/৭০ ভাগ কমে গেছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার এটা মিথ্যা বলছেন।
বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই নতুন নতুন রুট তৈরি করছে। একই রুটে তারা বেশি দিন ইয়াবা পাচার করে না। মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনার আগেই তারা রুট ম্যাপ করে নেয়। যে সকল স্পটে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থাকে সে পথ তারা এড়িয়ে চলে। তারা ঘাপটি ধরে বসে থাকে। নিরাপদ সময় হিসাবে তারা গভীর রাতকে বেচে নেয়। স্থল ও জল উভয় রুটে ইয়াবা ঢুকে। তাই এসব হোতাদের ধরার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছে বিজিবি। ইতিমধ্যে অনেক ছোটখাটো ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আবার অনেককে আটক করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
মাদক ব্যবসায়ীরা বলছেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি চললেও ইয়াবার চাহিদা মোটেও কমেনি। চাহিদা আছে বলেই যোগান হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খিলগাঁও এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ী বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মাদক স্পটগুলোতে অভিযান চালায়। তাই অনেকটা নিরাপদে থেকে ব্যবসা চালাতে হচ্ছে। অপরিচিত কোন ক্রেতাকে ইয়াবা দেয়া হচ্ছে না। কারণ অনেক সময় পুলিশের সদস্যরা ফাঁদ পেতে আটক করার চেষ্টা করে। তবে ব্যবসা বন্ধ নেই। সব স্পটেই কম বেশি বিক্রি চলছে।
No comments