যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবে by ইয়ান ইয়ানমিং
মার্কিন
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার গত ৭ আগস্ট শনিবার এশিয়ায় ভূমিভিত্তিক মধ্যম পাল্লার
ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। ব্যাপকভাবে ধারণা করা
হচ্ছিল যে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়া-প্যাসিফিকে মার্কিন
মিত্ররাই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের জন্য প্রথম পছন্দের দেশ হবে।
তবে মন্ত্রীর বিবৃতির মাত্র দু’দিন পরই মার্কিন বাঁধনহীন কল্পনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন তার দেশে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, তাদের বিষয়টি জানানো পর্যন্ত হয়নি।
এ থেকে বোঝা যায়, ওয়াশিংটনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে এই অঞ্চলের দেশগুলোর না বলার অধিকার ও সক্ষমতা রয়েছে। এতে মনে হয়, এই অঞ্চলের কৌশলগত কাঠামো ক্রমবর্ধমান হারে মার্কিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এশিয়া-প্যাসিফিক গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব প্রভাবকদের লালন করে এবং উদীয়মান শক্তিগুলোর উত্থান প্রত্যক্ষ করেছে। আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে গুটিকতেক বিরোধ থাকলেও এই অঞ্চলের থিমে সবসময়ই সহযোগিতা ও বিনিময় ছিল। এর ফলে কেবল এই অঞ্চলে নয়, বিশ্বেও গতিশীলতা ও সমৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শক্তি চীন অনেক আঞ্চলিক শক্তির জন্য কল্যাণ ও সুযোগ নিয়ে এসেছে, আঞ্চলিক উন্নয়নে বিপুল ভূমিকা রাখছে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই ক্ষতি করেছে। দেশটি এখনো এই অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তারের দিবা স্বপ্ন দেখে চলেছে। এ ধরনের উদ্দেশ্য থেকেই তারা এখানে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। কেবল চীন ও রাশিয়ার মোকাবিলার জন্যই নয়, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত আধিপত্য জোরদার ও সংহত করার জন্যও এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে ওয়াশিংটনের উচিত বাস্তবতা অনুভব করা, তার বিপজ্জনক খেলায় খেলতে আগ্রহী কোনো দেশ আছে কিনা তা খুঁজে বের করা। এই অঞ্চলের দেশগুলো বুঝতে পারবে যে মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল অন্ধভাবে অনুসরণ করা হলে তাদেরকে কেবল বিশৃঙ্খলার দিকেই পরিচালিত করবে না, সেইসাথে তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থেরও ক্ষতি হবে।
মার্কিন মিত্র হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে বিবেচনা করা হয় চীনকে দমনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক খেলোয়াড়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেশটি চীনের উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, এ থেকে উপকৃতও হচ্ছে। বেইজিংকে সংযত করার ওয়াশিংটনের প্রয়াস শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলকে বিভক্ত করবে, এর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না ক্যানবেরাও।
ক্যানবেরাকে কিছু গ্রহণ করতে বাধ্য করা হলে তা তাকে বিবেচনা করতে হবে। মনে হচ্ছে, এশিয়া-প্যাসিফিকের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার মার্কিন পরিকল্পনার বিষয়টি বুঝতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া এবং বুঝতে পেরেছে, এতে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নিজের ক্ষতিই করবে। এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত নিরাপত্তা বিশ্লেষক হিউ হোয়াইটের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ তিনি বলেছেন, বেইজিংয়ের সাথে সঙ্ঘাতে ওয়াশিংটনকে অনুসরণ করা উচিত হবে না ক্যানবেরার। যুদ্ধে ওয়াশিংটন হেরে যেতে পারে।
ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হলে তা রাশিয়া, চীন ও অন্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোর জন্য সামরিক হুমকি বলে বিবেচিত হতে পারে। এতে করে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ভারসাম্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
এশিয়া-প্যাসিফিকের বর্তমান চিত্রে কিছু দেশ সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ও অর্থনৈতিকভাবে চীনের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় অস্থিরতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আনা বিশৃঙ্খলা বাদ দিয়ে এই অঞ্চলের সব দেশের উচিত হবে নিরাপত্তা ও আস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য একত্রে কাজ করা।
কোনো অঞ্চলের উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হলো নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা। কোনো অঞ্চল যদি সামরিক এলাকায় পরিণত হয়, যেখানে সব দেশই থাকে ঝুঁকির মুখে, তাহলে সে কিভাবে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হাসিল করবে? এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সব সামরিক মিত্রদের আন্তরিকভাবে চিন্তা করা উচিত। এশিয়া-প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাখ্যান নিয়ে একমতে উপনীত হওয়া প্রয়োজন।
তবে মন্ত্রীর বিবৃতির মাত্র দু’দিন পরই মার্কিন বাঁধনহীন কল্পনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন তার দেশে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, তাদের বিষয়টি জানানো পর্যন্ত হয়নি।
এ থেকে বোঝা যায়, ওয়াশিংটনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে এই অঞ্চলের দেশগুলোর না বলার অধিকার ও সক্ষমতা রয়েছে। এতে মনে হয়, এই অঞ্চলের কৌশলগত কাঠামো ক্রমবর্ধমান হারে মার্কিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এশিয়া-প্যাসিফিক গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব প্রভাবকদের লালন করে এবং উদীয়মান শক্তিগুলোর উত্থান প্রত্যক্ষ করেছে। আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে গুটিকতেক বিরোধ থাকলেও এই অঞ্চলের থিমে সবসময়ই সহযোগিতা ও বিনিময় ছিল। এর ফলে কেবল এই অঞ্চলে নয়, বিশ্বেও গতিশীলতা ও সমৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শক্তি চীন অনেক আঞ্চলিক শক্তির জন্য কল্যাণ ও সুযোগ নিয়ে এসেছে, আঞ্চলিক উন্নয়নে বিপুল ভূমিকা রাখছে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই ক্ষতি করেছে। দেশটি এখনো এই অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তারের দিবা স্বপ্ন দেখে চলেছে। এ ধরনের উদ্দেশ্য থেকেই তারা এখানে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। কেবল চীন ও রাশিয়ার মোকাবিলার জন্যই নয়, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত আধিপত্য জোরদার ও সংহত করার জন্যও এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে ওয়াশিংটনের উচিত বাস্তবতা অনুভব করা, তার বিপজ্জনক খেলায় খেলতে আগ্রহী কোনো দেশ আছে কিনা তা খুঁজে বের করা। এই অঞ্চলের দেশগুলো বুঝতে পারবে যে মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল অন্ধভাবে অনুসরণ করা হলে তাদেরকে কেবল বিশৃঙ্খলার দিকেই পরিচালিত করবে না, সেইসাথে তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থেরও ক্ষতি হবে।
মার্কিন মিত্র হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে বিবেচনা করা হয় চীনকে দমনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক খেলোয়াড়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেশটি চীনের উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, এ থেকে উপকৃতও হচ্ছে। বেইজিংকে সংযত করার ওয়াশিংটনের প্রয়াস শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলকে বিভক্ত করবে, এর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না ক্যানবেরাও।
ক্যানবেরাকে কিছু গ্রহণ করতে বাধ্য করা হলে তা তাকে বিবেচনা করতে হবে। মনে হচ্ছে, এশিয়া-প্যাসিফিকের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার মার্কিন পরিকল্পনার বিষয়টি বুঝতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া এবং বুঝতে পেরেছে, এতে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নিজের ক্ষতিই করবে। এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত নিরাপত্তা বিশ্লেষক হিউ হোয়াইটের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ তিনি বলেছেন, বেইজিংয়ের সাথে সঙ্ঘাতে ওয়াশিংটনকে অনুসরণ করা উচিত হবে না ক্যানবেরার। যুদ্ধে ওয়াশিংটন হেরে যেতে পারে।
ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হলে তা রাশিয়া, চীন ও অন্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোর জন্য সামরিক হুমকি বলে বিবেচিত হতে পারে। এতে করে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ভারসাম্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
এশিয়া-প্যাসিফিকের বর্তমান চিত্রে কিছু দেশ সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ও অর্থনৈতিকভাবে চীনের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় অস্থিরতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আনা বিশৃঙ্খলা বাদ দিয়ে এই অঞ্চলের সব দেশের উচিত হবে নিরাপত্তা ও আস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য একত্রে কাজ করা।
কোনো অঞ্চলের উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হলো নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা। কোনো অঞ্চল যদি সামরিক এলাকায় পরিণত হয়, যেখানে সব দেশই থাকে ঝুঁকির মুখে, তাহলে সে কিভাবে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হাসিল করবে? এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সব সামরিক মিত্রদের আন্তরিকভাবে চিন্তা করা উচিত। এশিয়া-প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাখ্যান নিয়ে একমতে উপনীত হওয়া প্রয়োজন।
No comments