বিকাশ ফোন দেয় না, ফোন দেয় প্রতারকরা by মো. শফিকুল ইসলাম
লাস্ট আপডেট- ২২ মে ২০১৯: হ্যালো,
বিকাশ থেকে বলছি। আপনার বিকাশ নম্বরে সাত হাজার টাকা ঢুকেছে। আপনার
অ্যাকাউন্টে একটু সমস্যা হয়েছে। এটা বন্ধ করে দেয়া হবে। সঠিক তথ্য দিতে
পারলে আপনার অ্যাকাউন্ট সচল রাখা হবে। এরপর ভোটার আইডি কার্ডের নাম, নম্বর,
পিতার নাম জানতে চাওয়া হয়। বলা হয়, আপনার নম্বরে একটা মেসেজে গেছে। পিন
নম্বরটা বলুন।
এতটুকুই কথা। একটা মেসেজ আসলো। ক্যাশ আউট সাত হাজার টাকা। গ্রাহকের সর্বনাশ! অর্থাৎ যা হওয়ার তা-ই হলো, বিকাশ অ্যাকাউন্ট পুরো ফাঁকা হয়ে গেল। এভাবেই অভিনব কৌশলে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থলুটে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। এ প্রসঙ্গে বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্রাহক সচেতনতা ছাড়া এ সমস্যার কোনো সমাধান নেই।
রাজধানীর বাড্ডার কামাল হোসেন একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। গত রোববার বিকেলে গুলশানের একটি দোকান থেকে তার বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করেন। এর কিছুক্ষণ পরই ফোনে কল পান কামাল হোসেন।
বিকাশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ফোনে ওই ব্যক্তি বলেন, আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারণ, আপনার ভোটার আইডির তথ্য ভুল। আপনি সঠিক তথ্য দিলে আপনার অ্যাকাউন্ট আবার আমরা চালু করে দেব। না হলে এটি বন্ধ থাকবে।
এরপর ভোটার আইডি কার্ডের নাম, নম্বর জানতে চাওয়া হয়। বলার পর, একটি এসএমএস পাঠিয়ে পিন নম্বর জানতে চান ওই ব্যক্তি। এরপর আইডি তথ্য দিতে অস্বীকার করলে তিনি বলেন, তথ্য না দিলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকবে। এরপরই অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ। অর্থাৎ টাকা হাতিয়ে নিতে না পারলেও নম্বর ব্লক করে দেয় প্রতারকরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি সচেতন বলে পিন নম্বর দেইনি। তাই আমার অর্থ খোয়া যায়নি। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ লুটে নেয়া হচ্ছে। আসছে ঈদ। এসব প্রতারক চক্রের কৌশল আরও বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের সবার উচিত সতর্ক হওয়া। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান এ সেবা দিয়ে টাকা কামাচ্ছে তাদের দায়বদ্ধতা থেকে সচেতনতামূলক উদ্যোগ বাড়ানো উচিত- যোগ করেন তিনি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্র বেশির ভাগ সময় তথ্য নেন বিকাশ এজেন্টদের কাছ থেকে। অর্থাৎ যখন বিকাশ অ্যাকাউন্টে ক্যাশ ইন করা হয় তখন এজেন্টের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তারা কৌশলে গ্রাহকের নম্বরে কল দিয়ে প্রতারণার জাল ফেলে। যারা জালে আটকে যায় তাদের হয় সর্বনাশ। যারা একটু সচেতন তাদের অর্থ খোয়া যায় না। তবে ব্লক অ্যাকাউন্ট খুলতে পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
বিকাশের এ গ্রাহক হয়রানির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম জাগো নিউজকে বলেন, গ্রাহককে আমরা সবসময় বলি, আপনি আপনার পিন নম্বর কখনোই কাউকে দেবেন না। বিকাশ কর্তৃপক্ষ কিংবা আইনশৃঙ্খালা রক্ষাকারী বাহিনী কখনোই গ্রাহকের কাছে পিন নম্বর চাইবে না। যারা পিন নম্বর জানতে চাইবে তারাই প্রতারক।
তাদের পিন নম্বর দিলে তারা অর্থ লুটে নেয়। তাই কোনোভাবেই পিন নম্বর কাউকে দেয়া যাবে না। এরপরও যদি কোনো গ্রাহক এ ধরনের ঘটনার শিকার হন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ কোনো থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন। এরপর জিডির কপি দিলে আইনশৃঙ্খালা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ব্লক অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে গ্রাহক ভোগান্তির বিষয়ে বিকাশের এ কর্মকর্তা জানান, বারবার ভুল পিন নম্বর দিলে অর্থাৎ বিকাশ অ্যাপ অথবা ইউএসএসডি ব্যবহার করে লেনদেনের ক্ষেত্রে পরপর কয়েকবার ভুল পিন দিয়ে অ্যাকাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা করলে গ্রাহকের নিরাপত্তার স্বার্থেই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাময়িক স্থগিত হয়ে যায়। এটা গ্রাহকের নিরাপত্তার স্বার্থেই করা হয়। পরে গ্রাহক হেল্পলাইনে সরাসরি যোগাযোগ করে সঠিক মালিকানার প্রমাণ দিলে অ্যাকাউন্ট পুনরায় সচল করে দেয়া হয়।
বিকাশে দৈনিক সাত লাখ বার লেনদেন হচ্ছে। এর মধ্যে মাত্র ১০০টিতে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানান বিকাশের এ কর্মকর্তা।
মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকদের অর্থ কৌশলে হাতিয়ে নিতে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র সক্রিয়- জানিয়ে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের বিভাগ এ ধরনের অপরাধে মোট ৫০ জনকে আটক করেছে। আটকদের মধ্যে বেশির ভাগই ফরিদপুরের ভাঙ্গা, শ্রীপুর ও মাগুরার বাসিন্দা। আমরা প্রতিনিয়ত এ বিষয়গুলো মনিটরিং করছি। এছাড়া এ ধরনের প্রতারণার কোনো অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বিকাশের গ্রাহক জামাল বলেন, কেউ আমার বিকাশ অ্যাকাউন্টের তথ্য চাইবে, না দিলে অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেবে- এটা কেমন কথা। এটা কিন্তু ঘটছে। আমি ভোগান্তিতে পড়ছি। কর্তৃপক্ষকে এটা নিয়ে অবশ্যই চিন্তা করা উচিত।
এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিধি বাড়ছে। গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে, সঙ্গে প্রতারণাও। ফলে এখন এ সেবার নিরাপত্তার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে সবার আগে গ্রাহককে সচেতন হতে হবে। নিজের অ্যাকাউন্টের পিন নম্বরটি কাউকে দেয়া যাবে না। তেমনি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের সেবার মান বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় প্রতারক চক্র গ্রাহককে হয়রানি করতে বারবার ভুল পিন নম্বর প্রয়োগ করে হিসাব ব্লক করে দেয়। এতে গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন। এ বিষয়ে বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা দিতে হবে। যেন কোনোভাবেই গ্রাহক ভোগান্তির শিকার না হন।
এছাড়া প্রতারক চক্রের হাত থেকে গ্রাহককে রক্ষা করতে বিভিন্ন মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রচার করছে। সচেতনতা বাড়াতে এ ধরনের প্রচারণা তারা আরও বাড়াবে বলে প্রত্যাশা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ মুখপাত্র।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংসেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে এখন মোট ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। চলতি বছরের মার্চ শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার।
এতটুকুই কথা। একটা মেসেজ আসলো। ক্যাশ আউট সাত হাজার টাকা। গ্রাহকের সর্বনাশ! অর্থাৎ যা হওয়ার তা-ই হলো, বিকাশ অ্যাকাউন্ট পুরো ফাঁকা হয়ে গেল। এভাবেই অভিনব কৌশলে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থলুটে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। এ প্রসঙ্গে বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্রাহক সচেতনতা ছাড়া এ সমস্যার কোনো সমাধান নেই।
রাজধানীর বাড্ডার কামাল হোসেন একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। গত রোববার বিকেলে গুলশানের একটি দোকান থেকে তার বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করেন। এর কিছুক্ষণ পরই ফোনে কল পান কামাল হোসেন।
বিকাশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ফোনে ওই ব্যক্তি বলেন, আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারণ, আপনার ভোটার আইডির তথ্য ভুল। আপনি সঠিক তথ্য দিলে আপনার অ্যাকাউন্ট আবার আমরা চালু করে দেব। না হলে এটি বন্ধ থাকবে।
এরপর ভোটার আইডি কার্ডের নাম, নম্বর জানতে চাওয়া হয়। বলার পর, একটি এসএমএস পাঠিয়ে পিন নম্বর জানতে চান ওই ব্যক্তি। এরপর আইডি তথ্য দিতে অস্বীকার করলে তিনি বলেন, তথ্য না দিলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকবে। এরপরই অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ। অর্থাৎ টাকা হাতিয়ে নিতে না পারলেও নম্বর ব্লক করে দেয় প্রতারকরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি সচেতন বলে পিন নম্বর দেইনি। তাই আমার অর্থ খোয়া যায়নি। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ লুটে নেয়া হচ্ছে। আসছে ঈদ। এসব প্রতারক চক্রের কৌশল আরও বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের সবার উচিত সতর্ক হওয়া। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান এ সেবা দিয়ে টাকা কামাচ্ছে তাদের দায়বদ্ধতা থেকে সচেতনতামূলক উদ্যোগ বাড়ানো উচিত- যোগ করেন তিনি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্র বেশির ভাগ সময় তথ্য নেন বিকাশ এজেন্টদের কাছ থেকে। অর্থাৎ যখন বিকাশ অ্যাকাউন্টে ক্যাশ ইন করা হয় তখন এজেন্টের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তারা কৌশলে গ্রাহকের নম্বরে কল দিয়ে প্রতারণার জাল ফেলে। যারা জালে আটকে যায় তাদের হয় সর্বনাশ। যারা একটু সচেতন তাদের অর্থ খোয়া যায় না। তবে ব্লক অ্যাকাউন্ট খুলতে পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
বিকাশের এ গ্রাহক হয়রানির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম জাগো নিউজকে বলেন, গ্রাহককে আমরা সবসময় বলি, আপনি আপনার পিন নম্বর কখনোই কাউকে দেবেন না। বিকাশ কর্তৃপক্ষ কিংবা আইনশৃঙ্খালা রক্ষাকারী বাহিনী কখনোই গ্রাহকের কাছে পিন নম্বর চাইবে না। যারা পিন নম্বর জানতে চাইবে তারাই প্রতারক।
তাদের পিন নম্বর দিলে তারা অর্থ লুটে নেয়। তাই কোনোভাবেই পিন নম্বর কাউকে দেয়া যাবে না। এরপরও যদি কোনো গ্রাহক এ ধরনের ঘটনার শিকার হন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ কোনো থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন। এরপর জিডির কপি দিলে আইনশৃঙ্খালা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ব্লক অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে গ্রাহক ভোগান্তির বিষয়ে বিকাশের এ কর্মকর্তা জানান, বারবার ভুল পিন নম্বর দিলে অর্থাৎ বিকাশ অ্যাপ অথবা ইউএসএসডি ব্যবহার করে লেনদেনের ক্ষেত্রে পরপর কয়েকবার ভুল পিন দিয়ে অ্যাকাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা করলে গ্রাহকের নিরাপত্তার স্বার্থেই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাময়িক স্থগিত হয়ে যায়। এটা গ্রাহকের নিরাপত্তার স্বার্থেই করা হয়। পরে গ্রাহক হেল্পলাইনে সরাসরি যোগাযোগ করে সঠিক মালিকানার প্রমাণ দিলে অ্যাকাউন্ট পুনরায় সচল করে দেয়া হয়।
বিকাশে দৈনিক সাত লাখ বার লেনদেন হচ্ছে। এর মধ্যে মাত্র ১০০টিতে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানান বিকাশের এ কর্মকর্তা।
মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকদের অর্থ কৌশলে হাতিয়ে নিতে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র সক্রিয়- জানিয়ে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের বিভাগ এ ধরনের অপরাধে মোট ৫০ জনকে আটক করেছে। আটকদের মধ্যে বেশির ভাগই ফরিদপুরের ভাঙ্গা, শ্রীপুর ও মাগুরার বাসিন্দা। আমরা প্রতিনিয়ত এ বিষয়গুলো মনিটরিং করছি। এছাড়া এ ধরনের প্রতারণার কোনো অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বিকাশের গ্রাহক জামাল বলেন, কেউ আমার বিকাশ অ্যাকাউন্টের তথ্য চাইবে, না দিলে অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেবে- এটা কেমন কথা। এটা কিন্তু ঘটছে। আমি ভোগান্তিতে পড়ছি। কর্তৃপক্ষকে এটা নিয়ে অবশ্যই চিন্তা করা উচিত।
এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিধি বাড়ছে। গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে, সঙ্গে প্রতারণাও। ফলে এখন এ সেবার নিরাপত্তার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে সবার আগে গ্রাহককে সচেতন হতে হবে। নিজের অ্যাকাউন্টের পিন নম্বরটি কাউকে দেয়া যাবে না। তেমনি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের সেবার মান বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় প্রতারক চক্র গ্রাহককে হয়রানি করতে বারবার ভুল পিন নম্বর প্রয়োগ করে হিসাব ব্লক করে দেয়। এতে গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন। এ বিষয়ে বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা দিতে হবে। যেন কোনোভাবেই গ্রাহক ভোগান্তির শিকার না হন।
এছাড়া প্রতারক চক্রের হাত থেকে গ্রাহককে রক্ষা করতে বিভিন্ন মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রচার করছে। সচেতনতা বাড়াতে এ ধরনের প্রচারণা তারা আরও বাড়াবে বলে প্রত্যাশা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ মুখপাত্র।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংসেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে এখন মোট ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। চলতি বছরের মার্চ শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার।
No comments