মিয়ানমারের কৌশলগত উপকূলরেখা এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতিগুলোকে প্রলুব্ধ করছে by ইউশি নিত্তা
মিয়ানমারের
নতুন বন্দর প্রকল্পগুলোকে আগ্রাসীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম
অর্থনীতির দেশ চীন, জাপান ও ভারত। ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশ মিয়ানমারে
নিজেদের অবস্থান সংহত করতেই তারা এই তৎপরতা চালাচ্ছে।
চীন, ভারত ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত মিয়ানমারের এ অঞ্চলের আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভৌগলিক গুরুত্ব রয়েছে।
বিশেষ করে জাপান এখানে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে চায়।
জাপানের লজিস্টিক্স কোম্পানি কামিগুমি এবং বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো কর্পো. এবং টয়োটা সুশো থিলাওয়া স্পেশাল ইকোনমিক জোনের পাশে নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল চালু করেছে। ইয়াঙ্গুন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এই জায়গাটিতে জুনের শুরুর দিকে তারা টার্মিনাল চালু করে।
টার্মিনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কামিগুমি’র চেয়ারম্যান ও সিইও মাসামি কুবো বলেন, “আমরা এখানে উচ্চ মানসম্পন্ন অপারেশান্স ও লজিস্টিক্স সুবিধা চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী”।
এই ফ্যাসিলিটিটি বছরে ২৪০,০০০টি ২০ ফুট কন্টেইটার হ্যান্ডেল করতে পারবে। এই নির্মাণকাজের বড় একটা অংশ এসেছে জাপানের ২৩ বিলিয়ন ইয়েন (২১২ মিলিয়ন ডলার) ঋণ থেকে এবং এটাকে এখন আরও সম্প্রসারণের জন্য আলোচনা চলছে।
মিয়ানমারের অর্থনীতি যেহেতু দ্রুত বাড়ছে, তাই থিলাওয়া ও ইয়াঙ্গুন বন্দরের মিলিত সক্ষমতা পাঁচ বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৭ সালে ১.০৩ মিলিয়ন কন্টেইটার হ্যান্ডেল করা হয়েছে এখানে। কিন্তু দুটোরই অবস্থান নদীপথের খানিকটা ভেতরে এবং বড় কার্গো জাহাজগুলো তাই এগুলো ব্যবহার করতে পারে না। ২০৩০ সালের চাহিদা এই বন্দর দুটো পূরণ করতে পারবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশান এজেন্সি চলতি বছরে সম্পূর্ণ নতুন একটি বন্দর নির্মাণের জন্য জায়গা অনুসন্ধান শুরু করবে, যেটা বড় জাহাজগুলোও ব্যবহার করতে পারবে। এ ব্যাপারে বাছাই তালিকায় রয়েছে মাউলামাইন – যেটা ভিয়েতনামের ভেতর দিয়ে যাওয়া অর্থনৈতিক করিডোরের সর্বপশ্চিমে অবস্থিত, আর রয়েছে ইয়াঙ্গুন নদীর মুখ।
তাছাড়া উন্নয়ন অনুদানের মাধ্যমে জাপান মান্ডালে বন্দরে একটি কন্টেইনার ক্রেইনও স্থাপন করছে।
মূলত চীনের সাথে প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবেই এই প্রকল্পগুলো নিচ্ছে জাপান। চীন এরই মধ্যে মিয়ানমারে অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে অনেক এগিয়ে গেছে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সিটিক গ্রুপ গত নভেম্বরে মিয়ানমার সরকারের সাথে কিয়াকফিউতে একটি বন্দর নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিটিক চেয়ারম্যান চ্যাং ঝেনমিং বলেন, “আমরা এখানে ১০০,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো”।
ভারত মহাসাগরের উপকূলের এই বন্দরটি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বড় তেল ট্যাঙ্কারগুলো ব্যবহার করতে পারবে এবং এটার সাথে চীনের মূল ভূমির তেল ও গ্যাস পাইপলাইন সংযোগ থাকবে। মালাক্কা প্রণালী দিয়ে যে নৌ রুট রয়েছে, এটাকে বেইজিং তার বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে, কারণ মালাক্কার উপর বহু দেশের প্রভাব রয়েছে।
ভারতও মিয়ানমারে তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে। রাখাইন রাজ্যের সিত্তুইয়ে বন্দর ফ্যাসিলিটি নির্মাণে সহায়তা করেছে তারা। ভারত মহাসাগরে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন এবং তাদের ভূ রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে তারা।
ভারত একই সাথে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সাথে তাদের লজিস্টিক্স লিঙ্ক শক্তিশালী করতে চায়। সরকার তাদের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির অধীনে এ অঞ্চলের সাথে তাদের সম্পর্ক জোরালো করার চেষ্টা করছে। এবং সিত্তেয়েকে তারা নিজেদের একটা শক্তি হিসেবে দেখছে, যেটার মাধ্যমে তারা দ্বিপাক্ষিক সীমান্তে পরিবহন রুট স্থাপন করতে চায়।
মে মাসে ভারতের শিল্প গ্রুপ আদানি ঘোষণা দেয় যে, ইয়াঙ্গুন বন্দরে তারা নতুন একটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করবে। সরকারী ও প্রাইভেট উভয় খাতই এখানে যুক্ত হবে।
বাইরের দেশের আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য মিয়ানমার এই সব প্রতিযোগিতা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এ উদ্বেগও রয়েছে যে, তারা ঋণের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে, এবং সেক্ষেত্রে প্রধান অবকাঠামোগুলোকে ঋণদাতার হাতে তুলে দিতে হতে পারে। এ রকম উদ্বেগ থেকেই কিয়াউকফিউ বন্দরের ব্যাপারে চীনের মূল প্রস্তাবকে কাটছাট করে ছয়-ভাগের এক ভাগে নামিয়ে এনেছে মিয়ানমার।
চীন, ভারত ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত মিয়ানমারের এ অঞ্চলের আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভৌগলিক গুরুত্ব রয়েছে।
বিশেষ করে জাপান এখানে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে চায়।
জাপানের লজিস্টিক্স কোম্পানি কামিগুমি এবং বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো কর্পো. এবং টয়োটা সুশো থিলাওয়া স্পেশাল ইকোনমিক জোনের পাশে নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল চালু করেছে। ইয়াঙ্গুন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এই জায়গাটিতে জুনের শুরুর দিকে তারা টার্মিনাল চালু করে।
টার্মিনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কামিগুমি’র চেয়ারম্যান ও সিইও মাসামি কুবো বলেন, “আমরা এখানে উচ্চ মানসম্পন্ন অপারেশান্স ও লজিস্টিক্স সুবিধা চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী”।
এই ফ্যাসিলিটিটি বছরে ২৪০,০০০টি ২০ ফুট কন্টেইটার হ্যান্ডেল করতে পারবে। এই নির্মাণকাজের বড় একটা অংশ এসেছে জাপানের ২৩ বিলিয়ন ইয়েন (২১২ মিলিয়ন ডলার) ঋণ থেকে এবং এটাকে এখন আরও সম্প্রসারণের জন্য আলোচনা চলছে।
মিয়ানমারের অর্থনীতি যেহেতু দ্রুত বাড়ছে, তাই থিলাওয়া ও ইয়াঙ্গুন বন্দরের মিলিত সক্ষমতা পাঁচ বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৭ সালে ১.০৩ মিলিয়ন কন্টেইটার হ্যান্ডেল করা হয়েছে এখানে। কিন্তু দুটোরই অবস্থান নদীপথের খানিকটা ভেতরে এবং বড় কার্গো জাহাজগুলো তাই এগুলো ব্যবহার করতে পারে না। ২০৩০ সালের চাহিদা এই বন্দর দুটো পূরণ করতে পারবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশান এজেন্সি চলতি বছরে সম্পূর্ণ নতুন একটি বন্দর নির্মাণের জন্য জায়গা অনুসন্ধান শুরু করবে, যেটা বড় জাহাজগুলোও ব্যবহার করতে পারবে। এ ব্যাপারে বাছাই তালিকায় রয়েছে মাউলামাইন – যেটা ভিয়েতনামের ভেতর দিয়ে যাওয়া অর্থনৈতিক করিডোরের সর্বপশ্চিমে অবস্থিত, আর রয়েছে ইয়াঙ্গুন নদীর মুখ।
তাছাড়া উন্নয়ন অনুদানের মাধ্যমে জাপান মান্ডালে বন্দরে একটি কন্টেইনার ক্রেইনও স্থাপন করছে।
মূলত চীনের সাথে প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবেই এই প্রকল্পগুলো নিচ্ছে জাপান। চীন এরই মধ্যে মিয়ানমারে অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে অনেক এগিয়ে গেছে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সিটিক গ্রুপ গত নভেম্বরে মিয়ানমার সরকারের সাথে কিয়াকফিউতে একটি বন্দর নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিটিক চেয়ারম্যান চ্যাং ঝেনমিং বলেন, “আমরা এখানে ১০০,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো”।
ভারত মহাসাগরের উপকূলের এই বন্দরটি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বড় তেল ট্যাঙ্কারগুলো ব্যবহার করতে পারবে এবং এটার সাথে চীনের মূল ভূমির তেল ও গ্যাস পাইপলাইন সংযোগ থাকবে। মালাক্কা প্রণালী দিয়ে যে নৌ রুট রয়েছে, এটাকে বেইজিং তার বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে, কারণ মালাক্কার উপর বহু দেশের প্রভাব রয়েছে।
ভারতও মিয়ানমারে তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে। রাখাইন রাজ্যের সিত্তুইয়ে বন্দর ফ্যাসিলিটি নির্মাণে সহায়তা করেছে তারা। ভারত মহাসাগরে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন এবং তাদের ভূ রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে তারা।
ভারত একই সাথে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সাথে তাদের লজিস্টিক্স লিঙ্ক শক্তিশালী করতে চায়। সরকার তাদের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির অধীনে এ অঞ্চলের সাথে তাদের সম্পর্ক জোরালো করার চেষ্টা করছে। এবং সিত্তেয়েকে তারা নিজেদের একটা শক্তি হিসেবে দেখছে, যেটার মাধ্যমে তারা দ্বিপাক্ষিক সীমান্তে পরিবহন রুট স্থাপন করতে চায়।
মে মাসে ভারতের শিল্প গ্রুপ আদানি ঘোষণা দেয় যে, ইয়াঙ্গুন বন্দরে তারা নতুন একটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করবে। সরকারী ও প্রাইভেট উভয় খাতই এখানে যুক্ত হবে।
বাইরের দেশের আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য মিয়ানমার এই সব প্রতিযোগিতা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এ উদ্বেগও রয়েছে যে, তারা ঋণের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে, এবং সেক্ষেত্রে প্রধান অবকাঠামোগুলোকে ঋণদাতার হাতে তুলে দিতে হতে পারে। এ রকম উদ্বেগ থেকেই কিয়াউকফিউ বন্দরের ব্যাপারে চীনের মূল প্রস্তাবকে কাটছাট করে ছয়-ভাগের এক ভাগে নামিয়ে এনেছে মিয়ানমার।
No comments