বিশ্ব একটা বিপর্যয়ের দিকে ধাবমান -ব্যাংককে প্রফেসর ইউনূস
নোবেল
জয়ী ও সামাজিক ব্যবসার রূপকার প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমান বিশ্বের
একটি ছবি এঁকেছেন। ব্যাংককে সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনকে সামনে রেখে রোবট আর
মানুষের মধ্যে যে ফারাক তারও জবাব খুঁজেছেন তিনি। তার ভাষায় যারা সিগারেট,
অ্যালকোহল কিংবা ক্ষতিকর খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন করছেন তারা আসলে সফল মানুষ
নন। তাদের নিয়ে সাময়িকীর পাতায় প্রচ্ছদ করার মানে এই নয়, তারা পৃথিবীতে সফল
হয়ে গেলেন, বরং তার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে মানুষ বলছে লোকটা কতোটা
লোভী! শুধু সে তার নিজের জন্য সম্পদের পাহাড় গড়তে গিয়ে কতো অংসখ্য ভোক্তার
জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছেন। বিশ্ব এভাবেই তাদেরকে সজ্ঞায়িত করেছে। তাই আজ
সময় এসেছে সুখের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণের। এটা বলা যে, অর্থ সুখ আসলে সুখ
নয়, অসুখ।
আজ শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুরু হচ্ছে নবম বার্ষিক সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশসহ ৪৪ টি দেশের দেড় হাজার প্রতিনিধি ব্যাংককে হাজির হয়েছেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সকাল ১০টায় ব্যাংককের সেন্টার ওয়ার্ল্ড এর সেন্টার গ্র্যান্ড অ্যান্ড ব্যাংকক কনভেনশন সেন্টারে সামাজিক ব্যবসার গতি-প্রকৃতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। ৪৪টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক ব্যবসা অনুষদ ইতিমধ্যেই খোলা হয়ে গেছে। এবারের সামাজিক ব্যবসা দিবসে করপোরেট সামাজিক নেতৃবৃন্দ, এনজিও, খেলোয়াড়, অভিনেতা, শিক্ষার্থী এবং উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন। সামাজিক ব্যবসা দিবসকে সামনে রেখে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার করণীয়ও বাতলে দিয়েছেন। তার কথায়, বিশ্ব একটা বিপর্যয়ের দিকে ধাবমান। তার আশঙ্কা, এই শতাব্দির বাইরে মানবজাতির বেঁচে থাকার কোনোই সম্ভাবনা নেই। একে বাঁচিয়ে রাখতে এখন একটাই পথ, তা হলো আমরা যেসব ক্ষতিকর কাজ ইতিমধ্যেই সাধন করেছি তা থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করা। যদি আমরা এই ক্ষতিকর পথ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি তাহলে নতুন এক সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, আমরা শিখেছি ব্যবসা শুধু অর্থের জন্য। এই ধারণা উল্টে দিতে আমাদেরকে ব্যবসার ডিজাইন বদলে দিতে হবে। এই ব্যবসার অন্তর্গত দর্শন হবে শুধুই মানুষের মঙ্গল চিন্তা। আর এই চিন্তা ধারণাই আমাদেরকে সামাজিক বিজনেসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই একটি মাত্র বিপরীতমুখী চিন্তা আকস্মিকভাবে আমাদের সামনে এক নতুন পৃথিবীকে তুলে ধরতে পারে। এতে করে আমরা আমাদের বিশ্বাস ফিরে পেতে পারি। আমরা কেবল এই পৃথিবীকে নিরাপদই করতে পারি না, আমরা এমন একটি পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারি যা আমরা সবাই চাই। প্রত্যেক ব্যক্তিরই যাদুকরী ক্ষমতা রয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তিই সেই অফুরান শক্তির আধার অর্থে একজন ম্যাজিশিয়ান। আর এই সম্মেলন হলো সেই ম্যাজিকের বিষয়ে আমাদের প্রত্যেককে সচেতন করে তোলা। এই সম্মেলন থেকে আমরা সমগ্র মানব ইতিহাসের নানা দিক খুঁজে বের করবো। মনে রাখতে হবে, সমগ্র মানব ইতিহাসে প্রত্যেক ব্যক্তিই একটি অনন্য সৃষ্টি। মানব ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে আমরা আমাদের কাউকেই অবিকল নকল দেখতে পারি না। আমার কাছে মানবজাতির এই বৈশিষ্ট্য রোমাঞ্চকর। এই অনন্য বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত মূল্যবান। কারণ তা আমাদের প্রত্যেককে একটি করে সৃষ্টির মাস্টারপিস হিসেবে গড়ে তুলেছে। আপনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন, কীভাবে বেড়ে উঠেছেন তা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। তাই সৃষ্টির এই যে অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য তাকে হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়।
আর এই বৈশিষ্ট্যই আমাদেরকে রোবট থেকে আলাদা করেছে। তিনি বলেন, রোবটের ক্ষেত্রে আমরা তাদের উৎপাদনকারী কোম্পানি, উৎপাদনের তারিখ, মডেল নাম্বার, এমনকি তাদের সমগোত্রীয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নিতে পারি। কিন্তু মানব প্রজাতির ক্ষেত্রে এর কোনোটিই পারি না। মানবজাতির দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- প্রত্যেকের ভেতরেই রয়েছে অসীম সৃজনশীল ক্ষমতা। সেই সৃজনশীল সামর্থ্য আমাদের অনন্য ভ্রমণ পথে বিকশিত হয়। আমরা মানুষদেরকে টাকার পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরতে দেখি। তাতে ধরিত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষকে আর ঠিক মানুষের মতো দেখায় না। সর্বোপরি এটিই প্রমাণ করা যে, সৃষ্টির বিস্ময় যে মানুষ তার অর্জনকে সীমিত কোনো ধারণা দিয়ে বাঁধা যায় না, তার বিজয়, তার সাফল্য অতলস্পর্শী। সুতরাং সুপার হ্যাপিনেস বা চরম সুখের ধারণা সেখানেই ধরা দিতে পারে। যেখানে আমি আমার মস্তিষ্ককে সংজ্ঞায়িত করতে পারি।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, আপনার অনেক টাকা পয়সা, ধন-দৌলত, ব্যাংক ব্যালেন্স থাকতে পারে। আমি নিশ্চিত যে এসব কিছুর বিনিময়ে আপনি শুধু এক ধরনের সুখই অর্জন করতে পারেন। কিন্তু বলুনতো আপনি আপনার সম্পদ দ্বিগুণ-তিনগুণ করার মধ্য দিয়ে সুখের মাত্রা কি বৃদ্ধি করতে পেরেছেন? চূড়ান্ত হিসেবে আপনার অঢেল টাকা-পয়সা শুধুই একটা কাগুজে সংখ্যা মাত্র। মহাকালের তুলনায় মানবজীবন একটি বুদ্বুদ মাত্র। আসুন না, এই সীমিত সময় যেটুকু আমাদের জন্য বরাদ্দ আছে তা ভালোভাবে ব্যয় করি।
আজ শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুরু হচ্ছে নবম বার্ষিক সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশসহ ৪৪ টি দেশের দেড় হাজার প্রতিনিধি ব্যাংককে হাজির হয়েছেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সকাল ১০টায় ব্যাংককের সেন্টার ওয়ার্ল্ড এর সেন্টার গ্র্যান্ড অ্যান্ড ব্যাংকক কনভেনশন সেন্টারে সামাজিক ব্যবসার গতি-প্রকৃতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। ৪৪টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক ব্যবসা অনুষদ ইতিমধ্যেই খোলা হয়ে গেছে। এবারের সামাজিক ব্যবসা দিবসে করপোরেট সামাজিক নেতৃবৃন্দ, এনজিও, খেলোয়াড়, অভিনেতা, শিক্ষার্থী এবং উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন। সামাজিক ব্যবসা দিবসকে সামনে রেখে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার করণীয়ও বাতলে দিয়েছেন। তার কথায়, বিশ্ব একটা বিপর্যয়ের দিকে ধাবমান। তার আশঙ্কা, এই শতাব্দির বাইরে মানবজাতির বেঁচে থাকার কোনোই সম্ভাবনা নেই। একে বাঁচিয়ে রাখতে এখন একটাই পথ, তা হলো আমরা যেসব ক্ষতিকর কাজ ইতিমধ্যেই সাধন করেছি তা থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করা। যদি আমরা এই ক্ষতিকর পথ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি তাহলে নতুন এক সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, আমরা শিখেছি ব্যবসা শুধু অর্থের জন্য। এই ধারণা উল্টে দিতে আমাদেরকে ব্যবসার ডিজাইন বদলে দিতে হবে। এই ব্যবসার অন্তর্গত দর্শন হবে শুধুই মানুষের মঙ্গল চিন্তা। আর এই চিন্তা ধারণাই আমাদেরকে সামাজিক বিজনেসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই একটি মাত্র বিপরীতমুখী চিন্তা আকস্মিকভাবে আমাদের সামনে এক নতুন পৃথিবীকে তুলে ধরতে পারে। এতে করে আমরা আমাদের বিশ্বাস ফিরে পেতে পারি। আমরা কেবল এই পৃথিবীকে নিরাপদই করতে পারি না, আমরা এমন একটি পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারি যা আমরা সবাই চাই। প্রত্যেক ব্যক্তিরই যাদুকরী ক্ষমতা রয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তিই সেই অফুরান শক্তির আধার অর্থে একজন ম্যাজিশিয়ান। আর এই সম্মেলন হলো সেই ম্যাজিকের বিষয়ে আমাদের প্রত্যেককে সচেতন করে তোলা। এই সম্মেলন থেকে আমরা সমগ্র মানব ইতিহাসের নানা দিক খুঁজে বের করবো। মনে রাখতে হবে, সমগ্র মানব ইতিহাসে প্রত্যেক ব্যক্তিই একটি অনন্য সৃষ্টি। মানব ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে আমরা আমাদের কাউকেই অবিকল নকল দেখতে পারি না। আমার কাছে মানবজাতির এই বৈশিষ্ট্য রোমাঞ্চকর। এই অনন্য বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত মূল্যবান। কারণ তা আমাদের প্রত্যেককে একটি করে সৃষ্টির মাস্টারপিস হিসেবে গড়ে তুলেছে। আপনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন, কীভাবে বেড়ে উঠেছেন তা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। তাই সৃষ্টির এই যে অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য তাকে হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়।
আর এই বৈশিষ্ট্যই আমাদেরকে রোবট থেকে আলাদা করেছে। তিনি বলেন, রোবটের ক্ষেত্রে আমরা তাদের উৎপাদনকারী কোম্পানি, উৎপাদনের তারিখ, মডেল নাম্বার, এমনকি তাদের সমগোত্রীয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নিতে পারি। কিন্তু মানব প্রজাতির ক্ষেত্রে এর কোনোটিই পারি না। মানবজাতির দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- প্রত্যেকের ভেতরেই রয়েছে অসীম সৃজনশীল ক্ষমতা। সেই সৃজনশীল সামর্থ্য আমাদের অনন্য ভ্রমণ পথে বিকশিত হয়। আমরা মানুষদেরকে টাকার পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরতে দেখি। তাতে ধরিত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষকে আর ঠিক মানুষের মতো দেখায় না। সর্বোপরি এটিই প্রমাণ করা যে, সৃষ্টির বিস্ময় যে মানুষ তার অর্জনকে সীমিত কোনো ধারণা দিয়ে বাঁধা যায় না, তার বিজয়, তার সাফল্য অতলস্পর্শী। সুতরাং সুপার হ্যাপিনেস বা চরম সুখের ধারণা সেখানেই ধরা দিতে পারে। যেখানে আমি আমার মস্তিষ্ককে সংজ্ঞায়িত করতে পারি।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, আপনার অনেক টাকা পয়সা, ধন-দৌলত, ব্যাংক ব্যালেন্স থাকতে পারে। আমি নিশ্চিত যে এসব কিছুর বিনিময়ে আপনি শুধু এক ধরনের সুখই অর্জন করতে পারেন। কিন্তু বলুনতো আপনি আপনার সম্পদ দ্বিগুণ-তিনগুণ করার মধ্য দিয়ে সুখের মাত্রা কি বৃদ্ধি করতে পেরেছেন? চূড়ান্ত হিসেবে আপনার অঢেল টাকা-পয়সা শুধুই একটা কাগুজে সংখ্যা মাত্র। মহাকালের তুলনায় মানবজীবন একটি বুদ্বুদ মাত্র। আসুন না, এই সীমিত সময় যেটুকু আমাদের জন্য বরাদ্দ আছে তা ভালোভাবে ব্যয় করি।
No comments