শত চেষ্টা করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি
প্রথম
কোপেই ওর শরীর থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তারপরও ও বাঁচার জন্য ওদের
থামানোর চেষ্টা করছিল। আর আমি পাগলের মতো একবার একজনকে বাধা দিতে থাকি।
জাপটে ধরি। ওরা সমানে রিফাতকে কোপাচ্ছিল। নিজের সামনে স্বামীতে মারতে
দেখেছি। রক্তের বন্যা দেখেছি। ওরা মানুষরূপী হায়েনা।
এভাবেই প্রকাশ্যে দিবালোকে স্বামী রিফাতের ওপর বর্বর হামলার বর্ণনা দিচ্ছিলেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। চিৎকার করে কাঁদছিলেন মিন্নি। বলেন, আফসোস, হামলার সময় কোনো লোক এগিয়ে আসেনি। গতকাল সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনের কাছে বাবার বাড়িতে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
মিন্নি বলেন, বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্বামী রিফাত শরীফের সঙ্গে বরগুনা সরকারি কলেজে আসি। সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেই আমরা। এ সময় কলেজ সড়কের ক্যালিক্স কিন্ডার গার্টেনের সামনে বেশ কয়েকজন যুবক আমাদের গতিরোধ করে। সেই সঙ্গে রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করে। এর মধ্যেই চাপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। এরপরই রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। আমি তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই দমাতে পারিনি। ভিডিওতে যাদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মূলত তারাই প্রথমে রিফাত শরীফ ও তার পথ আটকে দিয়েছিল বলে জানান আয়েশা আক্তার মিন্নি।
কাঁদতে কাঁদতে মিন্নি বলেন, প্রায়ই নয়ন আমাকে নানাভাবে বিরক্ত করতো। কলেজে গেলে আমার রিকশার উপর উঠে বসে। আমাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। কথা বলার জন্য হুমকি দিতে থাকে। ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পরে বিষয়টি পরিবারকে জানালে তারা আমাকে রিফাতের সঙ্গে বিয়ে দেয়। ভালোভাবেই ছিলাম আমরা। কিন্তু নয়ন এই ঘটনা ঘটালো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচারের দাবি করছি। প্রধানমন্ত্রী নারী আমিও নারী আশা করি তিনি এ হত্যার বিচার করবেন।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
১২ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১, সীমান্তে রেড এলার্ট
রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা সদর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে খুনের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন নয়নকে। সে এলাকায় ‘নয়ন বন্ড’ নামেও পরিচিত। দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী, তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজী, চার নম্বর আসামি চন্দন। এর মধ্যে চন্দনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বরগুনায় রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বরগুনায়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদের আমরা আইনের আওতায় আনবোই। গতকাল সকাল ১১টার দিকে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বরগুনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। মামলার চার নম্বর আসামি চন্দনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, সে বিষয়ে সীমান্তে রেড এলার্ট জারি করতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। এর আগে ঘটনার বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, তা দুপুরের মধ্যে আদালতকে জানানোর জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে নির্দেশ দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দুপুরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে জানান, আপনাদের আদেশের পর বরগুনার ডিসি, এসপি ও সদর থানার ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় ভিকটিমের (রিফাত) বাবা ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এর মধ্যে চার নম্বর আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো মাঠে আছে। তখন আদালত বলেন, একটি সরকারি কলেজের সামনে দিন দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। দুপুর ১১টার ঘটনা, অথচ মামলা হয়েছে পরের দিন সকালে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ জোরালো মনে হচ্ছে না।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যতটা তৎপর হওয়া উচিত ছিল, তা মনে হয়নি। বরগুনার পাশে সুন্দরবন ও তার পাশে কয়েকটি বর্ডার রয়েছে। আসামিরা যাতে বর্ডার ক্রস করতে না পারে, সেজন্য পুলিশের আইজিকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হলো। আমরা আপাতত কোনো আদেশ বা রুল জারি করছি না। তবে এ মামলায় কোনো অনিয়ম হয় কিনা, তা আমরা নজরে রাখবো।
এ ছাড়া রিফাত শরীফ হত্যাকারীদের যেকোনো মূল্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পুলিশ অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
আইনশৃঙ্খলার অবনতি মনে করেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বরগুনায় রিফাত নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাকে তিনি সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলে মনে করেন না। এ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে পুলিশ ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পুলিশ অপরাধীদের ধরতে শুরু করেছে। তারা কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা কারা- সেটা তদন্ত করার পর আমরা জানতে পারবো। তবে ঘটনার পর পুলিশ কিন্তু বসে নেই। আমরা দৃঢ়গলায় বলতে পারি, যত ঘটনাই ঘটুক বাংলাদেশে, আমাদের পুলিশের দক্ষতা, সক্ষমতা বেড়েছে। আগের মতো পিছিয়ে পড়া পুলিশ আমাদের নেই।
তিনি বলেন, আমি সব সময় বলি, আপনি যদি ১০ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশের চিন্তা করেন, তাহলে ভুল করবেন। আমাদের পুলিশ এখন অনেক সক্ষম, অনেক দক্ষ। আমার কাছে এই মুহূর্তের খবর হচ্ছে দু’জনকে পুলিশ ধরে ফেলেছে। যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এভাবেই প্রকাশ্যে দিবালোকে স্বামী রিফাতের ওপর বর্বর হামলার বর্ণনা দিচ্ছিলেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। চিৎকার করে কাঁদছিলেন মিন্নি। বলেন, আফসোস, হামলার সময় কোনো লোক এগিয়ে আসেনি। গতকাল সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনের কাছে বাবার বাড়িতে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
মিন্নি বলেন, বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্বামী রিফাত শরীফের সঙ্গে বরগুনা সরকারি কলেজে আসি। সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেই আমরা। এ সময় কলেজ সড়কের ক্যালিক্স কিন্ডার গার্টেনের সামনে বেশ কয়েকজন যুবক আমাদের গতিরোধ করে। সেই সঙ্গে রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করে। এর মধ্যেই চাপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। এরপরই রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। আমি তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই দমাতে পারিনি। ভিডিওতে যাদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মূলত তারাই প্রথমে রিফাত শরীফ ও তার পথ আটকে দিয়েছিল বলে জানান আয়েশা আক্তার মিন্নি।
কাঁদতে কাঁদতে মিন্নি বলেন, প্রায়ই নয়ন আমাকে নানাভাবে বিরক্ত করতো। কলেজে গেলে আমার রিকশার উপর উঠে বসে। আমাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। কথা বলার জন্য হুমকি দিতে থাকে। ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পরে বিষয়টি পরিবারকে জানালে তারা আমাকে রিফাতের সঙ্গে বিয়ে দেয়। ভালোভাবেই ছিলাম আমরা। কিন্তু নয়ন এই ঘটনা ঘটালো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচারের দাবি করছি। প্রধানমন্ত্রী নারী আমিও নারী আশা করি তিনি এ হত্যার বিচার করবেন।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
১২ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১, সীমান্তে রেড এলার্ট
রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা সদর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে খুনের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন নয়নকে। সে এলাকায় ‘নয়ন বন্ড’ নামেও পরিচিত। দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী, তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজী, চার নম্বর আসামি চন্দন। এর মধ্যে চন্দনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বরগুনায় রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বরগুনায়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদের আমরা আইনের আওতায় আনবোই। গতকাল সকাল ১১টার দিকে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বরগুনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। মামলার চার নম্বর আসামি চন্দনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, সে বিষয়ে সীমান্তে রেড এলার্ট জারি করতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। এর আগে ঘটনার বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, তা দুপুরের মধ্যে আদালতকে জানানোর জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে নির্দেশ দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দুপুরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে জানান, আপনাদের আদেশের পর বরগুনার ডিসি, এসপি ও সদর থানার ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় ভিকটিমের (রিফাত) বাবা ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এর মধ্যে চার নম্বর আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো মাঠে আছে। তখন আদালত বলেন, একটি সরকারি কলেজের সামনে দিন দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। দুপুর ১১টার ঘটনা, অথচ মামলা হয়েছে পরের দিন সকালে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ জোরালো মনে হচ্ছে না।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যতটা তৎপর হওয়া উচিত ছিল, তা মনে হয়নি। বরগুনার পাশে সুন্দরবন ও তার পাশে কয়েকটি বর্ডার রয়েছে। আসামিরা যাতে বর্ডার ক্রস করতে না পারে, সেজন্য পুলিশের আইজিকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হলো। আমরা আপাতত কোনো আদেশ বা রুল জারি করছি না। তবে এ মামলায় কোনো অনিয়ম হয় কিনা, তা আমরা নজরে রাখবো।
এ ছাড়া রিফাত শরীফ হত্যাকারীদের যেকোনো মূল্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পুলিশ অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
আইনশৃঙ্খলার অবনতি মনে করেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বরগুনায় রিফাত নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাকে তিনি সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলে মনে করেন না। এ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে পুলিশ ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পুলিশ অপরাধীদের ধরতে শুরু করেছে। তারা কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা কারা- সেটা তদন্ত করার পর আমরা জানতে পারবো। তবে ঘটনার পর পুলিশ কিন্তু বসে নেই। আমরা দৃঢ়গলায় বলতে পারি, যত ঘটনাই ঘটুক বাংলাদেশে, আমাদের পুলিশের দক্ষতা, সক্ষমতা বেড়েছে। আগের মতো পিছিয়ে পড়া পুলিশ আমাদের নেই।
তিনি বলেন, আমি সব সময় বলি, আপনি যদি ১০ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশের চিন্তা করেন, তাহলে ভুল করবেন। আমাদের পুলিশ এখন অনেক সক্ষম, অনেক দক্ষ। আমার কাছে এই মুহূর্তের খবর হচ্ছে দু’জনকে পুলিশ ধরে ফেলেছে। যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।
No comments