ছিঁচকে চোর থেকে পেশাদার সন্ত্রাসী নয়ন by সাইফ আমীন
বরগুনায়
স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত
সাব্বির হোসেন নয়নকে খুঁজছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের পর নয়নের বিরুদ্ধে মুখ
খুলতে শুরু করেছে স্থানীয়রা। বেরিয়ে আসছে তার নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের
তথ্য।
অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন নয়ন বরগুনা পৌর শহরের বিকেবি রোডের শহরের ধানসিঁড়ি এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকির ছেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা পৌর শহরের বিকেবি রোডের শহরের ধানসিঁড়ি এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, কয়েক বছর আগে মাদক সেবনের টাকা যোগাড় করার জন্য ছিঁচকে চুরি আর মোবাইল ছিনতাই করতেন নয়ন। ছিঁচকে চোর থেকে একসময় তিনি হয়ে ওঠেন পেশাদার সন্ত্রাসী। একপর্যায়ে শুরু করেন হেরোইনের ব্যবসা। নিজ বাসায় মাদক সেবনের আখড়া বসান। চুরি আর ছিনতাই ছাড়াও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নিজ বাসায় মাদকসেবীদের মাদক সেবনের সুযোগও করে দিতেন নয়ন। মাদক সেবনের জন্য সেখানে যাওয়া-আসা করতেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা। মাদক ব্যবসার পরিধি বাড়াতে তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন নয়ন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার।
স্থানীয়রা জানান, নয়নের কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি না থাকলেও নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলে পরিচয় দিতেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী রিফাত ফরাজী ও রিশানের সঙ্গে নয়নের ছিল ঘনিষ্ঠতা। কখনো কখনো তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন নয়ন। এরপর মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন নয়ন। নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন বরগুনা পৌর শহরের অপরাধ জগতের। এরপরও বীরদর্পে ও সদলবলে এলাকায় চলাফেরা করতেন নয়ন।
দুই বছর আগে বরগুনা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম নান্নাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন নয়ন। এ ঘটনায় নান্না জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের কাছে বিচার দেন। তবে এ ঘটনায় তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এরপর বাকিতে মালামাল বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় বিকেবি রোডের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নয়া মিয়ার পা ভেঙে দিয়ে সন্ত্রাসী হিসেবে আলোচনায় আসেন নয়ন। এর কিছুদিন পর নয়নকে তার বাসা থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা মূল্যের হেরোইন এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এই মামলায় কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন নয়ন। এভাবেই বরগুনার ছিঁচকে চোর থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম ওঠে নয়নের।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে নয়ন ও তার সহযোগীরা। হামলার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যান নয়ন ও তার সহযোগীরা।
কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি না থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী রিফাত ও রিশানদের সঙ্গে চলাফেরা করায় কাউকেই পরোয়া করছিলেন না নয়ন। এমনকি দেলোয়ার হোসেনের বাসায় মাঝে মধ্যে কাজকর্ম করে নয়ন নিজেকে আওয়ামী লীগ প্রমাণের চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নয়নতো দূরের কথা ভায়রার ছেলে রিফাত-রিশানদের সঙ্গে দুই বছর আগে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। এমনকি তাদের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ভায়রার ছেলে বলে তাদের পরিচয়ও দেই না। রিফাত-রিশান আমার কাছে ঘেঁষার সাহস পায় না। সুতরাং রিফাত-রিশানের সঙ্গে নয়নের ঘনিষ্ঠতা ছিল কি-না আমার জানা নেই। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর হোসেন মাহমুদ বলেন, নয়নসহ পলাতক সকল আসামিকে ধরতে জোর প্রচেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি নয়নের অতীতের বিভিন্ন আলোচিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করছি। ইতোমধ্যে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যা মামলার তদন্তে অতীতের সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন ও তার সহযোগীরা রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বৃহস্পতিবার চন্দন, হাসান ও নাজমুল আহসান নামে তিন আসামিকে গ্রেফতারের কথা জাননিয়েছে পুলিশ।
অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন নয়ন বরগুনা পৌর শহরের বিকেবি রোডের শহরের ধানসিঁড়ি এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকির ছেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা পৌর শহরের বিকেবি রোডের শহরের ধানসিঁড়ি এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, কয়েক বছর আগে মাদক সেবনের টাকা যোগাড় করার জন্য ছিঁচকে চুরি আর মোবাইল ছিনতাই করতেন নয়ন। ছিঁচকে চোর থেকে একসময় তিনি হয়ে ওঠেন পেশাদার সন্ত্রাসী। একপর্যায়ে শুরু করেন হেরোইনের ব্যবসা। নিজ বাসায় মাদক সেবনের আখড়া বসান। চুরি আর ছিনতাই ছাড়াও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নিজ বাসায় মাদকসেবীদের মাদক সেবনের সুযোগও করে দিতেন নয়ন। মাদক সেবনের জন্য সেখানে যাওয়া-আসা করতেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা। মাদক ব্যবসার পরিধি বাড়াতে তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন নয়ন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার।
স্থানীয়রা জানান, নয়নের কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি না থাকলেও নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলে পরিচয় দিতেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী রিফাত ফরাজী ও রিশানের সঙ্গে নয়নের ছিল ঘনিষ্ঠতা। কখনো কখনো তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন নয়ন। এরপর মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন নয়ন। নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন বরগুনা পৌর শহরের অপরাধ জগতের। এরপরও বীরদর্পে ও সদলবলে এলাকায় চলাফেরা করতেন নয়ন।
দুই বছর আগে বরগুনা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম নান্নাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন নয়ন। এ ঘটনায় নান্না জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের কাছে বিচার দেন। তবে এ ঘটনায় তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এরপর বাকিতে মালামাল বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় বিকেবি রোডের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নয়া মিয়ার পা ভেঙে দিয়ে সন্ত্রাসী হিসেবে আলোচনায় আসেন নয়ন। এর কিছুদিন পর নয়নকে তার বাসা থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা মূল্যের হেরোইন এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এই মামলায় কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন নয়ন। এভাবেই বরগুনার ছিঁচকে চোর থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম ওঠে নয়নের।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে নয়ন ও তার সহযোগীরা। হামলার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যান নয়ন ও তার সহযোগীরা।
কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি না থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী রিফাত ও রিশানদের সঙ্গে চলাফেরা করায় কাউকেই পরোয়া করছিলেন না নয়ন। এমনকি দেলোয়ার হোসেনের বাসায় মাঝে মধ্যে কাজকর্ম করে নয়ন নিজেকে আওয়ামী লীগ প্রমাণের চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নয়নতো দূরের কথা ভায়রার ছেলে রিফাত-রিশানদের সঙ্গে দুই বছর আগে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। এমনকি তাদের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ভায়রার ছেলে বলে তাদের পরিচয়ও দেই না। রিফাত-রিশান আমার কাছে ঘেঁষার সাহস পায় না। সুতরাং রিফাত-রিশানের সঙ্গে নয়নের ঘনিষ্ঠতা ছিল কি-না আমার জানা নেই। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর হোসেন মাহমুদ বলেন, নয়নসহ পলাতক সকল আসামিকে ধরতে জোর প্রচেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি নয়নের অতীতের বিভিন্ন আলোচিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করছি। ইতোমধ্যে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যা মামলার তদন্তে অতীতের সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন ও তার সহযোগীরা রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বৃহস্পতিবার চন্দন, হাসান ও নাজমুল আহসান নামে তিন আসামিকে গ্রেফতারের কথা জাননিয়েছে পুলিশ।
No comments