বাজেটে কর প্রস্তাব: পুঁজিবাজার নিয়ে শঙ্কা by এম এম মাসুদ
প্রস্তাবিত
বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর রিটেইন্ড আর্নিংস বা
অবণ্টিত মুনাফা ও রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই
প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে অতিরিক্ত কর পরিশোধের তালিকায় পড়বে পুঁজিবাজারের
২০৯টি কোম্পানি। কর বাবদ এসব কোম্পানিকে বছরে পরিশোধ করতে হবে কমপক্ষে ১১
হাজার কোটি টাকা। এ ধরনের করারোপকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের
দাবি জানিয়েছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন নতুন করে করারোপ করায়
শঙ্কায় পড়বে পুঁজি বাজারের বিনিয়োগ।
সুত্র জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রণোদনার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। আশা করা হচ্ছিল, এবার বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক ধারা অব্যহত রয়েছে।
এর অন্তর্নিহিত কারণ হিসেবে রিজার্ভের ওপর করারোপের প্রস্তাবকেই অন্যতম ইস্যু বলে মনে করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা। অবশ্য পুঁজিবাজারে প্রণোদনার অংশ হিসেবে নগদ লভ্যাংশ প্রদানকে উৎসাহিত করতে এ করারোপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বাজেট প্রস্তাবনায়।
তবে রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন ২০১৯’ প্রকাশকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব কোম্পানি কমপ্লায়েন্স পরিপালন ও সুশাসন নিশ্চিত করছে তারা সমস্যায় পড়বে। পাশাপাশি যেসব কোম্পানি ভালো কাজ করে কোম্পানি সমপ্রসারণের জন্য রিজার্ভ বাড়িয়েছে সেসব বড় প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হবে অতিরিক্ত চাপ।
রিজার্ভের ওপর করারোপের এ ঘোষণায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) পক্ষ থেকে রিজার্ভের ওপর করারোপ সংক্রান্ত ধারাটি আয়কর আইন থেকে বাদ দেয়াসহ স্টক লভ্যাংশের ওপর করারোপের বিধান বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, কোনো আয় বছরে কোনো কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভের সমষ্টি যদি পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে বাড়তি অংশের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে। ব্যবসা থেকে পাওয়া মুনাফার যে অংশ কোম্পানি শেয়ারধারীদের মাঝে বণ্টন না করে পুনর্বিনিয়োগের জন্য রেখে দেয়, সেটিই হল রিটেইনড আর্নিংস বা অবণ্টিত মুনাফা। এই টাকা পরে কোম্পানির ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ও মূলধনি ব্যয় হিসেবে অথবা দেনা পরিশোধে ব্যয় হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের যুক্তি ছিল, রিটেইনড আর্নিংসের ওপর কর আরোপ করলে কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের ‘স্টক ডিভিডেন্ড’ বা বোনাস শেয়ার না দিয়ে নগদ লভ্যাংশ দিতে উৎসাহিত হবে। আর নগদ লভ্যাংশ পেলে বিনিয়োগকারীরাও উৎসাহিত হবেন।
কিন্তু শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অর্থমন্ত্রীর ওই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, একটি কোম্পানি প্রযোজ্য সব কর দেয়ার পরই তার রিজার্ভে অর্থ নেয়। ফলে প্রস্তাবিত ওই নিয়ম চালু হলে একই অর্থের ওপর দুইবার কর দিতে হবে। আর তাতে ভালো কোম্পানিগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি বছরে মুনাফার চেয়ে বেশি চলে যাবে কর পরিশোধে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও ব্যবসায়ীদের ওই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। সোমবারে ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যেহেতু ওই টাকার জন্য আগেই কর দেয়া হয়েছে, সেহেতু এটা দ্বৈতকরই হয়ে যায়। এ বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আমার মনে হয় বাজেট যখন পাস হবে, তখন আর এটা সেখানে থাকবে না।
সালমান এফ রহমান বলেন, অনেক জায়গা থেকে আমাদের বলা হয়েছে। এটা সিরিয়াসলি আমরা কনসিডার করছি। এখানে দুটো জিনিস। একটা হলো রিটেইনড আর্নিংসের ওপর ট্যাক্স। এক্সচুয়ালি এটা ডাবল ট্যাক্স হয়ে যাচ্ছে। রিটেইনড আর্নিংস অলরেডি ট্যাক্স পেইড। এটা পয়েন্ট আউট করা হয়েছে। রিটেইনড আর্নিংয়ের ওপর কর আরোপ করা হলে তা ডাবল করে রূপান্তরিত হবে, যা কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। ফলে চূড়ান্ত বাজেটের আগে সরকার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে।
এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রস্তাবিত বাজাটের পর থেকে উত্থান-পতনের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। বাজেট ঘোষণার পর গত এক সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট কমেছে। গত ১৩ই জুন বাজেট ঘোষণার দিনে ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৪৭৪ পয়েন্ট। অবশ্য গতকাল সামান্য সূচক বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪১০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৪১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯১১ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪৩১ কোটি ৬৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার। যা গত কার্যদিবস থেকে ২২ কোটি টাকা কম। গত কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৫৩ কোটি ৩৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। ডিএসইতে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৯ শতাংশ বা ১৭৩ টির, কমেছে ৩৫ শতাংশ বা ১২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬ শতাংশ বা ৫৬টির।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ৫৬১ পয়েন্টে। এ সময়ে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৬৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ১০৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির।
ডিএসই সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, রিজার্ভের ওপর করারোপের বিষয়টি প্রস্তাব করা হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই এটি পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে। আশা করি, সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১৭ কোম্পানির রিটেইন আর্নিংস, রিজার্ভ ও পরিশোধিত মূলধনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০৯টি কোম্পানির রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভের পরিমাণ এর পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি। কোম্পানিগুলোর মোট পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৫১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা। মোট রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভের পরিমাণ ৯৭ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। মোট পরিশোধিত মূলধনের অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ হচ্ছে ২৫ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধনের অতিরিক্ত মোট অর্থের পরিমাণ ৭১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। এর ১৫ শতাংশ হারে ২০৯ কোম্পানিকে ১০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকার কর দিতে হবে। এর মধ্যে ন্যূনতম ১০০ কোটি থেকে সর্বোচ্চ ৭৬২ কোটি টাকা পর্যন্ত কর দিতে হবে শীর্ষস্থানীয় ২৯ কোম্পানিকে। এ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মোট কর আসবে ৭ হাজার ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানির সচিব বলেন, রিজার্ভের ওপর কর পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এটি একটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এটি শেয়ারবাজারের জন্য প্রণোদনার বদলে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে শেয়ারহোল্ডার, তালিকাভুক্ত কোম্পানিসহ পুরো শেয়ারবাজারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রভাবে বাজেট ঘোষণার পরও শেয়ারবাজার নিম্নমুখী ছিল।
সুত্র জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রণোদনার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। আশা করা হচ্ছিল, এবার বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক ধারা অব্যহত রয়েছে।
এর অন্তর্নিহিত কারণ হিসেবে রিজার্ভের ওপর করারোপের প্রস্তাবকেই অন্যতম ইস্যু বলে মনে করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা। অবশ্য পুঁজিবাজারে প্রণোদনার অংশ হিসেবে নগদ লভ্যাংশ প্রদানকে উৎসাহিত করতে এ করারোপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বাজেট প্রস্তাবনায়।
তবে রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন ২০১৯’ প্রকাশকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব কোম্পানি কমপ্লায়েন্স পরিপালন ও সুশাসন নিশ্চিত করছে তারা সমস্যায় পড়বে। পাশাপাশি যেসব কোম্পানি ভালো কাজ করে কোম্পানি সমপ্রসারণের জন্য রিজার্ভ বাড়িয়েছে সেসব বড় প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হবে অতিরিক্ত চাপ।
রিজার্ভের ওপর করারোপের এ ঘোষণায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) পক্ষ থেকে রিজার্ভের ওপর করারোপ সংক্রান্ত ধারাটি আয়কর আইন থেকে বাদ দেয়াসহ স্টক লভ্যাংশের ওপর করারোপের বিধান বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, কোনো আয় বছরে কোনো কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভের সমষ্টি যদি পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে বাড়তি অংশের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে। ব্যবসা থেকে পাওয়া মুনাফার যে অংশ কোম্পানি শেয়ারধারীদের মাঝে বণ্টন না করে পুনর্বিনিয়োগের জন্য রেখে দেয়, সেটিই হল রিটেইনড আর্নিংস বা অবণ্টিত মুনাফা। এই টাকা পরে কোম্পানির ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ও মূলধনি ব্যয় হিসেবে অথবা দেনা পরিশোধে ব্যয় হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের যুক্তি ছিল, রিটেইনড আর্নিংসের ওপর কর আরোপ করলে কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের ‘স্টক ডিভিডেন্ড’ বা বোনাস শেয়ার না দিয়ে নগদ লভ্যাংশ দিতে উৎসাহিত হবে। আর নগদ লভ্যাংশ পেলে বিনিয়োগকারীরাও উৎসাহিত হবেন।
কিন্তু শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অর্থমন্ত্রীর ওই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, একটি কোম্পানি প্রযোজ্য সব কর দেয়ার পরই তার রিজার্ভে অর্থ নেয়। ফলে প্রস্তাবিত ওই নিয়ম চালু হলে একই অর্থের ওপর দুইবার কর দিতে হবে। আর তাতে ভালো কোম্পানিগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি বছরে মুনাফার চেয়ে বেশি চলে যাবে কর পরিশোধে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও ব্যবসায়ীদের ওই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। সোমবারে ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যেহেতু ওই টাকার জন্য আগেই কর দেয়া হয়েছে, সেহেতু এটা দ্বৈতকরই হয়ে যায়। এ বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আমার মনে হয় বাজেট যখন পাস হবে, তখন আর এটা সেখানে থাকবে না।
সালমান এফ রহমান বলেন, অনেক জায়গা থেকে আমাদের বলা হয়েছে। এটা সিরিয়াসলি আমরা কনসিডার করছি। এখানে দুটো জিনিস। একটা হলো রিটেইনড আর্নিংসের ওপর ট্যাক্স। এক্সচুয়ালি এটা ডাবল ট্যাক্স হয়ে যাচ্ছে। রিটেইনড আর্নিংস অলরেডি ট্যাক্স পেইড। এটা পয়েন্ট আউট করা হয়েছে। রিটেইনড আর্নিংয়ের ওপর কর আরোপ করা হলে তা ডাবল করে রূপান্তরিত হবে, যা কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। ফলে চূড়ান্ত বাজেটের আগে সরকার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে।
এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রস্তাবিত বাজাটের পর থেকে উত্থান-পতনের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। বাজেট ঘোষণার পর গত এক সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট কমেছে। গত ১৩ই জুন বাজেট ঘোষণার দিনে ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৪৭৪ পয়েন্ট। অবশ্য গতকাল সামান্য সূচক বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪১০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৪১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯১১ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪৩১ কোটি ৬৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার। যা গত কার্যদিবস থেকে ২২ কোটি টাকা কম। গত কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৫৩ কোটি ৩৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। ডিএসইতে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৯ শতাংশ বা ১৭৩ টির, কমেছে ৩৫ শতাংশ বা ১২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬ শতাংশ বা ৫৬টির।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ৫৬১ পয়েন্টে। এ সময়ে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৬৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ১০৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির।
ডিএসই সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, রিজার্ভের ওপর করারোপের বিষয়টি প্রস্তাব করা হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই এটি পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে। আশা করি, সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১৭ কোম্পানির রিটেইন আর্নিংস, রিজার্ভ ও পরিশোধিত মূলধনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০৯টি কোম্পানির রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভের পরিমাণ এর পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি। কোম্পানিগুলোর মোট পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৫১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা। মোট রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভের পরিমাণ ৯৭ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। মোট পরিশোধিত মূলধনের অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ হচ্ছে ২৫ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধনের অতিরিক্ত মোট অর্থের পরিমাণ ৭১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। এর ১৫ শতাংশ হারে ২০৯ কোম্পানিকে ১০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকার কর দিতে হবে। এর মধ্যে ন্যূনতম ১০০ কোটি থেকে সর্বোচ্চ ৭৬২ কোটি টাকা পর্যন্ত কর দিতে হবে শীর্ষস্থানীয় ২৯ কোম্পানিকে। এ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মোট কর আসবে ৭ হাজার ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানির সচিব বলেন, রিজার্ভের ওপর কর পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এটি একটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এটি শেয়ারবাজারের জন্য প্রণোদনার বদলে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে শেয়ারহোল্ডার, তালিকাভুক্ত কোম্পানিসহ পুরো শেয়ারবাজারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রভাবে বাজেট ঘোষণার পরও শেয়ারবাজার নিম্নমুখী ছিল।
No comments