দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাননি বিউটির পিতা by রাশেদ আহমদ খান
সদর
উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর ছায়েদ মিয়ার মেয়ে বিউটি। শৈশব থেকেই
চটপটে ও ফুটফুটে ছিল বিউটি। শিশু-সুলভ চঞ্চলতার জন্য সে ছিল সবার কাছে
প্রিয়। আর এ চঞ্চলতাই কাল হয়ে দাঁড়ায় বিউটির। উচ্ছল এ কিশোরীর উপর কু-নজর
পড়ে এলাকার চিহ্নিত লম্পট বাবুল মিয়ার। মেয়েটির সর্বনাশ করতে মরিয়া হয়ে উঠে
নারীলোভী বাবুল। তার অব্যাহত উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়
বিউটি। কিন্তু এর পরও শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২১শে জানুয়ারি বিউটিকে অপহরণ করে
বাবুল। মেয়েকে উদ্ধারে গ্রাম্য মাতববরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সুরাহা পাননি
বিউটির অসহায় বাবা ছায়েদ মিয়া। ১৯ দিন পর ৯ই ফেব্রুয়ারি নিজের লালসা
চরিতার্থ করে অসুস্থ অবস্থায় বিউটিকে ফেরত দেয় বাবুল। হাসপাতালে চিকিৎসা
শেষে বাড়ি ফেরার পর আবারো শুরু হয় উৎপাত। এ অবস্থায় ১৭ই ফেব্রুয়ারি মেয়ের
নিরাপত্তা চেয়ে আমলি আদালতে আবেদন করেন বিউটির বাবা ছায়েদ মিয়া। প্রতিকার
না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ৪ঠা মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে
বাবুল মিয়াসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দায়ের করেন ছায়েদ মিয়া।
এতে চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বাবুল। অপরদিকে মামলার দীর্ঘদিনেও পুলিশ
বাবুলকে গ্রেপ্তার না করায় চরম হতাশায় পড়ে পরিবার। ১৩ই মার্চ নিরাপত্তার
কথা চিন্তা করে বিউটিকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নানার বাড়ি লাখাই উপজেলায়। সেখান
থেকে ১৬ই মার্চ রাতে আবারো অপহৃত হয় বিউটি। পরদিন ১৫ কিলোমিটার দূরে বিউটির
বাড়ির পাশে জমি থেকে তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৮ই মার্চ
শায়েস্তাগঞ্জ থানায় বাবুল মিয়া ও তার মাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের
করেন বিউটির বাবা। দায়েরকৃত মামলায় ধর্ষকের মা ইউপি সদস্য কলমান চান বিবিকে
গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল মূল ঘাতক বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সরজমিন এলাকা পরিদর্শনে গেলে গ্রামবাসী জানান, তাদের ক্ষোভ ও হতাশার কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, লম্পট বাবুল মদ জুয়া, নারী নির্যাতনসহ এলাকার সকল অপরাধ কর্মকাণ্ডের মূল হোতা। এলাকার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের একাধিক নারী শ্রমিকের শ্লীলতাহানি করেছে বাবুল ও তার সঙ্গীরা। প্রাণনাশের হুমকি ও ইজ্জতের ভয়ে অনেকেই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। এছাড়া স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে তার রয়েছে দহরম-মহরম সম্পর্ক। তাই শত অপরাধের পরেও দোর্দণ্ড প্রতাপে ঘুরে বেড়াতো বাবুল। বিউটি ধর্ষণের মামলার পরও সে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। এজন্য সে সাহস পেয়ে আবারো বিউটিকে অপহরণ ও হত্যা করেছে। তারা লম্পট বাবুলের ফাঁসি চান। গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হারুন মিয়া জানান, সমাজের এমন কোন অপরাধ নেই যার সাথে বাবুল জড়িত ছিল না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখাতো। হুমকি দিতো মেয়েদের তুলে নেয়ায়। তিনি জানান, বাবুল কোম্পানির বিভিন্ন শ্রমিকদের মাদক ও নারী সরবরাহের কাজেও জড়িত ছিল। তার অপরাধের কথা গ্রামবাসী সবাই জানতো কিন্তু কেউ কথা বলতো না। গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বয়সী বৃদ্ধা নুরুন্নেছা বেগম জানান, অতবড় ঘটনা ঘটাইয়াও যদি বাবুল বাইচ্চা যায়, তাইলে গেরামে মাইয়া ছেলে নিয়া থাকন যাইত না। আমরা তার ফাঁসি চাই। এ ব্যাপারে সাংস্কৃতিক সংগঠক পিযুষ চক্রবর্তী মানবজমিনকে জানান, প্রথম মামলার পরই যদি পুলিশ বাবুলকে গ্রেপ্তার করতো তবে বিউটিকে মরতে হতো না। এজন্য পুলিশের শৈথিল্যতাই দায়ী। এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিউটি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোমবার থেকে আন্দোলনে নামছেন তারা। পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মী তোফাজ্জল সোহেল জানান, মামলা করেও যদি অসহায় মানুষকে মরতে হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কে দেবে? গ্রামের অসহায় নারী-পুরুষ বাবুলের মত লম্পটদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। বিউটির মা হোছনা বেগম মানবজমিনকে বলেন, চরিত্রহীন বাবুলের অত্যাচারে আমার মেয়ে বিউটির লেখাপড়া করাইতে পারছি না। পয়লা আমার মেয়েরে অপহরণ কইর্যা নিয়া নির্যাতন করছে। আমরা মামলা করলেও পুলিশ তারে ধরেনি। এরপর আবার আমার মেয়েরে অপহরণ কইর্যা নিয়া শেষ পর্যন্ত মাইর্যাই ফালাইছে। আমরার অখন গ্রামে তাহাই দায় হইয়া পড়ছে। আমরা খুনি বাবুলের ফাঁসি চাই।
সরজমিন এলাকা পরিদর্শনে গেলে গ্রামবাসী জানান, তাদের ক্ষোভ ও হতাশার কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, লম্পট বাবুল মদ জুয়া, নারী নির্যাতনসহ এলাকার সকল অপরাধ কর্মকাণ্ডের মূল হোতা। এলাকার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের একাধিক নারী শ্রমিকের শ্লীলতাহানি করেছে বাবুল ও তার সঙ্গীরা। প্রাণনাশের হুমকি ও ইজ্জতের ভয়ে অনেকেই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। এছাড়া স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে তার রয়েছে দহরম-মহরম সম্পর্ক। তাই শত অপরাধের পরেও দোর্দণ্ড প্রতাপে ঘুরে বেড়াতো বাবুল। বিউটি ধর্ষণের মামলার পরও সে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। এজন্য সে সাহস পেয়ে আবারো বিউটিকে অপহরণ ও হত্যা করেছে। তারা লম্পট বাবুলের ফাঁসি চান। গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হারুন মিয়া জানান, সমাজের এমন কোন অপরাধ নেই যার সাথে বাবুল জড়িত ছিল না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখাতো। হুমকি দিতো মেয়েদের তুলে নেয়ায়। তিনি জানান, বাবুল কোম্পানির বিভিন্ন শ্রমিকদের মাদক ও নারী সরবরাহের কাজেও জড়িত ছিল। তার অপরাধের কথা গ্রামবাসী সবাই জানতো কিন্তু কেউ কথা বলতো না। গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বয়সী বৃদ্ধা নুরুন্নেছা বেগম জানান, অতবড় ঘটনা ঘটাইয়াও যদি বাবুল বাইচ্চা যায়, তাইলে গেরামে মাইয়া ছেলে নিয়া থাকন যাইত না। আমরা তার ফাঁসি চাই। এ ব্যাপারে সাংস্কৃতিক সংগঠক পিযুষ চক্রবর্তী মানবজমিনকে জানান, প্রথম মামলার পরই যদি পুলিশ বাবুলকে গ্রেপ্তার করতো তবে বিউটিকে মরতে হতো না। এজন্য পুলিশের শৈথিল্যতাই দায়ী। এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিউটি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোমবার থেকে আন্দোলনে নামছেন তারা। পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মী তোফাজ্জল সোহেল জানান, মামলা করেও যদি অসহায় মানুষকে মরতে হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কে দেবে? গ্রামের অসহায় নারী-পুরুষ বাবুলের মত লম্পটদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। বিউটির মা হোছনা বেগম মানবজমিনকে বলেন, চরিত্রহীন বাবুলের অত্যাচারে আমার মেয়ে বিউটির লেখাপড়া করাইতে পারছি না। পয়লা আমার মেয়েরে অপহরণ কইর্যা নিয়া নির্যাতন করছে। আমরা মামলা করলেও পুলিশ তারে ধরেনি। এরপর আবার আমার মেয়েরে অপহরণ কইর্যা নিয়া শেষ পর্যন্ত মাইর্যাই ফালাইছে। আমরার অখন গ্রামে তাহাই দায় হইয়া পড়ছে। আমরা খুনি বাবুলের ফাঁসি চাই।
No comments