অপ্রয়োজনীয় টেস্ট না দিতে চিকিৎসকদের প্রতি প্রেসিডেন্টের আহ্বান
প্রেসিডেন্ট
মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বিনা প্রয়োজনে মেডিকেল টেস্ট করার জন্য রোগীদের
ব্যবস্থাপত্র না দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অনেক
রোগীর চিকিৎসা ব্যয় বহন করার সামর্থ্য নেই। চিকিৎসার নামে অনেক রোগী
হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এক শ্রেণির চিকিৎসক বিনা প্রয়োজনে রোগীদের
মেডিকেল টেস্ট করাতে দেন। গতকাল বিকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে
অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ান্স অব বাংলাদেশ (এপিবি) আয়োজিত ২৯তম বার্ষিক
সম্মেলন এবং আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রেসিডেন্ট চিকিৎসা পেশাকে একটি মহৎ
পেশা হিসেবে উল্লেখ করে যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা ও পেশার মান নিশ্চিত করতে
মেডিকেল এথিক্স কোড মেনে চলতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি চিকিৎসাসেবা প্রদানের সময় রোগীর সক্ষমতা বিবেচনায় রাখতে চিকিৎসকদের
পরামর্শ দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক রোগী বিভিন্ন ডায়াগনোস্টিক
সেন্টারের অপ্রয়োজনীয় টেস্টের ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম নন। সংবাদমাধ্যমে
প্রকাশিত বিভিন্ন খবরের উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছু কিছু ঘটনায় দেখা
যাচ্ছে, জনগণ চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা অথবা চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবহেলার শিকার
হচ্ছেন। এতে চিকিৎসকের এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্রের ভাবমূর্তিও ক্ষুণœ
হচ্ছে। তিনি চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ভুল চিকিৎসার ব্যাপারে সতর্ক
হতে হবে। তিনি বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ওষুধ সেক্টর দিন দিন আধুনিকায়ন
হচ্ছে। তিনি সর্বশেষ প্রযুক্তি ও আবিষ্কার সম্পর্কে নিজেকে আরো বেশি জ্ঞানী
হতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান। দেশ ও অঞ্চল ভেদে রোগের ধরন ভিন্ন
হওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রোগের ধরন পরিবর্তন হতে পারে। এসব
বিষয় বিবেচনায় রেখেই মেডিকেল চিকিৎসা ও গবেষণা কার্য পরিচালনা করতে হবে।
তিনি জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগের
উল্লেখ করে আগামী দিনগুলোতে জনগণের জন্য কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্য সেবা
নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার যৌথ প্রচেষ্টা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি
আশা প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতা
সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, একজন রোগী হলেন হাসপাতালের অতিথি। এ
জন্য রোগীদের বিশেষ যতœ নিতে হবে, যেন কেউ আপনার আচরণে কষ্ট না পান। তিনি
পেশাদারিত্ব মনোভাব নিয়ে কাজ করতে এবং সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্য সুবিধা
প্রদানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ দেন। তিনি
সুনির্দিষ্টভাবে রোগীদের উত্তম সেবা প্রদানের মনোভাব নিয়ে পেশাদারিত্বপূর্ণ
দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। প্রেসিডেন্ট অনুষ্ঠানে
চিকিৎসাসেবায় অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে অধ্যাপক ডা. খাজা নিজাম
উদ্দিন (মেডিসিন) এবং অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ কোরাইশীকে (নিউরো-মেডিসিন)
স্বর্ণ পদক প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী
মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা.
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
(বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া, এপিবি সভাপতি অধ্যাপক
ডা. আজিজুল কাহ্হার, এপিবি মহাসচিব ডা. এসএম মোস্তফা জামান এবং সহ-সভাপতি
ডা. রফিকুল আলম বক্তব রাখেন।
No comments