অনলাইনে ভিডিও ভাইরাল থেমে যাচ্ছে বহু জীবন by মারুফ কিবরিয়া
ইন্টারনেটের
প্রসার মানুষের জীবনকে সহজ ও স্বস্তিদায়ক করে তুলেছে। হাতের নাগালে হওয়ায়
মানুষ যখন যা চাইছেন তাই করতে পারছেন। তবে এ ইন্টারনেটের অপব্যবহার ও এর
শিকার হয়ে বহু মানুষের জীবন ধ্বংস হচ্ছে তা নির্দ্বিধায় বলাই যায়। বিশেষ
করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এ যাবৎ অনেকেরই বেঁচে থাকা মিথ্যে করে
দিয়েছে।
কিছুদিন আগে এক তরুণীর একটি ভিডিও প্রকাশ হয় নেট দুনিয়ায়। সে ভিডিওতে প্রেমিকের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখেছে সবাই। চার মাসের সম্পর্কের মধুর কিছু সময় ছিল তাদের। প্রেম ভেঙে যাওয়ায় তরুণীর ওপর ক্ষেপে গিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় তার প্রেমিক। মেয়েটির প্রিয়জন, আত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি বন্ধু সবার হাতে হাতে পৌঁছে ক্ষণিক সময়ের মধ্যেই। তরুণী হয়ে পড়ে সমাজের কাছে সবচেয়ে খারাপ মেয়ে। লোকলজ্জায় দীর্ঘদিন চার দেয়ালের মাঝেই কেটেছে তার। তবে পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে লড়াই করে আর পারছিল না এই তরুণী। চারপাশের মানুষগুলোকে আর মুখ দেখাবে না এই প্রত্যয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। থেমে যায় একটি জীবন।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও রিমি নামের এক তরুণীর ভিডিও প্রকাশ হয় ইন্টারনেটে। ভালোবেসে বিয়ে করবে এই ভেবে প্রেমিক সোহেলকে বিশ্বাস করে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। শুধু তাই নয়, প্রেমিকের অনুরোধে সেসব ভিডিও ধারণেও আপত্তি জানায়নি রিমি। কিন্তু ওই তরুণ শুধু সম্পর্ক ভাঙেনি। রিমির সঙ্গে কাটানো ওই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো সবার হাতে হাতে পৌঁছে দেয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে। মেয়েটির জীবনে নেমে আসে এক কালো অধ্যায়। সে রিমি আত্মহত্যা করেনি। বারবার নিজেকে শেষ করে দিতে গিয়েও পারেনি। বেঁচে থাকলেও সে না থাকার মতোই। চার দেয়ালের মাঝেই থেমে গেল রিমির জীবন।
উপরের দুটি ঘটনাকেও হার মানিয়েছে সোহানার জীবনের গল্প। বিয়ের চার বছর পর স্বামীর অগোচরে পুরনো প্রেমিক নাহিদের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে তার। হঠাৎ করেই সোহানার পরিবর্তন। পরকীয়ায় জড়িয়ে গেছে সে। মাসে এক-দুই দিন থেকে তাদের মেলামেশা গড়ে উঠে সপ্তাহে দুদিন করে। এরই ধারাবাহিতায় শারীরিক সম্পর্কেও জড়ায় সোহানা। সেটা একদিন ভিডিওতেও ধারণ করে তারা। এদিকে স্বামীর প্রতিও অবহেলা বাড়ছে দিনদিন। এমন সময় সোহানা তার প্রেমিককে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু তাতে সে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় তাদের। তবে এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। সোহানার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয় সে। ঘটনার দু’দিনের মধ্যে সেটি পৌঁছে যায় সোহানার স্বামীর হাতে। এবার স্বামীর সঙ্গেও লড়াই তার। পরিণতি দুজনের ছাড়াছাড়ি। এ ঘটনার কয়েকদিন পরেই সোহানা জানতে পারে প্রেমিককে বিয়ে না করায় প্রতিশোধ নিতেই সে আবার প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। আর সেসব ভিডিও প্রকাশ করে। সোহানা তার বাবার বাড়িতেই থাকে। তবে থেমে গেছে তার জীবন। না পারছে স্বামীর সংসার করতে না পারছে কাউকে মুখ দেখাতে। চার দেয়ালের মাঝে স্বেচ্ছায় একাকী জীবন কাটছে তার।
ইন্টারনেটে এমন ভিডিও প্রকাশে দেশের বহু জীবন যাচ্ছে। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা ও লোকলজ্জার ভয়ে আইনের সহায়তা নিচ্ছেন না অনেকেই। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৯-এ বলা আছে, কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট বা মোবাইল ফোন কিংবা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি সরবরাহ করলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন। আর এ ধরনের অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডিত হবেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ-সংক্রান্ত অপরাধের মাত্রা আরো বেশি, অনেক অপরাধের খবরই সংবাদমাধ্যমে আসে না। মানসম্মানের ভয়ে অনেকে এ রকম অপরাধের শিকার হয়েও থানা পুলিশ কিংবা অন্য কোনো সংস্থার কাছে অভিযোগ করছেন না। ফলে অনেক ঘটনাই বিচারের আওতায় আসছে না আর যেগুলো আসছে, সেগুলোরও অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীদের শনাক্ত করা যায় না। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিছুদিন আগে এক তরুণীর একটি ভিডিও প্রকাশ হয় নেট দুনিয়ায়। সে ভিডিওতে প্রেমিকের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখেছে সবাই। চার মাসের সম্পর্কের মধুর কিছু সময় ছিল তাদের। প্রেম ভেঙে যাওয়ায় তরুণীর ওপর ক্ষেপে গিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় তার প্রেমিক। মেয়েটির প্রিয়জন, আত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি বন্ধু সবার হাতে হাতে পৌঁছে ক্ষণিক সময়ের মধ্যেই। তরুণী হয়ে পড়ে সমাজের কাছে সবচেয়ে খারাপ মেয়ে। লোকলজ্জায় দীর্ঘদিন চার দেয়ালের মাঝেই কেটেছে তার। তবে পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে লড়াই করে আর পারছিল না এই তরুণী। চারপাশের মানুষগুলোকে আর মুখ দেখাবে না এই প্রত্যয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। থেমে যায় একটি জীবন।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও রিমি নামের এক তরুণীর ভিডিও প্রকাশ হয় ইন্টারনেটে। ভালোবেসে বিয়ে করবে এই ভেবে প্রেমিক সোহেলকে বিশ্বাস করে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। শুধু তাই নয়, প্রেমিকের অনুরোধে সেসব ভিডিও ধারণেও আপত্তি জানায়নি রিমি। কিন্তু ওই তরুণ শুধু সম্পর্ক ভাঙেনি। রিমির সঙ্গে কাটানো ওই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো সবার হাতে হাতে পৌঁছে দেয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে। মেয়েটির জীবনে নেমে আসে এক কালো অধ্যায়। সে রিমি আত্মহত্যা করেনি। বারবার নিজেকে শেষ করে দিতে গিয়েও পারেনি। বেঁচে থাকলেও সে না থাকার মতোই। চার দেয়ালের মাঝেই থেমে গেল রিমির জীবন।
উপরের দুটি ঘটনাকেও হার মানিয়েছে সোহানার জীবনের গল্প। বিয়ের চার বছর পর স্বামীর অগোচরে পুরনো প্রেমিক নাহিদের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে তার। হঠাৎ করেই সোহানার পরিবর্তন। পরকীয়ায় জড়িয়ে গেছে সে। মাসে এক-দুই দিন থেকে তাদের মেলামেশা গড়ে উঠে সপ্তাহে দুদিন করে। এরই ধারাবাহিতায় শারীরিক সম্পর্কেও জড়ায় সোহানা। সেটা একদিন ভিডিওতেও ধারণ করে তারা। এদিকে স্বামীর প্রতিও অবহেলা বাড়ছে দিনদিন। এমন সময় সোহানা তার প্রেমিককে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু তাতে সে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় তাদের। তবে এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। সোহানার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয় সে। ঘটনার দু’দিনের মধ্যে সেটি পৌঁছে যায় সোহানার স্বামীর হাতে। এবার স্বামীর সঙ্গেও লড়াই তার। পরিণতি দুজনের ছাড়াছাড়ি। এ ঘটনার কয়েকদিন পরেই সোহানা জানতে পারে প্রেমিককে বিয়ে না করায় প্রতিশোধ নিতেই সে আবার প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। আর সেসব ভিডিও প্রকাশ করে। সোহানা তার বাবার বাড়িতেই থাকে। তবে থেমে গেছে তার জীবন। না পারছে স্বামীর সংসার করতে না পারছে কাউকে মুখ দেখাতে। চার দেয়ালের মাঝে স্বেচ্ছায় একাকী জীবন কাটছে তার।
ইন্টারনেটে এমন ভিডিও প্রকাশে দেশের বহু জীবন যাচ্ছে। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা ও লোকলজ্জার ভয়ে আইনের সহায়তা নিচ্ছেন না অনেকেই। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৯-এ বলা আছে, কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট বা মোবাইল ফোন কিংবা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি সরবরাহ করলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন। আর এ ধরনের অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডিত হবেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ-সংক্রান্ত অপরাধের মাত্রা আরো বেশি, অনেক অপরাধের খবরই সংবাদমাধ্যমে আসে না। মানসম্মানের ভয়ে অনেকে এ রকম অপরাধের শিকার হয়েও থানা পুলিশ কিংবা অন্য কোনো সংস্থার কাছে অভিযোগ করছেন না। ফলে অনেক ঘটনাই বিচারের আওতায় আসছে না আর যেগুলো আসছে, সেগুলোরও অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীদের শনাক্ত করা যায় না। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
No comments