নবীগঞ্জে এমপি কেয়ার চমক: তিন গুণীজনকে বিরল সম্মাননা by এমএ বাছিত
রাজনীতিতে
তিন কীর্তিমান নেতা প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী, প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ্
এএমএস কিবরিয়া, প্রয়াত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রব সাদী।
তিনজনই নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি জনপদ দিনারপুর পরগণার বাসিন্দা। দু’জন ছিলেন
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য। এর মধ্যে ১৯৭৯ সালে মাহবুবুর রব সাদী জাসদ
থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে চারবার হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল)
নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সিলেট মহকুমা আওয়ামী লীগের
ফাউন্ডার খ্যাত দেওয়ান ফরিদ গাজী। তিন গুণীজনের স্মরণে এলাকাবাসীকে চমক
দেখান এমপি কেয়া চৌধুরী। তিন গুণীজনকে বিরল সম্মাননায় আলোকিত করেন। ওই
এলাকার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মিতব্য চারতলা
বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের তিনটি তলায় জাতীয় রাজনীতির কীর্তিমান তিন ব্যক্তির
নামে পৃথক নামকরণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। ১৪ই মার্চ বিকালে বিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে
ওই ঘোষণা দেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর, স্বাধীনতা পদকে ভূষিত প্রয়াত
কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরীর কন্যা হলেন আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী । নারী
জাগরণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে তৃণমূলে সরব নেত্রী হিসেবে পরিচিত। তিন
মহান ব্যক্তির স্মরণে ব্যতিক্রমী এ ঘোষণাকে সাধুবাদ জানান এলাকার লোকজন। এ
নিয়ে আলোচনায় সরব এলাকার জনপদ। বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে
চারতলা বিশিষ্ট ভবনের ভিতসহ একটি একতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে এ ঘোষণা দেয়া হয়। নির্মিতব্য ভবনের প্রথমতলায়
দেওয়ান ফরিদ গাজী, ২য়তলা এএমএস কিবরিয়া এবং ৩য়তলা মাহবুবুর রব সাদীর নামে
নামকরণের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে স্পেশাল বরাদ্দ
নিয়ে বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন কেয়া চৌধুরী। প্রয়াত
তিন গুণী ব্যক্তির অবদানকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম স্মরণীয় রাখার নিমিত্তে ওই
উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি। অনবদ্য এক নজির স্থাপন করে এলাকায়
অগ্নিকন্যা খেতাবে ভূষিত হন। তৃণমূলের উন্নয়নে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নৌকা
প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী: বাঙালি চেতনার সিপাহশালার, বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর দেওয়ান ফরিদ গাজী ১৯২৬ সালের ২রা এপ্রিল দিনারপুর পরগণার দেবপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন জননন্দিত ও প্রিয়ভাজন। ১৯৪২ সালে কুইট ইন্ডিয়া আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার উত্থান। ১৯৪৫ সালে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৭ সালের গণভোট, ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি সিলেটের প্রাচীনতম দৈনিক যুগভেরীর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সিলেট সদর আসন থেকে জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথম স্বাক্ষরকারীদের একজন। বঙ্গবন্ধু সরকারের স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৪ ও ৫ নং সেক্টরে বেসামরিক উপদেষ্টা ছিলেন। জীবন সায়াহ্নে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। আওয়ামী লীগই ছিল তার প্রথম এবং শেষ পরিচিতি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে তিনি হবিগঞ্জ-০১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া: শাহ্ এএমএস কিবরিয়া। নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামের বাসিন্দা। ছাত্রজীবনে ছিলেন অদম্য মেধাবী। পেশাগত জীবনে ছিলেন সবার থেকে এগিয়ে। রাজনীতিতে ছিলেন আদর্শবান নেতা। জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে চেষ্টা করতেন সবার পাশে থাকার। ২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি শীতের বিকালে তিনি এসেছিলেন প্রিয় মানুষগুলোর কাছে। কিন্তু নির্মম গ্রেনেড হামলায় তাকে চলে যেতে হয়েছে পৃথিবী ছেড়ে। মাহবুবুর রব সাদী: ১৯৪৫ সালের ১০ই মে নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দেওয়ান মো. মামুন চৌধুরী আর মাতা সৈয়দা জেবুন্নেছা চৌধুরী। স্ত্রী তাজকেরা সাদী। দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। মাহবুবুর রব সাদী ১৯৭১ সালে শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। তিনি ৪ নম্বর সেক্টরের জালালপুর সাব-সেক্টরের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। তার নেতৃত্বে অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে কানাইঘাট থানা আক্রমণ অন্যতম। মাহবুবুর রব সাদী স্বাধীনতার পর ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একবার হবিগঞ্জ এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী: বাঙালি চেতনার সিপাহশালার, বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর দেওয়ান ফরিদ গাজী ১৯২৬ সালের ২রা এপ্রিল দিনারপুর পরগণার দেবপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন জননন্দিত ও প্রিয়ভাজন। ১৯৪২ সালে কুইট ইন্ডিয়া আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার উত্থান। ১৯৪৫ সালে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৭ সালের গণভোট, ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি সিলেটের প্রাচীনতম দৈনিক যুগভেরীর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সিলেট সদর আসন থেকে জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথম স্বাক্ষরকারীদের একজন। বঙ্গবন্ধু সরকারের স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৪ ও ৫ নং সেক্টরে বেসামরিক উপদেষ্টা ছিলেন। জীবন সায়াহ্নে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। আওয়ামী লীগই ছিল তার প্রথম এবং শেষ পরিচিতি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে তিনি হবিগঞ্জ-০১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া: শাহ্ এএমএস কিবরিয়া। নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামের বাসিন্দা। ছাত্রজীবনে ছিলেন অদম্য মেধাবী। পেশাগত জীবনে ছিলেন সবার থেকে এগিয়ে। রাজনীতিতে ছিলেন আদর্শবান নেতা। জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে চেষ্টা করতেন সবার পাশে থাকার। ২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি শীতের বিকালে তিনি এসেছিলেন প্রিয় মানুষগুলোর কাছে। কিন্তু নির্মম গ্রেনেড হামলায় তাকে চলে যেতে হয়েছে পৃথিবী ছেড়ে। মাহবুবুর রব সাদী: ১৯৪৫ সালের ১০ই মে নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দেওয়ান মো. মামুন চৌধুরী আর মাতা সৈয়দা জেবুন্নেছা চৌধুরী। স্ত্রী তাজকেরা সাদী। দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। মাহবুবুর রব সাদী ১৯৭১ সালে শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। তিনি ৪ নম্বর সেক্টরের জালালপুর সাব-সেক্টরের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। তার নেতৃত্বে অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে কানাইঘাট থানা আক্রমণ অন্যতম। মাহবুবুর রব সাদী স্বাধীনতার পর ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একবার হবিগঞ্জ এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
No comments