পদ্মা এখন মরা খাল
পদ্মা
নদীর পানির প্রবাহ ধরে রাখতে ভারত সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী পানি
পাচ্ছে না বাংলাদেশ। পানি চুক্তির ২২তম বছরের ৭টি সাইকেল শেষ হলেও চুক্তি
অনুযায়ী একবারও পানি পায়নি ভাটির এ দেশ। যৌথ নদী কমিশন’র ওয়েব সাইটে চলতি
বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ১০ই মার্চ পর্যন্ত সাতটি সাইকেলে পানি প্রাপ্তির
যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তার থেকেও বাস্তব চিত্র ভয়াবহ। পানি নেই পদ্মায়।
পানিশূন্য পদ্মা নদী এখন মরা খাল। পানির অভাবে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে জেগে
উঠেছে বিশাল বিশাল বালুচর। ব্রিজের অর্ধেকের বেশি গার্ডার এখন দাঁড়িয়ে আছে
বালুচরের ওপর।
শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত সময়কে শুষ্ক মৌসুম হিসেবে অভিহিত করে প্রতিটি মাসকে তিনটি সাইকেলে ভাগ করা হয়েছে। কোনো চক্রে বাংলাদেশ কী পরিমাণ পানি পাবে তাও চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী কখনই ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ।
যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) সূত্র জানায়, পানিবণ্টন চুক্তির সংলগ্নি-২ এর ইন্ডিকেটিভ অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে ১০ই মার্চ পর্যন্ত সাতটি সাইকেলে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার কথা ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৩১ কিউসেক। এসময়ে পানি পাওয়া গেছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৫ কিউসেক। বাংলাদেশ কম পেয়েছে ৪২ হাজার ১৯৬ কিউসেক পানি। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনের ১ম সাইকেলে বাংলাদেশের পাওয়ার কথা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক পানি। এ সময় পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার ৫৪ কিউসেক পানি। এ হিসেবে ভারত বাংলাদেশ কে প্রথম চক্রেই কম দিয়েছে ১১ হজার ৪৬২ কিউসেক পানি। চুক্তির ধারা অনুযায়ী ফারাক্কা পয়েন্টে ভারতকে ৪০ বছরের গড় পানিপ্রবাহ অর্থাৎ ১ লাখ ৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু তা না করে পানির প্রবাহ দেখিয়েছে ৮৮ হাজার ৭৮৩ কিউসেক। ভারতের হিস্যা অনুযায়ী ৪০ হাজার কিউসেক পানি ভারত ঠিকই বুঝে নিয়েছে। ১১ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি ২য় সাইকেলে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৫৭ হাজার ৬৭৩ কিউসেক পানি। এসময় পাওয়া গেছে ৪৭ হাজার ৫৩৩ কিউসেক পানি। ২১শে জানুয়ারি থেকে ৩১শে জানুয়ারি ৩য় সাইকেলে ৫০ হাজার ১৫৪ কিউসেক পানি দেয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে ৪৩ হাজার ৬১০ কিউসেক। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ৪র্থ সাইকেলে ৪৬ হাজার ৩২৩ কিউসেকের স্থলে ভারত দিয়েছে ৪১ হাজার ৮৫৫ কিউসেক পানি। ৫ম সাইকেলে ১১-২০ ফেব্রুয়ারি ৪২ হাজার ৮৫৯ কিউসেক পাওয়ার কথা থাকলেও ভারত কম দিয়েছে ৪ হাজার ৬১৩ কিউসেক। এসময় পাওয়া গেছে ৩৮ হাজার ২৪৬ কিউসেক পানি। ২১-২৮শে ফেব্রুয়ারির ৬ষ্ঠ সাইকেলে ৩৯ হাজার ১০৬ কিউসেকের স্থলে পেয়েছে ৩৫ হাজার ৮৫১ কিউসেক। মার্চ মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের ৭ম সাইকেলে ৩৫ হাজার কিউসেকের স্থলে পাওয়া গেছে ৩৩ হাজার ২৮৬ কিউসেক।
জানুয়ারি থেকে ৩১মে পর্যন্ত ১৫টি সাইকেলের সাতটি সাইকেলেই ৪২ হাজার ১৯৬ কিউসেক পানি কম দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে পদ্মা নদী। পানি নেই হার্ডিজ্ঞ ব্রিজের নিচে। ব্রিজের নিচে এখন ফসলের মাঠ। ব্রিজের ১৫টি গার্ডের মধ্যে মাত্র ৭টি গার্ডার কার্যত পানির ভেতর দাঁড়িয়ে আছে। বাকি ৮টি এখন বালুচরে। দিন যতই যাচ্ছে পদ্মা নদীতে ততই জেগে উঠেছে বালুচর। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে করুণ পদ্মা নদীর চিত্র।
ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ ব্রিজের যুগল সৌর্ন্দয দেখতে আসা ভেড়ামারা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিহা আহমেদ মেঘলা জানিয়েছেন, পাঠ্য বই এ পড়েছি প্রমত্ত পদ্মা নদীর কথা। যার উত্তাল গর্জন শোনা যেত দূর থেকেই। কিন্তু এখন সে অবস্থা নেই। পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে বাস্তব অবস্থার কোনো মিল নেই। পানির অভাবে পদ্মা এখন মরা খাল। জলরাশির পরিবর্তে চারদিকে শুধু ধু-ধু বালুচর। পদ্মার বুক এখন ফসলি জমির মাঠ। পানি হ্রাসের এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের কোনো কারণ খুঁজে পাবে না।
শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত সময়কে শুষ্ক মৌসুম হিসেবে অভিহিত করে প্রতিটি মাসকে তিনটি সাইকেলে ভাগ করা হয়েছে। কোনো চক্রে বাংলাদেশ কী পরিমাণ পানি পাবে তাও চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী কখনই ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ।
যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) সূত্র জানায়, পানিবণ্টন চুক্তির সংলগ্নি-২ এর ইন্ডিকেটিভ অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে ১০ই মার্চ পর্যন্ত সাতটি সাইকেলে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার কথা ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৩১ কিউসেক। এসময়ে পানি পাওয়া গেছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৫ কিউসেক। বাংলাদেশ কম পেয়েছে ৪২ হাজার ১৯৬ কিউসেক পানি। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনের ১ম সাইকেলে বাংলাদেশের পাওয়ার কথা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক পানি। এ সময় পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার ৫৪ কিউসেক পানি। এ হিসেবে ভারত বাংলাদেশ কে প্রথম চক্রেই কম দিয়েছে ১১ হজার ৪৬২ কিউসেক পানি। চুক্তির ধারা অনুযায়ী ফারাক্কা পয়েন্টে ভারতকে ৪০ বছরের গড় পানিপ্রবাহ অর্থাৎ ১ লাখ ৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু তা না করে পানির প্রবাহ দেখিয়েছে ৮৮ হাজার ৭৮৩ কিউসেক। ভারতের হিস্যা অনুযায়ী ৪০ হাজার কিউসেক পানি ভারত ঠিকই বুঝে নিয়েছে। ১১ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি ২য় সাইকেলে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৫৭ হাজার ৬৭৩ কিউসেক পানি। এসময় পাওয়া গেছে ৪৭ হাজার ৫৩৩ কিউসেক পানি। ২১শে জানুয়ারি থেকে ৩১শে জানুয়ারি ৩য় সাইকেলে ৫০ হাজার ১৫৪ কিউসেক পানি দেয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে ৪৩ হাজার ৬১০ কিউসেক। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ৪র্থ সাইকেলে ৪৬ হাজার ৩২৩ কিউসেকের স্থলে ভারত দিয়েছে ৪১ হাজার ৮৫৫ কিউসেক পানি। ৫ম সাইকেলে ১১-২০ ফেব্রুয়ারি ৪২ হাজার ৮৫৯ কিউসেক পাওয়ার কথা থাকলেও ভারত কম দিয়েছে ৪ হাজার ৬১৩ কিউসেক। এসময় পাওয়া গেছে ৩৮ হাজার ২৪৬ কিউসেক পানি। ২১-২৮শে ফেব্রুয়ারির ৬ষ্ঠ সাইকেলে ৩৯ হাজার ১০৬ কিউসেকের স্থলে পেয়েছে ৩৫ হাজার ৮৫১ কিউসেক। মার্চ মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের ৭ম সাইকেলে ৩৫ হাজার কিউসেকের স্থলে পাওয়া গেছে ৩৩ হাজার ২৮৬ কিউসেক।
জানুয়ারি থেকে ৩১মে পর্যন্ত ১৫টি সাইকেলের সাতটি সাইকেলেই ৪২ হাজার ১৯৬ কিউসেক পানি কম দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে পদ্মা নদী। পানি নেই হার্ডিজ্ঞ ব্রিজের নিচে। ব্রিজের নিচে এখন ফসলের মাঠ। ব্রিজের ১৫টি গার্ডের মধ্যে মাত্র ৭টি গার্ডার কার্যত পানির ভেতর দাঁড়িয়ে আছে। বাকি ৮টি এখন বালুচরে। দিন যতই যাচ্ছে পদ্মা নদীতে ততই জেগে উঠেছে বালুচর। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে করুণ পদ্মা নদীর চিত্র।
ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ ব্রিজের যুগল সৌর্ন্দয দেখতে আসা ভেড়ামারা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিহা আহমেদ মেঘলা জানিয়েছেন, পাঠ্য বই এ পড়েছি প্রমত্ত পদ্মা নদীর কথা। যার উত্তাল গর্জন শোনা যেত দূর থেকেই। কিন্তু এখন সে অবস্থা নেই। পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে বাস্তব অবস্থার কোনো মিল নেই। পানির অভাবে পদ্মা এখন মরা খাল। জলরাশির পরিবর্তে চারদিকে শুধু ধু-ধু বালুচর। পদ্মার বুক এখন ফসলি জমির মাঠ। পানি হ্রাসের এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের কোনো কারণ খুঁজে পাবে না।
No comments