স্বর্ণ আমদানিতে ব্যাংকের মতামত চেয়ে চিঠি
বন্ডেড
ওয়্যার হাউসের আওতায় স্বর্ণ আমদানি করে প্রস্তুতকারকদের কাছে বিক্রির
বিষয়ে সব ব্যাংকের মতামত জানতে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ উপায়ে
আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংকের পদ্ধতি এবং তা লাভজনক হবে কি-না সেটি জানাতে বলা
হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের নীতিমালা পর্যালোচনা করে শিগগির কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগে মতামত পাঠাতে বলা হয়েছে। স্বর্ণ
আমদানির নীতিমালা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসুর সভাপতিত্বে
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সভা হয়েছে। এসব সভায় স্বর্ণ আমদানিতে জুয়েলারি
মালিকদের অনুমোদন অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে
স্বর্ণ আমদানি করে তাদের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করা হয়। তবে
স্বর্ণ আমদানিতে ব্যাংককে যুক্ত করার বিপক্ষে মত দিয়ে আসছে কেন্দ্রীয়
ব্যাংক। নতুন করে সব ব্যাংকের মতামত নিয়ে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো
হবে। আর স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা প্রণয়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন
অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি কমিটি কাজ করছে। বাংলাদেশ
ব্যাংকের সংশ্নিষ্টরা জানান, অনুমতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিদ্যমান নিয়মেও
স্বর্ণ আমদানি করতে পারেন। তবে কোনো ব্যবসায়ী এলসি খুলে বাণিজ্যিকভাবে
স্বর্ণ আমদানি করেননি।
অথচ রাজধানীসহ দেশের কোনো দোকানে স্বর্ণের কমতি নেই।
ফলে স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা প্রণয়নের আগে প্রকৃত প্রয়োজনীয়তা, মজুদ,
বিতরণ ও সরবরাহ চেইনে স্বচ্ছতা বিধান এবং রফতানির সম্ভাব্যতা যাচাই করতে
হবে। মূলত গত বছরের মে মাসে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলের
বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণের ঘটনায় মামলাকে কেন্দ্র করে স্বর্ণ আমদানি নীতিমালার
বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। ওই ঘটনার পর গত বছরের ৪ জুন শুল্ক্ক গোয়েন্দা
আপন জুয়েলার্সে কয়েকটি বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ১৫ মণ স্বর্ণ এবং ৭
হাজার ৩৬৯টি হীরার অলঙ্কার জব্দ করে। এসব স্বর্ণের বৈধ কাগজ দেখাতে না
পারায় মালিকদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। এরপর এ শিল্পের ব্যবসায়ীদের মধ্যে
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তারা নীতিমালা প্রণয়নে তৎপরতা শুরু করেন। বাংলাদেশ
ব্যাংকের সংশ্নিষ্টরা জানান, অবৈধ স্বর্ণের বৈধতা পাওয়ার লক্ষ্যে স্বর্ণ
আমদানি নীতিমালা প্রণয়নে ব্যবসায়ীরা এত তোড়জোড় করছেন বলে তাদের ধারণা।
এছাড়া বর্তমানে ব্যাগেজ রুলের আওতায় প্রতিভরি স্বর্ণ আনতে তিন হাজার টাকা
শুল্ক্ক দিতে হয়। ভারতে ভরিপ্রতি শুল্ক্ক চার হাজার রুপি। ফলে বিদ্যমান
শুল্ক্কে বৈধ পথে স্বর্ণ আনলেও তা পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব কারণে
নীতিমালা প্রণয়নে সতর্কতার পক্ষে তাদের অবস্থান।
No comments