সুস্থ আছেন নিঃসঙ্গতা কিছুটা কাবু করেছে by রুদ্র মিজান
দীর্ঘ
এক মাস। কারাগারে বন্দি বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া। পুরান ঢাকার
নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের দ্বিতীয় তলার কক্ষে কাটছে তার
দিন-রাত। সঙ্গে আছেন গৃহপরিচারিকা ফাতেমা। শান্ত, ধীরস্থির খালেদা জিয়া।
থাকা-খাওয়ার ব্যাপারে কোনো দাবি-দাওয়া নেই তার। বরং বলে দিয়েছেন, আমাকে
নিয়ে কোনো ক্ষেত্রে বিব্রত হবেন না। আপনাদের দায়িত্ব আপনারা পালন করেন।
আপনারা তো চাকরি করেন, তাই আপনাদের কারও প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ নেই। কেমন
আছেন খালেদা জিয়া, জানতে চাইলে গতকালই তার সঙ্গে দেখা করে আসা বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, উনি মানসিকভাবে শক্ত
আছেন, পরিবেশটা ভালো না। পুরনো বাড়ি। সবচেয়ে বড় বিষয় তার একাকিত্ব।
বিশাল কারাগারে একমাত্র বন্দি খালেদা জিয়া। সূত্র মতে, শুরুতে তার একার জন্যই রান্না করা হতো কারাগারে। ডিভিশন পাওয়ার পর তার পছন্দের খাবার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কর্মরতদের তিনি জানিয়েছেন, কারা কর্তৃপক্ষ নিয়মানুসারে তাকে যা খেতে দেবেন তিনি তাই খাবেন। এর বাইরে তার কোনো আবদার নেই। ওই সময়ে তিনি বলেন, অফিসারদের বলবেন, আমার একার জন্য রান্না করার দরকার নেই। স্টাফদের জন্য যা রান্না করা হয় আমি তাই খেতে পারবো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই কথা পৌঁছে যায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে। তারপর থেকে একই হাঁড়িতে রান্না করা হচ্ছে খালেদা জিয়া ও ডিপ্লোমা নার্স এবং কর্মরত প্রহরীদের খাবার। তবে তার পছন্দ অনুসারে কিছুদিন পরপর বেশ কয়েক বার শিং মাছ রান্না করা হয়েছে। মঙ্গলবার রান্না করা হয়েছে গরুর মাংস, ডাল ও সবজি। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে কেরানীগঞ্জ থেকে মাছ, মাংস, সবজিসহ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করে দিয়ে যান সেখানকার দায়িত্বরত প্রহরী।
রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন বাবুর্চি ইদ্রিছ। সূত্রমতে, কয়েক দিন আগে রান্না-বান্নার জন্য ইদ্রিছকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেইসঙ্গে খাবারে ঝাল কম দিলে ভালো হয় বলে জানিয়েছিলেন। রান্না করা খাবার যথাসময়ে খালেদা জিয়ার কক্ষে নিয়ে যান নারী প্রহরী। সকাল ও রাতের খাবার প্রায়ই দেরি করে খান খালেদা জিয়া। ফাতেমা ও ডিপ্লোমা নার্স ও কারারক্ষী নারীদের তিনি বলেছেন, তোমরা খেয়ে নিও, আমার জন্য অপেক্ষা করো না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একথা বললেও তার জন্য অপেক্ষা করেন অন্যরা। সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা হাতে নেন তিনি। তারপর ফ্রেশ হন। বিকালে বারান্দায় যান। ওই কক্ষে একটি বারান্দা। যেখান থেকে কারাগারের প্রাক্তন মহিলা ওয়ার্ড ছাড়া বাইরের কিছুই দেখা যায় না। দীর্ঘ সময় ওই বারান্দায় অবস্থান করেন খালেদা জিয়া।
রাতে বিছানায় যান দেরিতে। কর্মরতদের জীবন-যাপনের খোঁজখবর নেন। কখনো কখনো দেশের সাম্প্রতিক বিষয়ে কথা বলেন। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনি কথা বলেন খুব কম। শুয়ে, বসে, পত্রিকা পড়েই সময় কাটান। সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া কাপড়, তোয়ালে ও বিছানার চাদর ব্যবহার করছেন খালেদা জিয়া। কারাগারে নিয়মিত বসেন একজন ডাক্তার। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। আবার বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারাগারের অফিস কক্ষে বসেন তিনি। এরমধ্যেই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসক।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল মো. ইকবাল হাসান জানান, খালেদা জিয়াকে বিধি অনুসারেই সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কারাগারে একজন চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা নার্স রয়েছেন। তারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছেন। তিনি সুস্থ আছেন বলে জানান কর্নেল ইকবাল হাসান।
গতকাল কারাগার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নাজিমউদ্দিন রোডের শাহী মসজিদ মোড় থেকে কারাফটক হয়ে চকবাজার সিএনজি-লেগুনা স্ট্যান্ড পর্যন্ত অনেক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড। ওই এলাকার বাসিন্দা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ওই পথে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ওই সড়কে গাড়ি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। রাস্তা থেকে শুরু করে আশপাশের বাড়িগুলোর ছাদেও অবস্থান করছে পুলিশ। সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন গোয়েন্দারা। কারাফটকের সামনে সশস্ত্র চার-পাঁচ জন্য কারারক্ষী। প্রায় সাঁইত্রিশ একরের বিশাল কারাগারের দ্বিতীয় তলার কক্ষে বন্দি খালেদা জিয়া। প্রতিদিনই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নানা ফলমূল নিয়ে ভিড় করছেন কারাফটকে। সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করছেন কারা অধিদপ্তরের আইজি প্রিজনের কাছে।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ই ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেন আদালত। তারপর থেকেই পুরান ঢাকার ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রয়েছেন তিনি। ১০ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিচতলার জেল সুপারের অফিস কক্ষে রাখা হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। পরবর্তীতে ডিভিশন পেলে তাকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কক্ষটি এক সময় কারাবন্দি নারীদের শিশুদের ডে কেয়ার সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেখানে খালেদা জিয়া ছাড়াও তার গৃহকর্মী ফাতেমা, ডিপ্লোমা নার্স ও নিরাপত্তার দায়িত্বে চার নারী কারারক্ষী রয়েছেন। তবে এই কারাগার ও অধিদপ্তরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ১৪৭ জন কারারক্ষী।
বিশাল কারাগারে একমাত্র বন্দি খালেদা জিয়া। সূত্র মতে, শুরুতে তার একার জন্যই রান্না করা হতো কারাগারে। ডিভিশন পাওয়ার পর তার পছন্দের খাবার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কর্মরতদের তিনি জানিয়েছেন, কারা কর্তৃপক্ষ নিয়মানুসারে তাকে যা খেতে দেবেন তিনি তাই খাবেন। এর বাইরে তার কোনো আবদার নেই। ওই সময়ে তিনি বলেন, অফিসারদের বলবেন, আমার একার জন্য রান্না করার দরকার নেই। স্টাফদের জন্য যা রান্না করা হয় আমি তাই খেতে পারবো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই কথা পৌঁছে যায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে। তারপর থেকে একই হাঁড়িতে রান্না করা হচ্ছে খালেদা জিয়া ও ডিপ্লোমা নার্স এবং কর্মরত প্রহরীদের খাবার। তবে তার পছন্দ অনুসারে কিছুদিন পরপর বেশ কয়েক বার শিং মাছ রান্না করা হয়েছে। মঙ্গলবার রান্না করা হয়েছে গরুর মাংস, ডাল ও সবজি। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে কেরানীগঞ্জ থেকে মাছ, মাংস, সবজিসহ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করে দিয়ে যান সেখানকার দায়িত্বরত প্রহরী।
রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন বাবুর্চি ইদ্রিছ। সূত্রমতে, কয়েক দিন আগে রান্না-বান্নার জন্য ইদ্রিছকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেইসঙ্গে খাবারে ঝাল কম দিলে ভালো হয় বলে জানিয়েছিলেন। রান্না করা খাবার যথাসময়ে খালেদা জিয়ার কক্ষে নিয়ে যান নারী প্রহরী। সকাল ও রাতের খাবার প্রায়ই দেরি করে খান খালেদা জিয়া। ফাতেমা ও ডিপ্লোমা নার্স ও কারারক্ষী নারীদের তিনি বলেছেন, তোমরা খেয়ে নিও, আমার জন্য অপেক্ষা করো না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একথা বললেও তার জন্য অপেক্ষা করেন অন্যরা। সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা হাতে নেন তিনি। তারপর ফ্রেশ হন। বিকালে বারান্দায় যান। ওই কক্ষে একটি বারান্দা। যেখান থেকে কারাগারের প্রাক্তন মহিলা ওয়ার্ড ছাড়া বাইরের কিছুই দেখা যায় না। দীর্ঘ সময় ওই বারান্দায় অবস্থান করেন খালেদা জিয়া।
রাতে বিছানায় যান দেরিতে। কর্মরতদের জীবন-যাপনের খোঁজখবর নেন। কখনো কখনো দেশের সাম্প্রতিক বিষয়ে কথা বলেন। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনি কথা বলেন খুব কম। শুয়ে, বসে, পত্রিকা পড়েই সময় কাটান। সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া কাপড়, তোয়ালে ও বিছানার চাদর ব্যবহার করছেন খালেদা জিয়া। কারাগারে নিয়মিত বসেন একজন ডাক্তার। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। আবার বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারাগারের অফিস কক্ষে বসেন তিনি। এরমধ্যেই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসক।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল মো. ইকবাল হাসান জানান, খালেদা জিয়াকে বিধি অনুসারেই সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কারাগারে একজন চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা নার্স রয়েছেন। তারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছেন। তিনি সুস্থ আছেন বলে জানান কর্নেল ইকবাল হাসান।
গতকাল কারাগার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নাজিমউদ্দিন রোডের শাহী মসজিদ মোড় থেকে কারাফটক হয়ে চকবাজার সিএনজি-লেগুনা স্ট্যান্ড পর্যন্ত অনেক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড। ওই এলাকার বাসিন্দা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ওই পথে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ওই সড়কে গাড়ি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। রাস্তা থেকে শুরু করে আশপাশের বাড়িগুলোর ছাদেও অবস্থান করছে পুলিশ। সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন গোয়েন্দারা। কারাফটকের সামনে সশস্ত্র চার-পাঁচ জন্য কারারক্ষী। প্রায় সাঁইত্রিশ একরের বিশাল কারাগারের দ্বিতীয় তলার কক্ষে বন্দি খালেদা জিয়া। প্রতিদিনই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নানা ফলমূল নিয়ে ভিড় করছেন কারাফটকে। সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করছেন কারা অধিদপ্তরের আইজি প্রিজনের কাছে।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ই ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেন আদালত। তারপর থেকেই পুরান ঢাকার ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রয়েছেন তিনি। ১০ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিচতলার জেল সুপারের অফিস কক্ষে রাখা হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। পরবর্তীতে ডিভিশন পেলে তাকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কক্ষটি এক সময় কারাবন্দি নারীদের শিশুদের ডে কেয়ার সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেখানে খালেদা জিয়া ছাড়াও তার গৃহকর্মী ফাতেমা, ডিপ্লোমা নার্স ও নিরাপত্তার দায়িত্বে চার নারী কারারক্ষী রয়েছেন। তবে এই কারাগার ও অধিদপ্তরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ১৪৭ জন কারারক্ষী।
No comments