ভালো নেই পাট শ্রমিকরা, ৯ পাটকলে ক্রমাগত কমছে উৎপাদন
ত্রিমুখী
সংকটে পড়েছে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয় পাটকল। প্রায় ৫০ থেকে ৬৫ বছর
আগে প্রতিষ্ঠিত খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের যন্ত্রপাতির
অবস্থা এখন খুবই নাজুক। দীর্ঘদিনেও নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন হয়নি। এ ছাড়া
সংস্কার করা হয়নি পুরাতন যন্ত্রপাতিরও। ফলে এসব যন্ত্রপাতির কার্যক্ষমতা
অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় ক্রমাগত কমছে পাটকলগুলোর উৎপাদন। এ ছাড়া
আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদিত পাটজাত পণ্যের মজুদ বাড়ছে
পাটকলগুলোতে। বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে আছে ২৩ হাজার ২৩৭ টন পণ্য। সময়মতো পণ্য
বিক্রি না হওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছে মিলগুলো। মজুরি প্রদান ও কাঁচাপাট
কিনতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে আর্থিক সংকটের কারণে ভালো নেই এসব
পাটকলের শ্রমিকরা। নিয়মিত মজুরি না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর
জীবনযাপন করছেন তারা।
বাংলাদেশ জুট মিলস্ করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে খুলনায় ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলিম ও ইস্টার্ন এবং যশোরে জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল গড়ে ওঠে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও মিলগুলোর যন্ত্রপাতি বিএমআরই বা সংস্কার করা হয়নি। এর ফলে পাটকলগুলোর যন্ত্রপাতির অবস্থা নাজুক। বিশেষ করে স্পিনিং, সফটনার, ব্রেকার ও ফিনিশার কার্ড, ড্রয়িং মেশিনের অবস্থা বেহাল।
সূত্রটি জানায়, গত বছর প্রতিদিন ৩৭২ টন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হতো ২২৮ টন। আর এখন প্রতিদিন ২৭২ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৮৩ টন। এ ছাড়া পাঁচ হাজার ১১৪টি তাঁতের মধ্যে এখন চালু আছে মাত্র দুই হাজার ৮শটি।
শ্রমিকরা জানান, খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭১৮ জন শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ১২ হাজার ২১৩ জন শ্রমিক মজুরি কমিশন হারে মজুরি পান। বাকি ১১ হাজার ৬৩৪ জন শ্রমিক মজুরি পান দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে। এসব শ্রমিকের পরিবার-পরিজন নিয়েই গড়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চল পরিবার। সপ্তাহ শেষে ওই টাকার ওপরই সবার খাবার নির্ভর করে। কিন্তু প্রতিটি মিলেই ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া। গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নয়টি মিলে মোট বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
প্রবীণ শ্রমিক আবুল বাশার জানান, ১৯৮৪ সালে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে প্লাটিনামে চাকরি জীবন শুরু তার। পরের এক যুগ ছিল পাটকলের সোনালী সময়। বছর শেষে মিল যদি মুনাফা করতো তাহলে অতিরিক্ত বোনাস দেয়া হতো। তার সঙ্গে মুনাফার একটি অংশ শ্রমিকদের ভাগ করে দেয়া হতো। মজুরি, বোনাস ও ওভার টাইম নিয়ে খুব ভালো দিন কাটতো শ্রমিকদের। আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি জানান, এখন প্রতিবছরই মিলে লোকসান হচ্ছে। উৎপাদিত পাটপণ্য বিক্রি করতে না পারার খড়গ প্রায়ই নেমে আসে তাদের ওপর। নিয়মিত মজুরি পাওয়া যায় না।
আবদুর রাজ্জাক নামের আরেক প্রবীণ শ্রমিক জানান, ১৯৮৮ সালে মিলে যোগ দিয়ে ৯৯ সালে স্থায়ী হন তিনি। তখনও মিল লাভজনক ছিল। তখন দিনে ১০০ টনের ওপরে উৎপাদন হতো। এখনও অনেক হয় কিন্তু মিল পাটপণ্য বিক্রি করতে পারে না।
শ্রমিকরা জানান, বকেয়া মজুরির দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে জানুয়ারি মাস জুড়ে মিল বন্ধ ছিল। ওই সময় ভয়াবহ এক অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন গেছে। এখন অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ২৫শে জানুয়ারির পরের মজুরি এখনো বকেয়া রয়েছে।
পাটকলগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৮শে ফেব্রুয়ারির হিসাব অনুযায়ী খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলে ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া আছে। মোট বকেয়া মজুরির পরিমাণ ৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাসের চলতি মজুরি অনেক মিলেই পরিশোধ করা হয়নি।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খলিলুর রহমান বলেন, মিলগুলোর বেহাল যন্ত্রপাতির কারণে কাজ করার সময় শ্রমিকরা হাঁপিয়ে উঠছেন। প্রত্যাশিত উৎপাদন না হওয়ায় মিলগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলে এখন মজুদ রয়েছে ২৩ হাজার ২৩৭ টন পাটজাত পণ্য। যার মূল্য প্রায় ২৩২ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে পাট পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া এবং সিনথেটিক পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে এ অবস্থার। এর ফলে মিলগুলো সময়মতো শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারছে না। পাটকলগুলোতে শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৭১৮ জন। তাদের ২ থেকে ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আর্থিক সংকটের কারণে পাটের ভরা মওসুমে কম দামে চাহিদা মতো কাঁচাপাট কিনতে না পারায়, এখন তা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পাটকলগুলোতে চলতি অর্থবছরে কাঁচাপাট কেনার লক্ষ্যমাত্রা আট লাখ ৩৫ হাজার ২৫২ কুইন্টাল। অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে পাট কেনা হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার ৮৪১ কুইন্টাল। যা লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ।
এ ব্যাপারে ক্রিসেন্ট জুট মিল সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, মিলগুলো পাটের ভরা মওসুমে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট কিনতে পারছে না। ফলে পরবর্তীতে মণপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বেশি দামে পাট কিনতে হচ্ছে। এর ফলে মিলগুলোকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। অথচ লোকসানের দায় চাপানো হচ্ছে শ্রমিকদের ওপর।
বিজেএমসি সূত্রে জানা গেছে, এই লোকসানের পেছনে তারা সাতটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত স্থায়ী শ্রমিক, সক্ষমতা অনুসারে উৎপাদন না হওয়া, ব্যাংক ঋণের সুদ, সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, শ্রমিক আন্দোলন ও লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং সিবিএ নেতাদের কাজ না করা। খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল বছরে গড়ে লোকসান দিচ্ছে প্রায় ২২০ কোটি টাকা। এর পেছনে কমপক্ষে ১১টি কারণকে দায়ী করছে বিজেএমসি, পাটকল কর্মকর্তা, পাটকল শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা। ক্রমাগত লোকসানের কারণে দুরবস্থা কাটছে না পাটকলগুলোর। এর পাশাপাশি মিল কর্তৃপক্ষ এবং সিবিএ নেতারা বলছেন, পাটের ভর মওসুমে পাট কিনতে না পারা, আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া, আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় পাটের বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করতে না পারা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে পাটকলে লোকসান হচ্ছে।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা গাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, মিলগুলোর সার্বিক অবস্থা প্রতিনিয়ত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে জানানো হয়। পাটজাত পণ্য দ্রুত বিক্রি এবং লোকসান কমিয়ে পাটকলকে ‘ব্রেক ইভেন’ পর্যায়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মিলগুলোর যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্লাটিনাম ও জেজেআই জুট মিলের যন্ত্রপাতি সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। পরবর্তীতে অন্য সাতটি মিল এই উদ্যোগের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ জুট মিলস্ করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে খুলনায় ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলিম ও ইস্টার্ন এবং যশোরে জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল গড়ে ওঠে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও মিলগুলোর যন্ত্রপাতি বিএমআরই বা সংস্কার করা হয়নি। এর ফলে পাটকলগুলোর যন্ত্রপাতির অবস্থা নাজুক। বিশেষ করে স্পিনিং, সফটনার, ব্রেকার ও ফিনিশার কার্ড, ড্রয়িং মেশিনের অবস্থা বেহাল।
সূত্রটি জানায়, গত বছর প্রতিদিন ৩৭২ টন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হতো ২২৮ টন। আর এখন প্রতিদিন ২৭২ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৮৩ টন। এ ছাড়া পাঁচ হাজার ১১৪টি তাঁতের মধ্যে এখন চালু আছে মাত্র দুই হাজার ৮শটি।
শ্রমিকরা জানান, খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭১৮ জন শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ১২ হাজার ২১৩ জন শ্রমিক মজুরি কমিশন হারে মজুরি পান। বাকি ১১ হাজার ৬৩৪ জন শ্রমিক মজুরি পান দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে। এসব শ্রমিকের পরিবার-পরিজন নিয়েই গড়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চল পরিবার। সপ্তাহ শেষে ওই টাকার ওপরই সবার খাবার নির্ভর করে। কিন্তু প্রতিটি মিলেই ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া। গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নয়টি মিলে মোট বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
প্রবীণ শ্রমিক আবুল বাশার জানান, ১৯৮৪ সালে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে প্লাটিনামে চাকরি জীবন শুরু তার। পরের এক যুগ ছিল পাটকলের সোনালী সময়। বছর শেষে মিল যদি মুনাফা করতো তাহলে অতিরিক্ত বোনাস দেয়া হতো। তার সঙ্গে মুনাফার একটি অংশ শ্রমিকদের ভাগ করে দেয়া হতো। মজুরি, বোনাস ও ওভার টাইম নিয়ে খুব ভালো দিন কাটতো শ্রমিকদের। আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি জানান, এখন প্রতিবছরই মিলে লোকসান হচ্ছে। উৎপাদিত পাটপণ্য বিক্রি করতে না পারার খড়গ প্রায়ই নেমে আসে তাদের ওপর। নিয়মিত মজুরি পাওয়া যায় না।
আবদুর রাজ্জাক নামের আরেক প্রবীণ শ্রমিক জানান, ১৯৮৮ সালে মিলে যোগ দিয়ে ৯৯ সালে স্থায়ী হন তিনি। তখনও মিল লাভজনক ছিল। তখন দিনে ১০০ টনের ওপরে উৎপাদন হতো। এখনও অনেক হয় কিন্তু মিল পাটপণ্য বিক্রি করতে পারে না।
শ্রমিকরা জানান, বকেয়া মজুরির দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে জানুয়ারি মাস জুড়ে মিল বন্ধ ছিল। ওই সময় ভয়াবহ এক অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন গেছে। এখন অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ২৫শে জানুয়ারির পরের মজুরি এখনো বকেয়া রয়েছে।
পাটকলগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৮শে ফেব্রুয়ারির হিসাব অনুযায়ী খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলে ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া আছে। মোট বকেয়া মজুরির পরিমাণ ৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাসের চলতি মজুরি অনেক মিলেই পরিশোধ করা হয়নি।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খলিলুর রহমান বলেন, মিলগুলোর বেহাল যন্ত্রপাতির কারণে কাজ করার সময় শ্রমিকরা হাঁপিয়ে উঠছেন। প্রত্যাশিত উৎপাদন না হওয়ায় মিলগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলে এখন মজুদ রয়েছে ২৩ হাজার ২৩৭ টন পাটজাত পণ্য। যার মূল্য প্রায় ২৩২ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে পাট পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া এবং সিনথেটিক পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে এ অবস্থার। এর ফলে মিলগুলো সময়মতো শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারছে না। পাটকলগুলোতে শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৭১৮ জন। তাদের ২ থেকে ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আর্থিক সংকটের কারণে পাটের ভরা মওসুমে কম দামে চাহিদা মতো কাঁচাপাট কিনতে না পারায়, এখন তা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পাটকলগুলোতে চলতি অর্থবছরে কাঁচাপাট কেনার লক্ষ্যমাত্রা আট লাখ ৩৫ হাজার ২৫২ কুইন্টাল। অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে পাট কেনা হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার ৮৪১ কুইন্টাল। যা লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ।
এ ব্যাপারে ক্রিসেন্ট জুট মিল সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, মিলগুলো পাটের ভরা মওসুমে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট কিনতে পারছে না। ফলে পরবর্তীতে মণপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বেশি দামে পাট কিনতে হচ্ছে। এর ফলে মিলগুলোকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। অথচ লোকসানের দায় চাপানো হচ্ছে শ্রমিকদের ওপর।
বিজেএমসি সূত্রে জানা গেছে, এই লোকসানের পেছনে তারা সাতটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত স্থায়ী শ্রমিক, সক্ষমতা অনুসারে উৎপাদন না হওয়া, ব্যাংক ঋণের সুদ, সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, শ্রমিক আন্দোলন ও লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং সিবিএ নেতাদের কাজ না করা। খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল বছরে গড়ে লোকসান দিচ্ছে প্রায় ২২০ কোটি টাকা। এর পেছনে কমপক্ষে ১১টি কারণকে দায়ী করছে বিজেএমসি, পাটকল কর্মকর্তা, পাটকল শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা। ক্রমাগত লোকসানের কারণে দুরবস্থা কাটছে না পাটকলগুলোর। এর পাশাপাশি মিল কর্তৃপক্ষ এবং সিবিএ নেতারা বলছেন, পাটের ভর মওসুমে পাট কিনতে না পারা, আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া, আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় পাটের বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করতে না পারা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে পাটকলে লোকসান হচ্ছে।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা গাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, মিলগুলোর সার্বিক অবস্থা প্রতিনিয়ত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে জানানো হয়। পাটজাত পণ্য দ্রুত বিক্রি এবং লোকসান কমিয়ে পাটকলকে ‘ব্রেক ইভেন’ পর্যায়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মিলগুলোর যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্লাটিনাম ও জেজেআই জুট মিলের যন্ত্রপাতি সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। পরবর্তীতে অন্য সাতটি মিল এই উদ্যোগের আওতায় আনা হবে।
No comments