পথে পথে যাত্রী ভোগান্তি
পথেঘাটে নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা। ভাঙাচোরা সড়ক, সরু সেতু, চার লেন ও ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনায় সড়ক-মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে সড়কে ভাঙাচোরা থাকায় গাড়ির গতিও কমে যাচ্ছে। সড়ক ভাঙাচোরা মেরামতে অবহেলার কারণে গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলীকে শোকজ করা হবে। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় গতকাল সড়ক-মহাসড়কের যানজটের তীব্রতা কিছুটা কম ছিল। তবুও সড়ক-মহাসড়কভেদে ২-৫ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফেরার মানুষের চাপ বাড়তে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোতে জানা গেছে, উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার বাসিন্দাদের ২-৫ ঘণ্টা যানজটে পড়তে হচ্ছে। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টার পথ যেতে লাগছে ৪-৫ ঘণ্টার বেশি। ঢাকা-বগুড়ার ৫ ঘণ্টার পথ লাগছে ৭-৮ ঘণ্টা। ফেরি পারাপারে সমস্যা, সীমাখালী ব্রিজ ভাঙা ও সড়কের নাজুক অবস্থার কারণে ঢাকা থেকে যশোর ও খুলনা পৌঁছতে ৭-৮ ঘণ্টার জায়গায় ১০-১২ ঘণ্টা লাগছে। মেঘনা ও গোমতী সরু ব্রিজের কারণে ২-৬ ঘণ্টা পর্যন্ত যানজট তৈরি হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার মেঘনা সেতু থেকে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম যেতে ৮-১০ ঘণ্টা পর্যন্ত গাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। সিলেট যেতে ৫ ঘণ্টার স্থলে ৭-৮ ঘণ্টা লাগছে।
ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত গাড়ি যানজটের সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ঈদের আগে যান চলাচলের সুবিধার জন্য সড়কের উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার কাছাকাছি চারটি পয়েন্ট চন্দ্রা, বাইপাইল, নবীনগর ও কোনাবাড়ী এলাকায় যানজট ও পরিবহন চাঁদাবাজি মনিটরিং করতে চারটি আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তাদের মতে, অনেক ক্ষেত্রে চাঁদাবাজির জন্য এসব পয়েন্টে ইচ্ছাকৃতভাবে যানজট তৈরি করা হয়। এসব বিষয় মনিটরিং করার জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেসব সড়কে এখনও ভাঙাচোরা আছে সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত এ মেরামত কার্যক্রম চলবে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ অফিস শেষে শুরু হবে ঈদের ছুটি। এরপরই সড়কে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ আরও বাড়বে। এর ফলে যানজটের তীব্রতা ও স্থায়িত্ব দুটোই বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। আর যানজটের তীব্রতা বেশি হলে নির্দিষ্ট সময়ে বাস ঢাকায় ফিরতে পারে না। ফলে সিডিউল অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি ছাড়া সম্ভব হবে না। আর এই আশঙ্কা সত্যি হলে ঢাকায় বাস কাউন্টারেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে যাত্রীদের। তবে বুধবার রাজধানী থেকে সঠিক সময়ে গাড়ি ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ বাস। এদিকে সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকার ভেতরেই নানান ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে যেতে যানজট, সিএনজিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, পর্যাপ্ত গণপরিবহন না পাওয়ায় দুর্ভোগের শেষ নেই। এর মধ্যে ঈদ সামনে রেখে গাবতলী বাস টার্মিনাল, ঢাকা নদীবন্দরসহ (সদরঘাট) বিভিন্ন টার্মিনালে চলছে কুলি-মজুরদের দৌরাত্ম্য। ছোটখাটো ব্যাগ, লাগেজ ও ব্যবসায়িক মালামাল উঠানো-নামানোর জন্য কুলিদের দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ফলে ঢাকা থেকেই পথেঘাটে ভোগান্তির মধ্য দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। সড়কের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাছান যুগান্তরকে বলেন, ঈদের আগে ও পরে যাত্রীরা যাতে যাতায়াত সমস্যায় না পড়েন সেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। উন্নয়ন কাজের জন্য উত্তরবঙ্গগামী গাড়িগুলো একটু সমস্যায় পড়তে পারে। জয়দেবপুর (গাজীপুর)-এলেঙ্গা-টাঙ্গাইল চার লেন সড়ক নির্মাণের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা কমিয়ে আনার বিষয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন সড়কে কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন মাঝে মধ্যেই প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভালো সড়কেও গাড়ির গতি কমে যাচ্ছে। ঈদে যানজট কমাতে দরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার সমন্বিত উদ্যোগ। সব সংস্থাই তৎপর রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি তাতে মানুষের বাড়ি ফিরতে খুব একটা কষ্ট পেতে হবে না।
বাস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও এসআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি রহমান শহীদ বলেন, গত এক সপ্তাহ সড়ক-মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট ছিল। এর মধ্যে বুধবার সড়ক-মহাসড়কে যানজট কিছুটা কম ছিল। তবুও প্রতিটি রুটের গাড়ি ২-৩ ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে গেছে। তবে বৃহস্পতি ও শুক্রবার যানজট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। উন্নয়ন যন্ত্রণায় নাকাল উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা : পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, উত্তরবঙ্গের ১৬সহ ২২ জেলার গাড়ি চলাচল করে টাঙ্গাইলের ওপর দিয়ে। ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজের কারণে ওই সড়কে দুই লেনে গাড়ি চলছে। এ কারণে প্রায় চান্দুরা থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। এসব কারণে উত্তরবঙ্গগামী সব জেলাতেই সময় বেশি লাগছে। তারা আরও জানান, ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যাতায়াতে সময় লাগছে ১০-১৩ ঘণ্টা। যানজট না থাকলে ৮ ঘণ্টা বেশি সময় লাগার কথা নয়। ঢাকা থেকে রংপুর যাতায়াতে ৬ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে লাগছে ৮-১০ ঘণ্টা। যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঢাকার মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে বের হতেই গাড়িগুলো যানজটে পড়ছে। মহাখালী থেকে উত্তরবঙ্গগামী গাড়ি রাজধানীর ভেতরের যানজট মাড়িয়ে গাজীপুর পৌঁছলে দ্বিতীয় দফায় যানজটে পড়তে হচ্ছে। উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো সড়কের দু’পাশে অবৈধ দখলদার, হাটবাজার, বাস ও টেম্পো স্ট্যান্ড, সড়কের ওপর মালামাল রেখে চলছে রমরমা ব্যবসা। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দে ভরা। অল্প বৃষ্টিতেই ওই সড়কের বিভিন্ন অংশে পানি জমে যাচ্ছে। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও একতা পরিবহনের মালিক হাজী আবুল কালাম যুগান্তরকে বলেন, উত্তরবঙ্গের সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খারাপ। কোথাও রাস্তা দখল করে হাটবাজার বসানো হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি হলেই গাড়ি চলে ধীরগতিতে। এতে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল যেতে কখনও তিন ঘণ্টা, আবার কখন ৬, ৭, ৮, ৯ ঘণ্টা সময় লাগছে। গাজীপুরে যানজটের কারণে চার লেনের সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়েম হাসান। তিনি মোবাইল ফোনে জানান, ময়মনসিংহ বাইপাসের আগের ২-৩ কিলোমিটার সড়ক ভেঙেচুরে একাকার। ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা পর্যন্ত সড়কের এমনই বেহাল দশা যে, এটিকে সড়ক বলা যায় না। সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ব্যবহার করে ২০ জেলার গাড়ি চলাচল করে। ঈদের আগ থেকে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ওই সড়কে ৫ গুণ বেশি গাড়ির চাপ থাকে। সাধারণ সময়ে দৈনিক ১৪ হাজার গাড়ি চলে। ঈদে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৪ হাজার। তিনি বলেন, গাজীপুরের চন্দ্রায় ফ্লাইওভারের নির্মাণসামগ্রী রয়েছে। উন্নয়ন কাজের জন্য ৫০ ফুট রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে। সেখানে ফ্লাইওভারের দু’পাশে ওয়ানওয়েতে গাড়ি চলছে। ফেরি ও ব্রিজে যত ভোগান্তি দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের : জানা গেছে, সাধারণ সময়ে ঢাকা থেকে যশোর ও খুলনা যেতে সময় লাগে ৭-৮ ঘণ্টা। এখন একই পথ চলতে সময় লাগছে ১০-১২ ঘণ্টা। মাগুরার সীমাখালী ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় অতিরিক্ত পথ চলতে হচ্ছে ৫০-৫৫ কিলোমিটার। অপরদিকে ঢাকা-বরিশাল যেতে সাধারণ সময়ে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮-১১ ঘণ্টা। যানজটের কারণ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ২১ জেলার যাত্রীরা সাধারণত যাতায়াত করেন মাওয়ার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি পার হয়ে। এই দুই ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানজট কয়েক ঘণ্টা বাসে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাটের তিনটি পন্টুন ও কাঁঠালবাড়ী ঘাটের চারটি পন্টুন সচল রয়েছে।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটের তুলনায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটের অবস্থা নাজুক। এ ঘাটের ৩ ও ৪ নম্বর পন্টুনের অবস্থা খুবই খারাপ। গাড়ি হেলেদুলে ফেরিতে উঠছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলেন, সাধারণ সময়ে ঢাকা-আরিচা সড়কে ৯ হাজার থেকে ৯ হাজার ৫০০ গাড়ি চলাচল করে। ঈদে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজারের বেশি। এসব গাড়ির বড় অংশই ফেরিতে পারাপার হয়। এ ছাড়া যশোর থেকে খুলনার ফুলতলার শিরোমণি পর্যন্ত সড়ক ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াতের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও সোহাগ পরিবহনের মালিক ফারুক তালুকদার সোহেল যুগান্তরকে বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ফেরিঘাটের অবস্থা ভালো নয়, ঠিকভাবে ফেরি চলে না। পর্যাপ্ত সংখ্যক ফেরি নেই। এতে গাড়ি পার হতেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। সীমাখালী ব্রিজের কারণে এক ঘণ্টার বেশি পথ চলতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলবাসীর দুঃখ মেঘনা-গোমতী ও কাঁচপুর ব্রিজ : ঢাকা থেকে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, ফেনীসহ ১২ জেলার বাসিন্দাদের দুঃখ মেঘনা, গোমতী ও কাঁচপুর ব্রিজ। এই তিন ব্রিজের কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, যা পার হতে ২-৬ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে। সওজ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিদিন ১৬ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ঈদে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ হাজারে। সংস্থার মতে, এত সংখ্যক গাড়ি মেঘনা ও গোমতী ব্রিজে এক লেন করে দুই লেনে চলাচল করতে হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেনে আসা গাড়িগুলো দুই লেনের ব্রিজে ওঠার সময় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সোহাগ পরিবহনের বাসচালক আবদুস ছালাম জানান, দাউদকান্দি টোল প্লাজায় ধীরগতিতে টোল আদায়ের কারণেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
ভাঙাচোরা সড়কে হেলেদুলে যান সিলেটের যাত্রীরা : সিলেট যাত্রার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বেসরকারি ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা নিয়াজ উদ্দিন বলেন, ঢাকার ভেতরের যানজট পার হয়ে আবদুল্লাহপুর আসতেই গাড়ি আর চলে না। আবদুল্লাহপুর ও টঙ্গীর যানজট পার হতে লাগল ঘণ্টাখানেক। টঙ্গী পার হওয়ার পর গাড়ি এমনভাবে হেলেদুলে চলতে শুরু করল যে, মনে হচ্ছিল যে কোনো সময় উল্টে যাবে। দুর্ঘটনার ভয়ে দোয়াদরুদ পড়তে পড়তে পূবাইল পর্যন্ত যেতে সময় লাগল আরও তিন ঘণ্টা। সিলেট পৌঁছতে লেগেছে ৮ ঘণ্টা। অথচ ঢাকা থেকে সিলেটের পথ ৫ ঘণ্টার। টঙ্গী থেকে ঘোড়াশাল পর্যন্ত সড়কটি অত্যন্ত সরু এবং ভাঙাচোরা। একটি গাড়ি অন্যটিকে সাইড দিতে গেলে রাস্তা ছেড়ে মাটিতে নামতে হচ্ছে। কখনও কখনও গাড়ি মাটিতে দেবে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার আরেক পথ নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় নির্মাণ করা হচ্ছে ফ্লাইওভার। প্রায় দু’বছর চলা এ ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে গাড়ি চলাচলের পথ সরু হয়ে গেছে। এতে সেখানে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সওজ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট সড়কে সাধারণ সময়ে ৮-১০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ঈদে তা বেড়ে ২০ হাজারে দাঁড়াবে। গাড়ির চাপ বেশি থাকায় ওই সড়কে যানজট হবে এটাই স্বাভাবিক। ওই রুটে চলাচলকারী এনা পরিবহনের মালিক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘ঈদে আমাদের দুশ্চিন্তা ভুলতা ও টাঙ্গাইল নিয়ে।’
No comments