পরিবহন সংকটে চরম ভোগান্তি
পরিবহনশ্রমিকদের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শ্রমিকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন। ফলে কিছু যানবাহন রাস্তায় বের হলেও বাধার কারণে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। সকালে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ বেকায়দায় পড়ে। সকালে চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস মোড়, টঙ্গী, কালিয়াকৈরের চন্দ্রা মোড় ও মাওনা চৌরাস্তা মোড়ে শ্রমিকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকেরা ট্রাক এলোপাতাড়ি করে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া পেয়ারা বাগান এলাকা থেকে রংপুরে অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার রাত থেকে ভোগড়া বাইপাস মোড় ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ছুটে বেড়াচ্ছিলেন আকলিমা খাতুন। তিনি গার্মেন্টস থেকে চার দিনের ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনি কোনো যানবাহন পাননি। গাজীপুর আদালতে যাওয়ার উদ্দেশে কালিয়াকৈর থেকে গাজীপুরে আসেন বিচারপ্রার্থী আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, অবরোধের কথা শুনে ভোর পাঁচটায় কালিয়াকৈরের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন। বহু কষ্টে বেলা ১১টায় তিনি চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত আসেন।
এতে তাঁর সাড়ে তিন শ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এখন চান্দনা চৌরাস্তা থেকে গাজীপুর আদালত পর্যন্ত যেতে আরও ১০০ টাকা ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সকাল আটটা থেকে বিপুলসংখ্যক পরিবহন শ্রমিকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড ও শিমরাইলের কয়েকটি পয়েন্টে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। মহাসড়ক দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখলেই বাধা দেয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ২১টি রুটের যানবাহন চলাচল করলেও তা বন্ধ ছিল। শ্রমিকেরা রোগী পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বাধা সৃষ্টি করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. সরাফত উল্লাহ বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের বাধার কারণে মহাসড়কে যান চলাচল করেনি। তাঁরা কয়েকটি স্থানে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেয়। এদিকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। রেলওয়ে নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেনের যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে।
No comments