এক ঘণ্টায় ঘুরে আসা যাবে বগা লেক
বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদর থেকে বগা লেক আসা-যাওয়ায় এখন সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। তার ওপর উঁচু-নিচু ভাঙা রাস্তা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। এবার সেই দিন ফুরাচ্ছে। নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে রুমা-বগা লেক সড়ক। সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হলে বগা লেক ঘুরে আসা যাবে এক ঘণ্টায়। কমবে পথের ঝুঁকিও। সেনাবাহিনীর ১৯ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) সড়কটির নির্মাণকাজ করছে। সড়কটির ১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হলে রুমা উপজেলা সদর থেকে সহজেই ঘুরে আসা সম্ভব হবে সমতল থেকে ১ হাজার ৭৩ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান বগা লেক। সরেজমিনে দেখা যায়, রুমার থানাপাড়া থেকে সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়ে রুমা খালের মুখ পর্যন্ত কাজ চলছে। শ্রমিকেরা কেউ পিচঢালাইয়ের কাজ করছেন, কেউ কংকর-বালু ফেলছেন। মুনলাইপাড়া এলাকায় খননযন্ত্র দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। কর্মরত শ্রমিকেরা বলেন, প্রায় এক মাস আগে কাজ শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর ১৯ ইসিবির কর্মকর্তারা বলেন, রুমা উপজেলা সদর থেকে বগা লেক হয়ে কেওক্রাডং প্রায় ৩২ কিলোমিটার সড়কের প্রথম ধাপে বগা লেক পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। কেওক্রাডং পর্যন্ত নির্মাণকাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি টাকা।
সড়কটিতে আগে বগা লেকের কাছাকাছি পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ইট বিছানোর কাজ করলেও বর্তমানে সম্পূর্ণ নতুনভাবে করতে হবে। এ জন্য বগা লেক পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়ক আগামী বছর (২০১৮) নাগাদ শেষ হতে পারে। সড়কটি নির্মাণে এলাকাবাসীও উচ্ছ্বসিত। পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে বগালেক, কেওক্রাডং, সাইকতপাড়াসহ আশপাশে বসবাসকারী মানুষের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে সুবিধা হবে। বগা লেক–সংলগ্ন কোলাদি মৌজার হেডম্যান শৈ সিং থুই মারমা বলেন, এটি উন্নয়ন বোর্ডের সড়ক ছিল। কিন্তু মানসম্মত না হওয়ায় যানবাহন চলাচল ছিল মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সড়ক নির্মাণকাজ কেওক্রাডং পর্যন্ত শেষ হলে পর্যটকদের যাওয়া-আসা বেড়ে যাবে এবং পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এ ছাড়া উৎপাদিত ফসল খুব সহজে বাজারজাত করা সম্ভব হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা দ্রুত পরিবর্তন হবে। বগা লেকের বাসিন্দা সিয়াম বম বলেন, বগা লেক ও কেওক্রাডংয়ে এখনো গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু ভয়ংকর সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ যায়। নির্মাণকাজ শেষ হলে সড়কটি ঝুঁকিমুক্ত হবে। যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হলে এবং কম সময়ে আসা-যাওয়া করা গেলে পর্যটকদের সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী ১৯ ইসিবির উপ–অধিনায়ক মেজর ফয়সল চৌধুরী বলেন, কাজের মানের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কোনো রকম ছাড় দেয় না। সড়কের যেখানে উঁচু বেশি সেই অংশগুলো আরও নিচু করে নিরাপদ করা হবে।
No comments