জোট রাজনীতিতে অস্থিরতা-অভিমান by সাজেদুল হক
জোটের
রাজনীতির ইতিহাস এ ভূমে পুরনো। সকাল-বিকাল পার্টিও নতুন কিছু নয়। গত দেড়
দশকে ভোটের রাজনীতিতে দুই ভাগ হয়ে গিয়েছিল দেশ। দুইদিকে প্রধান দুই জোট।
মহাজোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। আরেক শরিক জাতীয় পার্টি প্রধান
বিরোধী দলের আসনে। ক্ষমতাতেও তাদের শেয়ার আছে। অদ্ভুত, তবে এটাই সত্য।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সরকারের সমালোচনায় মুখর থাকেন এমন উদারতা এ দুনিয়ার আর কোথায় পাবেন আপনি। জাতীয় পার্টিকে বাদ রেখে আছে ১৪ দল। যে দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলেরই ভোটের রাজনীতিতে তেমন কোন প্রভাব নেই। শরিক দলগুলোর কেউ কেউ ক্ষমতার অংশীদারিত্ব পেয়েছে। তবে অন্যদের কোনো গুরুত্ব নেই। আওয়ামী লীগ প্রয়োজন মনে করলে তাদের ডাকে। না হয় ডাকে না। এ নিয়ে শরিকদের মনে দীর্ঘদিনের অভিমান। পৌর নির্বাচন আওয়ামী লীগ যখন এককভাবে লড়ছে তখন সে অভিমানের মাত্রা বেড়েছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থায় কারোরই কিছু করার নেই।
বিরোধী শিবিরেও একইচিত্র। চার দলীয় জোট এখন ২০দলীয় জোট। কিন্তু বিএনপির বাইরে জামায়াত ছাড়া ভোটের রাজনীতিতে অন্য কারও কোন প্রভাব নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী জোটে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা। জামায়াতে ইসলামী ঐক্যজোটসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে জোটের প্রধান দল বিএনপির এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দল দুটির প্রতিনিধিরা যোগ দেননি। কওমি মাদরাসাভিত্তিক দলগুলোর ওপর জোট ত্যাগের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই এক ধরনের চাপ রয়েছে। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই এ চাপ চলে আসছে। এরআগে কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেফাজতে ইসলামের নেতারা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় ছিলেন। তবে ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা হিসেবেই এ প্রচারণায় ছিলেন তারা। কোনো কোনো পর্যবেক্ষক মনে করেন, ওই প্রচারণা ভোটের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছিল। যে কারণে এবার পৌর নির্বাচনে হেফাজত সংশ্লিষ্ট জোট নেতাদের ওপর প্রবল চাপ আসে। যেন তারা বিএনপির পক্ষে ভোটের মাঠে কোনো ভূমিকা না রাখেন। আর এসব দলেরও বিএনপির ওপর এক ধরনের অভিমান রয়েছে। বিএনপি তাদের সঙ্গে এক ধরনের দূরত্ব বজায় রাখতে চায় বলেই মনে করেন ইসলামপন্থি শরিকরা। জামায়াতের সঙ্গেও বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে। অন্তত ৩০টি পৌরসভায় মেয়র পদে জামায়াতের কাছ থেকে বিএনপি প্রার্থীদের শক্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির জন্য বৈশ্বিক এবং ভৌগোলিক রাজনীতি প্রধান কারণ বলে মনে করেন জামায়াত এবং কওমিভিত্তিক ইসলামী দলগুলোর নেতারা। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে বিএনপির ওপর সবসময়ই আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর এক ধরনের চাপ রয়েছে। যদিও জামায়াতের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সবার এক ধরনের ধারণা নয়। পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলোর অনেকগুলোই মনে করে, জামায়াতকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি করতে দেয়া উচিত। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালী অনেক রাষ্ট্রই এ ব্যাপারে একমত নয়। ভোটের রাজনীতিতে জামায়াতের এক ধরনের প্রভাব থাকলেও যদি ভোটই না হয়, সেক্ষেত্রে এ প্রভাব ধর্তব্যের মধ্যে রাখতে চায় না বিএনপি। গত দুই বছর ধরেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ভারতের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন। কয়েকদিন আগেও দলটির একাধিক নেতা ভারত সফর করে এসেছেন। তবে এ প্রচেষ্টাতে এখনও যে ভারতের বাংলাদেশ নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি বাংলাদেশ ত্যাগের আগে পঙ্কজ শরণ তা খোলামেলাই বলে গেছেন।
কেউ জোট ভাঙার ঐতিহাসিক দায় নিতে চান নাÑ বস্তুত এ কারণেই জোট রাজনীতি টিকে আছে বলে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকই মনে করেন। তবে জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এখন অনেকটাই কমে এসেছে। জোট রাজনীতিতে ইতিহাসের নবযাত্রা শুরুর হয়তো আর বেশি দিন বাকি নেই।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সরকারের সমালোচনায় মুখর থাকেন এমন উদারতা এ দুনিয়ার আর কোথায় পাবেন আপনি। জাতীয় পার্টিকে বাদ রেখে আছে ১৪ দল। যে দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলেরই ভোটের রাজনীতিতে তেমন কোন প্রভাব নেই। শরিক দলগুলোর কেউ কেউ ক্ষমতার অংশীদারিত্ব পেয়েছে। তবে অন্যদের কোনো গুরুত্ব নেই। আওয়ামী লীগ প্রয়োজন মনে করলে তাদের ডাকে। না হয় ডাকে না। এ নিয়ে শরিকদের মনে দীর্ঘদিনের অভিমান। পৌর নির্বাচন আওয়ামী লীগ যখন এককভাবে লড়ছে তখন সে অভিমানের মাত্রা বেড়েছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থায় কারোরই কিছু করার নেই।
বিরোধী শিবিরেও একইচিত্র। চার দলীয় জোট এখন ২০দলীয় জোট। কিন্তু বিএনপির বাইরে জামায়াত ছাড়া ভোটের রাজনীতিতে অন্য কারও কোন প্রভাব নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী জোটে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা। জামায়াতে ইসলামী ঐক্যজোটসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে জোটের প্রধান দল বিএনপির এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দল দুটির প্রতিনিধিরা যোগ দেননি। কওমি মাদরাসাভিত্তিক দলগুলোর ওপর জোট ত্যাগের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই এক ধরনের চাপ রয়েছে। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই এ চাপ চলে আসছে। এরআগে কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেফাজতে ইসলামের নেতারা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় ছিলেন। তবে ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা হিসেবেই এ প্রচারণায় ছিলেন তারা। কোনো কোনো পর্যবেক্ষক মনে করেন, ওই প্রচারণা ভোটের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছিল। যে কারণে এবার পৌর নির্বাচনে হেফাজত সংশ্লিষ্ট জোট নেতাদের ওপর প্রবল চাপ আসে। যেন তারা বিএনপির পক্ষে ভোটের মাঠে কোনো ভূমিকা না রাখেন। আর এসব দলেরও বিএনপির ওপর এক ধরনের অভিমান রয়েছে। বিএনপি তাদের সঙ্গে এক ধরনের দূরত্ব বজায় রাখতে চায় বলেই মনে করেন ইসলামপন্থি শরিকরা। জামায়াতের সঙ্গেও বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে। অন্তত ৩০টি পৌরসভায় মেয়র পদে জামায়াতের কাছ থেকে বিএনপি প্রার্থীদের শক্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির জন্য বৈশ্বিক এবং ভৌগোলিক রাজনীতি প্রধান কারণ বলে মনে করেন জামায়াত এবং কওমিভিত্তিক ইসলামী দলগুলোর নেতারা। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে বিএনপির ওপর সবসময়ই আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর এক ধরনের চাপ রয়েছে। যদিও জামায়াতের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সবার এক ধরনের ধারণা নয়। পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলোর অনেকগুলোই মনে করে, জামায়াতকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি করতে দেয়া উচিত। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালী অনেক রাষ্ট্রই এ ব্যাপারে একমত নয়। ভোটের রাজনীতিতে জামায়াতের এক ধরনের প্রভাব থাকলেও যদি ভোটই না হয়, সেক্ষেত্রে এ প্রভাব ধর্তব্যের মধ্যে রাখতে চায় না বিএনপি। গত দুই বছর ধরেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ভারতের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন। কয়েকদিন আগেও দলটির একাধিক নেতা ভারত সফর করে এসেছেন। তবে এ প্রচেষ্টাতে এখনও যে ভারতের বাংলাদেশ নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি বাংলাদেশ ত্যাগের আগে পঙ্কজ শরণ তা খোলামেলাই বলে গেছেন।
কেউ জোট ভাঙার ঐতিহাসিক দায় নিতে চান নাÑ বস্তুত এ কারণেই জোট রাজনীতি টিকে আছে বলে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকই মনে করেন। তবে জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এখন অনেকটাই কমে এসেছে। জোট রাজনীতিতে ইতিহাসের নবযাত্রা শুরুর হয়তো আর বেশি দিন বাকি নেই।
No comments