আশি বছরে রাবেয়া খাতুন by আহমাদ মাযহার
১৯৪৭-এর
আগে ঢাকায় বাংলা সাহিত্যের চর্চা ছিল খুবই কম। ঢাকা তৎকালীন পাকিস্তানের
পূর্ব অংশের রাজধানী হলে ধীরে ধীরে ঢাকা নগরের আয়তন বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে
জনসংখ্যা। গড়ে উঠতে থাকে নতুন মধ্যবিত্ত সমাজ। দু-একজন করে লেখকেরও দেখা
মিলতে থাকে। কলকাতায় যাঁদের শুরু, তেমন কয়েকজন ঢাকায় এলেন। ঢাকায়ও শুরু
করলেন কেউ কেউ!
স্বল্পসংখ্যক নতুনে তো পাঠকের তৃপ্তি হওয়ার কথা নয়! তাই কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত লেখকেরাই ছিলেন তাঁদের কান্ডারি। ধীরে ধীরে অবস্থা বদলায়। সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজধানী শহরে গড়ে উঠতে থাকা মধ্যবিত্ত সমাজের ভেতর থেকে জেগে ওঠেন নতুন সাহিত্যস্রষ্টারা। রাবেয়া খাতুন তাঁদেরই একজন। ৮০ বছর পূর্তির লগ্নে তাঁর অবদানের মূল্যায়ন করতে হলে এই পটভূমির কথা আমাদের মনে রাখতে হবে।
১৯৪৭-এর আগের বাংলা সাহিত্যের কেন্দ্র কলকাতায়। কিন্তু সেখানে মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম। নারীদের অবস্থা আরও পশ্চাৎপদ। সেই সমাজে আত্মবিকাশের আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ নারীদের দু-একজনকে তখন সবেমাত্র দেখা যেতে শুরু করেছে! ঢাকায় সাহিত্যের যাত্রার শুরুতে নারীদেরও মাত্রই দু-একজনের সূচনা। রাবেয়া খাতুন সেই সূচনাকারীদের অন্যতম। তখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছেন এমন নারীর সংখ্যাও কম। তাঁদের লেখাপড়ার দৌড়ও মাধ্যমিক স্কুলের দোরগোড়া অবধি। আবার এই সীমিত লেখাপড়ার সুযোগের পেছনেও উদ্দেশ্য সংকীর্ণ—আধুনিক পুরুষতান্ত্রিকতার সহায়ক ও উপযোগী হিসেবে নারীদের গড়ে তোলা। কারণ, ওই সময়ে প্রধানত নারীদের জীবন ছিল ঘরের ভেতরের সংসার-সীমানাতেই সীমিত।
সুতরাং দৃষ্টিভঙ্গি এমন যে নারীর উচ্চশিক্ষায় ফায়দা এর চেয়ে বেশি আর কী! পুরুষের মতো মুক্তভাবে নিজের জীবন পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার বলতে গেলে ছিলই না। হয় বাবার, না হয় স্বামীর কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার জন্য তাঁকে সব সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। সমাজের সাধারণ আধুনিক শ্রেয়োবোধই এ রকম যে নারীর বাইরে যাওয়ার দরকার হবে নিতান্তই সংসারের প্রয়োজনের খাতিরে। সে জন্যই তাঁদের শিক্ষার অধিকারও ততটুকুই, যতটুকু ঘরের ভেতরে প্রয়োজন। বিবাহযোগ্য হিসেবে এটুকু শিক্ষা তার মূল্য কিছুটা বাড়িয়েছিল বইকি। রাবেয়া খাতুনের সাহিত্যিক উন্মেষের কালে বাংলাদেশের উদার মধ্যবিত্ত সমাজ এর চেয়ে বেশি গ্রহণ করতে পারেনি। তাঁর সমসাময়িক কালের মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজ প্রতিনিধিদের স্মৃতিকথাগুলো থেকে এমন মনোভঙ্গিরই পরিচয় পাওয়া যায়।
কিশোর বয়স থেকেই তিনি বিদ্রোহী সত্তার অধিকারী। তাঁর স্মৃতিকথায় সে পরিচয় পাওয়া যায়। নিতান্ত কিশোর বয়সে বিদ্রোহে যাঁর সূচনা, তিনি যে অদম্য হবেন, সে তো জানা কথাই! ওই বয়সে পত্রিকায় লেখা পাঠানোয় পরিবারে দেখা দেয় তীব্র অসন্তোষ। বয়োজ্যেষ্ঠদের ধারণা, একটি মেয়ের হাতের লেখা সংসারের বাইরের পুরুষদের দেখতে মানা। নারী হিসেবে কী রকম অবরুদ্ধ সমাজের বাসিন্দা ছিলেন তিনি, এই ঘটনা তার সাক্ষ্য। এ রকম একটা পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্বপ্ন দেখেছেন ঔপন্যাসিক হওয়ার, মুক্তি ঘটাতে চেয়েছেন লেখক সত্তার।
নারী বলে তাঁকে বেশি সংগ্রামশীল হতে হয়েছে। নিজের সৃষ্ট সাহিত্যকর্মকে নারী হিসেবে বাড়তি অনুকম্পার চোখে দেখা হোক, এমন প্রত্যাশা কখনো করেননি! জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি-অর্থনীতির প্রভাবে আমাদের সমাজও বিবর্তমান। সেটাকে তাঁর পর্যবেক্ষণ অগ্নিদৃষ্টির মাধ্যমে। বিচিত্র কথাসাহিত্যকর্মে তথা গল্প-উপন্যাসে ও ভ্রমণ সাহিত্যে এমনকি শিশুসাহিত্যের অভিযাত্রায় তাঁর নিদর্শন ছড়িয়ে আছে! নারী-পুরুষনির্বিশেষে তাঁর সমকালের উল্লেখযোগ্য লেখকদের খুব কম সংখ্যকের মধ্যেই এতটা দীর্ঘকালব্যাপী ধারাবাহিক সক্রিয় ও নিমগ্নতা পাওয়া যাবে।
৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে সক্রিয়। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যাও উল্লেখ করার মতো। পঞ্চাশেরও বেশি উপন্যাসের রচয়িতা। তাই ঔপন্যাসিক হিসেবেই হয়তো বেশি পরিচিতি। এ পর্যন্ত চার খণ্ডে প্রকাশিত চার শ ছোটগল্পের রচয়িতা হিসেবে দেখলে তাঁকে প্রধানত গল্পকার হিসেবেই চেনা যাবে। ভ্রমণ–সাহিত্যের লেখক হিসেবেও তিনি অবিরল। বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে সৃষ্টিশীল অনুপ্রেরণায় রচিত তাঁর ভ্রমণ–সাহিত্য প্রাচুর্য ও স্বাতন্ত্র্য উভয় কারণে আলাদাভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।
এদিকে তিনি সামনের সারিতেই থাকেন শিশুসাহিত্যের স্রষ্টা হিসেবেও। তাৎপর্যপূর্ণ স্মৃতিকথামূলক রচনাও পরিমাণে কম নয়। সব মিলিয়ে রাবেয়া খাতুন তাঁর সৃষ্টিশীল বিচিত্র সংরূপের মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ মানসের অন্তর্গত স্রোতকেই পাঠকদের অনুভবের সীমানায় এনে দেন। সর্বক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব জীবনোপলব্ধি ও কল্পনা প্রতিভার সমন্বয়। তাঁর ভাষা ঋজু, সংহত, ব্যঞ্জনাময় ও নির্মোহ। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের সামগ্রিক অগ্রযাত্রার বিবেচনায় রাবেয়া খাতুনের সাহিত্যিক অবদানকে এ কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হবে। তিনি যখন ভ্রমণ–সাহিত্যে মনোযোগী হন, তখন আমাদের পত্রপত্রিকাগুলো এর জন্য প্রস্তুত ছিল না। একের পর এক ভ্রমণ–সাহিত্য রচনা করে এই মাধ্যমটির দিকে সাহিত্য সমাজকে আগ্রহী করে তুলেছেন। বৃহদায়তন উপন্যাস লেখেননি। লিখেছেন নভেলার। এতে একদিকে তিনি ধারণ করেছেন ক্ষয়িষ্ণু গ্রামীণ জীবনবোধকে, অন্যদিকে ধরা পড়েছে ঘটমান নগরজীবন। ছোটগল্পের নাতিদীর্ঘ পরিসরেও এই জটিলতাকে তিনি তাঁর বিশিষ্ট গদ্যরীতির সামর্থ্যে পেরেছেন সম্পন্নভাবে ধারণ করতে। নিজে সংবেদনশীল নারী বলে গ্রামীণ ও নাগরিক জীবনে নারী-মনস্তত্ত্বের স্বাতন্ত্র্যকে পেরেছেন উপলব্ধি করতে। বাংলাদেশের গ্রামীণ ও নাগরিক জীবনপ্রবাহকে একেবারে সন্ধিস্থল থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি।
আজ তাঁর ৮০ বছর পূর্ণ হবে। ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চর্চিত তাঁর সাহিত্যকে আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান ও অভিনিবেশের সঙ্গে বিচার করে দেখা জরুরি। আমরা তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।
আহমাদ মাযহার: সাহিত্যিক।
স্বল্পসংখ্যক নতুনে তো পাঠকের তৃপ্তি হওয়ার কথা নয়! তাই কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত লেখকেরাই ছিলেন তাঁদের কান্ডারি। ধীরে ধীরে অবস্থা বদলায়। সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজধানী শহরে গড়ে উঠতে থাকা মধ্যবিত্ত সমাজের ভেতর থেকে জেগে ওঠেন নতুন সাহিত্যস্রষ্টারা। রাবেয়া খাতুন তাঁদেরই একজন। ৮০ বছর পূর্তির লগ্নে তাঁর অবদানের মূল্যায়ন করতে হলে এই পটভূমির কথা আমাদের মনে রাখতে হবে।
১৯৪৭-এর আগের বাংলা সাহিত্যের কেন্দ্র কলকাতায়। কিন্তু সেখানে মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম। নারীদের অবস্থা আরও পশ্চাৎপদ। সেই সমাজে আত্মবিকাশের আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ নারীদের দু-একজনকে তখন সবেমাত্র দেখা যেতে শুরু করেছে! ঢাকায় সাহিত্যের যাত্রার শুরুতে নারীদেরও মাত্রই দু-একজনের সূচনা। রাবেয়া খাতুন সেই সূচনাকারীদের অন্যতম। তখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছেন এমন নারীর সংখ্যাও কম। তাঁদের লেখাপড়ার দৌড়ও মাধ্যমিক স্কুলের দোরগোড়া অবধি। আবার এই সীমিত লেখাপড়ার সুযোগের পেছনেও উদ্দেশ্য সংকীর্ণ—আধুনিক পুরুষতান্ত্রিকতার সহায়ক ও উপযোগী হিসেবে নারীদের গড়ে তোলা। কারণ, ওই সময়ে প্রধানত নারীদের জীবন ছিল ঘরের ভেতরের সংসার-সীমানাতেই সীমিত।
সুতরাং দৃষ্টিভঙ্গি এমন যে নারীর উচ্চশিক্ষায় ফায়দা এর চেয়ে বেশি আর কী! পুরুষের মতো মুক্তভাবে নিজের জীবন পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার বলতে গেলে ছিলই না। হয় বাবার, না হয় স্বামীর কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার জন্য তাঁকে সব সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। সমাজের সাধারণ আধুনিক শ্রেয়োবোধই এ রকম যে নারীর বাইরে যাওয়ার দরকার হবে নিতান্তই সংসারের প্রয়োজনের খাতিরে। সে জন্যই তাঁদের শিক্ষার অধিকারও ততটুকুই, যতটুকু ঘরের ভেতরে প্রয়োজন। বিবাহযোগ্য হিসেবে এটুকু শিক্ষা তার মূল্য কিছুটা বাড়িয়েছিল বইকি। রাবেয়া খাতুনের সাহিত্যিক উন্মেষের কালে বাংলাদেশের উদার মধ্যবিত্ত সমাজ এর চেয়ে বেশি গ্রহণ করতে পারেনি। তাঁর সমসাময়িক কালের মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজ প্রতিনিধিদের স্মৃতিকথাগুলো থেকে এমন মনোভঙ্গিরই পরিচয় পাওয়া যায়।
কিশোর বয়স থেকেই তিনি বিদ্রোহী সত্তার অধিকারী। তাঁর স্মৃতিকথায় সে পরিচয় পাওয়া যায়। নিতান্ত কিশোর বয়সে বিদ্রোহে যাঁর সূচনা, তিনি যে অদম্য হবেন, সে তো জানা কথাই! ওই বয়সে পত্রিকায় লেখা পাঠানোয় পরিবারে দেখা দেয় তীব্র অসন্তোষ। বয়োজ্যেষ্ঠদের ধারণা, একটি মেয়ের হাতের লেখা সংসারের বাইরের পুরুষদের দেখতে মানা। নারী হিসেবে কী রকম অবরুদ্ধ সমাজের বাসিন্দা ছিলেন তিনি, এই ঘটনা তার সাক্ষ্য। এ রকম একটা পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্বপ্ন দেখেছেন ঔপন্যাসিক হওয়ার, মুক্তি ঘটাতে চেয়েছেন লেখক সত্তার।
নারী বলে তাঁকে বেশি সংগ্রামশীল হতে হয়েছে। নিজের সৃষ্ট সাহিত্যকর্মকে নারী হিসেবে বাড়তি অনুকম্পার চোখে দেখা হোক, এমন প্রত্যাশা কখনো করেননি! জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি-অর্থনীতির প্রভাবে আমাদের সমাজও বিবর্তমান। সেটাকে তাঁর পর্যবেক্ষণ অগ্নিদৃষ্টির মাধ্যমে। বিচিত্র কথাসাহিত্যকর্মে তথা গল্প-উপন্যাসে ও ভ্রমণ সাহিত্যে এমনকি শিশুসাহিত্যের অভিযাত্রায় তাঁর নিদর্শন ছড়িয়ে আছে! নারী-পুরুষনির্বিশেষে তাঁর সমকালের উল্লেখযোগ্য লেখকদের খুব কম সংখ্যকের মধ্যেই এতটা দীর্ঘকালব্যাপী ধারাবাহিক সক্রিয় ও নিমগ্নতা পাওয়া যাবে।
৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে সক্রিয়। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যাও উল্লেখ করার মতো। পঞ্চাশেরও বেশি উপন্যাসের রচয়িতা। তাই ঔপন্যাসিক হিসেবেই হয়তো বেশি পরিচিতি। এ পর্যন্ত চার খণ্ডে প্রকাশিত চার শ ছোটগল্পের রচয়িতা হিসেবে দেখলে তাঁকে প্রধানত গল্পকার হিসেবেই চেনা যাবে। ভ্রমণ–সাহিত্যের লেখক হিসেবেও তিনি অবিরল। বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে সৃষ্টিশীল অনুপ্রেরণায় রচিত তাঁর ভ্রমণ–সাহিত্য প্রাচুর্য ও স্বাতন্ত্র্য উভয় কারণে আলাদাভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।
এদিকে তিনি সামনের সারিতেই থাকেন শিশুসাহিত্যের স্রষ্টা হিসেবেও। তাৎপর্যপূর্ণ স্মৃতিকথামূলক রচনাও পরিমাণে কম নয়। সব মিলিয়ে রাবেয়া খাতুন তাঁর সৃষ্টিশীল বিচিত্র সংরূপের মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ মানসের অন্তর্গত স্রোতকেই পাঠকদের অনুভবের সীমানায় এনে দেন। সর্বক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব জীবনোপলব্ধি ও কল্পনা প্রতিভার সমন্বয়। তাঁর ভাষা ঋজু, সংহত, ব্যঞ্জনাময় ও নির্মোহ। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের সামগ্রিক অগ্রযাত্রার বিবেচনায় রাবেয়া খাতুনের সাহিত্যিক অবদানকে এ কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হবে। তিনি যখন ভ্রমণ–সাহিত্যে মনোযোগী হন, তখন আমাদের পত্রপত্রিকাগুলো এর জন্য প্রস্তুত ছিল না। একের পর এক ভ্রমণ–সাহিত্য রচনা করে এই মাধ্যমটির দিকে সাহিত্য সমাজকে আগ্রহী করে তুলেছেন। বৃহদায়তন উপন্যাস লেখেননি। লিখেছেন নভেলার। এতে একদিকে তিনি ধারণ করেছেন ক্ষয়িষ্ণু গ্রামীণ জীবনবোধকে, অন্যদিকে ধরা পড়েছে ঘটমান নগরজীবন। ছোটগল্পের নাতিদীর্ঘ পরিসরেও এই জটিলতাকে তিনি তাঁর বিশিষ্ট গদ্যরীতির সামর্থ্যে পেরেছেন সম্পন্নভাবে ধারণ করতে। নিজে সংবেদনশীল নারী বলে গ্রামীণ ও নাগরিক জীবনে নারী-মনস্তত্ত্বের স্বাতন্ত্র্যকে পেরেছেন উপলব্ধি করতে। বাংলাদেশের গ্রামীণ ও নাগরিক জীবনপ্রবাহকে একেবারে সন্ধিস্থল থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি।
আজ তাঁর ৮০ বছর পূর্ণ হবে। ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চর্চিত তাঁর সাহিত্যকে আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান ও অভিনিবেশের সঙ্গে বিচার করে দেখা জরুরি। আমরা তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।
আহমাদ মাযহার: সাহিত্যিক।
No comments