চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ‘গরিবের’ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে? by সুজন ঘোষ
নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মাত্র ১০ টাকায় গরিব মানুষ বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবাসহ বিনা মূল্যে ওষুধ পায়। কিন্তু খরচ কমাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে। এর ফলে গরিব মানুষের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে ৩৬টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের আওতায় ২০০১ সালে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকে নিজস্ব অর্থায়নে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে সিটি করপোরেশন।
করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, এসব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২০১০-২০১১ অর্থবছরে সেবা নিয়েছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৫ জন। আর ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে সেবা নিয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫২ জন। চিকিৎসক, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী না থাকাসহ সেবার মান কমে যাওয়ায় এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে গেছে বলে স্বীকার করেছেন করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, যেসব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক-কর্মচারীর তুলনায় রোগী কম সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
গত ১৩ আগস্ট নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর বর্তমান অবস্থা জানতে সিটি করপোরেশনের সচিব প্রকৌশল বিভাগকে চিঠি দেন। নগর স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলে কেন্দ্রের ভবনগুলো কী কী কাজে ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়ে মতামত দিতে ওই চিঠিতে প্রকৌশল বিভাগকে বলা হয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৌশল বিভাগ জানায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে করপোরেশনের রাজস্ব কার্যালয়, ওয়ার্ড কার্যালয়, পরিচ্ছন্নতা বিভাগের শাখা কার্যালয়, হোমিওপ্যাথিক কলেজ, মাতৃসদন হাসপাতাল ও বাণিজ্যিক কাজে ভাড়া দেওয়া যেতে পারে।
সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ১৮টি ওয়ার্ডে একের অধিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু রেখে অন্যগুলো বন্ধ করে দেওয়ার একটি প্রস্তাব স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মেয়রকে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে ৩৬টি দাতব্য চিকিৎসালয় রয়েছে।
জানতে চাইলে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গত শনিবার তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ২০১২ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো চালু রাখা হয়েছে। এখানে নামকাওয়াস্তে সেবা দেওয়া হচ্ছে। রোগী আসে কম। তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। করপোরেশনের যেসব দাতব্য চিকিৎসালয় রয়েছে, সেখানেও ১০ টাকায় চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে ৫ অক্টোবর বেলা দুইটায় উত্তর পতেঙ্গার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের প্রবেশ ফটকে তালা ঝুলছে। অথচ সকাল নয়টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কেন্দ্রটি খোলা থাকার কথা। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কেন্দ্রের কেমিস্ট মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘চিকিৎসক ছুটিতে আছেন। তাই আজ একটু তাড়াতাড়ি চলে এসেছি।’ তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন রোগী আসেন।
উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওয়ার্ড স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন পাঁচজন রাগীও আসেন না। তাই তা চালু রেখে লাভ কী? তার চেয়ে এগুলো বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।’
গত ৩ অক্টোবর বেলা পৌনে একটায় দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কোনো রোগী নেই। কেন্দ্রের প্যারামেডিক কর্মকর্তা তুলি বড়ুয়া ও মো. সোলায়মান জানান, বছর দুয়েক আগে এই কেন্দ্রে প্রচুর রোগী আসতেন। কিন্তু এখন প্রতিদিন গড়ে রোগী আসেন ১৫ জন। একসময় রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ দেওয়া হলেও বর্তমানে তা দেওয়া হচ্ছে না। ফলে দিন দিন রোগীর পরিমাণ কমছে বলে জানান তাঁরা।
তুলি বড়ুয়া ও মো. সোলায়মান বলেন, আরবান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসে গরিব মানুষ। এটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবে।
দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইয়াছিন চৌধুরী তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও একটি দাতব্য চিকিৎসালয় আছে। কিন্তু একটি ওয়ার্ডে দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাখার প্রয়োজন নেই। তাই একটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, যেসব ওয়ার্ডে দাতব্য চিকিৎসালয় নেই, সেখানে আরবান স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু রাখা যেতে পারে।
গত ১০ অক্টোবর বেলা পৌনে ১১টায় জামালখান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কোনো রোগী নেই। কেন্দ্রের ল্যাব টেকনিশিয়ান রিপা দাশ বলেন, তিন মাস ধরে চিকিৎসা কর্মকর্তা পদটি শূন্য রয়েছে। রোগী দেখার কাজ করেন প্যারামেডিক অফিসার।
রিপা দাশ বলেন, ‘কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেলে রোগীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব। রোগীরা হয়তো বাইরে চিকিৎসা নেবেন, কিন্তু আমরা চাকরি কই পাব। অনেকের চাকরির বয়স চলে গেছে।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা কর্মকর্তা, ফার্মাসিস্ট, প্যারামেডিকসহ ১২ জন জনবল ছিল। এই প্রকল্পের অধীনে জনবল ছিল ৫৯০ জন। এখন ৩৬টি কেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন ১৯৬ জন। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগে ২১৮ জনকে বদলি করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে কেউ চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন, কাউকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জ্বর, সর্দি, কাশি, ত্বকের সমস্যা, প্রসূতি স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ও ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান প্রথম আলোকে বলেন, গরিব মানুষ এখানে সেবা পায়। হুট করে এটি বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। কোনো না কোনোভাবে চালু রাখা যায় কি না, তা করপোরেশনের ভেবে দেখা দরকার।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে ৩৬টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের আওতায় ২০০১ সালে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকে নিজস্ব অর্থায়নে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে সিটি করপোরেশন।
করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, এসব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২০১০-২০১১ অর্থবছরে সেবা নিয়েছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৫ জন। আর ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে সেবা নিয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫২ জন। চিকিৎসক, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী না থাকাসহ সেবার মান কমে যাওয়ায় এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে গেছে বলে স্বীকার করেছেন করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, যেসব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক-কর্মচারীর তুলনায় রোগী কম সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
গত ১৩ আগস্ট নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর বর্তমান অবস্থা জানতে সিটি করপোরেশনের সচিব প্রকৌশল বিভাগকে চিঠি দেন। নগর স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলে কেন্দ্রের ভবনগুলো কী কী কাজে ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়ে মতামত দিতে ওই চিঠিতে প্রকৌশল বিভাগকে বলা হয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৌশল বিভাগ জানায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে করপোরেশনের রাজস্ব কার্যালয়, ওয়ার্ড কার্যালয়, পরিচ্ছন্নতা বিভাগের শাখা কার্যালয়, হোমিওপ্যাথিক কলেজ, মাতৃসদন হাসপাতাল ও বাণিজ্যিক কাজে ভাড়া দেওয়া যেতে পারে।
সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ১৮টি ওয়ার্ডে একের অধিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু রেখে অন্যগুলো বন্ধ করে দেওয়ার একটি প্রস্তাব স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মেয়রকে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে ৩৬টি দাতব্য চিকিৎসালয় রয়েছে।
জানতে চাইলে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গত শনিবার তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ২০১২ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো চালু রাখা হয়েছে। এখানে নামকাওয়াস্তে সেবা দেওয়া হচ্ছে। রোগী আসে কম। তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। করপোরেশনের যেসব দাতব্য চিকিৎসালয় রয়েছে, সেখানেও ১০ টাকায় চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে ৫ অক্টোবর বেলা দুইটায় উত্তর পতেঙ্গার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের প্রবেশ ফটকে তালা ঝুলছে। অথচ সকাল নয়টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কেন্দ্রটি খোলা থাকার কথা। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কেন্দ্রের কেমিস্ট মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘চিকিৎসক ছুটিতে আছেন। তাই আজ একটু তাড়াতাড়ি চলে এসেছি।’ তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন রোগী আসেন।
উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওয়ার্ড স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন পাঁচজন রাগীও আসেন না। তাই তা চালু রেখে লাভ কী? তার চেয়ে এগুলো বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।’
গত ৩ অক্টোবর বেলা পৌনে একটায় দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কোনো রোগী নেই। কেন্দ্রের প্যারামেডিক কর্মকর্তা তুলি বড়ুয়া ও মো. সোলায়মান জানান, বছর দুয়েক আগে এই কেন্দ্রে প্রচুর রোগী আসতেন। কিন্তু এখন প্রতিদিন গড়ে রোগী আসেন ১৫ জন। একসময় রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ দেওয়া হলেও বর্তমানে তা দেওয়া হচ্ছে না। ফলে দিন দিন রোগীর পরিমাণ কমছে বলে জানান তাঁরা।
তুলি বড়ুয়া ও মো. সোলায়মান বলেন, আরবান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসে গরিব মানুষ। এটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবে।
দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইয়াছিন চৌধুরী তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও একটি দাতব্য চিকিৎসালয় আছে। কিন্তু একটি ওয়ার্ডে দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাখার প্রয়োজন নেই। তাই একটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, যেসব ওয়ার্ডে দাতব্য চিকিৎসালয় নেই, সেখানে আরবান স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু রাখা যেতে পারে।
গত ১০ অক্টোবর বেলা পৌনে ১১টায় জামালখান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কোনো রোগী নেই। কেন্দ্রের ল্যাব টেকনিশিয়ান রিপা দাশ বলেন, তিন মাস ধরে চিকিৎসা কর্মকর্তা পদটি শূন্য রয়েছে। রোগী দেখার কাজ করেন প্যারামেডিক অফিসার।
রিপা দাশ বলেন, ‘কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেলে রোগীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব। রোগীরা হয়তো বাইরে চিকিৎসা নেবেন, কিন্তু আমরা চাকরি কই পাব। অনেকের চাকরির বয়স চলে গেছে।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা কর্মকর্তা, ফার্মাসিস্ট, প্যারামেডিকসহ ১২ জন জনবল ছিল। এই প্রকল্পের অধীনে জনবল ছিল ৫৯০ জন। এখন ৩৬টি কেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন ১৯৬ জন। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগে ২১৮ জনকে বদলি করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে কেউ চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন, কাউকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জ্বর, সর্দি, কাশি, ত্বকের সমস্যা, প্রসূতি স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ও ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান প্রথম আলোকে বলেন, গরিব মানুষ এখানে সেবা পায়। হুট করে এটি বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। কোনো না কোনোভাবে চালু রাখা যায় কি না, তা করপোরেশনের ভেবে দেখা দরকার।
No comments