‘যাত্রীদের নাজেহাল করছে বাস মালিকেরা’
সরকার
কিলোমিটার প্রতি ভাড়া বাড়িয়েছে ১০ পয়সা। কিন্তু গণপরিবহনের মালিকেরা
যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে এর দশগুণ বেশি। এ নিয়ে প্রতিদিন রাজধানীর
বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নাজেহাল হতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের
প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনাও ঘটছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত গণপরিবহনে চলমান ভাড়া নৈরাজ্য বিষয়ক গণশুনানিতে আজ রোববার যাত্রীরা এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বেলা এগারোটায় এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা বলেন, সরকার যে প্রক্রিয়ায় ভাড়া নির্ধারণ করে তা সঠিক নয়। ভাড়া নির্ধারণী সভায় যাত্রীদের কোনো প্রতিনিধি থাকেন না। ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারকে গণশুনানির আয়োজন করতে হবে। আগে যে ভাড়া ছিল সেটা অতিরিক্ত ছিল। বরং সেখান থেকে ভাড়া কমানো উচিত।
শুনানিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বাস মালিকেরা সরকারের কাছে যে হিসাব দেয়, তাতে বলে মিনিবাসের আসন ২৯টি। বাসে গড়ে ২০ শতাংশ আসন খালি থাকে। গাড়ি গ্যারেজে রাখতে হয় বলে বাড়তি টাকা ব্যয় হয়। প্রতিদিন ইঞ্জিনের তেল পরিবর্তন এবং প্রতি মাসে আসন মেরামত করতে হয়।
কিন্তু উপস্থিত যাত্রীরা বলেন, বাসে কখনোই ২০ শতাংশ আসন খালি থাকে না। বরং নির্ধারিত আসনের দ্বিগুণ অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হয়। আসন থাকে ৪০ থেকে ৪২টি। আসন মেরামত করা হয় না। ছেঁড়া-ফাটা আসনে বসতে হয়। মাঝেমধ্যে আসনের তারকাঁটায় লেগে প্যান্ট ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
যাত্রীরা আরও বলেন, মিরপুরের বাসগুলো ভাড়া বাড়িয়ে সিটিং সার্ভিস চালু করেছে। মিরপুর থেকে যেখানে নামুক, গুলিস্তানের ভাড়া দিতে হবে। এক মাস পর সিটিং সার্ভিস আর থাকবে না। যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করবে। কিন্তু ভাড়া আর কমবে না।
ইডেন কলেজের ছাত্রী মোমেনা খাতুন বলেন, তিনি কাঁটাবনে থাকেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তাঁকে অনেক জায়গায় যেতে হয়। কন্ডাক্টরদের চাহিদা মতো ভাড়া না দিলে তারা টাকা নাকের ওপর ছুড়ে মারে।
ফার্মগেটের বাসিন্দা জে রায় বলেন, সরকার সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করেছে। অথচ সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করেনি। এটা অন্যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন সাজ্জাদ হোসেন। প্রতিদিন তাঁকে তালতলা থেকে শাহবাগে যাতায়াত করতে হয়। তিনি বলেন, আগে ভাড়া ছিল ১৫ টাকা। এখন নিচ্ছে ২৪ টাকা। এই রুটের বাসগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী আসন থাকার কথা ২৯টি। বাস্তবে আসন থাকে ৪০ এর ওপরে। শুধু ইঞ্জিনের ওপরেই থাকে ১০টি আসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিক সমিতির এক কর্মচারী প্রথম আলোকে বলেন, মালিকেরা ভাড়ার একটি তালিকা বাসে ঝুলিয়ে থাকে। তাতে লেখা থাকে তালিকাটি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্তৃক অনুমোদিত। আসলে ভুয়া। মালিক সমিতি নিজেদের মতো করে তালিকা তৈরি করে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘গণশুনানিতে আমরা আড়াই শর মতো যাত্রীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি। জেনেছি, আগে একজন যাত্রীর মাসে খরচ হতো এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এখন খরচ হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। ভাড়া বাড়িয়ে সরকার মালিকদের সুবিধা দিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করার সুযোগ করে দিয়েছে। মালিকেরা যাত্রীদের শোষণ করছে। ভাড়া কম থাকলে ছাত্রদের বাস থেকে নামিয়ে দিচ্ছে। যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। সরকারি পরিবহন (বিআরটিসি) চললে অবস্থা এমন হতো না। আসলে বিআরটিসি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।
আবুল মকসুদ জানান, যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ নগরীর বিভিন্ন মোড়ে যাত্রীদের শুনানি গ্রহণ করেছে। এক সপ্তাহ পর তারা এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের মতামত তুলে ধরবেন।
যাত্রীদের শুনানি গ্রহণ করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ, কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, সিপিবির নেতা রুহিন হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান, সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত গণপরিবহনে চলমান ভাড়া নৈরাজ্য বিষয়ক গণশুনানিতে আজ রোববার যাত্রীরা এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বেলা এগারোটায় এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা বলেন, সরকার যে প্রক্রিয়ায় ভাড়া নির্ধারণ করে তা সঠিক নয়। ভাড়া নির্ধারণী সভায় যাত্রীদের কোনো প্রতিনিধি থাকেন না। ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারকে গণশুনানির আয়োজন করতে হবে। আগে যে ভাড়া ছিল সেটা অতিরিক্ত ছিল। বরং সেখান থেকে ভাড়া কমানো উচিত।
শুনানিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বাস মালিকেরা সরকারের কাছে যে হিসাব দেয়, তাতে বলে মিনিবাসের আসন ২৯টি। বাসে গড়ে ২০ শতাংশ আসন খালি থাকে। গাড়ি গ্যারেজে রাখতে হয় বলে বাড়তি টাকা ব্যয় হয়। প্রতিদিন ইঞ্জিনের তেল পরিবর্তন এবং প্রতি মাসে আসন মেরামত করতে হয়।
কিন্তু উপস্থিত যাত্রীরা বলেন, বাসে কখনোই ২০ শতাংশ আসন খালি থাকে না। বরং নির্ধারিত আসনের দ্বিগুণ অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হয়। আসন থাকে ৪০ থেকে ৪২টি। আসন মেরামত করা হয় না। ছেঁড়া-ফাটা আসনে বসতে হয়। মাঝেমধ্যে আসনের তারকাঁটায় লেগে প্যান্ট ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
যাত্রীরা আরও বলেন, মিরপুরের বাসগুলো ভাড়া বাড়িয়ে সিটিং সার্ভিস চালু করেছে। মিরপুর থেকে যেখানে নামুক, গুলিস্তানের ভাড়া দিতে হবে। এক মাস পর সিটিং সার্ভিস আর থাকবে না। যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করবে। কিন্তু ভাড়া আর কমবে না।
ইডেন কলেজের ছাত্রী মোমেনা খাতুন বলেন, তিনি কাঁটাবনে থাকেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তাঁকে অনেক জায়গায় যেতে হয়। কন্ডাক্টরদের চাহিদা মতো ভাড়া না দিলে তারা টাকা নাকের ওপর ছুড়ে মারে।
ফার্মগেটের বাসিন্দা জে রায় বলেন, সরকার সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করেছে। অথচ সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করেনি। এটা অন্যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন সাজ্জাদ হোসেন। প্রতিদিন তাঁকে তালতলা থেকে শাহবাগে যাতায়াত করতে হয়। তিনি বলেন, আগে ভাড়া ছিল ১৫ টাকা। এখন নিচ্ছে ২৪ টাকা। এই রুটের বাসগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী আসন থাকার কথা ২৯টি। বাস্তবে আসন থাকে ৪০ এর ওপরে। শুধু ইঞ্জিনের ওপরেই থাকে ১০টি আসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিক সমিতির এক কর্মচারী প্রথম আলোকে বলেন, মালিকেরা ভাড়ার একটি তালিকা বাসে ঝুলিয়ে থাকে। তাতে লেখা থাকে তালিকাটি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্তৃক অনুমোদিত। আসলে ভুয়া। মালিক সমিতি নিজেদের মতো করে তালিকা তৈরি করে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘গণশুনানিতে আমরা আড়াই শর মতো যাত্রীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি। জেনেছি, আগে একজন যাত্রীর মাসে খরচ হতো এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এখন খরচ হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। ভাড়া বাড়িয়ে সরকার মালিকদের সুবিধা দিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করার সুযোগ করে দিয়েছে। মালিকেরা যাত্রীদের শোষণ করছে। ভাড়া কম থাকলে ছাত্রদের বাস থেকে নামিয়ে দিচ্ছে। যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। সরকারি পরিবহন (বিআরটিসি) চললে অবস্থা এমন হতো না। আসলে বিআরটিসি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।
আবুল মকসুদ জানান, যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ নগরীর বিভিন্ন মোড়ে যাত্রীদের শুনানি গ্রহণ করেছে। এক সপ্তাহ পর তারা এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের মতামত তুলে ধরবেন।
যাত্রীদের শুনানি গ্রহণ করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ, কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, সিপিবির নেতা রুহিন হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান, সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ।
No comments