প্রস্তুত শোলাকিয়া by আশরাফুল ইসলাম
প্রতিবারের
মতো এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জেলা
প্রশাসন বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড শেষ করে এনেছে। ঈদগাহ ময়দানজুড়ে
কাতারের লাইন টানা, মাঠ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরণ ও ধোয়া মুছার কাজ চলছে
পুরোদমে। জামাতকে ঘিরে প্রস্তুতি রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক
ব্যবস্থার। এ ছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ
রেলওয়ে বরাবরের মতো এবারও ঈদ-উল-ফিতরের দিন ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে ২টি
বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী এ শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাত। ১৭৫০ সাল থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সে হিসাব অনুসারে শোলাকিয়া ঈদগাহের বয়স ২শ’ ৬৬ বছর। প্রতিষ্ঠার ৭৮ বছর পর ১৮২৮ সালে প্রথম বড় জামাতে এই মাঠে একসঙ্গে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়ালাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। এই সোয়ালাখ থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা উচ্চারণ বিবর্তনে হয়েছে শোলাকিয়া। স্থানীয় হয়বতনগর সাহেব বাড়ির ঊর্ধ্বতন পুরুষ শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ (র:) সে জামাতে ইমামতি করেন।
এ সংক্রান্ত নানা তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ (র.) এর পূর্বপুরুষগণ সুদূর মক্কা শরিফ থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন করে বর্তমান ভারতের বর্ধমান জেলার টেংগাপাড়ায় বসবাস শুরু করেন। সৈয়দ আহমদ (র.) এর পিতা সৈয়দ ইবরাহিম (র.) উত্তর কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামী শিক্ষা প্রচার-প্রসার ও দাওয়াতের কাজ করতে গিয়ে কিশোরগঞ্জ শহর থেকে সাত মাইল দূরবর্তী কান্দাইল গ্রামে পদার্পণ করেন। পরবর্তীতে সেখানে স্থানীয় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বিবাহ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু সাংসারিক জীবনকে তিনি আবদ্ধজীবন মনে করে আল্লাহর বাণী প্রচারের তাগিদে বেরিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে তাবলীগ জামাতসহ মক্কা শরিফে চলে যান এবং সেখানেই ইন্তিকাল করেন। এদিকে মরহুম সৈয়দ ইবরাহিম (র.) এর বাড়িতে রেখে যাওয়া গর্ভবতী স্ত্রীর এক পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। স্বামীর পূর্ব নির্দেশ মোতাবেক পুত্রের নামকরণ ও পরবর্তী সময়ে বয়ঃপ্রাপ্ত হলে ১২ বছর বয়সে শিক্ষা-দীক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ঢাকার আজিমপুর দায়রা শরিফে প্রেরণ করা হয়। বালকপুত্র সৈয়দ আহমদ সেখানে ২৪ বছর অবস্থান করে শিক্ষা-দীক্ষায় পরিপক্ক জ্ঞান লাভের পর পীরের নির্দেশে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় চলে আসেন। সেখানে শহীদ ময়েজ উদ্দিন মজনু (র.) এর মাজারের পাশে একটি ঘর তৈরি করে ইবাদত-বন্দেগীসহ ইসলামের বাণী প্রচারে মনোনিবেশ করেন। ক্রমে সৈয়দ আহমদ (র.)-এর সুনাম ও সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোকজন তার কাছে এসে দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ করতে থাকে। এ সময় ঈশা খাঁ’র বংশধরগণ জঙ্গলবাড়ি ও হয়বতনগর এলাকার জমিদারদ্বয় সৈয়দ আহমদ (র.) কে শ্রদ্ধার আসনে স্থান দেন এবং তার সামগ্রিক দ্বীনি দাওয়াতী কাজের সহযোগিতা করেন। এ সময় সে এলাকায় কোন মসজিদ না থাকায় ১৮২৭ সালে সৈয়দ আহমদ (র.) বাড়ি সংলগ্ন জায়গায় একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর পরই তিনি ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি তার ক্রয়কৃত তালুক সম্পত্তিতে ঈদগাহ মাঠ প্রতিষ্ঠা করার মনস্থির করেন এবং এ ব্যাপারে জঙ্গলবাড়ি ও হয়বতনগরের জমিদারদ্বয়কে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়ে আসন্ন ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাতে শরীক হওয়ার দাওয়াত করেন। জমিদারদ্বয় দাওয়াত কবুল করেন এবং এই অঞ্চলের আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৮২৮ সালের ঈদ-উল-ফিতরের ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ (র.)-এর ইমামতিতে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রথম জামাত।
বৃহত্তম জামাতের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর এ ঈদগাহ মাঠে ১৮৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় শুরু হবে জামাত। এতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিহীন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। ঐতিহ্যবাহী এ মাঠে খ্যতিসম্পন্ন আলেমগণ ইমামতি করেছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম বড় জামাতের পর আরও যারা ইমামতি করেছেন, তারা হলেন- হযরত মাওলানা হাফেজ মুহম্মদ হযরত উল্লাহ, হযরত মাওলানা পেশওয়ারী, হযরত মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, আলহাজ মাওলানা হামিদুল হক, হযরত মাওলানা মাজহারুল হক, হযরত মাওলানা আবদুল গনি, হযরত মাওলানা আতহার আলী, হযরত মাওলানা আবদুল মান্নান, হযরত মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ নূরুল্লাহ ও মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। গত পাঁচ বছর যাবত আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ইমামতি করছেন।
স্থানীয় মুসলিম সমপ্রদায়ের মধ্যে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে, এ মাঠে পর পর ৭টি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারলে একবার হজব্রত পালনের সওয়াব পাওয়া যায়। সে জন্য শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ‘গরিবের মক্কা’ নামেও বিশেষ পরিচিত। সে বিশ্বাস থেকে এবং বৃহৎ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করার মানসে প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের পাশাপাশি ভিনদেশী মুসল্লিরাও এ ঈদগাহ ময়দানে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করেন। প্রতি বছরই এই সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁ’র ৬ষ্ঠ বংশধর হয়বতনগরের জমিদার দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান তার মায়ের অসিয়াত মোতাবেক ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য ৪.৩৫ একর জমি ওয়াক্ফ করেন। সেই ওয়াক্ফ দলিলে উল্লেখ রয়েছে, ১৭৫০ সাল থেকে এ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কিশোরগঞ্জ মৌজার এ মাঠের মূল আয়তন বর্তমানে ৬.৬১ একর। প্রাচীর ঘেরা শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে মোট ২৬৫টি কাতার রয়েছে যেখানে একসঙ্গে দেড় লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। এ ছাড়া মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঈদগাহ সংলগ্ন খালি জায়গা, রাস্তা এবং নিকটবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে সমসংখ্যক মুসল্লি এ বৃহত্তম ঈদ জামাতে শরিক হন।
শোলাকিয়া ঈদগাহে সকাল ১০টায় ঈদ-উল-ফিতরের জামাত শুরু হলেও ভোর থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে ঈদগাহ অভিমুখে। সকাল ৯টার মধ্যেই মাঠের অধিকাংশ এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ ছাড়া শোলাকিয়া ঈদগাহে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য দেশের দূর-দূরান্তের মুসল্লিগণ ঈদের ২-৩ দিন আগে থেকেই ঈদগাহের মিম্বর, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, বিভিন্ন মসজিদ ও আবাসিক হোটেলগুলোতে এসে ওঠতে থাকেন। অনেক মুসল্লি ঈদের দিন ভোর বেলায় ট্রেন, বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ঈদগাহে আসেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে ২টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। এবারও ভৈরব বাজার-ময়মনসিংহ ও ময়মনসিংহ-ভৈরব বাজার রুটে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামের বিশেষ ট্রেন ২টি চলাচল করবে। বিশেষ ট্রেনের একটি ঈদের দিন সকাল ৬টায় ভৈরববাজার থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। জামাত শেষে ট্রেনটি দুপুর ১২টায় পুনরায় ভৈরববাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং বেলা ২টায় ভৈরববাজার পৌঁছবে। অপর ট্রেনটি ঈদের দিন সকাল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। এ ট্রেনটিও জামাত শেষে দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে এবং বেলা ৩টায় ময়মনসিংহ পৌঁছবে।
ঈদ জামাতকে নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে চার স্তরের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ, র্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ঈদগাহ মাঠকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করছে। পুরো এলাকায় বসানো হচ্ছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ঈদগাহ ময়দান একাধিকবার সুইপিং করা ছাড়াও মাঠে ঢোকার ২২টি গেটে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করে মাঠের ভেতর প্রবেশ করতে দেয়া হবে। নিশ্ছিন্দ্র নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ এই ঈদ জামাত। নামাজ চলাকালে মেডিক্যাল টিম ও অগ্নিনির্বাপক দলকে সতর্কাবস্থায় রাখা হবে। এ ছাড়া স্কাউটদের একটি দল মুসল্লিদের শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে নিয়োজিত থাকবে। গৃহীত প্রস্তুতির বিবেচনায় লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে সুন্দর ও সুচারুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের আশাবাদ প্রকাশ করেছে ঈদগাহ কমিটি।
সাধারণ মানুষ ছাড়াও প্রতিবারই এ জামাতে বিপুল সংখ্যক ভিআইপি উপস্থিত থাকেন। বৃহৎ এ মাঠে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি একসাথে সেজদায় গেলে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এ দৃশ্য দেখার জন্য স্থানীয়দের অনেকেই সকাল সকাল নামাজ সেরে নেন শহরের পুরানথানা এলাকার শহীদী মসজিদে। তারপর এসে জড়ো হন মাঠের চারদিকে। আশপাশের বাড়ির ছাদে অবস্থান নেন হাজার হাজার নারী-শিশু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনতা। এ মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি শর্টগানের গুলি ছোড়া হয়। নামায শেষে দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য মঙ্গল কামনা করে মুনাজাত পরিচালিত হয়। লাখো লাখো আবালবৃদ্ধবনিতার আমীন, আমীন রবে মুখরিত হয় চারদিক।
দেশের বৃহত্তম এ ঈদ জামাত উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ শহরে ঈদ মেলা বসে। মাঠ পার্শ্ববর্তী এলাকায় হস্ত, কারু, ও নানারকম শিল্পের মেলা আগত মুসল্লিদের জন্য এক অন্যতম আকর্ষণের বিষয়। স্থানে স্থানে নির্মিত হয় তোরণ, রাস্তার দু’পাশে টানানো হয় রং-বেরংয়ের পতাকা ও ব্যানার। জামাতের আগে-পরে শহর হয়ে ওঠে লোকে-লোকারণ্য ও উৎসবমুখর। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের তৃষ্ণা লাঘব করতে দলমত নির্বিশেষে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী এবং এলাকাবাসী মুসল্লিদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, বাতাসা, মিষ্টান্ন প্রভৃতি বিতরণ করেন।
২০০৬ সালে প্রথম বারের মতো স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভি দেশের সর্ববৃহৎ এই ঈদ জামাত সরাসরি সমপ্রচারের ব্যবস্থা করে। ২০০৭ সাল থেকে চ্যানেল আই নিয়মিত ঈদ জামাত সরাসরি সমপ্রচার করছে। এবছরও চ্যানেল আই সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ঈদ জামাত সরাসরি সমপ্রচার করবে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো গুরুত্বের সঙ্গে এ ঈদ জামাতের নিউজ কাভার করে থাকে। ফলে দিন দিনই শোলাকিয়ার পরিচিতি ও সুনাম দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
মুসলিম ঐতিহ্যের ধারক এ ঈদগাহে শত ব্যস্ততা, নানা সমস্যা আর প্রাকৃতিক বৈরিতাকে উপেক্ষা করে সমবেত হন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ। এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন ধনী-গরিব নির্বিশেষে। সবার উদ্দেশ্য একটাই- যেন কোন অবস্থাতেই হাত ছাড়া হয়ে না যায় জামাতে অংশগ্রহণ, আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সাম্য ও সুন্দরের ভিত্তিতে এক নতুন সমাজ গড়ার এই শিক্ষা নিয়েই জামাত শেষে বাড়ির পথে শোলাকিয়া ছাড়েন তারা।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী এ শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাত। ১৭৫০ সাল থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সে হিসাব অনুসারে শোলাকিয়া ঈদগাহের বয়স ২শ’ ৬৬ বছর। প্রতিষ্ঠার ৭৮ বছর পর ১৮২৮ সালে প্রথম বড় জামাতে এই মাঠে একসঙ্গে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়ালাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। এই সোয়ালাখ থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা উচ্চারণ বিবর্তনে হয়েছে শোলাকিয়া। স্থানীয় হয়বতনগর সাহেব বাড়ির ঊর্ধ্বতন পুরুষ শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ (র:) সে জামাতে ইমামতি করেন।
এ সংক্রান্ত নানা তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ (র.) এর পূর্বপুরুষগণ সুদূর মক্কা শরিফ থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন করে বর্তমান ভারতের বর্ধমান জেলার টেংগাপাড়ায় বসবাস শুরু করেন। সৈয়দ আহমদ (র.) এর পিতা সৈয়দ ইবরাহিম (র.) উত্তর কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামী শিক্ষা প্রচার-প্রসার ও দাওয়াতের কাজ করতে গিয়ে কিশোরগঞ্জ শহর থেকে সাত মাইল দূরবর্তী কান্দাইল গ্রামে পদার্পণ করেন। পরবর্তীতে সেখানে স্থানীয় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বিবাহ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু সাংসারিক জীবনকে তিনি আবদ্ধজীবন মনে করে আল্লাহর বাণী প্রচারের তাগিদে বেরিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে তাবলীগ জামাতসহ মক্কা শরিফে চলে যান এবং সেখানেই ইন্তিকাল করেন। এদিকে মরহুম সৈয়দ ইবরাহিম (র.) এর বাড়িতে রেখে যাওয়া গর্ভবতী স্ত্রীর এক পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। স্বামীর পূর্ব নির্দেশ মোতাবেক পুত্রের নামকরণ ও পরবর্তী সময়ে বয়ঃপ্রাপ্ত হলে ১২ বছর বয়সে শিক্ষা-দীক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ঢাকার আজিমপুর দায়রা শরিফে প্রেরণ করা হয়। বালকপুত্র সৈয়দ আহমদ সেখানে ২৪ বছর অবস্থান করে শিক্ষা-দীক্ষায় পরিপক্ক জ্ঞান লাভের পর পীরের নির্দেশে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় চলে আসেন। সেখানে শহীদ ময়েজ উদ্দিন মজনু (র.) এর মাজারের পাশে একটি ঘর তৈরি করে ইবাদত-বন্দেগীসহ ইসলামের বাণী প্রচারে মনোনিবেশ করেন। ক্রমে সৈয়দ আহমদ (র.)-এর সুনাম ও সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোকজন তার কাছে এসে দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ করতে থাকে। এ সময় ঈশা খাঁ’র বংশধরগণ জঙ্গলবাড়ি ও হয়বতনগর এলাকার জমিদারদ্বয় সৈয়দ আহমদ (র.) কে শ্রদ্ধার আসনে স্থান দেন এবং তার সামগ্রিক দ্বীনি দাওয়াতী কাজের সহযোগিতা করেন। এ সময় সে এলাকায় কোন মসজিদ না থাকায় ১৮২৭ সালে সৈয়দ আহমদ (র.) বাড়ি সংলগ্ন জায়গায় একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর পরই তিনি ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি তার ক্রয়কৃত তালুক সম্পত্তিতে ঈদগাহ মাঠ প্রতিষ্ঠা করার মনস্থির করেন এবং এ ব্যাপারে জঙ্গলবাড়ি ও হয়বতনগরের জমিদারদ্বয়কে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়ে আসন্ন ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাতে শরীক হওয়ার দাওয়াত করেন। জমিদারদ্বয় দাওয়াত কবুল করেন এবং এই অঞ্চলের আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৮২৮ সালের ঈদ-উল-ফিতরের ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ (র.)-এর ইমামতিতে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রথম জামাত।
বৃহত্তম জামাতের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর এ ঈদগাহ মাঠে ১৮৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় শুরু হবে জামাত। এতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিহীন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। ঐতিহ্যবাহী এ মাঠে খ্যতিসম্পন্ন আলেমগণ ইমামতি করেছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম বড় জামাতের পর আরও যারা ইমামতি করেছেন, তারা হলেন- হযরত মাওলানা হাফেজ মুহম্মদ হযরত উল্লাহ, হযরত মাওলানা পেশওয়ারী, হযরত মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, আলহাজ মাওলানা হামিদুল হক, হযরত মাওলানা মাজহারুল হক, হযরত মাওলানা আবদুল গনি, হযরত মাওলানা আতহার আলী, হযরত মাওলানা আবদুল মান্নান, হযরত মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ নূরুল্লাহ ও মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। গত পাঁচ বছর যাবত আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ইমামতি করছেন।
স্থানীয় মুসলিম সমপ্রদায়ের মধ্যে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে, এ মাঠে পর পর ৭টি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারলে একবার হজব্রত পালনের সওয়াব পাওয়া যায়। সে জন্য শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ‘গরিবের মক্কা’ নামেও বিশেষ পরিচিত। সে বিশ্বাস থেকে এবং বৃহৎ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করার মানসে প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের পাশাপাশি ভিনদেশী মুসল্লিরাও এ ঈদগাহ ময়দানে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করেন। প্রতি বছরই এই সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁ’র ৬ষ্ঠ বংশধর হয়বতনগরের জমিদার দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান তার মায়ের অসিয়াত মোতাবেক ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য ৪.৩৫ একর জমি ওয়াক্ফ করেন। সেই ওয়াক্ফ দলিলে উল্লেখ রয়েছে, ১৭৫০ সাল থেকে এ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কিশোরগঞ্জ মৌজার এ মাঠের মূল আয়তন বর্তমানে ৬.৬১ একর। প্রাচীর ঘেরা শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে মোট ২৬৫টি কাতার রয়েছে যেখানে একসঙ্গে দেড় লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। এ ছাড়া মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঈদগাহ সংলগ্ন খালি জায়গা, রাস্তা এবং নিকটবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে সমসংখ্যক মুসল্লি এ বৃহত্তম ঈদ জামাতে শরিক হন।
শোলাকিয়া ঈদগাহে সকাল ১০টায় ঈদ-উল-ফিতরের জামাত শুরু হলেও ভোর থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে ঈদগাহ অভিমুখে। সকাল ৯টার মধ্যেই মাঠের অধিকাংশ এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ ছাড়া শোলাকিয়া ঈদগাহে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য দেশের দূর-দূরান্তের মুসল্লিগণ ঈদের ২-৩ দিন আগে থেকেই ঈদগাহের মিম্বর, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, বিভিন্ন মসজিদ ও আবাসিক হোটেলগুলোতে এসে ওঠতে থাকেন। অনেক মুসল্লি ঈদের দিন ভোর বেলায় ট্রেন, বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ঈদগাহে আসেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে ২টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। এবারও ভৈরব বাজার-ময়মনসিংহ ও ময়মনসিংহ-ভৈরব বাজার রুটে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামের বিশেষ ট্রেন ২টি চলাচল করবে। বিশেষ ট্রেনের একটি ঈদের দিন সকাল ৬টায় ভৈরববাজার থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। জামাত শেষে ট্রেনটি দুপুর ১২টায় পুনরায় ভৈরববাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং বেলা ২টায় ভৈরববাজার পৌঁছবে। অপর ট্রেনটি ঈদের দিন সকাল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। এ ট্রেনটিও জামাত শেষে দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে এবং বেলা ৩টায় ময়মনসিংহ পৌঁছবে।
ঈদ জামাতকে নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে চার স্তরের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ, র্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ঈদগাহ মাঠকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করছে। পুরো এলাকায় বসানো হচ্ছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ঈদগাহ ময়দান একাধিকবার সুইপিং করা ছাড়াও মাঠে ঢোকার ২২টি গেটে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করে মাঠের ভেতর প্রবেশ করতে দেয়া হবে। নিশ্ছিন্দ্র নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ এই ঈদ জামাত। নামাজ চলাকালে মেডিক্যাল টিম ও অগ্নিনির্বাপক দলকে সতর্কাবস্থায় রাখা হবে। এ ছাড়া স্কাউটদের একটি দল মুসল্লিদের শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে নিয়োজিত থাকবে। গৃহীত প্রস্তুতির বিবেচনায় লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে সুন্দর ও সুচারুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের আশাবাদ প্রকাশ করেছে ঈদগাহ কমিটি।
সাধারণ মানুষ ছাড়াও প্রতিবারই এ জামাতে বিপুল সংখ্যক ভিআইপি উপস্থিত থাকেন। বৃহৎ এ মাঠে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি একসাথে সেজদায় গেলে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এ দৃশ্য দেখার জন্য স্থানীয়দের অনেকেই সকাল সকাল নামাজ সেরে নেন শহরের পুরানথানা এলাকার শহীদী মসজিদে। তারপর এসে জড়ো হন মাঠের চারদিকে। আশপাশের বাড়ির ছাদে অবস্থান নেন হাজার হাজার নারী-শিশু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনতা। এ মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি শর্টগানের গুলি ছোড়া হয়। নামায শেষে দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য মঙ্গল কামনা করে মুনাজাত পরিচালিত হয়। লাখো লাখো আবালবৃদ্ধবনিতার আমীন, আমীন রবে মুখরিত হয় চারদিক।
দেশের বৃহত্তম এ ঈদ জামাত উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ শহরে ঈদ মেলা বসে। মাঠ পার্শ্ববর্তী এলাকায় হস্ত, কারু, ও নানারকম শিল্পের মেলা আগত মুসল্লিদের জন্য এক অন্যতম আকর্ষণের বিষয়। স্থানে স্থানে নির্মিত হয় তোরণ, রাস্তার দু’পাশে টানানো হয় রং-বেরংয়ের পতাকা ও ব্যানার। জামাতের আগে-পরে শহর হয়ে ওঠে লোকে-লোকারণ্য ও উৎসবমুখর। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের তৃষ্ণা লাঘব করতে দলমত নির্বিশেষে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী এবং এলাকাবাসী মুসল্লিদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, বাতাসা, মিষ্টান্ন প্রভৃতি বিতরণ করেন।
২০০৬ সালে প্রথম বারের মতো স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভি দেশের সর্ববৃহৎ এই ঈদ জামাত সরাসরি সমপ্রচারের ব্যবস্থা করে। ২০০৭ সাল থেকে চ্যানেল আই নিয়মিত ঈদ জামাত সরাসরি সমপ্রচার করছে। এবছরও চ্যানেল আই সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ঈদ জামাত সরাসরি সমপ্রচার করবে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো গুরুত্বের সঙ্গে এ ঈদ জামাতের নিউজ কাভার করে থাকে। ফলে দিন দিনই শোলাকিয়ার পরিচিতি ও সুনাম দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
মুসলিম ঐতিহ্যের ধারক এ ঈদগাহে শত ব্যস্ততা, নানা সমস্যা আর প্রাকৃতিক বৈরিতাকে উপেক্ষা করে সমবেত হন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ। এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন ধনী-গরিব নির্বিশেষে। সবার উদ্দেশ্য একটাই- যেন কোন অবস্থাতেই হাত ছাড়া হয়ে না যায় জামাতে অংশগ্রহণ, আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সাম্য ও সুন্দরের ভিত্তিতে এক নতুন সমাজ গড়ার এই শিক্ষা নিয়েই জামাত শেষে বাড়ির পথে শোলাকিয়া ছাড়েন তারা।
No comments