তৃতীয় ছেলেটিও গেল ইসরায়েলি গুলিতে
ফিলিস্তিনিদের
দ্বিতীয় মুক্তি আন্দোলনের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয় দুই ভাই
সামির (১৫) ও ইয়াসির (১১)। দুই ছেলে হারানোর শোক এক দশকেরও বেশি সময় ধরে
একটি বাঁধানো ছবিতে ধারণ করে আসছিল ফিলিস্তিনির একটি পরিবার। দিন দশেক আগে
পরিবারটির শহীদ সন্তানের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরেকটি নাম, আরেকটি ছবি।
ফাতিমা ও সামি কাসবার তৃতীয় ছেলে মোহাম্মদও (১৭) ইসরায়েলি সেনার গুলিতে
প্রাণ হারিয়েছে। আজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়,
সবশেষ এই ঘটনা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে জন্ম দিয়েছে ক্ষোভ। ঘটনাটির ভিডিওচিত্র
প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরায়েলেও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ফিলিস্তিনি কিশোর মোহাম্মদের দাফন হয় গত ৩ জুলাই। ছবি: এএফপি |
মোহাম্মদের
নিহত হওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে যে বিবরণ দিয়েছে,
ভিডিওচিত্রে তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। গত ৩ জুলাই দখল করা পশ্চিম তীরে
একটি তল্লাশি চৌকির কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি সামরিক যান লক্ষ্য করে
পাথর ছোড়ে মোহাম্মদ। এরপরই তাকে গুলি করে হত্যা করে এক ইসরায়েলি সেনা।
ঘটনার তদন্ত করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গুলির ঘটনার পর ইসরায়েল দাবি করে,
সেনাদের জন্য বিপদ আসন্ন হওয়ায় গুলি ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলের একটি বেসরকারি
সংস্থা (এনজিও) ওই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছে। এনজিওর ভাষ্য, এক কর্মকর্তা
দৌড়ে এসে ওই ছেলেটিকে গুলি করেছে। বিনা চিকিৎসায় রাখার ফলে সে মারা যায়।
ঘটনাটির বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য পাওয়া গেলেও বাস্তবতা হচ্ছে, ফিলিস্তিনি
পরিবারটি তাদের তৃতীয় ছেলেটিকেও হারিয়েছে।
হতভাগ্য সামি কাসবার ভাষ্য, ‘প্রতিদিন এখানে কেউ না কেউ শহীদ হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের পরিবারে নয়, ফিলিস্তিনির সব পরিবারেই ঘটছে।’
সামি বলেন, ‘কেউ আহত হচ্ছে, কেউ নিহত হচ্ছে, কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে। এখানে এটাই ঘটছে। এটাই দখলদারিত্ব।’
তৃতীয় ছেলের মৃত্যুর ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সামি বলেন, ‘চিকিৎসক আমাকে ডেকে বললেন, “তোমার ছেলে নিহত হয়েছে।”
দুই ভাইকে হারানোর সময় মোহাম্মদ ছিল একেবারেই শিশু। দ্বিতীয় ইন্তেফাদার শুরুর এক বছর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় ইয়াসির। এর এক বছর পর রামাল্লায় ইসরায়েলি সেনার গুলিতে প্রাণ হারায় সামির।
তৃতীয় ছেলের নিহত হওয়ার বিষয়ে বাবা সামি কাসবার প্রশ্ন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বর্ণনা অনুযায়ী, মোহাম্মদ যদি সন্ত্রাসীও হয়, তারা কেন তাকে গ্রেপ্তার করল না বা তার পায়ে গুলি করল না? তারা কেন তাকে হত্যা করল?
হতভাগ্য সামি কাসবার ভাষ্য, ‘প্রতিদিন এখানে কেউ না কেউ শহীদ হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের পরিবারে নয়, ফিলিস্তিনির সব পরিবারেই ঘটছে।’
সামি বলেন, ‘কেউ আহত হচ্ছে, কেউ নিহত হচ্ছে, কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে। এখানে এটাই ঘটছে। এটাই দখলদারিত্ব।’
তৃতীয় ছেলের মৃত্যুর ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সামি বলেন, ‘চিকিৎসক আমাকে ডেকে বললেন, “তোমার ছেলে নিহত হয়েছে।”
দুই ভাইকে হারানোর সময় মোহাম্মদ ছিল একেবারেই শিশু। দ্বিতীয় ইন্তেফাদার শুরুর এক বছর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় ইয়াসির। এর এক বছর পর রামাল্লায় ইসরায়েলি সেনার গুলিতে প্রাণ হারায় সামির।
তৃতীয় ছেলের নিহত হওয়ার বিষয়ে বাবা সামি কাসবার প্রশ্ন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বর্ণনা অনুযায়ী, মোহাম্মদ যদি সন্ত্রাসীও হয়, তারা কেন তাকে গ্রেপ্তার করল না বা তার পায়ে গুলি করল না? তারা কেন তাকে হত্যা করল?
দেয়ালে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত দুই ভাই সামির ও ইয়াসিরের ছবি। ছবি: এএফপি |
ঘটনার
পর এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, কাছ থেকে রকেট ছুড়ছিল
ছেলেটি। সন্দেহভাজন ব্যক্তি হিসেবে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে
সেনাবাহিনী। কিন্তু ইসরায়েলের মানবাধিকার গোষ্ঠী বি’তসেলেম দেশটির
সেনাবাহিনীর এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীদের
বিবরণ ও ফরেনসিক তথ্যপ্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তারা বলছে, পাথর ছুড়ে দৌড়ে
যাওয়ার সময় ওই কিশোরকে খুব কাছ থেকে পেছনে গুলি করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডকে
অযৌক্তিক ও বেআইনি হিসেবে বর্ণনা করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীটি।
No comments