সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট মামলায় ২২শে জুলাই চার্জ গঠন

আগামী ২২শে জুলাই ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে আইনি প্রয়োজনে বসবাসরত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় চার্জ গঠনের দিন নির্ধারণ করেছে আদালত। গতকাল বিকালে শিলংয়ের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কেএমএল নং ব্রি উভয়পক্ষের আইনজীবীদের সামনে এই ঘোষণা প্রদান করেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইসি ঝা জানান, এদিন মূলত কনসিডারেশন অব দ্য চার্জের শুনানি হয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী ছাড়াও সালাহউদ্দিনের আইনজীবী এসপি মোহান্ত এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি চার্জ গঠনের সময় নিয়ে কোন আপত্তি জানাননি। এর আগে গ্রেপ্তার হওয়ার ২৩ দিনের মধ্যেই শিলং পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পি লামারাই সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে শুধু অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে চার্জশিট দেন। মেঘালয় পুলিশ ৩রা জুন অতিরিক্ত সহকারী কমিশনারের (জুডিশিয়াল) আদালতে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিএনপির এ নেতার উপস্থিতি ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার এড়াতে তিনি ভারতে এসেছেন। এরপর সালাহউদ্দিনের আইনজীবী তার গুম হওয়া ও পরবর্তীতে নানা ঘটনা সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেন। ওই সব কাগজপত্র দেখে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি আদালত। এর আগে প্রায় দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর গত ১১ই মে ভারতের শিলংয়ে উদ্ধার হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধারের পর পুলিশ তাকে আটক করে মানসিক হাসপাতাল মিমহানসে নিয়ে যায়। একদিন পর মিমহানস থেকে আবার তাকে পাঠানো হয় শিলংয়ের সিভিল হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের আন্ডার প্রিজনার সেলে (ইউটিপি) তাকে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। সিভিল হাসপাতালে বিশেষায়িত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় তাকে বিশেষায়িত হাসপাতাল নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নেগ্রিমস) হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। ৩রা মে সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট-৪৬’ এ দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে মেঘালয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এ চার্জশিট জমা দেয়া হয়। চার্জশিটে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারা অনুযায়ী বৈধ ডকুমেন্ট ছাড়া অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে। নেগ্রিমস থেকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর ২৭শে মে আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে ১৪ দিন বিচারিক হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর ৫ই মে শিলংয়ের আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান সালাহউদ্দিন আহমেদ। জামিন পেয়ে শিলংয়ের একটি ছায়াঘেরা কটেজে কাটছে তার দিন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। তাদের সময় দিচ্ছেন সালাহউদ্দিন। এক প্রকার নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত অবস্থায়ই থাকছেন তিনি। এদিকে শিলং শহরের এক আইনজীবী জানিয়েছেন, ২২শে জুলাই চার্জ গঠনের দিনে সালাহউদ্দিন তার দোষ স্বীকার করলে সাজা ঘোষণার তারিখ দেয়া হবে। অস্বীকার করলে অনুপ্রবেশের ওই মামলার বিচার শুরু হবে। ভারতের দণ্ডবিধিতে অনুপ্রবেশের মামলায় সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.