গণতন্ত্র ও আইনের শাসনছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অসম্ভব নিউইয়র্কে সেমিনারে বক্তাদের অভিমত
বাংলাদেশে
আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রাধিক ধারা অব্যাহত না
থাকায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও ভুলণ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিকদের রাজনৈতিক
বিভক্তিও গণমাধ্যমের দুর্দশার বড় কারণ। রাষ্ট্রকর্তৃক নির্যাতিত হচ্ছেন
সাংবাদিকরা এবং এসবের কোনও প্রতিকার নেই। দেশটিতে এখন অবস্থা এমন সরকারের
প্রশংসা করতে রাজি হলে স্বাধীনতার কোনও অভাব নেই। আর সমালোচনা করতে চাইলে
স্বাভাবিকভাবে বাঁচার স্বাধীনতাও নেই। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে ‘গণমাধ্যমের
স্বাধীনতা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলা হয়। এতে
প্রবাসের সিনিয়র সাংবাদিকরা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার দু’জন সাংবাদিক
এবং মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মিডিয়াবিষয়ক একজন পরিচালকও অংশ নেন।
সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশের অনলাইন নিউজপোর্টাল জাস্ট নিউজ বিডি ডটকম।
পোর্টালটির সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড নেশন্স করসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ইউএনসিএ’র সভাপতি জিয়াম পাওলো পিওলিও, যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফরেন প্রেস সেন্টারের পরিচালক প্রিন্স ড্যাল। সাংবাদিক ইমরান আনসারীর মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন নিউইয়র্ক টাইমসের সিনিয়র সাংবাদিক মিস ডুল সিলিমব্যাক, সিনিয়র সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও নিউইয়র্কভিত্তিক টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের, আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হায়দার।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফরেন প্রেস সেন্টারের পরিচালক প্রিন্স ড্যাল সেমিনারে ওবামা প্রশাসনের অনুসৃত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক নীতির বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশ ইস্যুতেও স্টেট ডিপার্টমেন্ট সচেতন। প্রতিবছর একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে স্থান পেয়েছে।
ইউএনসিএ’র সভাপতি জিয়াম পাওলো পিওলি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কাঙ্খিত হলেও তা অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন। পৃথিবীর দেশে দেশে এই স্বাধীনতা বিপন্ন হচ্ছে। জাতিসংঘে নিজের দীর্ঘ ৪০ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের মতো অনেক দেশেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দুর্ভাগ্যজনক।
নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বিভাগের সাবেক প্রধান মিস ডুল সিলিমব্যাক বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা যে প্রতিকূলতার মধ্যে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছে, তা সত্যি প্রসংশাযোগ্য। তিনি বলেন, সাধারনভাবেই সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা; বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে এই চ্যালেঞ্জ আরও ব্যাপক। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়ে ডুলসি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বিহীন সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। আমি আশা করছি বাংলাদেশ এই অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। সিনিয়র সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের বলেন, সরকারের দমন-নীতি অতীতের সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। মিডিয়া সরকারের আক্রমনের শিকার। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই কারান্তরীন হতে হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের প্রক্রিয়াকে পাকাপোক্ত করতে নিত্য-নতুন আইন ও বিধি-বিধান তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনও রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন না থাকলে সেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটা অসম্ভব ব্যাপার।
টাইম টিভির সিইও আবু তাহের বলেন, এটা সত্যি যে বাংলাদেশে অনেক মিডিয়া এখন সংবাদ প্রকাশও প্রচার করছে। কিন্তু দেখতে হবে এসব মিডিয়ার নীতি-নির্ধারক কারা? অতীতেও এমনটি হয়েছে। তবে বর্তমান সরকার এসেই বিরোধীমতের বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে সম্পাদককে তার অফিস থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো এবং বছরের পর বছর তাকে আটকিয়ে রাখা, অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা। এছাড়া চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া সবগুলো প্রতিষ্ঠানই হচ্ছে বিরোধী মতের মালিকানার গণমাধ্যম। এসব অব্যাহত থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।
পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এখন রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে। যা আজ থেকে ১৫/২০ বছর আগে ছিলনা। এটা সত্যিই দুঃখজনক। দেশের এই দূরবস্থার জন্য নিজেদের বিভাজনকেই দায়ী করেন তিনি। বিচার বিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতে যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
সিনিয়র সাংবাদিক মনির হায়দার বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়াকে অন্যসব অগণতান্ত্রিক দেশের মিডিয়ার দুরবস্থার সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবেনা। কারণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানুষের অধিকারের ইস্যুতেই লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়ে এই রাষ্ট্র তৈরি করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই রাষ্ট্রটিতে এখন মত প্রকাশের স্বাধীনতা দুরের কথা, সরকারের অন্ধ সমর্থক না হলে বেঁচে থাকার অধিকারই থাকছেনা।
অন্যদের মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাপ্তাহিক প্রবাসের প্রধান সম্পাদক ওলিয় উল আলম, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদিন প্রমুখ। তারা বলেন, আইসিটি অ্যাক্ট নামের বিশেষ আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিপীড়ন ও নিয়ন্ত্রণ অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
পোর্টালটির সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড নেশন্স করসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ইউএনসিএ’র সভাপতি জিয়াম পাওলো পিওলিও, যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফরেন প্রেস সেন্টারের পরিচালক প্রিন্স ড্যাল। সাংবাদিক ইমরান আনসারীর মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন নিউইয়র্ক টাইমসের সিনিয়র সাংবাদিক মিস ডুল সিলিমব্যাক, সিনিয়র সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও নিউইয়র্কভিত্তিক টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের, আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হায়দার।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফরেন প্রেস সেন্টারের পরিচালক প্রিন্স ড্যাল সেমিনারে ওবামা প্রশাসনের অনুসৃত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক নীতির বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশ ইস্যুতেও স্টেট ডিপার্টমেন্ট সচেতন। প্রতিবছর একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে স্থান পেয়েছে।
ইউএনসিএ’র সভাপতি জিয়াম পাওলো পিওলি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কাঙ্খিত হলেও তা অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন। পৃথিবীর দেশে দেশে এই স্বাধীনতা বিপন্ন হচ্ছে। জাতিসংঘে নিজের দীর্ঘ ৪০ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের মতো অনেক দেশেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দুর্ভাগ্যজনক।
নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বিভাগের সাবেক প্রধান মিস ডুল সিলিমব্যাক বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা যে প্রতিকূলতার মধ্যে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছে, তা সত্যি প্রসংশাযোগ্য। তিনি বলেন, সাধারনভাবেই সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা; বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে এই চ্যালেঞ্জ আরও ব্যাপক। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়ে ডুলসি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বিহীন সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। আমি আশা করছি বাংলাদেশ এই অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। সিনিয়র সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের বলেন, সরকারের দমন-নীতি অতীতের সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। মিডিয়া সরকারের আক্রমনের শিকার। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই কারান্তরীন হতে হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের প্রক্রিয়াকে পাকাপোক্ত করতে নিত্য-নতুন আইন ও বিধি-বিধান তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনও রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন না থাকলে সেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটা অসম্ভব ব্যাপার।
টাইম টিভির সিইও আবু তাহের বলেন, এটা সত্যি যে বাংলাদেশে অনেক মিডিয়া এখন সংবাদ প্রকাশও প্রচার করছে। কিন্তু দেখতে হবে এসব মিডিয়ার নীতি-নির্ধারক কারা? অতীতেও এমনটি হয়েছে। তবে বর্তমান সরকার এসেই বিরোধীমতের বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে সম্পাদককে তার অফিস থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো এবং বছরের পর বছর তাকে আটকিয়ে রাখা, অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা। এছাড়া চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া সবগুলো প্রতিষ্ঠানই হচ্ছে বিরোধী মতের মালিকানার গণমাধ্যম। এসব অব্যাহত থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।
পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এখন রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে। যা আজ থেকে ১৫/২০ বছর আগে ছিলনা। এটা সত্যিই দুঃখজনক। দেশের এই দূরবস্থার জন্য নিজেদের বিভাজনকেই দায়ী করেন তিনি। বিচার বিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতে যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
সিনিয়র সাংবাদিক মনির হায়দার বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়াকে অন্যসব অগণতান্ত্রিক দেশের মিডিয়ার দুরবস্থার সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবেনা। কারণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানুষের অধিকারের ইস্যুতেই লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়ে এই রাষ্ট্র তৈরি করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই রাষ্ট্রটিতে এখন মত প্রকাশের স্বাধীনতা দুরের কথা, সরকারের অন্ধ সমর্থক না হলে বেঁচে থাকার অধিকারই থাকছেনা।
অন্যদের মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাপ্তাহিক প্রবাসের প্রধান সম্পাদক ওলিয় উল আলম, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদিন প্রমুখ। তারা বলেন, আইসিটি অ্যাক্ট নামের বিশেষ আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিপীড়ন ও নিয়ন্ত্রণ অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
No comments