সিলেটের শিফার প্রেমিক ড্রাইভার খালেদ রিমান্ডে by ওয়েছ খছরু
সিলেটের
প্রবাসী বধূ ফারজানা আক্তার শিফার প্রেমিক সিএনজিচালক খালেদ আহমদকে
রিমান্ডে নিচ্ছে পুলিশ। সিলেটের শিফা অপহরণ মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই
পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। গতকাল সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের
বিচারক আনোয়ারুল হকের আদালতে খালেদের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর
আগে আদালতে মামলার তদন্ত কমকর্তা ও মোগলাবাজার থানার ওসি স্বপন কান্তি দাশ
তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সিলেটের মোগলাবাজারের সৌদি প্রবাসী মজির
উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার শিফা গত ৯ই জুন তার প্রেমিক একই এলাকার
সিএনজি ড্রাইভার খালেদের সঙ্গে প্রেমের টানে বাড়ি ছাড়ে। এ ঘটনার পর শিফার
পিতা গোলাপগঞ্জের লক্ষণাবন্দ এলাকার আবদুল মান্নান তার মেয়েকে অপহরণ করা
হয়েছে দাবি করে সিলেটের মোগলাবাজার থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে
পুলিশ মোবাইল ট্র্যকিংয়ের মাধ্যমে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কাসিমপুর কারাগারের
লাগোয়া এলাকা থেকে ১৭ই জুন উদ্ধার করে শিফা ও খালেদকে। সঙ্গে উদ্ধার করা
হয় চার বছরের ছেলে সাফিকেও। তবে, উদ্ধারের দিন শিফা তার পিতা আবদুল
মান্নানের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়
শিফা। এর কারণে কোনাবাড়ীতেই উদ্ধারের সময় আবদুল মান্নান মেয়েকে মারধর করেন
বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। উদ্ধারের সময় শিফা দাবি
করেছিল, খালেদ তার স্বামী। তারা শরীয়তমতো কাজী অফিসে গিয়ে বিয়েও করেছেন।
একই সঙ্গে গাড়িতেও শিফাকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে ১৯শে জুন সিলেটের
আদালতের শিফা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আর ওই জবানবন্দিতে সে জানায়,
খালেদ ও সহযোগীরা তাকে অপহরণ করেছে। গলায় তাবিজ-কবজ বেঁধে খালেদ তাকে বশে
এনে এ কাজ করেছে বলে আদালতে স্বীকার করে শিফা। এদিকে, আলোচিত এ প্রেম ও
অভিসারের ঘটনার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ৯ই জুন শিফা শহরতলীর
মোগলাবাজার থেকে খালেদের সঙ্গে বাড়ি ছাড়ে। ওইদিন খালেদ ও শিফা সিলেটে
আদালতে আসে। তারা সিলেটের নোটারি পাবলিক এডভোকেট আনসার খানের মাধ্যমে বিয়ের
এফিডেভিট সম্পাদন করেন। এর আগে শিফা একই নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে পূর্বের
স্বামী সৌদি প্রবাসী মজির উদ্দিনকে তালাকও দেয়। দুই এফিডেভিটে খালেদ ও
শিফার ছবি যুক্ত ছিল। এদিকে, শিফা উদ্ধারের পর আবদুুল মান্নান সিলেটে
সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ঘটনার জন্য প্রবাসী মজিরের পরিবারের সদস্যদের উপর
দোষ চাপান। ফলে মজির উদ্দিনের ভাবী সাচ্ছাতুন্নেছা সিলেটে পাল্টা সংবাদ
সম্মেলন করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, শিফা ও খালেদের প্রেম
চলছে গত ৩ বছর ধরে। এই প্রেমের ঘটনাটি শুরু মজিরের ঘরের লোকজনই জানতো না,
জানতো এলাকার মানুষ। আর বিষয়টির মীমাংসা করতে মজিরের পরিবার থেকে বার বার
তাগিদ দেয়া হয়। এমনকি শিফাকে খালেদের কবল থেকে মুক্ত করতে মজিরের পরিবারের
অনেক সদস্য চেষ্টা করেন। এরপরও প্রেমিক খালেদ থেকে বিমুখ হয়নি শিফা। পালিয়ে
যাওয়ার আগে এসব ঘটনায় বিরোধ দেখা দেয়ায় ছোট ছেলেকে নিয়ে শিফা এক মাস ধরে
পিত্রালয়ে অবস্থান করছিল। স্বামী মজির ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাঠানোর পর
প্রেমিক খালেদের সঙ্গে পালায় শিফা। কোনাবাড়ী থেকে শিফা উদ্ধারের সময় তার
কাছ থেকে ওই টাকার কিছু অংশ উদ্ধার করেন পিতা আবদুল মান্নান।
No comments