ফেলানী হত্যা- ফের নির্দোষ অমিয়
ভারতের
কোচবিহারে বিএসএফের বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচারের রায়ে
বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করেছেন আদালত। গত ৩০শে জুন ৩ মাস ৫
দিন পর বিচারকাজ শুরু হয়। ৩ কার্যদিবস চলার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আদালতে
এ রায় ঘোষণা করা হয়। বিএসএফের বিশেষ আদালতের সোনারী ছাউনিতে বিএসএফের
আধিকারিক সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারিক প্যানেল বিচারিক
কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য এই বিচার কাজ পরিচালিত হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আদালত তাদের রায় ঘোষণা করেন। এতে আসামি অমিয়
ঘোষকে খালাস দেয়া হয়। রায়ের বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।
এদিকে অপ্রত্যাশিত এই রায়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেলানীর পিতামাতা। তারা মেয়ে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। ফেলানীর পিতা নুর ইসলাম নুরু জানান, দুই দফা সাক্ষ্য দেয়ার পরও তার মেয়ের হত্যার ন্যায্য বিচার পাননি তিনি। তিনি এ রায় প্রত্যাখ্যান করেন। তার মতে অমিয় ঘোষের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তা না করে ভারত সরকার বিচারের নামে তামাশা করেছে আমাদের সঙ্গে। আমি ন্যায়বিচারের জন্য আবারও আবেদন করবো।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এই রায় ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর ফলে সীমান্ত হত্যার ক্ষেত্রে বিএসএফ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। যা সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংকট তৈরি করবে। এ রায় মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি’। তিনি জানান, ভারতীয় সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন। পাশাপাশি ফেলানীর পিতা এই রায়ের বিরুদ্ধে ভারতের উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সহায়তা প্রয়োজন।
২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ফেরার সময় ভারতের চৌধুরীহাট বিএসএফ ক্যাম্পের অমিয় ঘোষ ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনার দুবছর পর ২০১৩ সালের ১৩ই আগস্ট কোচবিহার জেলার সোনারী এলাকায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে ফেলানি হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বিচারে বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়। এই রায় প্রত্যাখ্যান করে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে আবেদন করেন ফেলানীর পিতা নুরুল ইসলাম নুরু।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুনর্বিচারের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। পিতা নুরুল ইসলাম গত বছরের ১৭ই নভেম্বর দ্বিতীয় বারের মতো সাক্ষ্য দেন ভারতের ওই বিশেষ আদালতে। কয়েক দিন আদালত চলার পর গত ২০শে নভেম্বর আদালত মুলতবি হয়ে যায়। ২৫শে মার্চ পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেয় আদালত। ২৬শে মার্চ আইজীবীর অসুস্থতার কারণে আদালত আবারও ২৯শে জুন পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায়। পরে ৩০শে জুন আদালত শুরু হয়ে ৩ দিন চলে। এরপরই মধ্যরাতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
‘গরিব বলে কি বিচার পাবো না?’
বাংলাদেশী কিশোরি ফেলানি খাতুন হত্যা মামলায় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ আবার নির্দোষ সাব্যস্ত হয়েছেন। এ রায়ে মর্মাহত ফেলানি খাতুনের বাবা নুরুল ইসলাম। রায়কে তামাশা আখ্যা দিয়েছেন তিনি। আকুতি প্রকাশ করে প্রশ্ন রেখেছেন ‘গরিব বলে কি বিচার পাবো না?’ ফেলানির পিতা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে আমি খবর পাই, আমার মেয়ের হত্যাকারীকে খালাস দিয়েছে। কিন্তু আমি এ বিচার মানি না। পাঁচ বছর ধরে আমি আশায় ছিলাম, কিন্তু বিচারটা আমি পাইনি। আমার খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু সবার কাছে আমি আবারও বলছি আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি গরিব বলে কি এর বিচার পাবো না?’
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নিজেরাই নিজেদের সদস্যের বিচার করে। ফেলানি হত্যার এ রায়ে ক্ষুব্ধ ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’। বিএসএফ-এর বিচারকে লোক দেখানো ও সংবিধান পরিপন্থি বলে আখ্যা দিয়েছে সংগঠনটি। মাসুম প্রধান কিরিটি রায় রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বিএসএফের আদালতে আগেই স্থির করা ছিল যে কি রায় দেয়া হবে। এটা লোক দেখানো বিচার হলো।
কিরিটি রায়ের প্রশ্ন, এটা কে ঠিক করল যে, শুধুমাত্র অমিয় ঘোষই অভিযুক্ত? যেখানে ফেলানি মারা যায়, সেখান দিয়ে ওর আগে আরও ৪০ জন বেড়া পেরিয়েছে, বিএসএফ ও বিজিবি টাকা নিয়েছে সবার কাছ থেকে। এটা ওয়েল রেকর্ডেড। তাই যারা সেই বেআইনি কাজের অনুমতি দিল, অর্থাৎ অমীয় ঘোষের সহকর্মী বা সিনিয়র অফিসাররা- তারা কেন দোষী হবেন না? কিরিটি রায় আরও জানান, ভারতের সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেকের জীবনের অধিকার রয়েছে। শুধু ভারতের নাগরিক নয়, দেশের মাটিতে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির। এ ক্ষেত্রে সেটাও লঙ্ঘিত হয়েছে।
এদিকে অপ্রত্যাশিত এই রায়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেলানীর পিতামাতা। তারা মেয়ে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। ফেলানীর পিতা নুর ইসলাম নুরু জানান, দুই দফা সাক্ষ্য দেয়ার পরও তার মেয়ের হত্যার ন্যায্য বিচার পাননি তিনি। তিনি এ রায় প্রত্যাখ্যান করেন। তার মতে অমিয় ঘোষের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তা না করে ভারত সরকার বিচারের নামে তামাশা করেছে আমাদের সঙ্গে। আমি ন্যায়বিচারের জন্য আবারও আবেদন করবো।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এই রায় ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর ফলে সীমান্ত হত্যার ক্ষেত্রে বিএসএফ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। যা সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংকট তৈরি করবে। এ রায় মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি’। তিনি জানান, ভারতীয় সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন। পাশাপাশি ফেলানীর পিতা এই রায়ের বিরুদ্ধে ভারতের উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সহায়তা প্রয়োজন।
২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ফেরার সময় ভারতের চৌধুরীহাট বিএসএফ ক্যাম্পের অমিয় ঘোষ ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনার দুবছর পর ২০১৩ সালের ১৩ই আগস্ট কোচবিহার জেলার সোনারী এলাকায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে ফেলানি হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বিচারে বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়। এই রায় প্রত্যাখ্যান করে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে আবেদন করেন ফেলানীর পিতা নুরুল ইসলাম নুরু।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুনর্বিচারের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। পিতা নুরুল ইসলাম গত বছরের ১৭ই নভেম্বর দ্বিতীয় বারের মতো সাক্ষ্য দেন ভারতের ওই বিশেষ আদালতে। কয়েক দিন আদালত চলার পর গত ২০শে নভেম্বর আদালত মুলতবি হয়ে যায়। ২৫শে মার্চ পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেয় আদালত। ২৬শে মার্চ আইজীবীর অসুস্থতার কারণে আদালত আবারও ২৯শে জুন পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায়। পরে ৩০শে জুন আদালত শুরু হয়ে ৩ দিন চলে। এরপরই মধ্যরাতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
‘গরিব বলে কি বিচার পাবো না?’
বাংলাদেশী কিশোরি ফেলানি খাতুন হত্যা মামলায় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ আবার নির্দোষ সাব্যস্ত হয়েছেন। এ রায়ে মর্মাহত ফেলানি খাতুনের বাবা নুরুল ইসলাম। রায়কে তামাশা আখ্যা দিয়েছেন তিনি। আকুতি প্রকাশ করে প্রশ্ন রেখেছেন ‘গরিব বলে কি বিচার পাবো না?’ ফেলানির পিতা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে আমি খবর পাই, আমার মেয়ের হত্যাকারীকে খালাস দিয়েছে। কিন্তু আমি এ বিচার মানি না। পাঁচ বছর ধরে আমি আশায় ছিলাম, কিন্তু বিচারটা আমি পাইনি। আমার খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু সবার কাছে আমি আবারও বলছি আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি গরিব বলে কি এর বিচার পাবো না?’
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নিজেরাই নিজেদের সদস্যের বিচার করে। ফেলানি হত্যার এ রায়ে ক্ষুব্ধ ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’। বিএসএফ-এর বিচারকে লোক দেখানো ও সংবিধান পরিপন্থি বলে আখ্যা দিয়েছে সংগঠনটি। মাসুম প্রধান কিরিটি রায় রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বিএসএফের আদালতে আগেই স্থির করা ছিল যে কি রায় দেয়া হবে। এটা লোক দেখানো বিচার হলো।
কিরিটি রায়ের প্রশ্ন, এটা কে ঠিক করল যে, শুধুমাত্র অমিয় ঘোষই অভিযুক্ত? যেখানে ফেলানি মারা যায়, সেখান দিয়ে ওর আগে আরও ৪০ জন বেড়া পেরিয়েছে, বিএসএফ ও বিজিবি টাকা নিয়েছে সবার কাছ থেকে। এটা ওয়েল রেকর্ডেড। তাই যারা সেই বেআইনি কাজের অনুমতি দিল, অর্থাৎ অমীয় ঘোষের সহকর্মী বা সিনিয়র অফিসাররা- তারা কেন দোষী হবেন না? কিরিটি রায় আরও জানান, ভারতের সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেকের জীবনের অধিকার রয়েছে। শুধু ভারতের নাগরিক নয়, দেশের মাটিতে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির। এ ক্ষেত্রে সেটাও লঙ্ঘিত হয়েছে।
No comments