‘আইজকাই ঈদ লাগতাছে’
সেই
কবে ঈদে নতুন কাপড় পরেছিলেন, মনে নেই সখিনা খাতুনের (৮০)। সখিনা খাতুন তখন
মধ্যবয়সী। প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী আইন উদ্দিন মারা যাওয়ার আগের বছর বাজার
থেকে কিনে এনেছিলেন লাল পাড়ের কলাপাতা রঙের শাড়ি। স্বামীর কিনে দেয়া সেই
শাড়ি পরেই নতুন কাপড়ে শেষ ঈদ হয়েছিল তার। আজ এতো বছর পর সেই রঙিন দিনটিই
যেন ফের ফিরে এলো সখিনা খাতুনের ভাবনায়। গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয়
নোয়াবাদ ইউপি কার্যালয়ে তার মতো অসহায় মানুষদের মাঝে কাপড় বিতরণ করা হবে,
এমন খবরে ভোরেই বালিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে লাঠিটাতে ভর দিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা
হেঁটে হাজির হন সেখানে। সবার আগেই হাতে পেয়ে যান একটি নতুন রঙিন শাড়ি। নতুন
কাপড়ে ঈদ করতে পারবেন, এই ভাবনাতেই চোখে-মুখে আনন্দের আভা যেন ঠিকরে পড়ছিল
তার। কেবল সখিনা খাতুনই নন, কুম্ভরিয়া গ্রামের মৃত মিয়াফর মিয়ার স্ত্রী
আমেনা বেগম (৬০), একই গ্রামের মৃত আলী আকবরের স্ত্রী আমেনা খাতুন (৬৫) এবং
আলগরা গ্রামের মৃত রহমত আলীর স্ত্রী মালেহা খাতুনের মতো শতাধিক বিধবা ও
দুস্থ নারীরই এবারের ঈদ হবে নতুন কাপড়ে। বাংলাদেশ স্টিল মিল স্কেল
রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ মো. এরশাদ
উদ্দিন প্রতিষ্ঠিত এরশাদ উদ্দিন মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতি
বছরের মতো এ বছরও ঈদের আগে দুস্থ ও হতদরিদ্র নারী-পুরুষের মাঝে বস্ত্র
বিতরণ করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই গতকাল সকালে করিমগঞ্জের নোয়াবাদ ইউপি
কার্যালয়ে বস্ত্র বিতরণ করা হয়। সংগঠনটির উদ্যোগে বিতরণ করা শাড়ি ও লুঙ্গি
পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত নোয়াবাদ ইউনিয়নের দুইশ’ দুস্থ ও হতদরিদ্র
নারী-পুরুষ।
মো. এরশাদউদ্দিন জানান, কোন কিছুর আকাঙ্ক্ষা থেকে নয়, সমাজসেবার মানসিকতা থেকেই তিনি মানুষের জন্য কাজ করছেন। এ বছর তার নিজ উপজেলা করিমগঞ্জে সাড়ে ৩ হাজার শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটিতে গিয়ে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে তিনি বস্ত্র বিতরণ করছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী তাড়াইল উপজেলার দুস্থ নারী ও পুরুষের মাঝেও অনুরূপভাবে প্রায় দুই হাজার বস্ত্র বিতরণ করবেন বলেও তিনি জানান। কুম্ভরিয়া গ্রামের আমেনা খাতুন বলেন, নিজের ঘরও নাই, বাড়িও নাই। ভাইয়ের ঘরের এক কোণাত পইড়্যা তাইক্যা খাইয়া না খাইয়া দিন যায়। ঈদে নতুন কাপড় আইবো কইত্যাইক্যা। হেরা আইজক্যা একটা নতুন কাপড় দিছে। আমারটাই আইজকাই ঈদ লাগতাছে।
মো. এরশাদউদ্দিন জানান, কোন কিছুর আকাঙ্ক্ষা থেকে নয়, সমাজসেবার মানসিকতা থেকেই তিনি মানুষের জন্য কাজ করছেন। এ বছর তার নিজ উপজেলা করিমগঞ্জে সাড়ে ৩ হাজার শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটিতে গিয়ে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে তিনি বস্ত্র বিতরণ করছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী তাড়াইল উপজেলার দুস্থ নারী ও পুরুষের মাঝেও অনুরূপভাবে প্রায় দুই হাজার বস্ত্র বিতরণ করবেন বলেও তিনি জানান। কুম্ভরিয়া গ্রামের আমেনা খাতুন বলেন, নিজের ঘরও নাই, বাড়িও নাই। ভাইয়ের ঘরের এক কোণাত পইড়্যা তাইক্যা খাইয়া না খাইয়া দিন যায়। ঈদে নতুন কাপড় আইবো কইত্যাইক্যা। হেরা আইজক্যা একটা নতুন কাপড় দিছে। আমারটাই আইজকাই ঈদ লাগতাছে।
No comments