অভিবাসী ইস্যুতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশকে অ্যামনেস্টির সুপারিশ
অবৈধ
অভিবাসী ইস্যুতে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সরকারের
প্রতি বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এতে বলা হয়েছে, অভিবাসী বহনকারী যেসব নৌকা
পৌঁছাবে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাদেরকে ফেরত পাঠাতে পারে না এসব দেশ।
তাদেরকে নিরাপদে অবতরণ করতে দিতে বাধ্য এসব সরকার। এরপরও সরকারগুলোকে বলা
হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা পূরণ করে আবার কাউকে এমন কোন দেশে
জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না, যেখানে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এসব
মানুষ আন্তর্জাতিক সুরক্ষার দাবি রাখে। অ্যামনেস্টি লিখেছে, দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়ার অভিবাসী ও শরণার্থী সংকট নিয়ে ব্যাংককে আলোচনার জন্য ১৭টি দেশ বৈঠকে
মিলিত হওয়ার পর ১ মাস পার হয়ে গেছে। আমরা আপনাদের কাছে বর্তমান সংকট
মোকাবিলা ও সংকটের পেছনে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান মূল কারণগুলো বিবেচনায় নিতে
শক্ত ও আঞ্চলিক-সমন্বয়কৃত পদক্ষেপ গ্রহণের অব্যাহত অনুপস্থিতির দরুণ
আমাদের গভীর উদ্বেগ ব্যক্ত করছি। ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ভারতীয় মহাসাগরে
অনিয়মিত অভিবাসীদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক, ৭ সহস্রাধিক অভিবাসীর মানবিক সহায়তা ও
সাময়িক আশ্রয়দানের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার ঘোষণা বর্তমান সংকট
মোকাবিলায় ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু জীবন বাঁচানোর মানবিক নীতির প্রতি সাড়া,
অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের মানবাধিকার সুরক্ষা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন
নিশ্চিত করা এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দিতে আরও বেশি আঞ্চলিকভাবে সমন্বিত
দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা নেয়াটাও জরুরি। মর্মপীড়িত মানুষের জীবন রক্ষায়
অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান জোরালো করতে আরও আঞ্চলিকভাবে মিলিত প্রচেষ্টা
গ্রহণে আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও
আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহের প্রতি এভাবেই খোলা চিঠি লিখেছে অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল। এতে আরও লেখা হয়েছে, যেসব নৌকা আপনাদের অঞ্চলে পৌঁছছে,
সেখানকার আরোহীরা মূলত মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা, যারা শরণার্থী ও রাষ্ট্রহীন
মানুষ হিসেবে আন্তর্জাতিক সুরক্ষার দাবিদার। আমরা আপনাদের কাছে ওই
মানুষগুলোর যথাযথ শরণার্থী মর্যাদা নিশ্চিতের আহ্বান জানাই। যেসব মানুষের
আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন নেই ও যারা স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত যেতে
চান, তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে দেশত্যাগে সহযোগিতা করতে একযোগে
বিভিন্ন সরকারের কাজ করা উচিত। একই সঙ্গে, অভিবাসী বা শরণার্থীদের গণহারে
আটক না করতে আমরা আহ্বান জানাই।
মানবপাচার মোকাবিলা করা ও এ অপরাধে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি ও তদন্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এরপরও মানুষ শোষণের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থেকে যাবে, যদি নিজ দেশে দুঃসহ পরিস্থিতি বিরাজ করে। এ সংকটের মূল কারণ অনুসন্ধান ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আপনাদের অবশ্যই যৌথভাবে কাজ করতে হবে। ব্যাংকক সম্মেলন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান পদ্ধতিগত বৈষম্য ও নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যখন মানুষের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, তখন সে জীবন বাঁচানো রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা। যখন মানুষ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকিতে রয়েছে, তখন তাদের সুরক্ষা করতে রাষ্ট্র বাধ্য। তাই আমরা বিশ্বব্যাপী ১৬টি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিভাগের পরিচালকগণ সহ আমাদের পিটিশনে স্বাক্ষরকারী ৬০ হাজার মানুষ আপনাদের কাছে জরুরিভিত্তিতে নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের আহ্বান জানাই।
নিশ্চিত করুন যে নৌকা অনুসন্ধান ও সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। শরণার্থী ও অভিবাসী বোঝাই সকল নৌকাকে নিকটবর্তী নিরাপদ দেশে অবতরণে সহায়তা করুন, তাদের ফেরত পাঠাবেন না। হুমকি বা কোন ধরনের ভয় দেখাবেন না। খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও স্বাস্থ্য সেবা সহ শরণার্থী ও অভিবাসীদের মৌলিক মানবিক প্রয়োজন মিটান। নিশ্চিত করুন যে, আশ্রয়প্রার্থীরা পরিপূর্ণ শরণার্থী মর্যাদা পেতে সক্ষম। নিশ্চিত করুন যে, মানুষের অন্য দেশে স্থানান্তরিত করা হবে না, তাদের নিজ দেশেও নয়- যেখানে তারা মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ঝুঁকিতে থাকবেন। একটি দেশে প্রবেশে বিশেষ কোন উপায় অবলম্বনের জন্য কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন, আটক বা শাস্তি প্রদান না করার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। যেসব দেশ এখনও করেনি, তারা জাতিসংঘের শরণার্থী মর্যাদাবিষয়ক সম্মেলন, ১৯৬৭ সালের প্রটোকল, রাষ্ট্রহীন মানুষ সমপর্কিত সম্মেলন অনুমোদন করুন। সেখানে উল্লিখিত আইন, নীতি ও চর্চা বাস্তবায়ন করুন। জরুরিভিত্তিতে মিয়ানমারের সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি, নীতিগত ও চর্চাগত বৈষম্য বন্ধে আহ্বান জানান। প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের সম নাগরিকত্ব পাবার অধিকার বাস্তবায়ন।
মানবপাচার মোকাবিলা করা ও এ অপরাধে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি ও তদন্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এরপরও মানুষ শোষণের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থেকে যাবে, যদি নিজ দেশে দুঃসহ পরিস্থিতি বিরাজ করে। এ সংকটের মূল কারণ অনুসন্ধান ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আপনাদের অবশ্যই যৌথভাবে কাজ করতে হবে। ব্যাংকক সম্মেলন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান পদ্ধতিগত বৈষম্য ও নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যখন মানুষের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, তখন সে জীবন বাঁচানো রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা। যখন মানুষ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকিতে রয়েছে, তখন তাদের সুরক্ষা করতে রাষ্ট্র বাধ্য। তাই আমরা বিশ্বব্যাপী ১৬টি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিভাগের পরিচালকগণ সহ আমাদের পিটিশনে স্বাক্ষরকারী ৬০ হাজার মানুষ আপনাদের কাছে জরুরিভিত্তিতে নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের আহ্বান জানাই।
নিশ্চিত করুন যে নৌকা অনুসন্ধান ও সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। শরণার্থী ও অভিবাসী বোঝাই সকল নৌকাকে নিকটবর্তী নিরাপদ দেশে অবতরণে সহায়তা করুন, তাদের ফেরত পাঠাবেন না। হুমকি বা কোন ধরনের ভয় দেখাবেন না। খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও স্বাস্থ্য সেবা সহ শরণার্থী ও অভিবাসীদের মৌলিক মানবিক প্রয়োজন মিটান। নিশ্চিত করুন যে, আশ্রয়প্রার্থীরা পরিপূর্ণ শরণার্থী মর্যাদা পেতে সক্ষম। নিশ্চিত করুন যে, মানুষের অন্য দেশে স্থানান্তরিত করা হবে না, তাদের নিজ দেশেও নয়- যেখানে তারা মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ঝুঁকিতে থাকবেন। একটি দেশে প্রবেশে বিশেষ কোন উপায় অবলম্বনের জন্য কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন, আটক বা শাস্তি প্রদান না করার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। যেসব দেশ এখনও করেনি, তারা জাতিসংঘের শরণার্থী মর্যাদাবিষয়ক সম্মেলন, ১৯৬৭ সালের প্রটোকল, রাষ্ট্রহীন মানুষ সমপর্কিত সম্মেলন অনুমোদন করুন। সেখানে উল্লিখিত আইন, নীতি ও চর্চা বাস্তবায়ন করুন। জরুরিভিত্তিতে মিয়ানমারের সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি, নীতিগত ও চর্চাগত বৈষম্য বন্ধে আহ্বান জানান। প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের সম নাগরিকত্ব পাবার অধিকার বাস্তবায়ন।
No comments