ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পেলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ
খাদ্য
ও কৃষিক্ষেত্রের নোবেল প্রাইজ বলে খ্যাত ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পেয়েছেন
ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ক্ষুধাপীড়িত
জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও বণ্টনে অনন্য অবদান রাখার
স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালের জন্য তাঁকে এই পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়।
আগামী অক্টোবর মাসে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হবে। এর আর্থিক মূল্য
হচ্ছে আড়াই লাখ মার্কিন ডলার। ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১লা জুলাই বুধবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে এই পুরস্কার
ঘোষণা করেন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কেনেথ কুইন। এ
সময় তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নয়শ‘ কোটিরও বেশি ক্ষুধাপীড়িত
মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয়া একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। এমনই সময় স্যার ফজলে ও
তার প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক নারীশিক্ষা বিস্তার, ক্ষমতায়ন এবং পুরো প্রজন্মকে
দারিদ্র্যমুক্ত করার একটি অসাধারণ মডেল উদ্ভাবন করেছেন। এই অনন্য কীর্তির
জন্য এ বছর তিনিই এই পুরস্কারের যোগ্য ব্যক্তি। পুরস্কার পাওয়ার
প্রতিক্রিয়ায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়া
এক বিরল সম্মান। ৪৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি যে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব
দিয়ে আসছি, সেই ব্র্যাকের কর্মকাণ্ডকে স্বীকৃতি দেয়ায় আমি ওয়ার্ল্ড ফুড
প্রাইজ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই সাফল্যগাথার পেছনে প্রকৃত নায়ক দরিদ্ররাই, বিশেষত দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা নারীরা। অতিদরিদ্র পরিবারে সাধারণত নারীরাই অপ্রতুল সম্পদ দিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। এটা দেখেই ব্র্যাক অনুধাবন করে যে, উন্নয়নপ্রচেষ্টায় নারীদেরকেই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি করতে হবে।’
এই অনুষ্ঠানে স্যার ফজলেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিমন্ত্রী টম ভিলসেক বলেন, ‘মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ক্ষুধা নিরসন ও দারিদ্র্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার পথপ্রদর্শক হিসেবে স্যার ফজলের ভূমিকা প্রশংসনীয়।’ জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৯৯০ সাল থেকে দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমে এসেছে। দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূলকরণ এবং খাদ্যনিরাপত্তায় বাংলাদেশ যে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে, তাতে ব্র্যাকের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বাজারে প্রবেশের সুযোগ ও খামারের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে।
ইতিপূর্বে স্যার ফজলে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্প্যানিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, লিও টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল, গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ, ইনোগরাল ওয়াইজ প্রাইজ ফর এডুকেশন, ইনোগরাল ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড, ইউএনডিপি মাহবুব উল হক অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং কনট্রিবিউশন টু হিউমেন ডেভেলপমেন্ট, র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফর কমিউনিটি লিডারশিপ। ২০০৯ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবার তাঁকে নাইট উপাধি দেয়।
তার প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক বা বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সডমেন্ট কমিটি ১৯৭০ সালের টাইফুনের পর থেকে সাময়িক ত্রাণ সংগঠন হিসেবে সারা দেশে কাজ করে। দারিদ্র্য দূরীকরণের দিকেই এরপর থেকে মনোযোগী হয় ব্র্যাক। ক্রমেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এনজিওতে পরিণত হয় সংগঠনটি। ধারণা করা হয়, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশজুড়ে ১৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্ত হতে সহায়তা করেছে সংস্থাটি। বাংলাদেশ থেকে টেলিফোনে এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দারিদ্র্য একটি বহুমাত্রিক বিষয়। কেবল আয় বা কর্মসংস্থানের অভাবই দারিদ্র্য নয়। দারিদ্র্যের মানে সুযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার অভাবও।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কেনেথ কুইন বলেন, যেটা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে, তা হলো, তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও কারও কারও মতে সবচেয়ে কার্যকর ও দূরে পৌঁছানো অলাভজনক এনজিও। যেটির কর্মীর সংখ্যা লক্ষাধিক।
ব্র্যাকের মতে, সারাবিশ্বে এখনও প্রায় ১০০ কোটি মানুষ দরিদ্র, যাদের দৈনিক আয় ১.২৫ ডলারের চেয়ে কম। কিন্তু আরও কোটি কোটি মানুষও আছে যারা ওই অর্থের অর্ধেকেরও কম আয় করে। তারা চরম দারিদ্র্যসীমার আওতাভুক্ত। আবেদ বলেন, অনেক দেশে দরিদ্র মানুষকে সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। অথচ তাদেরও সংগঠিত করা যায়। তারা নিজেরাই দারিদ্র্যের সমাধান হতে পারে, যা করতে হবে, তা হলো, তাদের সুযোগ, পরিবেশ ও সরঞ্জাম দিতে হবে। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির প্রতিবেদন মতে, ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬.৭ শতাংশ, ২০১০ সালে তার ৩১.৫ শতাংশে অবনমন ঘটে। আগামী অক্টোবর মাসে দেস মোইনেসে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফজলে হাসান আবেদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই সাফল্যগাথার পেছনে প্রকৃত নায়ক দরিদ্ররাই, বিশেষত দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা নারীরা। অতিদরিদ্র পরিবারে সাধারণত নারীরাই অপ্রতুল সম্পদ দিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। এটা দেখেই ব্র্যাক অনুধাবন করে যে, উন্নয়নপ্রচেষ্টায় নারীদেরকেই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি করতে হবে।’
এই অনুষ্ঠানে স্যার ফজলেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিমন্ত্রী টম ভিলসেক বলেন, ‘মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ক্ষুধা নিরসন ও দারিদ্র্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার পথপ্রদর্শক হিসেবে স্যার ফজলের ভূমিকা প্রশংসনীয়।’ জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৯৯০ সাল থেকে দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমে এসেছে। দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূলকরণ এবং খাদ্যনিরাপত্তায় বাংলাদেশ যে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে, তাতে ব্র্যাকের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বাজারে প্রবেশের সুযোগ ও খামারের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে।
ইতিপূর্বে স্যার ফজলে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্প্যানিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, লিও টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল, গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ, ইনোগরাল ওয়াইজ প্রাইজ ফর এডুকেশন, ইনোগরাল ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড, ইউএনডিপি মাহবুব উল হক অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং কনট্রিবিউশন টু হিউমেন ডেভেলপমেন্ট, র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফর কমিউনিটি লিডারশিপ। ২০০৯ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবার তাঁকে নাইট উপাধি দেয়।
তার প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক বা বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সডমেন্ট কমিটি ১৯৭০ সালের টাইফুনের পর থেকে সাময়িক ত্রাণ সংগঠন হিসেবে সারা দেশে কাজ করে। দারিদ্র্য দূরীকরণের দিকেই এরপর থেকে মনোযোগী হয় ব্র্যাক। ক্রমেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এনজিওতে পরিণত হয় সংগঠনটি। ধারণা করা হয়, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশজুড়ে ১৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্ত হতে সহায়তা করেছে সংস্থাটি। বাংলাদেশ থেকে টেলিফোনে এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দারিদ্র্য একটি বহুমাত্রিক বিষয়। কেবল আয় বা কর্মসংস্থানের অভাবই দারিদ্র্য নয়। দারিদ্র্যের মানে সুযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার অভাবও।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কেনেথ কুইন বলেন, যেটা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে, তা হলো, তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও কারও কারও মতে সবচেয়ে কার্যকর ও দূরে পৌঁছানো অলাভজনক এনজিও। যেটির কর্মীর সংখ্যা লক্ষাধিক।
ব্র্যাকের মতে, সারাবিশ্বে এখনও প্রায় ১০০ কোটি মানুষ দরিদ্র, যাদের দৈনিক আয় ১.২৫ ডলারের চেয়ে কম। কিন্তু আরও কোটি কোটি মানুষও আছে যারা ওই অর্থের অর্ধেকেরও কম আয় করে। তারা চরম দারিদ্র্যসীমার আওতাভুক্ত। আবেদ বলেন, অনেক দেশে দরিদ্র মানুষকে সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। অথচ তাদেরও সংগঠিত করা যায়। তারা নিজেরাই দারিদ্র্যের সমাধান হতে পারে, যা করতে হবে, তা হলো, তাদের সুযোগ, পরিবেশ ও সরঞ্জাম দিতে হবে। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির প্রতিবেদন মতে, ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬.৭ শতাংশ, ২০১০ সালে তার ৩১.৫ শতাংশে অবনমন ঘটে। আগামী অক্টোবর মাসে দেস মোইনেসে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফজলে হাসান আবেদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।
No comments