ছয় হাজার গাছের মৃত্যু পরোয়ানা! by মো. জাফর খান
পটুয়াখালী
থেকে দুমকি হয়ে বাউফল যাওয়ার পথে রাস্তার দুপাশে সারি সারি সবুজ গাছের
দেয়াল। কয়েকদিন পর এ সবুজ বেষ্টনী আর চোখে পড়বে না। কারণ ইতিমধ্যে এসব গাছ
কাটার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে বনবিভাগ। সম্প্রতি এসব গাছের ছাল তুলে লাল রঙ
দিয়ে নম্বর লেখে দেয়া হয়েছে। ৬ হাজারের অধিক গাছের ছাল তুলে নম্বর লাগানো
হয়েছে। আর নম্বর লাগানো গাছগুলো কাটার জন্য পটুয়াখালী বিভাগীয় বন
কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। সরেজমিন
দেখা গেছে, যেসব গাছ কেটে ফেলা হবে তাদের বয়স খুব বেশি নয়, ২০ থেকে ২২ এর
মধ্যে। হঠাৎ এতগুলো গাছ একসঙ্গে কেটে ফেলার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ
করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
পটুয়াখালী সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকি, বাউফল, দশমিনা, রাঙ্গাবালী ও গলাচিপা উপজেলায় সামাজিক বনায়নের ৬ হাজার ১৯৬টি গাছ কেটে ফেলার জন্য চলছে বনবিভাগের নানা আয়োজন। ইতিমধ্যে গাছগুলো বিক্রির জন্য ১৯ ফেব্র“য়ারি দরপত্র জমা নেয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পটুয়াখালীর আওতাধীন দুমকি-বাউফল উপজেলা সড়কের পশ্চিম আঙ্গারিয়া গ্রামসংলগ্ন পায়রা নদীর পূর্বপাড় থেকে দুমকি থানা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের গাছ, দশমিনা উপজেলার চর হায়দার, রণগোপালদি, হাজিরহাট, গোলখালী, কাটাখালী, আউলিয়াপুর, চরদুয়ানি, আরেজবেগি এবং নলখোলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তার দুপাশের গাছ, জেলা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস বাউন্ডারি ওয়ালসংলগ্ন গাছ, গলাচিপা উপজেলার আওতায় চরআগস্তি, উত্তর চরখালী, উলানিয়া ও চর মোন্তাজ এলাকার বিভিন্ন সড়কের দুপাশের গাছ, মির্জাগঞ্জ উপজেলার খলিশাখালী থেকে তারাবুনিয়া পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের গাছ এবং বাউফল উপজেলার ডিগ্রি কলেজ থেকে গাসিংগা পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের গাছ দরপত্রের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
গাছগুলো কাটার ব্যাপারে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দে বলেন, রাস্তা বৃদ্ধি হবে তাই সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী গাছগুলো কাটতে হচ্ছে। এছাড়া সামাজিক বনায়নের গাছ হওয়াতে উপকার ভোগীদের সঙ্গে চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই গাছ কেটে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া যে গাছগুলো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলোও কাটতে হচ্ছে। দরপত্রের মাধ্যমে বৈধ সার্টিফিকেট তৈরি করে গাছ কাটার এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বনবিভাগের একটি সূত্র জানায়, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের লুটপাটের স্বার্থে গাছগুলো কাটার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। বনবিভাগের লোকজন বাধ্য হয়ে দরপত্র আহ্বান করেছে। তবে পরিবেশের স্বার্থে সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায় ইচ্ছে করলে এ প্রক্রিয়া বাতিল করে গাছগুলো রক্ষা করতে পারে। মূলত রাস্তা বৃদ্ধি কিংবা সামাজিক বনায়নের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার বিষয়টি একটি অজুহাত মাত্র।
এদিকে একই অজুহাতে বনবিভাগ গত বছরের এপ্রিলে বাউফল ও দশমিনা উপজেলায় ৭১টি গ্র“প করে ৩৫২টি আকাশমণি, ৫৩৭টি রেইনট্রি, ৭২টি খৈয়াবাবলা, ১১৭৬টি বাবলা, ৪৪৫টি মেহগনি, ৬৩৪টি শিশু, ৩৭টি ইপিল ও ১০টি কড়ইসহ অন্য প্রজাতির জাম, কদম, কইতার, তুলা, চাম্বুল ৩২৭২টি গাছ দরপত্রের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়েছে। উপকূলীয় পটুয়াখালী জেলায় প্রতি বছর দরপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন অজুহাতে বনবিভাগ গাছ নিধন করে চলছে। সূত্র আরও জানায়, গত চার বছরে প্রায় ৪০ হাজার গাছ নিধন করা হয়েছে। ফলে একদিকে উজাড় হচ্ছে গাছ এবং বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশ আন্দোলন বেলার বরিশাল অঞ্চলের সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, সামাজিক বনায়ন হোক আর সংরক্ষিত বনাঞ্চল হোক সব গাছই পরিবেশের জন্য একই ধরনের ভূমিকা রাখে। অজুহাত দেখিয়ে প্রায় ৬ হাজার গাছ কাটা হলে উপকূলের ওই অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি নেমে আসবে। প্রয়োজনে উপকার ভোগীদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পারে বনবিভাগ। অথবা রাস্তা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সব গাছ না কেটে এক পাশের গাছ রক্ষা করে রাস্তা বাড়ানো যেতে পারে। এজন্য কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকতে হবে। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান আকম মস্তফা জামান বলেন, সরকার একটি সামাজিক মূল্য নির্ধারণ করে উপকারভোগীদের টাকা পরিশোধ করে দিলে গাছগুলো কাটার প্রয়োজন হয় না। রাস্তা বৃদ্ধির বিষয় শুধু অজুহাত।
পটুয়াখালী সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকি, বাউফল, দশমিনা, রাঙ্গাবালী ও গলাচিপা উপজেলায় সামাজিক বনায়নের ৬ হাজার ১৯৬টি গাছ কেটে ফেলার জন্য চলছে বনবিভাগের নানা আয়োজন। ইতিমধ্যে গাছগুলো বিক্রির জন্য ১৯ ফেব্র“য়ারি দরপত্র জমা নেয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পটুয়াখালীর আওতাধীন দুমকি-বাউফল উপজেলা সড়কের পশ্চিম আঙ্গারিয়া গ্রামসংলগ্ন পায়রা নদীর পূর্বপাড় থেকে দুমকি থানা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের গাছ, দশমিনা উপজেলার চর হায়দার, রণগোপালদি, হাজিরহাট, গোলখালী, কাটাখালী, আউলিয়াপুর, চরদুয়ানি, আরেজবেগি এবং নলখোলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তার দুপাশের গাছ, জেলা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস বাউন্ডারি ওয়ালসংলগ্ন গাছ, গলাচিপা উপজেলার আওতায় চরআগস্তি, উত্তর চরখালী, উলানিয়া ও চর মোন্তাজ এলাকার বিভিন্ন সড়কের দুপাশের গাছ, মির্জাগঞ্জ উপজেলার খলিশাখালী থেকে তারাবুনিয়া পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের গাছ এবং বাউফল উপজেলার ডিগ্রি কলেজ থেকে গাসিংগা পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের গাছ দরপত্রের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
গাছগুলো কাটার ব্যাপারে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দে বলেন, রাস্তা বৃদ্ধি হবে তাই সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী গাছগুলো কাটতে হচ্ছে। এছাড়া সামাজিক বনায়নের গাছ হওয়াতে উপকার ভোগীদের সঙ্গে চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই গাছ কেটে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া যে গাছগুলো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলোও কাটতে হচ্ছে। দরপত্রের মাধ্যমে বৈধ সার্টিফিকেট তৈরি করে গাছ কাটার এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বনবিভাগের একটি সূত্র জানায়, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের লুটপাটের স্বার্থে গাছগুলো কাটার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। বনবিভাগের লোকজন বাধ্য হয়ে দরপত্র আহ্বান করেছে। তবে পরিবেশের স্বার্থে সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায় ইচ্ছে করলে এ প্রক্রিয়া বাতিল করে গাছগুলো রক্ষা করতে পারে। মূলত রাস্তা বৃদ্ধি কিংবা সামাজিক বনায়নের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার বিষয়টি একটি অজুহাত মাত্র।
এদিকে একই অজুহাতে বনবিভাগ গত বছরের এপ্রিলে বাউফল ও দশমিনা উপজেলায় ৭১টি গ্র“প করে ৩৫২টি আকাশমণি, ৫৩৭টি রেইনট্রি, ৭২টি খৈয়াবাবলা, ১১৭৬টি বাবলা, ৪৪৫টি মেহগনি, ৬৩৪টি শিশু, ৩৭টি ইপিল ও ১০টি কড়ইসহ অন্য প্রজাতির জাম, কদম, কইতার, তুলা, চাম্বুল ৩২৭২টি গাছ দরপত্রের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়েছে। উপকূলীয় পটুয়াখালী জেলায় প্রতি বছর দরপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন অজুহাতে বনবিভাগ গাছ নিধন করে চলছে। সূত্র আরও জানায়, গত চার বছরে প্রায় ৪০ হাজার গাছ নিধন করা হয়েছে। ফলে একদিকে উজাড় হচ্ছে গাছ এবং বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশ আন্দোলন বেলার বরিশাল অঞ্চলের সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, সামাজিক বনায়ন হোক আর সংরক্ষিত বনাঞ্চল হোক সব গাছই পরিবেশের জন্য একই ধরনের ভূমিকা রাখে। অজুহাত দেখিয়ে প্রায় ৬ হাজার গাছ কাটা হলে উপকূলের ওই অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি নেমে আসবে। প্রয়োজনে উপকার ভোগীদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পারে বনবিভাগ। অথবা রাস্তা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সব গাছ না কেটে এক পাশের গাছ রক্ষা করে রাস্তা বাড়ানো যেতে পারে। এজন্য কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকতে হবে। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান আকম মস্তফা জামান বলেন, সরকার একটি সামাজিক মূল্য নির্ধারণ করে উপকারভোগীদের টাকা পরিশোধ করে দিলে গাছগুলো কাটার প্রয়োজন হয় না। রাস্তা বৃদ্ধির বিষয় শুধু অজুহাত।
No comments