সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য -১৫৬ by ড. একেএম শাহনাওয়াজ
ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলার মুসলমানরা দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এর পেছনে কারণ ছিল। দীর্ঘ ছয়শ বছর ভারতবর্ষ ছিল মুসলমানদের শাসনাধীনে। মুসলমানদের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয় ইংরেজরা। তাই ক্ষোভ ও অভিমানে মুসলমানরা ইংরেজদের সংস্রব থেকে দূরে সরে থাকে। কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী মুসলমানরা অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। ইংরেজি শিক্ষা থেকে শুরু করে নানা আধুনিক ধ্যান-ধারণা থেকে ছিটকে পড়ে। মুসলিম সমাজের এই ভঙ্গুর অবস্থা যখন বিরাজ করছিল তখন সৌভাগ্যক্রমে সমাজের কয়েকজন শিক্ষিত বাঙালি বেরিয়ে এলেন। তারা বুঝতে পারলেন, এ অন্ধত্ব থেকে মুসলমানদের মুক্ত করতে হবে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে না পারলে এই সমাজ অন্ধকারে নিপতিত হবে। মুসলিম সমাজের এই সংস্কারকদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন, নওয়াব আবদুল লতিফ ও সৈয়দ আমীর আলী। অপরদিকে মুসলমান সমাজকে ইসলামী চেতনায় জাগিয়ে তোলার জন্য সমাজ সংস্কারে ভূমিকা রাখেন হাজী শরিয়তুলাহ এবং দুদু মিয়া।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন (১৭৩২-১৮১২) : এই জনহিতৈষী দানবীরের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়। তার বাবার নাম হাজী ফয়জুল্লাহ ও মায়ের নাম জয়নব খানম। বাড়িতেই তিনি লেখাপড়া করেছিলেন। কোরআন, হাদিস ও ফিকাহশাস্ত্রে বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তিনি ইরান, ইরাক, তুরস্ক এবং আরব উপদ্বীপের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমণ করেছিলেন। মক্কায় হজ পালন করতে গিয়ে তিনি মদিনা, কুফা ও কারবালাসহ অন্যান্য ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন ছিলেন মানব কল্যাণে আত্মনিবেদিত। সমাজ উন্নয়নে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অনগ্রসর মুসলমান সমাজে শিক্ষা বিস্তারে মুহসীন বিশেষ ভূমিকা রাখেন। নিজের জীবদ্দশায় তিনি হুগলীতে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, যশোর ইত্যাদি অঞ্চলের মাদ্রাসাগুলোর উন্নয়নে প্রচুর অর্থ দান করেন।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন ১৮০৬ সালে মুহসীন ট্রাস্ট ফান্ড নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন। ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য দুজন মুতওয়ালি নিয়োগ করা হয়। তিনি তার সম্পত্তিকে নয়টি শেয়ারে ভাগ করেন। তিনটি শেয়ার ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য, চারটি পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কাজে ব্যয়ের জন্য, এবং দুটি শেয়ার রাখা হয় মুতওয়ালির বেতন নির্বাহের জন্য। হাজী মুহম্মদ মুহসীনের মৃত্যুর পর এক পর্যায়ে মুতওয়ালি দুজনের বিরুদ্ধে তহবিল তছরুফের অভিযোগ ওঠে। ফলে ১৮১৮ সালে মুহসীন ট্রাস্ট ফান্ডের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব সরকার নিয়ে নেয়। এ ট্রাস্টের টাকায় ১৮৩৬ সালে মুহসীন কলেজ এবং পরে হুগলী দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন ধর্মনির্বিশেষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। মুহসীনের সম্পত্তির আয় থেকে এখনও বহু দরিদ্র ছাত্র এবং মুসলমান পরিবার অর্থ সাহায্য পেয়ে থাকে। হাজী মুহম্মদ মুহসীনের দানের পরিমাণ কত তা নিশ্চিতভাবে নির্ণয় করা যায় না। প্রকাশ্য দানের বাইরেও তিনি গোপনে অনেক দান করতেন বলে জনশ্র“তি রয়েছে। এই দানবীর ও শিক্ষা প্রসারের অগ্রদূত ১৮১২ সালে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে হুগলীর ইমামবাড়ায় সমাধিস্থ করা হয়।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন (১৭৩২-১৮১২) : এই জনহিতৈষী দানবীরের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়। তার বাবার নাম হাজী ফয়জুল্লাহ ও মায়ের নাম জয়নব খানম। বাড়িতেই তিনি লেখাপড়া করেছিলেন। কোরআন, হাদিস ও ফিকাহশাস্ত্রে বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তিনি ইরান, ইরাক, তুরস্ক এবং আরব উপদ্বীপের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমণ করেছিলেন। মক্কায় হজ পালন করতে গিয়ে তিনি মদিনা, কুফা ও কারবালাসহ অন্যান্য ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন ছিলেন মানব কল্যাণে আত্মনিবেদিত। সমাজ উন্নয়নে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অনগ্রসর মুসলমান সমাজে শিক্ষা বিস্তারে মুহসীন বিশেষ ভূমিকা রাখেন। নিজের জীবদ্দশায় তিনি হুগলীতে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, যশোর ইত্যাদি অঞ্চলের মাদ্রাসাগুলোর উন্নয়নে প্রচুর অর্থ দান করেন।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন ১৮০৬ সালে মুহসীন ট্রাস্ট ফান্ড নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন। ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য দুজন মুতওয়ালি নিয়োগ করা হয়। তিনি তার সম্পত্তিকে নয়টি শেয়ারে ভাগ করেন। তিনটি শেয়ার ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য, চারটি পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কাজে ব্যয়ের জন্য, এবং দুটি শেয়ার রাখা হয় মুতওয়ালির বেতন নির্বাহের জন্য। হাজী মুহম্মদ মুহসীনের মৃত্যুর পর এক পর্যায়ে মুতওয়ালি দুজনের বিরুদ্ধে তহবিল তছরুফের অভিযোগ ওঠে। ফলে ১৮১৮ সালে মুহসীন ট্রাস্ট ফান্ডের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব সরকার নিয়ে নেয়। এ ট্রাস্টের টাকায় ১৮৩৬ সালে মুহসীন কলেজ এবং পরে হুগলী দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন ধর্মনির্বিশেষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। মুহসীনের সম্পত্তির আয় থেকে এখনও বহু দরিদ্র ছাত্র এবং মুসলমান পরিবার অর্থ সাহায্য পেয়ে থাকে। হাজী মুহম্মদ মুহসীনের দানের পরিমাণ কত তা নিশ্চিতভাবে নির্ণয় করা যায় না। প্রকাশ্য দানের বাইরেও তিনি গোপনে অনেক দান করতেন বলে জনশ্র“তি রয়েছে। এই দানবীর ও শিক্ষা প্রসারের অগ্রদূত ১৮১২ সালে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে হুগলীর ইমামবাড়ায় সমাধিস্থ করা হয়।
No comments