হরতাল ও অবরোধের সমীকরণ by আইরিন সুলতানা
যা বুঝতে বারবার ব্যর্থ হই তা হলো, চলমান তথাকথিত কর্মসূচি হরতাল-অবরোধ থেকে খোদ ২০ দল আওতামুক্ত কিনা। কর্মসূচিতে দেখা না মিললেও গুলশান কার্যালয়ে ছোট-বড়-মাঝারি নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া চলছে নির্বিঘ্নে, অনেকে বড় গাড়ি নিয়েও আসছেন। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান যে রাতে দুর্বৃত্তদের দ্বারা আক্রান্ত হন, সে রাতে তিনি একটি প্রাইভেট গাড়ি করেই ২০ দলীয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফিরছিলেন।
খালেদা জিয়ার স্বেচ্ছায় নির্বাসন চলছে বর্তমানে। তবে যেহেতু তিনি অনশনে নেই, তাই তার কার্যালয়ে অন্তত জনা পশ্চাশেকের ভোজ আসছে বাইরে থেকে। হরতাল-অবরোধের মধ্যে গুলশান কার্যালয়ে কী করে খাওয়ার হাঁড়ি, বিরিয়ারির প্যাকেটসহ গাড়ি-ভ্যান-রিকশা পেঁৗছে যাচ্ছে?
পেট্রোল বোমাতঙ্কে মানুষের রুটি-রুজিতে টান পড়েছে। মানুষ বাইরে বেরিয়ে ঘরে ফেরার অনিশ্চয়তায় থাকছে। কেবল পেট্রোল বোমায় নিহতের সংখ্যা অর্ধশত পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে, ২০ দলের হম্বিতম্বিও বাড়ছে। অন্যদিকে 'সংলাপ' তৎপরতাকে বেগবান করতে পেট্রোল বোমায় নিহতের সংখ্যা একটা ট্রাম্পকার্ড হয়ে উঠেছে নাগরিক সমাজের কাছে। পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসের বৃহত্তর সফলতাটা এখানেই।
আজকাল বাসের দু'পাশের জানালা বন্ধ রাখা হচ্ছে। কোনো কোনো বাসের ছাদে ছোট ছোট জানালা থাকে। বাড়তি সাবধানতায় সেগুলোও বন্ধ। ফলে ৫০-৬০ জন কি তারও বেশি যাত্রীর শ্বাসে দ্রুতই ভারি হয়ে ওঠে বাসের ভেতরটা। তবু পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে মরার চেয়ে দম বন্ধ করে বাঁচার একটা চেষ্টা করেন যাত্রীরা। মৃত্যুর লেলিহান শিখার নাচনে যে সন্ত্রাস ঘটে চলেছে নগরীর বুকে, তার সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায় নাগরিকদের এই ভয়ার্ত চোখে।
যখন হরতালের কারণে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে না পেরে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় এলাকায় 'আমাদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস করো না', 'আমাকে পুড়িয়ে দিও না' লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে অনিশ্চয়তা ভরা চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকে, তখন হরতালের সফলতা নিয়ে গর্ব করতেই পারেন ২০ দলীয় নেত্রী। যখন পরীক্ষার সিডিউল মেলাতে ব্যর্থ শিক্ষামন্ত্রী ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিদিন হাতজোড় করেন অবরোধ বন্ধে, তখন অবরোধের সফলতা খুঁজে পেয়ে বিএনপির কোনো নেতা দাম্ভিক স্বরে বলতেই পারেন, 'কিসের পরীক্ষা? কিসের এসএসসি?'
তবে উল্টো সমীকরণটা বোঝার মতো কেউ আছেন কি? জনগণ তো প্রতিদিন ২০ দলীয় পেট্রোল বোমা কর্মসূচির মুখে চপেটাঘাত করছে। পেট্রোল বোমায় নিহত প্রতিটি যাত্রী আসলে একেকটি জবাব ২০ দলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। মৃত্যুভয় দেখিয়েও জনতাকে জিম্মি করা যায়নি। অসফল সেই 'কর্মসূচি', ব্যর্থ সেই সন্ত্রাস; কারণ পেট্রোল বোমায় নিহত ওই যাত্রীগুলো আসলে হরতাল-অবরোধ-পেট্রোল বোমাকে তোয়াক্কা না করেই ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিল। ব্যর্থ সেই পেট্রোল বোমা সন্ত্রাস, যখন বার্ন ইউনিটের আহাজারিকে বুকে চেপে মানুষ আবার বেরিয়ে পড়ছে কাজে।
কবি ও ব্লগার
খালেদা জিয়ার স্বেচ্ছায় নির্বাসন চলছে বর্তমানে। তবে যেহেতু তিনি অনশনে নেই, তাই তার কার্যালয়ে অন্তত জনা পশ্চাশেকের ভোজ আসছে বাইরে থেকে। হরতাল-অবরোধের মধ্যে গুলশান কার্যালয়ে কী করে খাওয়ার হাঁড়ি, বিরিয়ারির প্যাকেটসহ গাড়ি-ভ্যান-রিকশা পেঁৗছে যাচ্ছে?
পেট্রোল বোমাতঙ্কে মানুষের রুটি-রুজিতে টান পড়েছে। মানুষ বাইরে বেরিয়ে ঘরে ফেরার অনিশ্চয়তায় থাকছে। কেবল পেট্রোল বোমায় নিহতের সংখ্যা অর্ধশত পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে, ২০ দলের হম্বিতম্বিও বাড়ছে। অন্যদিকে 'সংলাপ' তৎপরতাকে বেগবান করতে পেট্রোল বোমায় নিহতের সংখ্যা একটা ট্রাম্পকার্ড হয়ে উঠেছে নাগরিক সমাজের কাছে। পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসের বৃহত্তর সফলতাটা এখানেই।
আজকাল বাসের দু'পাশের জানালা বন্ধ রাখা হচ্ছে। কোনো কোনো বাসের ছাদে ছোট ছোট জানালা থাকে। বাড়তি সাবধানতায় সেগুলোও বন্ধ। ফলে ৫০-৬০ জন কি তারও বেশি যাত্রীর শ্বাসে দ্রুতই ভারি হয়ে ওঠে বাসের ভেতরটা। তবু পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে মরার চেয়ে দম বন্ধ করে বাঁচার একটা চেষ্টা করেন যাত্রীরা। মৃত্যুর লেলিহান শিখার নাচনে যে সন্ত্রাস ঘটে চলেছে নগরীর বুকে, তার সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায় নাগরিকদের এই ভয়ার্ত চোখে।
যখন হরতালের কারণে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে না পেরে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় এলাকায় 'আমাদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস করো না', 'আমাকে পুড়িয়ে দিও না' লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে অনিশ্চয়তা ভরা চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকে, তখন হরতালের সফলতা নিয়ে গর্ব করতেই পারেন ২০ দলীয় নেত্রী। যখন পরীক্ষার সিডিউল মেলাতে ব্যর্থ শিক্ষামন্ত্রী ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিদিন হাতজোড় করেন অবরোধ বন্ধে, তখন অবরোধের সফলতা খুঁজে পেয়ে বিএনপির কোনো নেতা দাম্ভিক স্বরে বলতেই পারেন, 'কিসের পরীক্ষা? কিসের এসএসসি?'
তবে উল্টো সমীকরণটা বোঝার মতো কেউ আছেন কি? জনগণ তো প্রতিদিন ২০ দলীয় পেট্রোল বোমা কর্মসূচির মুখে চপেটাঘাত করছে। পেট্রোল বোমায় নিহত প্রতিটি যাত্রী আসলে একেকটি জবাব ২০ দলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। মৃত্যুভয় দেখিয়েও জনতাকে জিম্মি করা যায়নি। অসফল সেই 'কর্মসূচি', ব্যর্থ সেই সন্ত্রাস; কারণ পেট্রোল বোমায় নিহত ওই যাত্রীগুলো আসলে হরতাল-অবরোধ-পেট্রোল বোমাকে তোয়াক্কা না করেই ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিল। ব্যর্থ সেই পেট্রোল বোমা সন্ত্রাস, যখন বার্ন ইউনিটের আহাজারিকে বুকে চেপে মানুষ আবার বেরিয়ে পড়ছে কাজে।
কবি ও ব্লগার
No comments