সাগর সন্ধানে by মুস্তাফা জামান আব্বাসী
মুস্তাফা জামান আব্বাসী |
ফরিদুর রেজা সাগর |
সাগরের
ষাট বছর, অবিশ্বাস্য। তার বাবা ফজলুল হক ছিলেন সিনেমার লোক। বন্ধুত্বের
সম্পর্ক। চলে আসতেন অফিসে, ৩৪ নম্বর জিন্নাহ এভিনিউতে। গল্প করতাম ছবি
বানানো নিয়ে। তার তৈরি ছবি 'প্রেসিডেন্ট' পুরস্কার পায়। সাগর জিন্নাহ
এভিনিউতে [এখন বঙ্গবন্ধু এভিনিউ] 'পিঠাঘর' নামে একটি খাবার দোকান সাজিয়ে
বসে, আমি খদ্দের। নিজেই সবচেয়ে সুন্দর পাটিসাপটা পাঠাত আমার জন্য এবং বাসার
জন্য বাক্সে ভরে ভাপা পিঠা, পুলি পিঠা। ভালো লাগত যখন বায়তুল মোকাররম
মসজিদে নামাজের সময় পাশে পেতাম তাকে। এভাবে আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সুন্দর
পিতা-পুত্রের সম্পর্ক। তার মধ্যে ধর্মীয় চেতনা ততখানি, বর্তমান যতখানি
সহনীয়। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে বসি, যা অনভিপ্রেত।
সাগরের কৃতিত্ব বিস্তৃত। প্রথমত তার সাহিত্যকর্ম। তার লেখা বইগুলো যেমন যত্ন নিয়ে আমার কাছে পাঠায়, তার চেয়ে বেশি আনন্দ নিয়ে সেগুলো দিনের পর দিন পড়তে থাকি। ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের লেখা বইগুলো যেমন যত্নের সঙ্গে সাজিয়ে রেখেছি [পঞ্চাশেরও বেশি হলো], তেমনি ওর লেখা বইগুলোও সন্তান স্নেহে সাজিয়ে রেখেছি। স্থির বিশ্বাস, তার তাজা মনটি শিশুর মন জয় করতে সক্ষম। শিশুসাহিত্যিক হিসেবে তাই ফরিদুর রেজা সাগর অনন্য।
চ্যানেল আইয়ের প্রথম দিন থেকে দর্শক, শিল্পী ও কথক হিসেবে যুক্ত। একদিন সাগর টেলিফোন করে জানায়, আব্বাসী ভাই, আপনাকে আমরা 'আজীবন সম্মাননা পদক' দিতে চলেছি। আমি অভিভূত। এক লাখ টাকা, একটি চাদর ও একটি ক্রেস্ট। পরের বছর :'নজরুল পদক'। বিরল সম্মান। সঙ্গে এক লাখ টাকা। সঙ্গে পদক পেলেন নজরুল গবেষণার জন্য অধ্যাপক রাফিকুল ইসলাম।
একবার সাগর আমাকে পাঠাল কলকাতা। কোনো একটি অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে। ছিলাম বড় হোটেলে। সারাদিন আসমা ও আমি কলকাতা ঘুরে বেড়াই, রাতে শহর থেকে দূরে একটি স্টুডিওতে শুটিং করি। কলকাতার বেশ কিছু নামি শিল্পী আমাদের সঙ্গে সহ-বিচারক। হৈমন্তী শুক্লা প্রমুখ।
সামিরা সাগরের একটি বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ করে -
অনেকেই এক বাক্যে বলেছেন, চ্যানেল আই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা বিশিষ্ট শিল্পীদের কাছে টেনেছে। 'বাংলা টেলিভিশনের ৫০ বছর', ৪৮৪ পৃষ্ঠার বইটি একটি অনুপম গ্রন্থ, যাতে চারটি বই এক সঙ্গে সনি্নবিষ্ট : 'এক জীবনে টেলিভিশন', 'টেলিভিশন আরেক জীবনে', 'টেলিভিশন : জীবনের সঙ্গী', 'টেলিভিশন ভাবনা'। ৪৮৩ পৃষ্ঠার বইটির প্রতি পৃষ্ঠাই মূল্যবান।
সামান্যই গাই, সামান্যই লিখি। ওদের নানা ভরা মজলিসে যেমন রবীন্দ্র মেলা, নজরুল মেলা, প্রকৃতি মেলা, বৈশাখী মেলাতে উপস্থিতি দিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ কবি, শিল্পী, সাহিত্যিকদের কাছ থেকে যখন ভালোবাসা পেতে থাকি, ওদের সঙ্গে একটি সবুজ অথবা লাল উত্তরীয় পরে ছবি তুলতে থাকি, বুঝতে পারি মিলন মেলাটি এই ক্ষুদ্র জীবনে কতখানি অর্থবহ। মেলার আয়োজক? নিশ্চয়ই সাগর।
পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়াই। ফ্লোরিডায় বোকারাটান শহরে যেখানে মেয়ে থাকে, সেখানে অনেকে ভালোবাসে আমাকে। বলে, কোনো অনুষ্ঠান হলে আপনাকে খুঁজতে থাকি। দূরে থেকেও বাঙালিরা কাছাকাছি চ্যানেল আইয়ের কল্যাণে। সাগর যেভাবে সবাইকে ডেকে আনতে পারে, অন্যেরা তা পারে না। এখানেই তার সাফল্য।
সাগরের কোনো অনুষ্ঠানে যখন যাই আমাকে গাইতে বলা হয় জন্মদিনের গানটি। এটি এত পপুলার হলো যে, ইংরেজি 'হ্যাপি বার্থডে টু ইউ'কেও যেন হার মানায়। জন্মদিনের আরও দুয়েকটি গান প্রস্তুত হয়েছে বৈকি, তবু এটির মতো নয়।
আল্লাহর কাছে অনেক কিছু চাওয়ার। চাই শান্তির দেশ, সুস্থ সুন্দর সংস্কৃতির বিকাশ, পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অবস্থান, চাই চ্যানেল আইয়ের উত্তরোত্তর বিকাশ, সাগরের জন্য নীরোগ শতবর্ষ।
সাহিত্য-সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব
সাগরের কৃতিত্ব বিস্তৃত। প্রথমত তার সাহিত্যকর্ম। তার লেখা বইগুলো যেমন যত্ন নিয়ে আমার কাছে পাঠায়, তার চেয়ে বেশি আনন্দ নিয়ে সেগুলো দিনের পর দিন পড়তে থাকি। ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের লেখা বইগুলো যেমন যত্নের সঙ্গে সাজিয়ে রেখেছি [পঞ্চাশেরও বেশি হলো], তেমনি ওর লেখা বইগুলোও সন্তান স্নেহে সাজিয়ে রেখেছি। স্থির বিশ্বাস, তার তাজা মনটি শিশুর মন জয় করতে সক্ষম। শিশুসাহিত্যিক হিসেবে তাই ফরিদুর রেজা সাগর অনন্য।
চ্যানেল আইয়ের প্রথম দিন থেকে দর্শক, শিল্পী ও কথক হিসেবে যুক্ত। একদিন সাগর টেলিফোন করে জানায়, আব্বাসী ভাই, আপনাকে আমরা 'আজীবন সম্মাননা পদক' দিতে চলেছি। আমি অভিভূত। এক লাখ টাকা, একটি চাদর ও একটি ক্রেস্ট। পরের বছর :'নজরুল পদক'। বিরল সম্মান। সঙ্গে এক লাখ টাকা। সঙ্গে পদক পেলেন নজরুল গবেষণার জন্য অধ্যাপক রাফিকুল ইসলাম।
একবার সাগর আমাকে পাঠাল কলকাতা। কোনো একটি অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে। ছিলাম বড় হোটেলে। সারাদিন আসমা ও আমি কলকাতা ঘুরে বেড়াই, রাতে শহর থেকে দূরে একটি স্টুডিওতে শুটিং করি। কলকাতার বেশ কিছু নামি শিল্পী আমাদের সঙ্গে সহ-বিচারক। হৈমন্তী শুক্লা প্রমুখ।
সামিরা সাগরের একটি বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ করে -
অনেকেই এক বাক্যে বলেছেন, চ্যানেল আই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা বিশিষ্ট শিল্পীদের কাছে টেনেছে। 'বাংলা টেলিভিশনের ৫০ বছর', ৪৮৪ পৃষ্ঠার বইটি একটি অনুপম গ্রন্থ, যাতে চারটি বই এক সঙ্গে সনি্নবিষ্ট : 'এক জীবনে টেলিভিশন', 'টেলিভিশন আরেক জীবনে', 'টেলিভিশন : জীবনের সঙ্গী', 'টেলিভিশন ভাবনা'। ৪৮৩ পৃষ্ঠার বইটির প্রতি পৃষ্ঠাই মূল্যবান।
সামান্যই গাই, সামান্যই লিখি। ওদের নানা ভরা মজলিসে যেমন রবীন্দ্র মেলা, নজরুল মেলা, প্রকৃতি মেলা, বৈশাখী মেলাতে উপস্থিতি দিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ কবি, শিল্পী, সাহিত্যিকদের কাছ থেকে যখন ভালোবাসা পেতে থাকি, ওদের সঙ্গে একটি সবুজ অথবা লাল উত্তরীয় পরে ছবি তুলতে থাকি, বুঝতে পারি মিলন মেলাটি এই ক্ষুদ্র জীবনে কতখানি অর্থবহ। মেলার আয়োজক? নিশ্চয়ই সাগর।
পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়াই। ফ্লোরিডায় বোকারাটান শহরে যেখানে মেয়ে থাকে, সেখানে অনেকে ভালোবাসে আমাকে। বলে, কোনো অনুষ্ঠান হলে আপনাকে খুঁজতে থাকি। দূরে থেকেও বাঙালিরা কাছাকাছি চ্যানেল আইয়ের কল্যাণে। সাগর যেভাবে সবাইকে ডেকে আনতে পারে, অন্যেরা তা পারে না। এখানেই তার সাফল্য।
সাগরের কোনো অনুষ্ঠানে যখন যাই আমাকে গাইতে বলা হয় জন্মদিনের গানটি। এটি এত পপুলার হলো যে, ইংরেজি 'হ্যাপি বার্থডে টু ইউ'কেও যেন হার মানায়। জন্মদিনের আরও দুয়েকটি গান প্রস্তুত হয়েছে বৈকি, তবু এটির মতো নয়।
আল্লাহর কাছে অনেক কিছু চাওয়ার। চাই শান্তির দেশ, সুস্থ সুন্দর সংস্কৃতির বিকাশ, পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অবস্থান, চাই চ্যানেল আইয়ের উত্তরোত্তর বিকাশ, সাগরের জন্য নীরোগ শতবর্ষ।
সাহিত্য-সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব
No comments