তিস্তায় এখন ধু-ধু বালুচর
ভারত-বাংলাদেশ
পানি চুক্তি না হওয়া ও গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে ভারত একতরফাভাবে পানি
প্রত্যাহার করায় এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তা আজ মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। চলতি
শুকনো মওসুমে নদীতে নেই স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ। দেশের সর্ববৃহৎ সেচপ্রকল্প
তিস্তা ব্যারাজ ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে ধু-ধু বালুচরে। ব্যারাজের উজান ও ভাটিতে
শুধুই বালুচর। ফলে প্রতিবছর প্রকল্প এলাকা কমিয়েও স্বাভাবিকভাবে
সেচকার্যক্রম চালাতে পারছে না কর্তৃপ।
১৯৭৯ সালে দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমপর্যায়ের কাজ শেষ হয় ১৯৯৮ সালে। মূল নদী থেকে পানি নিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে মরুময় উত্তরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুরসহ পাঁচ জেলার ৩৫টি উপজেলার পাঁচ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করাই ছিল প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ জন্য নীলফামারী জেলার ডালিয়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় তিস্তা ব্যারেজ; কিন্তু প্রমত্তা তিস্তা ডিসেম্বর মাস থেকে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তিস্তার পানি প্রায় শূন্যের কোঠায় ঠেকেছে। সামান্য কিছু এলাকায় হাঁটু পানি থাকলেও বেশির ভাগ এলাকায় তিস্তার বুকে এখন ধু-ধু বালু চর। তিস্তা পানিশূন্য হয়ে পড়ায় ব্যহত হচ্ছে চলতি সেচকার্যক্রম। এতে করে বিপাকে পড়েছেন তিস্তা সেচ এলাকার কৃষকেরা।
নীলফামারী ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র মতে, তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় গেল বছর নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টর জমি বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় ২৫ হাজার হেক্টর জমি। আর এ কারণে এ বছর প্রকল্প এলাকা কমিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিস্তার সেচের পানি দিয়ে পাঁচ হাজার ৩৩৯ হেক্টর জমিতে বোরো চারা রোপণ করতে পেরেছেন কৃষকেরা। বোরো চাষিরা জানান, রোপণকৃত জমিতেও এখন ঠিকমতো পানি দিতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট বন্ধ রেখেও সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের উৎস মুখে এক ফোটা পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধান খাল, দিনাজপুর ও রংপুর খালের মাধ্যমে দুই দফায় বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে পারলেও বর্তমানে তিস্তায় পানি না থাকায় সেচকার্যক্রাম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে রোপিত বোরো চারা বাঁচাতে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে সেচ পাম্প ও শ্যালো মেশিন বসিয়ে ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন। জলঢাকা উপজেলার উত্তর দেশীবাঈ গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান, পূর্ব কাঁঠালী গ্রামের তৈয়ব আলী, একই গ্রামের আবুয়াল হোসেন, দুন্দিবাড়ি গ্রামের বছির উদ্দিনসহ অনেকে অভিযোগ করেন, ‘ক্যানেলের পানির আশাত রোয়া নাগাইনো, অ্যালা ক্যানেলোত পানি নাই। খালি দুইবার পানি দিয়া বন্দো করি দিছে। জমি ফাটি চৌচির হয়া গেইছে। রোয়াও মরি যায়ছে। বাইধ্য হয়া শ্যালো বসেয়া ক্ষেতোত পানি দেইছি।’
অন্য দিকে তিস্তায় পানি না থাকায় তিস্তার ১২০ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করা শত শত জেলে ও মাঝিমাল্লা এখন সম্পূর্ণ বেকার। ব্যারেজের ভাটিতে সামান্য যে অংশে চোঁয়ানো পানি আছে তাতেই জাল ফেলে মাছের জন্য অপো করছেন এখানকার জেলেরা।
এ দিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, শুধু নীলফামারী জেলায় তিস্তার পানি দিয়ে ২০০৭-৮ বোরো মওসুমে ১৮ হাজার ৪৪৪ হেক্টর, ২০০৮-৯ এ ১২ হাজার ৫০০, ২০০৯-১০ এ ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর,২০১০-১১ এ ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং ২০১২-১৩ মওসুমে সাত হাজার ৮০০ হেক্টর জমি চাষাবাদ করা হয়। কৃষি বিভাগ জানায়, তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় প্রতি বছরেই এভাবে জমির পরিমাণ কমছে। সেচের অভাবে পতিত থাকছে অনেক জমি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, চলতি বোরো মওসুমে তিস্তায় কোনো পানিপ্রবাহ নেই। ব্যারেজের ৪৪টি গেট বন্ধ রেখেও প্রধান খালে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবার রহমান জানান, উজানে গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার করায় প্রতি বছর এ সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে।
১৯৭৯ সালে দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমপর্যায়ের কাজ শেষ হয় ১৯৯৮ সালে। মূল নদী থেকে পানি নিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে মরুময় উত্তরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুরসহ পাঁচ জেলার ৩৫টি উপজেলার পাঁচ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করাই ছিল প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ জন্য নীলফামারী জেলার ডালিয়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় তিস্তা ব্যারেজ; কিন্তু প্রমত্তা তিস্তা ডিসেম্বর মাস থেকে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তিস্তার পানি প্রায় শূন্যের কোঠায় ঠেকেছে। সামান্য কিছু এলাকায় হাঁটু পানি থাকলেও বেশির ভাগ এলাকায় তিস্তার বুকে এখন ধু-ধু বালু চর। তিস্তা পানিশূন্য হয়ে পড়ায় ব্যহত হচ্ছে চলতি সেচকার্যক্রম। এতে করে বিপাকে পড়েছেন তিস্তা সেচ এলাকার কৃষকেরা।
নীলফামারী ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র মতে, তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় গেল বছর নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টর জমি বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় ২৫ হাজার হেক্টর জমি। আর এ কারণে এ বছর প্রকল্প এলাকা কমিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিস্তার সেচের পানি দিয়ে পাঁচ হাজার ৩৩৯ হেক্টর জমিতে বোরো চারা রোপণ করতে পেরেছেন কৃষকেরা। বোরো চাষিরা জানান, রোপণকৃত জমিতেও এখন ঠিকমতো পানি দিতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট বন্ধ রেখেও সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের উৎস মুখে এক ফোটা পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধান খাল, দিনাজপুর ও রংপুর খালের মাধ্যমে দুই দফায় বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে পারলেও বর্তমানে তিস্তায় পানি না থাকায় সেচকার্যক্রাম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে রোপিত বোরো চারা বাঁচাতে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে সেচ পাম্প ও শ্যালো মেশিন বসিয়ে ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন। জলঢাকা উপজেলার উত্তর দেশীবাঈ গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান, পূর্ব কাঁঠালী গ্রামের তৈয়ব আলী, একই গ্রামের আবুয়াল হোসেন, দুন্দিবাড়ি গ্রামের বছির উদ্দিনসহ অনেকে অভিযোগ করেন, ‘ক্যানেলের পানির আশাত রোয়া নাগাইনো, অ্যালা ক্যানেলোত পানি নাই। খালি দুইবার পানি দিয়া বন্দো করি দিছে। জমি ফাটি চৌচির হয়া গেইছে। রোয়াও মরি যায়ছে। বাইধ্য হয়া শ্যালো বসেয়া ক্ষেতোত পানি দেইছি।’
অন্য দিকে তিস্তায় পানি না থাকায় তিস্তার ১২০ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করা শত শত জেলে ও মাঝিমাল্লা এখন সম্পূর্ণ বেকার। ব্যারেজের ভাটিতে সামান্য যে অংশে চোঁয়ানো পানি আছে তাতেই জাল ফেলে মাছের জন্য অপো করছেন এখানকার জেলেরা।
এ দিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, শুধু নীলফামারী জেলায় তিস্তার পানি দিয়ে ২০০৭-৮ বোরো মওসুমে ১৮ হাজার ৪৪৪ হেক্টর, ২০০৮-৯ এ ১২ হাজার ৫০০, ২০০৯-১০ এ ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর,২০১০-১১ এ ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং ২০১২-১৩ মওসুমে সাত হাজার ৮০০ হেক্টর জমি চাষাবাদ করা হয়। কৃষি বিভাগ জানায়, তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় প্রতি বছরেই এভাবে জমির পরিমাণ কমছে। সেচের অভাবে পতিত থাকছে অনেক জমি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, চলতি বোরো মওসুমে তিস্তায় কোনো পানিপ্রবাহ নেই। ব্যারেজের ৪৪টি গেট বন্ধ রেখেও প্রধান খালে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবার রহমান জানান, উজানে গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার করায় প্রতি বছর এ সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে।
No comments