বিদ্যালয়, নাকি বিধ্বস্ত ভবন! by পলাশ বড়ুয়া
(দরজা-জানালা নেই। টিনের বেড়াও দুমড়ে–মুচড়ে গেছে। ভাঙাচোরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলে দীঘিনালার অনাথ আশ্রম আবাসিক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের l প্রথম আলো) দুমড়ে-মুচড়ে
গেছে টিনের বেড়া। দরজা-জানালা কোনোটিই অক্ষত নেই। মাথার ওপর শতচ্ছিন্ন
টিনের চাল। জোরে বাতাস বইলেই নড়তে থাকে খুঁটি। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার অনাথ
আশ্রম আবাসিক উচ্চবিদ্যালয় দেখে মনে হবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা
যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো ভবন। অনাথ আশ্রম আবাসিক উচ্চবিদ্যালয়টি নামে
আবাসিক হলেও ছাত্রাবাস বা ছাত্রীনিবাসের কোনো চিহ্ন নেই। ১৯৭৬ সালের ১
জানুয়ারি ৬০০ আবাসিক শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়টি যাত্রা করেছিল। ১৯৮৬ সালে
পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষা
কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়টির মূল্যবান জিনিসপত্র লুট হয়ে যায়।
ভেঙে ফেলা হয় শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবনও। ১৯৯২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পুনরায়
চালু হলেও সংস্কার হয়নি। ১৯৯৩ সালের ১ জুন বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত শতাধিক। বিদ্যালয়টির শিক্ষা
কার্যক্রম চলছে ভাঙাচোরা ঘরে। একসঙ্গে তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান
করা হয়।
বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙাচোরা একটি শ্রেণিকক্ষে চলছিল দশম, নবম ও ষষ্ঠ শ্রেণির খ শাখার পাঠদান। এক শ্রেণির শিক্ষকের কথা শুনতে পাচ্ছিল অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। ভাঙাচোরা টুল–বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকেরা জানান, বিদ্যালয়ে ১৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষে চলছে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠদান। ভাঙাচোরা ভবনে খুঁড়িয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষা সরঞ্জাম, গবেষণাগার ও পাঠাগার না থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক কিছু হাতে–কলমে শিক্ষা দেওয়া যাচ্ছে না।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বৃষ্টি চাকমা, আকলিমা আক্তার ও মুকুট ত্রিপুরা বলে, এই ভাঙা ঘরেই তারা পড়াশোনা করছে। বৃষ্টি এলে বইপত্র ভিজে যায়। ঝোড়ো হাওয়া হলে ঘরটা দুলতে থাকে। কখন তাদের ভাঙা শ্রেণিকক্ষ ভেঙে পড়ে, সেই ভয়ে থাকে।
বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী আকলিমা আক্তার কখনো ব্যবহারিক ক্লাস করেনি। কথা বলতে বলতে আক্ষেপ ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। সে বলে, ‘বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করছি। অথচ আমাদের বিদ্যালয়ে কোনো ল্যাবরেটরি (গবেষণাগার) নেই। বিজ্ঞানের যন্ত্রাংশগুলো পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এই ভাঙাচোরা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে ১৩৯ জন, নবম শ্রেণিতে ১২০ জন ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৯৫ শিক্ষার্থী আছে। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষা সরঞ্জাম না থাকায় বিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় আবহাওয়া ভালো থাকলে বিদ্যালয়ের মাঠেও পাঠদান হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় আবেদন করেছি। ভবন না হওয়ায় টিনের ভাঙাচোরা ঘরেই শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। বেশি সমস্যায় হয় বর্ষা মৌসুমে। তখন শিক্ষার্থীদের বইপত্র ভিজে যায়।’
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা খুবই জরুরি। ভাঙাচোরা ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম আর কত দিন চালানো সম্ভব? প্রতিবছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। আমি নিজেও বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় তদবির করে যাচ্ছি।’
বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙাচোরা একটি শ্রেণিকক্ষে চলছিল দশম, নবম ও ষষ্ঠ শ্রেণির খ শাখার পাঠদান। এক শ্রেণির শিক্ষকের কথা শুনতে পাচ্ছিল অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। ভাঙাচোরা টুল–বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকেরা জানান, বিদ্যালয়ে ১৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষে চলছে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠদান। ভাঙাচোরা ভবনে খুঁড়িয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষা সরঞ্জাম, গবেষণাগার ও পাঠাগার না থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক কিছু হাতে–কলমে শিক্ষা দেওয়া যাচ্ছে না।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বৃষ্টি চাকমা, আকলিমা আক্তার ও মুকুট ত্রিপুরা বলে, এই ভাঙা ঘরেই তারা পড়াশোনা করছে। বৃষ্টি এলে বইপত্র ভিজে যায়। ঝোড়ো হাওয়া হলে ঘরটা দুলতে থাকে। কখন তাদের ভাঙা শ্রেণিকক্ষ ভেঙে পড়ে, সেই ভয়ে থাকে।
বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী আকলিমা আক্তার কখনো ব্যবহারিক ক্লাস করেনি। কথা বলতে বলতে আক্ষেপ ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। সে বলে, ‘বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করছি। অথচ আমাদের বিদ্যালয়ে কোনো ল্যাবরেটরি (গবেষণাগার) নেই। বিজ্ঞানের যন্ত্রাংশগুলো পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এই ভাঙাচোরা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে ১৩৯ জন, নবম শ্রেণিতে ১২০ জন ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৯৫ শিক্ষার্থী আছে। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষা সরঞ্জাম না থাকায় বিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় আবহাওয়া ভালো থাকলে বিদ্যালয়ের মাঠেও পাঠদান হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় আবেদন করেছি। ভবন না হওয়ায় টিনের ভাঙাচোরা ঘরেই শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। বেশি সমস্যায় হয় বর্ষা মৌসুমে। তখন শিক্ষার্থীদের বইপত্র ভিজে যায়।’
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা খুবই জরুরি। ভাঙাচোরা ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম আর কত দিন চালানো সম্ভব? প্রতিবছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। আমি নিজেও বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় তদবির করে যাচ্ছি।’
No comments